অন্যমনস্ক হওয়ার হাওয়ায়

কালো বুড়িগঙ্গা ধুঁকছে। শিশুটাকে নিয়ে সন্ধ্যার পর পর এই এখানেই এসে দাঁড়ায় ত্রিদিব। তাও মাঝেসাঝে। সুত্রাপূর, ফরাশগঞ্জ পেরিয়ে বি কে দাস রোডের উল্টিনঞ্জ লেনের ঘাট। শর্ষিনা স মিল, ফরাশগঞ্জ কাষ্ঠ বিতান, মদিনা টিম্বার—এমন কত কত দোকান রাস্তার দুই পাশে ফেলে লেবারদের একচিলতে অখণ্ড অবসর। আরামসে গা চুলকানো, হাই তোলা, কসকো সাবানে ওপেন এয়ার বাথ। এরই মধ্যে রিকশার টুংটাং, শ্যামবাজারের হলুদ-মরিচের ঝাঁজ নাকের মধ্যে হাঁচির সুড়সুড়ি দিতেই মসলার মার্কেট থেকে আসে লবঙ্গ-এলাচের বনেদি বাসনা। এরই মাঝে মাইকে সন্ধ্যার আজান সঙ্গে শনিপূজার মন্ত্র-কোরাস। এক প্রস্ত জিউ মন্দিরের করতাল গিয়ে মেশে বন্দর ছেড়ে যাওয়া সুরভী ৮-এর ভেঁপুতে। ত্রিদিবের কোলের শিশুটি ছটফট করে, নেমেই পড়বে বোধ হয় ধুঁকতে থাকা কালা পানিতে। জলের ওপর নূহের কিশতির মতো প্রায় ডুবন্ত বালুর ট্রলার যেন অনন্তগামী। শিশুটির মুখে শব্দ নেই, একটা ছটফটানি আছে। এদিকটা এখন রীতিমতো ব্যস্ত রাস্তা। একটু পর পর লক্কড়ঝক্কড় জিপগাড়িগুলো ধুলো উড়িয়ে পোস্তগোলার দিকে যায়। ত্রিদিবের সঙ্গে থাকা সেলফোনটা বেজে ওঠে। ত্রিদিব পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে দিপার ফোন। দিপা ত্রিদিবের স্ত্রী। নিপাট গৃহিণী। সংসার নিয়েই তার সমস্ত নিমজ্জন। সন্ধ্যায় কিছু ছেলেমেয়ে তার কাছে পড়তে আসে। আর সেই সময়টাতেই ত্রিদিব ছেলে নিমোকে নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ায়। ৮০০ স্কয়ার ফিটের দুই রুমের বাসায় এমনিতে জায়গা কম, তার মধ্যে গার্জিয়ানসহ ৬–৭ জন মানুষ। দিপার ফোন মানেই কিছু না কিছু লাগবে তার। কখনো টক দই, কখনো লেবু। ত্রিদিব ফোনটাকে সাইলেন্ট মোডে দিয়ে একটা চায়ের দোকানের টুলের ওপর গিয়ে বসে। এককাপ চিনিবিহীন লাল চায়ের অর্ডার করে সে। এবং সেই সঙ্গে খেয়াল করে টং দোকানের দেয়ালে একটা লেমিনেশন করা এ-ফোর কাগজের গায়ে বড় হরফে লেখা, ‘আজ থেকে বাকি বন্ধ’। লেখাটা পড়ে বেশ অস্বস্তি আর কর্কশ অনুভূতি হয় ত্রিদিবের। এই চাপা অস্বস্তির কোনো কারণ খুঁজে পায় না সে। তার মনে আছে শৈশবে মুদি দোকানে একধরনের বাঁধাই করা ছবি দেখা যেত, যেখানে ছড়ার ঢঙে লেখা থাকত ‘নগদ বিক্রি পেটে ভাত, বাকি দিলে মাথায় হাত। ’ সঙ্গে দুটো ইলাস্ট্রেশন আঁকা থাকত, যার একটি ছিল গণেশের মতো একজন পেটওয়ালা লোক থালাভর্তি ভাত নিয়ে খেতে বসেছেন, আর অন্যটি হচ্ছে শূন্য থালার সামনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়া একজন শীর্ণ মানুষ, যিনি হয়তো বাকি দিতে দিতে একপর্যায়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সেই আঁকা আর লেখাযুক্ত নির্দেশাবলির ভেতরেও ত্রিদিব কোথায় যেন একটা হারানো সুর খুঁজে পায়। সেদিন দয়াগঞ্জ বাজারের আরেকটা দোকানে এমন অদ্ভুত একটা বিজ্ঞাপন সে দেখেছিল, তাতে লেখা, ‘এখানে গরুর ও উটের খাঁটি দুধ পাওয়া যায়। ’

‘খাঁটি গরুর দুধ’ আর ‘গরুর খাঁটি দুধ’—এই দুই বাক্যের অর্থ কি দুটো হতে পারে? বাজার করে ফেরার পথে এটা নিয়ে বিস্তর ভেবেছিল ত্রিদিব। তাইতো, গরু খাঁটি হয় নাকি দুধ খাঁটি হয়? কী এর জবাব? দায়িত্ব আর কর্তব্যের তফাতের মতো জটিল ধাঁধা যেন একটা।

‘এই লন চা। ’ টং দোকানি চা এগিয়ে দেয় ত্রিদিবকে।

‘চিনি ছাড়া দিছেন তো? ’ ত্রিদিব বলে।

দোকানি পান খাওয়া লাল দাঁত বের করে হাসে। তার মানে চিনি দিয়েছে।

‘আচ্ছা, ঠিক আছে দেন। ’

চায়ে চুমুক দিতে দিতে কাগজের লেখাটার দিকে পুনরায় তাকায় ত্রিদিব। চায়ের কষ কষ স্বাদ তার মগ্নতা ভাঙায়। নিমো দোকানের চিপসের প্যাকেটের দিকে ইঙ্গিত করে কয়েকবার। এড়িয়ে যেতে চাইলেও একটা চিপস তাকে কিনে দেওয়া লাগে।

‘আপনে কি এই মহল্লার নিকি? ’ দোকানি বলে

‘উহু। নারিন্দার। ’

‘তাইলে হেনে কী কাম? প্রায় সম দেখি খাড়ায়া থাকেন। ’

‘এমনি, বাচ্চাকে নিয়া কই আর যাব, একটু নদীর পাড়ে ঘুরতে আসি আরকি। ’

‘এই গুয়ের গন্ধে? হা হা হা। ’

‘আর কই যাব বলেন? ’ চায়ে চুমুক দিতে দিতে ত্রিদিব বলে।

‘হ, ঠিকই কইচেন, মাঠমুট তো আর নাইক্কা, যাও আছিল ধুপখুলা অইটা ভি ফেলাইওভারের উসিলায় দখল অয়া গেছে, অহন আবার হুনতাছি হোনে একটা পার্ক অইবো। ’

‘আমিও এ রকম শুনছি। ’

নিমো ত্রিদিবের পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে লঞ্চের আলো দেখে। টুলের ওপর বসেও স্বস্তি হয় না ত্রিদিবের। গতকাল থেকেই তার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। প্রেশার ফল। ওপরেরটা ১২০ কিন্তু নিচের প্রেশার ১০০ তে উঠে গেছে। দিপা মাথায় নারকেল তেল দিয়ে দিয়েছিল একগাদা, এতে নাকি ভালো ঘুম হবে। কিন্তু সারা রাত ডিমলাইটের দিকে তাকিয়েই তার কেটে গেছে একধরনের ছটফটানির মধ্যে।

‘পোলা নিহি? ’

‘হ্যাঁ। ’

‘নাম কী? ’

‘নিমো। ’

‘এইটা আবার কিরম নাম ভাই। জীবনেও হুনি নাই। ’

ত্রিদিব হাসে।

‘কয় বচ্ছর? ’

‘সাড়ে চার। ’

‘কথা-কুথা কয় না? কহন থেইকা থম মাইরা রইছে। ’

নিমো দোকানদারের কথায় পাত্তা দেয় না। সে কুটকুট করে চিপস চিবোয়।

‘না বলে না। ওর একটু সমস্যা আছে। ’

‘কন কী? বাতাস-উতাস লাগছে নিহি? আপ্নেগো নাইন্দায় পীরসাব আছে না, হ্যার কাছে লয়া যান, ঝাইরা দিলে বালা অইবার পারে। ’

‘আচ্ছা, নিয়ে যাব। ’

চায়ের বিল দিয়ে ত্রিদিব আরেকটা ফাঁকা জায়গায় এসে একটা গাছের গুঁড়ির ওপর বসে। নিমো পানিতে নামার জন্য ছটফট করছে তখনো।

এই বুড়িগঙ্গার বয়স কত? ত্রিদিব ভাবে। সেদিন তার এক বড় ভাইয়ের বন্ধু কথা প্রসঙ্গে বলছিল পৃথিবীর আর কোথাও এমন একটা শহর পাওয়া যাবে না, যার প্রায় চারপাশে চারটে নদী। ত্রিদিব লোকটির অবজারভেশনে বেশ মুগ্ধ হয়েছিল। কারণ ঢাকা শহরের ম্যাপটা তার মাথায় কখনো ছিল না। সে মনে মনে নদীগুলোর নাম মনে করার চেষ্টা করেছে কয়েকবার। তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা. . . আরেকটা যেন কী? না। মনে পড়ছে না। এই নদী চতুষ্টয়ের সঙ্গে ত্রিদিব তার নিজের জীবনের সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করে। তার প্রতিদিনের জীবনে কোনো নদী নেই, কোনো পোস্টম্যান নেই, কোনো খেয়াঘাট নেই। বন্দর ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন ১১-এর ভেঁপু শুনে নিমো হাত–পা ছোড়ে। রাতের বেলা লঞ্চগুলোকে এত রহস্যময় লাগে ত্রিদিব খেয়াল করেনি আগে। ত্রিদিবের শিশুটি আর এক জায়গায় বসে থাকতে চায় না। নিমোর মন রক্ষার্থে একটা নৌকা ভাড়া করার জন্য মূল ঘাটে নেমে আসে ত্রিদিব।

‘কোন পার যাইবেন? কেরানীগঞ্জ ৫ ট্যাকা। ’ মাঝি বলে।

‘রিজার্ভ যাব। এক ঘণ্টার জন্য কত নিবেন? ’

‘রিজাভ তো যাই না বাবা, আচ্ছা, উঠেন ২০০ টাকা দিয়েন। ’

‘না, ১০০ টাকা দিব। খুব বেশি দূর যাইতে হবে না। ’

‘না বাবা, আপ্নে ৫০ টাকা কম দিয়েন। এর কমে হবে না। ’

ত্রিদিব নিমোকে নিয়ে নৌকায় ওঠে। গুমোট ভাবটা কমে গিয়ে বেশ ঠান্ডা একটা ভাব চারপাশে। দূরের পোস্তগোলা ব্রিজটা বেশ কাছেই মনে হচ্ছে ত্রিদিবের। তার মনে আছে এই ব্রিজটা যখন নতুন নতুন হয়, তখন দেখতে এসেছিল এক কাজিনের সঙ্গে। ব্রিজের এ–মাথা থেকে ও–মাথা হাঁটা। তখন এরশাদ ক্ষমতায়, দল বেঁধে ব্রিজ দেখতে আসাটাও তখন একটা বিনোদন। শহরে সেই প্রথম সোডিয়াম বাতি জ্বলতে দেখেছে ত্রিদিব।

‘সত্যি কথা কইতে কি, শেষ কবে রিজাভে লোক উঠাইসি আমার মনে নাই। এহন লোকজন কুনোমতে দম আটকায়া খেয়া পার অয়। এহেনে দেহনের আর কী আছে, আর নদীও তো নাই, আছে একটা চিপা খাল। ’ মাঝি বলে।

ত্রিদিব বইয়ে চার্লস ডয়েলির আঁকা ধোলাইখালের ছবি দেখেছে। নয়নাভিরাম এক শান্ত প্রাকৃতিক দৃশ্য, যা দেখে জন কন্সটেবলের ল্যান্ডস্কেপ বলে ভ্রম হয়। কিন্ত বাস্তবের ধোলাইখাল হচ্ছে লোহার বাজার। গাড়ির সেকেন্ড হ্যান্ড পার্টসের বৃহৎ পসরা। লোহা লোহা গন্ধের ভেতর যেন মরা নদীর আত্মা।

‘আমরা ছোট সময় যে নদী দেখছি তার তুলনায় এই নদী খালই। শুশু মাছ চিনেন বাবা? ’ মাঝি প্রশ্ন করে।

‘মানে শুশুক? জলজ স্তন্যপায়ী। ইরাবতী, বটল নোজ কত জাতের যে শুশুক আছে। ’ আনিস ভাই বলেছে ত্রিদিবকে। ওই আনিস ভাইয়ের কাছেই ঢাকা শহরের চার নদীর কথা প্রথম শুনেছিল সে।

‘হ, শুশুক। আমরা কইতাম শুশু মাছ। হের কাহিনি জানেন তো? ’

‘কী কাহিনি? ’ নিমোর মুখ মুছিয়ে দিতে দিতে ত্রিদিব বলে।

‘নতুন বউ আইছিল বুড়িগঙ্গার ঘাটে গোসল করতে। সে থইথই পানির মধ্য নাইমা চঞ্চল হয়া উঠল। তার যৌবন যেন ঠিকড়ায় পড়ে। লগের সখীরা সিনান সাইরা কেউ গেছেগা, কেউ খাড়ায়া আছে, কেউ কেউ বিরক্তও হইতাছে। নতুন বউ তো আর পানি থেইকা উঠে না। এমন সময় ওই ঘাটে সিনান করতে আসে সেই বউয়ের ভাসুর। ভাসুর বোঝেন তো? ’ আবারও প্রশ্ন করে মাঝি।

‘জি বুঝি। ’

‘তো হইল কি ইন্দুগো মইদ্যে নিয়ম আছে ভাসুররে মুখ দেখানো যাইবো না। নতুন বউ এমন ভিজা শরীর লইয়া কই লুকায় কন? উপায়ান্তর না পায়া বউ পানিতে ডুব দিয়া লুকাইল। এই ডুব আইজও দিল কাইলও দিল। আর উঠল না। হের পর সে হইল শুশু মাছ। ’

‘বাহ! এত দারুণ একটা গল্প কখনো শুনিনি তো। আপনি এই গল্প কীভাবে জানেন? ’

‘লোকের মুখে শুনছি। তা ছাড়া আমি নিজে নদীর দুই পাড়ে কত শকুন বয়া থাকতে দেখছি। এহন তো দেখি গরুর অভিশাপে শকুন মরার অবস্থা। ’

নৌকা অন্ধকার পানি ঠেলে অল্প অল্প বৈঠার ঘায়ে এগিয়ে যেতে থাকে। ত্রিদিব খেয়াল করে তার পরনের শার্টটা ঘামে ভেজা। শার্টের দুটো বোতাম খুলে দেয় ত্রিদিব। না, হাঁসফাঁস ব্যাপারটা যাচ্ছেই না তার। গলা শুকিয়ে বুকের ভেতরটা খালি হয়ে যাচ্ছে, ঠিক গতকাল রাতে যেমন লেগেছিল। নিমো দাঁত দিয়ে চিপস ভাঙছে, সেই কড়কড় শব্দটা মাথার ভেতর অস্বস্তি তৈরি করে। ত্রিদিব যতই শিশুটির হাত আঁকড়ে ধরতে চাইছে ততই তার হাত শিথিল হয়ে যাচ্ছে।

‘বাবা, আপ্নের শরীর খারাপ লাগতাছে? ’ মাঝি বলে।

‘আংকেল, একটু পানি হবে? ’

এই বলে ত্রিদিব নৌকার পাটাতনে শুয়ে পড়ে। মাঝি বৈঠা রেখে প্রথমেই শিশুটিকে ধরে। পাটাতনের নিচ থেকে একটা মিনারেল পানির হলুদ হয়ে যাওয়া বোতল বের করে। কিন্তু তাতে পানি নেই। মাঝি বুঝতে পারে না এই পরিস্থিতিতে তার কী করা উচিত। ত্রিদিব চিৎ হয়ে শুয়ে আছে নৌকায়। তার মাথার ওপরে অন্ধকার একটা আকাশ। তারা নেই কোনো, কেবল দূরগামী লঞ্চের সার্চ লাইটগুলো ক্রিস ক্রস খেলছে আকাশে। ত্রিদিবের মুখের ওপর ঝুঁকে আছে মাঝির মুখ। অন্ধকারে এতক্ষণ সে মাঝির মুখ দেখতে পায়নি, শুধু কথা শুনেছে, এখন কাছে আসায় সে ভালো করে দেখছে তাকে। ত্রিদিবের মনে হয় মাঝির মুখটা মিকেলাঞ্জেলোর মতো। এমনকি ঢাকার চতুর্থ যে নদীটির নাম ত্রিদিব মনে করতে পারছিল না, সেই নামটিও তার মনে পড়ে যায়। সে বিড়বিড় করে বলতে থাকে, ‘পশ্চিমে ভাসান দিলাম বালু নদীর গয়না। ’ ত্রিদিব দেখে মিকেলাঞ্জেলো তার দিকে তাকিয়ে হাসছেন। নিমোর মুখটা ফোকাস থেকে ডিফোকাস হয়ে যাচ্ছে। মাতৃগর্ভের ভেতরে শিশু যেভাবে ভাসে, নৌকায় ঠিক তেমনি দুলুনি অনুভব করে ত্রিদিব।

‘খাওয়ার পানি তো নাই বাবা। নদীর পানি খাইবেন? নাইলে ঘাট পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। আপনার কেমন লাগতেসে আমারে বলেন। ’

ত্রিদিব বাচ্চাটার দিকে কিছু একটা ইংগীত করে। মাঝি খেয়াল করে তার নৌকা ঘাট থেকে অনেক দূরে।মাঝি নিমোকে কোলে বসিয়ে কোনো রকমে দ্রুত নৌকার বৈঠা চালায়। ত্রিদিব তখনো চৈতন্য হারায়নি। অন্যমনস্ক হওয়ার দরজাটা সে হাতড়াচ্ছে। আকাশগঙ্গার রেখাটা চেনার চেষ্টা করছে। সেই কবে কালারমার ছড়ার হারাধন দা তাকে আকাশের গায়ে সহস্র তারাদের অক্ষরমালা চিনিয়েছিল। কিছুই স্পষ্ট মনে পড়ছে না তার। কালো বুড়িগঙ্গা তখনো ধুঁকছে। নদীতে জলের ধ্বনি, ট্রলারের একটানা স্বর আর ঘটনাচক্রে ফেঁসে যাওয়া তিনটি মানুষের বেদনা আবহসংগীতের মতো বাজতে থাকে।