নুরুল হক সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আনিসুল হক

নারায়ণগঞ্জের সুধীজন পাঠাগারে গতকাল সন্ধ্যায় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) হাতে অধ্যাপক নুরুল হক সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।  ছবি: প্রথম আলো
নারায়ণগঞ্জের সুধীজন পাঠাগারে গতকাল সন্ধ্যায় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) হাতে অধ্যাপক নুরুল হক সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ছবি: প্রথম আলো

এ বছর ‘অধ্যাপক নুরুল হক সাহিত্য পুরস্কার’ পেলেন কথাশিল্পী ও প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়ায় সুধীজন পাঠাগার ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে ক্রেস্ট ও পুরস্কারের এক লাখ টাকা তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক এস এম জাবেদ আহমদ।

পুরস্কার গ্রহণ করে আনিসুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সুধীজন পাঠাগার দেশের বৃহৎ বেসরকারি পাঠাগার। এমন সুন্দর পাঠাগার কোথাও দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘এই পাঠাগারে বই পৌঁছে দেন, পাঠক সৃষ্টি করেন এবং পাঠকের হৃদয়কে আলোকিত করেন। এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কিছু হতে পারে না। এখানে নানা ধরনের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বাচ্চারা বৃত্তি পেল, এর চাইতে ভালো বিনিয়োগ আর কী হতে পারে; যখন আমরা মানুষের হৃদয়কে, মানুষের মননকে, বিদ্যাবুদ্ধিকে পৃষ্ঠপোষকতা করি। এই ছেলেমেয়েদের অনেকেই বড় হবে। আমরা জানি না তারা কত বড় হবে। মানুষের মধ্যে অপরিসীম ও অপার সম্ভাবনা আছে।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আনিসুল হক বলেন, ‘বেশি করে বই পড়বে। বেশি করে খেলাধুলা করবে। আর বেশি করে সংস্কৃতির চর্চা করবে। আমাদের রেজাল্ট ভালো লাগবে। শুধু রেজাল্ট ভালো দিয়ে হয় না। এর বাইরে সংস্কৃতির চর্চা করতে হয় এবং প্রচুর বই পড়তে হয়।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাবেদ আহমদ বলেন, ‘জীবনে বড় হওয়া খুব কষ্টকর। জীবনে বড় কিছু হতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে। তোমরা যদি ওই কষ্ট করতে পারো, তাহলে জীবন তোমাদের অনেক কিছু দেবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যে বৃত্তি ও পুরস্কার পেয়েছ, এটা তোমাদের জীবনে শুরু। এটাকে ধরে রাখতে হবে। এটাকে ধরে রেখেই জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

একই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পুরস্কার ও বৃত্তি প্রদান এবং অভিভাবকদের ক্রেস্ট ও বই প্রদান করা হয়। পাঠাগারের পরিচালক কাসেম জামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিচালক সদস্য আক্তারুজ্জামান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রুনু সিদ্দিকী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাঠাগারের সহকারী পরিচালক ফাহমিদা সনি।

এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপস্থিত রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও বৃত্তি প্রদান করেন অতিথিরা। এ ছাড়া অভিভাবকদের ক্রেস্ট ও বই তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ আজাদের মাকে নিয়ে আনিসুল হকের নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সুধীজন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুল হকের সৌজন্যে প্রবর্তিত হয়েছে এই পুরস্কার। ২০১৪ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ২০১৪ সালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ২০১৫ সালে হায়াৎ মামুদ, ২০১৬ সালে সরদার আবদুস সাত্তার এবং ২০১৭ সালে সেলিনা হোসেন এ পুরস্কার পান।