জলের মাঝে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আলসেমিভরা শরীর নিয়ে শুয়ে ছিল লামিয়া। পাশ ফিরতে চোখ যায় দেয়ালঘড়িতে। প্রায় বারোটা বাজে। দুপুর হয়ে গেল কখন! গোসলটা সেরে ফেলা দরকার। বিছানা ছেড়ে, ওয়ার্ডরোব থেকে কাপড়চোপড় নিয়ে গোসলখানায় ঢুকতে যাবে, আচমকা তলপেটের কাছটায় ব্যথার একটা ঢেউ কাঁপিয়ে দেয় সারা শরীর। খাটের বাজু ধরে বিছানায় বসে পড়ে লামিয়া। বসে, মুখ হা করে বড় বড় শ্বাস নেয়।

জানাই ছিল, যেকোনো দিন ব্যথাটা আসতে পারে। মা-খালা-শাশুড়ি অনেকবার বলেছে ব্যথার ধরন সম্পর্কে। কিন্তু সেটা যে এমন তীব্রতায় জানান দেবে, আন্দাজে ছিল না তার। নিজের অজান্তেই ককিয়ে ওঠে ও।

ফেরদৌসী কী কারণে যেন ছোট ছেলের ঘরে উঁকি দিয়েছিলেন। দেখেন, লামিয়া খাটের ওপর কেমন এলিয়ে পড়েছে। শ্বাস নিচ্ছে জোরে জোরে। অসহায়ের মতন তাকাচ্ছে এদিক–ওদিক। অভিজ্ঞ ফেরদৌসী পলকেই বুঝে যান, বউয়ের প্রসব বেদনা হচ্ছে। হাতে থাকা মোবাইলে ছোট ছেলেকে ফোন করতে করতে চিৎকার করে বড় বউকে ডাকেন তিনি। শামীমা, তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। লামিয়ার মনে হয় ব্যথা উঠেছে।

সাইফুল ফোন ধরেছে। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে বলতে লামিয়ার কাছে বসেন ফেরদৌসী।...তুই বেছে বেছে আজকেই সিরাজগঞ্জ গেলি।...ডাক্তারের কথা সব সময় ঠিক হয় নাকি? অমন তারিখ দেয়ই। দুই–চার দিন এদিক–সেদিক হতেই পারে।...আচ্ছা, তুই দ্রুত রওনা হ। চিন্তা করিস না। এখনই লামিয়াকে নিয়ে যাচ্ছি।...না না, ডাক্তারকে তোর ফোন করা লাগবে না। গত পরশুই তো কথা হলো আমার সাথে। সব ঠিকঠাক আছে। হ্যাঁ হ্যাঁ, বউকে নিয়ে অই ডাক্তারের কাছেই যাচ্ছি। বড় বউ আছে। আমি যেতে যেতে হাসানকে ফোন করে বলে দেব, যেন সরাসরি হাসপাতালে চলে আসে।...তোর আসতে রাত হবে? ঠিক আছে।...বললাম তো অত চিন্তা করিস না। আমি আছি না! চার ছেলের মা হলাম। সব সামলে নেব।...রাখছি এখন।

কই শামীমা! মরলা নাকি তুমি? তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্সকে ফোন করো।

মা আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাশের ঘর থেকে শামীমা জবাব দেয়। ফোন রিসিভই করছে না!

লামিয়ার শরীর ব্যথার ধাক্কায় কেঁপে কেঁপে উঠছে। গোঙাতে গোঙাতে লামিয়া বলে, আম্মাকে খবর দেন মা।

অত অস্থির হয়ো না মা। লামিয়ার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে ফেরদৌসী বলেন। আমি যেতে যেতে বেয়াই–বেয়ান সবাইকে জানিয়ে দেব। বাসায় এসে আর কী করবে। এর চেয়ে হাসপাতালে গেলেই ভালো।...জন্ম দিতে কষ্ট তো সবারই হয়। একটু সহ্য করো মা।...শামীমা অ্যাম্বুলেন্স ডাকছে। তোমাকে নিয়ে এখনই আমরা রওনা হব।

ওহ, এত ব্যথা আম্মা! মনে হচ্ছে কেউ যেন শরীরের সব হাড়গোড় ভাঙছে। উমম মাগো...ড্রয়ারে টাকা আছে। মনে করে নিয়েন। আহ্!...চাবিটা...আপনার ছেলের বালিশের নিচে।

টাকা নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। টাকা আমার কাছেও আছে। তুমি মনে মনে আল্লাহকে ডাকো। মেয়েদের জন্য এই সময়টা খুব বিপদের।...এখন কি ব্যথাটা একটু কম লাগে মা?

ওহ্!...হুম। একটু যেন কম। আহ্।

তুমি চুপচাপ শুয়ে থাকো। আবার ব্যথাটা উঠবে। ঘেমে গেছ। ফ্যানটা ছেড়ে দেব, মা?

লামিয়া কথা বলে না। চোখ বন্ধ করে নেতিয়ে থাকে। ফেরদৌসী ফ্যানটা কমিয়ে ছেড়ে বলেন, আমি দেখি শামীমা অ্যাম্বুলেন্স পেল কিনা। এত দেরি তো হওয়ার কথা না! আগেই তো বলা আছে, ফোন করলেই চলে আসবে অ্যাম্বুলেন্স।

দুই.

লামিয়ার গর্ভধারণে এই সংসারের সবার মনে খুশির জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। দিনে দিনে লামিয়ার গর্ভের সন্তান যত বড় হয়েছে, জোয়ারের পানি ততই ফেঁপে উঠেছে। বলতে কি, কোনো কমতি নেই তিন ভাইয়ের সংসারে। যাত্রাবাড়ীতে নিজেদের দুই ইউনিটের পাঁচতলা বাড়ি। সারা দেশে পোল্ট্রি ফিডের চালু ব্যবসা। বাড়িভাড়া আর ব্যবসা থেকে আয় হয় মন্দ না। সারা বছর খেয়ে-পরেও টাকা জমে। সে টাকা ফের ব্যবসায় খাটানো হয়।

তা প্রাচুর্য থাকলেও কমতি একটা আছে সংসারে। শিশুর কোলাহল নেই বাড়িটাতে!

বড় বউয়ের বাচ্চা হবে না। বিয়ের হয়েছে আট বছর। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। দেশে। বিদেশে। কবিরাজ, পানিপড়া, স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ—কিছু বাদ যায়নি। আসলে সমস্যাটা লামিয়ার ভাশুরের।...মেজ ছেলে জানিয়েছে, সে বিয়েই করবে না। কারণ কাউকে বলেনি। সাইফুলকে একটু তাড়াতাড়িই বিয়ে করানো হয়েছে। তার সন্তান আসার সংবাদে পুরো পরিবার তাই খুব খুশি।

দিন রাত কত পরিকল্পনা! কত স্বপ্ন! কত দিন সবাই মিলে ড্রইংরুমে বসে অনাগত সন্তান নিয়ে আলোচনা করেছে। ছোট একটা শিশু ঘরময় টলমল পায়ে হাঁটবে। হাসবে, কাঁদবে।...তার জন্য ঘরভর্তি কত কিছু। কাঁথার পর কাঁথা সেলাই চলছে। প্যাকেট প্যাকেট ডায়াপার। জামা, শার্ট। মোজা, টুপি। সুন্দর সুন্দর পুতুল। বল। খেলনা। দোলনা। বেবিসাইকেল। বেবি কট। লোশন। ছোট কম্বল। মাথায় দেওয়ার জন্য সরিষার বালিশ। খাঁটি সরিষার তেল, গায়ে মালিশের জন্য। সুন্দরবনের মধু, জন্মের পর মুখে দেওয়ার জন্য।...আরও যে কত কী! সব লামিয়ার মনেও নেই।

আর তার কী খোঁজখবর! স্বামী, ভাশুর, জা, শাশুড়ি—সারাক্ষণ কেউ না কেউ খোঁজখবর নিচ্ছেই। কেমন আছে লামিয়া। কী খেতে ইচ্ছে করে। না চাইলেও নিজ থেকে কত কিছু আনছে সবাই। কেউ বয়ামভর্তি আচার আনছে, তো কেউ কেজি কেজি তেঁতুল। হাওরের মাছ। পদ্মার ইলিশ। ওলকচু। শোল মাছের শুঁটকি। চিকন চিকন দেশি কচুর লতি। কলার মোচা। শিদল শুঁটকির ভর্তা। শজনে ফুলের বড়া। আদা ফুলের ভাজি।...খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেই হলো। হাজির করতে দেরি নেই।

তিন ভাই চায় ছেলে। ব্যবসার হাল ধরার জন্য। ভবিষ্যতে বাড়ি, সম্পত্তি ভোগ করার জন্য। ফেরদৌসী চান মেয়ে হোক। শাশুড়ি বলেন, নিজের চার–চারটা সন্তানই হলো ছেলে। একটা সুন্দর ফ্রক যে কাউকে পরাব, চুল আঁচড়ে বেণি করে দেব লাল ফিতা বেঁধে—সেসব সাধ পূর্ণ হলো না।

তবে আলট্রাসনোগ্রাম করে দেখা হয়নি, গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে।

তিন.

অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের সঙ্গে আগেই কথা ছিল ফোন করলেই সে বাসায় চলে আসবে। তাকে সম্ভাব্য সময়ের কথাও বলা হয়েছে। আজ অনেকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোন বাজে। কিন্তু ওই প্রান্ত থেকে কেউ রিসিভ করে না। শামীমা আরও অনেক জায়গায় ফোন করেও কোনো অ্যাম্বুলেন্স পায় না। কেউ বলে বিকেল হলে আসতে পারবে। কেউ জানায় পরের দিন হলে পারবে।...শামীমা একটার পর একটা হাসপাতালের নম্বরে চেষ্টা করে যায়।

ফেরদৌসীও চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কোনো অ্যাম্বুলেন্সই যাত্রাবাড়ী আসতে চাইছে না। অথচ আগে যখন যোগাযোগ করা হয়েছে, প্রায় সবাই বলেছে, ফোন করা মাত্র তারা চলে আসবে।

মা, বোধ হয় সময়টা দুপুর বলেই আসতে চাইছে না এই দিকে। কদিন ধরে এই সময়টাতে খুব জ্যাম থাকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে। ওভার ব্রিজের কাজ করাতে রাস্তাটা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। তার ওপর যখন তখন বৃষ্টি তো আছেই। বৃষ্টি হলে রাস্তায় না হোক এক হাঁটুপানি।

শোনো শামীমা, আমি বলি কি অ্যাম্বুলেন্সের আশা না করে নিজেদের গাড়িতেই লামিয়াকে নিয়ে যাই। দেরি করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

আমারও মনে হয় সেটাই ভালো হবে, মা।

নিচে, ড্রাইভার আর দারোয়ান ছাড়া সাহায্য করার মতো পুরুষ মানুষ কেউ নেই। অন্য দিন মেজ ছেলে দুপুরে খেয়ে ঘুমায়। সে দুই দিন আগে বন্ধুদের সঙ্গে নাটোর গেছে। কপাল আর কাকে বলে!

ফেরদৌসী আর শামীমা মিলে ধরাধরি করে লামিয়াকে সিঁড়ি দিয়ে নামায়। গাড়িতে উঠেই ফেরদৌসী বেয়াই আর বেয়ানকে ফোন করেন। ছোট ছেলেকে ফোন করে আশ্বস্ত করেন। বড় ছেলেকে বলেন হাসপাতালে আসতে।

গলি থেকে অনেক আগে বের হয়েছে গাড়ি। যাত্রাবাড়ী মোড়ের কাছে এসে আর সামনে এগোতে পারছে না, জ্যামের কারণে। এর মধ্যেই হঠাৎ শুরু হয় বৃষ্টি। একেবারে মুষলধারে! সহসা যেন চারপাশ ঘোলা হয়ে আসে।

লামিয়ার মাথা শামীমার কোলে। থেকে থেকে কেঁপে কেঁপে উঠছে লামিয়া, ব্যথায়। মৃদুস্বরে গোঙাচ্ছে। নীলচে হয়ে গেছে মুখটা। ব্যথার কারণেই বোধ হয় একটু যেন বিকৃত। শরীরটা কেমন ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে শামীমার কাছে।

মা! শামীমার কণ্ঠে শঙ্কা। লামিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে! এসিটা বন্ধ করে দেব?

শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে মানে! ফেরদৌসী লামিয়ার ঘাড়ের নিচে হাত ঢোকান। সর্বনাশ! বজলু, এসিটা বন্ধ কর। শামীমা তুমি লামিয়ার হাতের তালু জোরে জোরে ঘষো তো। আমি পায়ের পাতা ঘষছি।...ইয়া আল্লাহ, রহম করো।

বৃষ্টির বেগ বাড়ছে। চারপাশ কেমন ঝাপসা ঝাপসা! ড্রাইভার বজলু এসি বন্ধ করে, বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়। খাণিকক্ষণ পর ফিরে এসে বলে, ডানে–বাঁয়ে সামনে–পেছনে কোনো দিকেই গাড়ি ঘোরানো সম্ভব না খালাম্মা। ভাবিকে নিয়ে তো বিপদেই পড়লাম দেখি।

কী সমস্যা? ফেরদৌসীর কণ্ঠে উদ্বেগ।

কোন মন্ত্রী নাকি আসতেছে! আধঘণ্টা ধরে গাড়ি চলাচল বন্ধ। মন্ত্রী না যাওয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়বে না।

কী বল তুমি। বউয়ের অবস্থা তো খারাপ। মুখটা কেমন নীল হয়ে গেছে। দেখো আবার গাড়ি থেকে নেমে। কিছু করা যায় কি না।

লামিয়ার পানি ভাঙছে। ব্লিডিংও হচ্ছে। দিশেহারা ফেরদৌসী বলেন, না হলে দেখো, কোনোভাবে গাড়ি ঘোরাতে পার কি না। লামিয়াকে হাসপাতালে নিতে না পারলে যেকোনো সময় সর্বনাশ হয়ে যাবে। ডাক্তার বারবার বলেছেন, প্রসবে জটিলতা হতে পারে।

গাড়ি ঘোরাব কীভাবে খালাম্মা? ডানে-বাঁয়ে-সামনে-পেছনে গাড়ি। জ্যাম না ছাড়লে গাড়ি নড়ানোরও সুযোগ নেই।

তুই গাড়িতে বসে বসে কথা বলছিস কেন হারামজাদা! হঠাৎ শামীমা চিৎকার করে। নেমে দেখ কিছু করা যায় কি না। না হয় মোড়ে গিয়ে ট্রাফিককে বল আমাদের কথা। মেয়েটার মুখটা কেমন সাদা হয়ে যাচ্ছে। ব্লিডিংটাও খারাপ ধরনের।

বজলু গাড়ি থেকে নেমে যায়।

লামিয়া ক্রমাগত গোঙাচ্ছে। ছটফট করছে। ফেরদৌসী ভয় পেয়ে যান। লামিয়ার তলপেটের নিচটায় হাত রেখে বোঝার চেষ্টা করেন, নতুন কোনো অস্তিত্ব অনুভূত হয় কি না। নাহ! কিছু নেই। রক্তে ভিজে উঠছে কাপড়।

জানালার কাচ নামিয়ে বাইরে তাকান ফেরদৌসী। বজলু ভুল বলেনি! চারপাশে ফাঁকা জায়গা নেই এক ফোঁটা। সামনে থেকে, পেছনে থেকে শত শত গাড়ির হর্ন, রিকশার টুংটাং, আরও বিচিত্র সব শব্দ—যেন খোলা জানালা গলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরদৌসীর কানে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির বিচ্ছিরি বাজনা।...একটা অ্যাম্বুলেন্সও বোধ হয় আটকা পড়েছে। থেকে থেকে সেটা সাইরেন বাজাচ্ছে। না জানি কোন হতভাগ্য রোগী শুয়ে আছে অ্যাম্বুলেন্সটাতে! জানালা বন্ধ করে ফেরদৌসী এসিটা চালু করেন। লামিয়া দরদর করে ঘামছে।

বজলু ফেরে খানিক পরেই। গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে উঁকি দিয়ে বলে, খালাম্মা, ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে গেলাম। আমাকে পাত্তাই দিল না। বলল, এখন গাড়ি ছাড়লে নাকি তার চাকরি থাকবে না। মন্ত্রী যতক্ষণ না আসবে গাড়ি ছাড়বে না।...বলেন যদি, ভাবিকে কোলে করে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করে দেখতে পারি।

ফেরদৌসী ফ্যালফ্যাল চোখে বজলুর দিকে তাকান। খোলা দরজা দিয়ে বাইরে চোখ যায় তাঁর। বৃষ্টির পর্দার ভেতর দিয়ে দেখা যায়, জ্যাম আগের মতোই। চারপাশে গাড়ি সব জমাট হয়ে আছে। রাস্তায় হবে হাঁটুপানি। মন্ত্রীমহোদয় বোধ হয় এখনো আসেননি।...বজলু আরও কী সব বলে। ফেরদৌসী শোনেন না। শামীমার কাছ থেকে লামিয়ার মাথাটা নিয়ে নিজের কোলে শোয়ান। লামিয়াকে স্থানান্তর করতেই দেখা যায়, নিচের দিকটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। শামীমার কোলের কাপড়ে, পায়ের কাছটাতে, সিটের ওপর জমাট রক্ত। ঘাড়টা একদিকে কাত করে কেমন এলিয়ে আছে লামিয়া। খানিকক্ষণ আগেও শ্বাসের তালে তালে বুকটা মৃদু ওঠানামা করছিল। এখন কি শ্বাস নিচ্ছে মেয়েটি?

দূর থেকে স্লোগান ভেসে আসে।...মন্ত্রীমহোদয়ের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম।

নিস্তেজ লামিয়াকে কোলে নিয়ে বসে থাকেন স্তব্ধ ফেরদৌসী। তাঁর ভেজা মাথা থেকে বৃষ্টির পানি পড়ে লামিয়ার গায়ে।

বাইরে শ্রাবণের ধারা বেগবান হয়।