জাতীয় কবিতা উৎসবে অংশ নেবেন ছয় দেশের কবি

৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ জানুয়ারি। ছবি: ফোকাস বাংলা
৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ জানুয়ারি। ছবি: ফোকাস বাংলা

স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে দিয়ে ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরু করে জাতীয় কবিতা উৎসব। এরপর কেটে গেছে ৩২ বছর। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের চত্বরে শুরু হবে দুই দিনের জাতীয় কবিতা উৎসব। এতে বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশের কবিরা অংশ নেবেন।

জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে এ উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে উৎসব দপ্তরে চলছে নিবন্ধন কার্যক্রম। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা—এই সময়সীমায় নিবন্ধন চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসবের উদ্বোধন করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। ঢাকার কবিদের জন্য নিবন্ধন ফি ৩০০ টাকা। আর ঢাকার বাইরের কবিদের জন্য ২০০ টাকা।

শুক্রবার সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় পরিষদের পক্ষে ১ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় কবিতা দিবস’ ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশের সিভিল সার্ভিসে পৃথকভাবে সংস্কৃতিবিষয়ক ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছে পরিষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির উৎসব কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে উৎসবসংক্রান্ত লিখিত বক্তব্য পড়েন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত। বক্তব্য দেন ৩৩তম উৎসবের উদ্বোধক কবি আসাদ চৌধুরী, পরিষদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কবি হারিসুল হক, নির্বাহী কমিটির সদস্য কবি কাজী রোজী, আনোয়ারা সৈয়দ হক, আসাদ মান্নান প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুলতান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের উৎসবে স্বদেশের কবিদের সঙ্গে অংশ নেবেন ভারত, সুইডেন, মালদ্বীপ, তুরস্ক ও মালয়েশিয়ার আমন্ত্রিত ১৫ জনের বেশি অতিথি কবি। নিবন্ধিত কবিদের কবিতাপাঠের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে দুটি সেমিনার। তবে এখনো এবারের উৎসবের স্লোগান ও উৎসব সংগীত চূড়ান্ত হয়নি। প্রাথমিকভাবে ‘বাঙালির জয়, কবিতার জয়’ উৎসব স্লোগান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তারিক সুজাত বলেন, স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, গণতন্ত্র হনন, যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি ও বর্বরতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কবিরা অব্যাহতভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এভাবে দেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষেÿঅবস্থান নিয়েছে, বিশ্বের সব ভাষার সংগ্রামী কবি ও কবিতার ধারার সঙ্গে বাঙালি কবিদের লড়াই একই মন্ত্রে গাঁথা।

মুহাম্মদ সামাদ বলেন, শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের আহ্বানে ১৯৮৭ সালে শুরু হয় জাতীয় কবিতা উৎসব। এ উৎসবের পৃথক চরিত্রটি ধরে রাখতে কখনোই কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই উৎসব দেশের সব মানুষের।

আসাদ চৌধুরী বলেন, দেশের সব ক্রান্তিকালে সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। অসাম্প্রদায়িকতা ও বাঙালিত্বের চেতনাকে লালন করে পরিষদ আয়োজিত এই কবিতা উৎসব। তাই সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কখনো শরীরে দাগ লাগতে দেয়নি এই সংগঠন।