রবীন্দ্রনাথ ও চিরতার শরবত

লেখক প্রমথনাথ বিশী তখন শান্তিনিকেতনের ছাত্র। একদিন সাতসকালে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়ি গিয়েছেন। কবিগুরু প্রাতরাশ সারতে বসেছেন। প্রিয় ছাত্র প্রমথনাথ এসেছেন দেখে তিনি গৃহভৃত্যকে নির্দেশ দিলেন তাঁর ছাত্রটিকেও যেন জলখাবার পরিবেশন করা হয়। যেমন কথা তেমন কাজ। খানিক পর প্রমথনাথ বিশীর জন্যও জলখাবার এল। রবীন্দ্রনাথের পাতে যা যা আছে হুবহু তা–ই এসেছে, শুধু নেই এক গ্লাস সোনালি শরবত। যার গ্লাসে কি না কবি এতক্ষণ ধরে পরম আয়েশে চুমুক দিচ্ছিলেন। কবির এমন তৃপ্ত চুমুক দেখে প্রমথনাথের মনে হয়েছিল, জিনিসটা নিশ্চয়ই দারুণ মজাদার! কবি প্রমথনাথের মনোভাব বুঝতে পেরে তাঁর জন্যও ওই শরবত আনার আদেশ দিলেন। প্রমথনাথ তো বেজায় খুশি। কিন্তু যখন শরবতভর্তি গ্লাসটা তাঁর হাতে এল, দেখলেন তা আদতে তেতো চিরতার শরবত! হতাশ-বিস্মিত প্রমথনাথের দিকে সে সময় রবীন্দ্রনাথ তাকালেন দুষ্টুমিভরা চোখে, যেন বলতে চাইলেন, ‘কেমন জব্দ!’