আসলেই নকল?

উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার
উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার

বড় লেখকেরাও অখ্যাত লেখকদের আইডিয়া নকল করে লিখেছেন অনেক অমর সাহিত্য। এখানে বিশ্বখ্যাত কয়েকজন সাহিত্যিকের লেখা—যা তাঁরা লিখেছিলেন অন্যকে নকল করে—তুলে ধরা হলো সেগুলো। গ্রন্থনা করেছেন উম্মে ফারহানা

উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার

আঁতকে উঠবেন অনেকে, শেক্‌সপিয়ারের অনেক লেখারই মূল উপাদান ছিল বিভিন্ন ইংরেজি আর ইউরোপীয় লোকগল্প। এটা তেমন দোষের কিছু নয়—এই বলে তর্ক জুড়েও দিতে পারেন কেউ কেউ। কিন্তু ওথেলোর কাহিনি, প্লট এমনকি মূল চরিত্র পর্যন্ত জিয়োভানি বাতিস্তা জিরাল্ডি ওরফে সিন্থিয়ো নামের এক স্বল্পখ্যাত ইতালীয় লেখক ও কবির লেখা এক ছোট গল্প থেকে হুবহু মেরে দেওয়া। ওথেলো নাটকটি লেখা হয়েছে ১৬০৩ সালে আর ‘আন কাপিতো মোরো’ নামে ইতালিয়ান ভাষায় লেখা সিন্থিয়োর সেই গল্পটি বেরিয়েছিল ১৫৬৫ সালে।

আলেক্সান্ডার দ্যুমা

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স যিনি পড়েননি তিনিও এথোস, পর্থোস, আরামিস আর ডি’আরতানার নাম জানেন—এতটাই বিখ্যাত দ্যুমার এই উপন্যাস। কিন্তু এই অমর চরিত্রেরা কেউই দ্যুমার সৃষ্টি নয়, এদের স্রষ্টা হলেন গাতিয়েন দে কোর্তিজ দে সান্দার্স নামের এক লেখক, যাঁর মূল বইটার নাম ছিল দ্য মেমোয়ারস অব মসিয়ে ডি’আরতানা । শুধু ডি’আরতানার তিন মাস্কেটিয়ার বন্ধুই নয়, নায়িকা আর ভিলেনের চরিত্রগুলোও সান্দার্সের গড়া। দ্যুমা শুধু বাড়িয়ে নিয়েছেন উপন্যাসের কলেবর, নিজের মতো করে।
জ্যাক লন্ডন

দ্য কল অব দ্য ওয়াইল্ডকে এককথায় সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় আমেরিকান উপন্যাস বললে অত্যুক্তি হবে না। জ্যাক লন্ডন স্বীকার করেছেন যে এই উপন্যাসের মূল ধারণা তিনি পেয়েছিলেন এগারটন আর ইয়ংয়ের লেখা মাই ডগস গ্রন্থ থেকে। চুরির দায় তিনি স্বীকার করেননি। কেননা ইয়ংয়ের বইটি ছিল নন-ফিকশন। এ ক্ষেত্রে জ্যাক লন্ডনের কথা হলো, নন-ফিকশন থেকে ধারণা নিয়ে উপন্যাস বা গল্প লিখলে সেটা চুরি হয় কী করে? পাঠকেরাও আশা করি তাঁর যুক্তির সঙ্গে একমত হবেন।

জর্জ অরওয়েল

নাইটিন এইটি ফোর–এর জন্য হোক বা অ্যানিমেল ফার্ম–এর জন্যই হোক, এ সময়ে অরওয়েলকে চেনেন না এমন সাহিত্যপ্রেমী পাওয়া কঠিন। কিন্তু ইয়েভগেনি ইভানোভিচ জামিয়াতিনকে কি আমরা চিনি? আপনি আমি না চিনলেও অরওয়েল কিন্তু ইউজিন জামিয়াতিন নামে পরিচিত এই রুশ সাহিত্যিককে চিনতেন। আর অরওয়েলের নাইনটিন এইটি ফোর বের হওয়ার ঠিক তিন বছর আগে ১৯৪৬ সালে জামিয়াতিনের লেখা উই উপন্যাসের আলোচনাও করেছিলেন। এখন নাইটিন এইটি ফোর–এর সঙ্গে উই উপন্যাসের মিলগুলোকে আপনি অবশ্য চাইলে কাকতালীয় বলে উড়িয়েও দিতে পারেন।
সূত্র: ক্র্যাকডডটকম