বাঙালির পরিচয় ও বাংলা ভাষা

ক্লিন্টন বুথ সিলি এবং তাঁর বই বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড, যেখানে আলোচনা করা হয়েছে রিজিয়া রহমানের ওপর
ক্লিন্টন বুথ সিলি এবং তাঁর বই বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড, যেখানে আলোচনা করা হয়েছে রিজিয়া রহমানের ওপর
>জীবনানন্দের ওপর পূর্ণাঙ্গ গবেষণাধর্মী একটি সাহিত্যিক জীবনীগ্রন্থ আ পোয়েট অ্যাপার্ট রচনার বাইরে মার্কিন গবেষক ও লেখক ক্লিন্টন বুথ সিলি তাঁর ইংরেজি বই বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড–এ দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন কথাশিল্পী রিজিয়া রহমানের ওপরে। এই গ্রন্থের ‘সিরিয়াস সাহিত্য: দ্য প্রোজ ফিকশন অব বাংলাদেশ’জ রিজিয়া রহমান’ শিরোনামের প্রবন্ধ থেকে বাঙালির আত্মপরিচয় ও ভাষা–সম্পর্কিত অংশবিশেষের অনুবাদ করেছেন ফারুক মঈনউদ্দীন

বাঙালিদের অনেককেই ১৯৪৭ সালে তাদের পরিচয়ের স্বরূপ নিয়ে যা ভাবতে হয়েছে, সেটি হচ্ছে তাদের জাতীয়তা। তারা কি সত্যিকার ভারতীয়, নাকি পাকিস্তানি? যারা এ ব্যাপারে সন্দিহান ছিল, ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের কাছে এটা অবশ্য পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে ধর্ম তাৎপর্যপূর্ণ হলেও বাঙালি জাতীয়তা, বিশেষ করে ভাষা পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বসবাসকারী অনেকের কাছে পরিচয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে অধিকাংশ বাঙালির কাছে ধর্ম কিংবা অতীতের রাষ্ট্রীয় অধিভুক্তির চেয়ে জাতীয়তা অনেক বেশি শক্তিশালী পরিচয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি সে বছরও জাতীয়তা নিয়ে নিজেদের পরিচয়ের ব্যাপারে কিছু বাঙালির সমস্যার কথা আমরা সবাই জানি।

পরিচয় অনুসন্ধান প্রবলভাবে আধুনিক সাহিত্যের আওতার মধ্যে পড়ে, বিশেষ করে কথাসাহিত্যে। রিজিয়া রহমানও বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ছয় বছর পর, ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত তাঁর উত্তর পুরুষ উপন্যাসে পরিচয়ের সংকটের একটি দিক তুলে ধরেছেন। উত্তর পুরুষ উপন্যাসের ব্যাপ্তি ডিক্রুজ পরিবারের অ্যান্টনি, তার স্ত্রী, তাদের ২৪ বছর বয়সী মেয়ে লিসি ও ২২ বছর বয়সী ছেলে বনির কয়েক বছরের জীবন। তারা থাকে বর্তমান চট্টগ্রামের পুরোনো এলাকা ফিরিঙ্গিবাজারে—ফিরিঙ্গি হচ্ছে ফ্র্যাঙ্কস অথবা ইউরোপীয় বিদেশিদের বোঝাতে আরবি-ফারসি শব্দের ভারতীয় রূপ। বাংলায় ফিরিঙ্গি বলতে পর্তুগিজদের সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় কিংবা ইউরোপীয়দের মিশ্র রক্তের লোকজনকে বোঝায়।

রিজিয়া রহমান অ্যান্টনির বর্ণনা দেন ইতিহাসে আবিষ্ট একজন মানুষ হিসেবে। এ রকম একটি চরিত্রের মাধ্যমে লেখক তাঁর কাহিনির মধ্যে ইতিহাসকে সঞ্চালিত করতে সক্ষম হন, সে ইতিহাস ভারতের পর্তুগিজদের এবং বাংলার সাধারণ, বিশেষ করে চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে। ডিক্রুজদের পরিচয়ের জন্য ইতিহাস একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ঠিক যেমন অ্যান্টনির গর্ব কিংবা বনির অপরাধও তাদের ইতিহাসবোধ থেকে উদ্ভূত—ইতিহাসের এই বোধ হচ্ছে, তারা বাংলাদেশে আসা পর্তুগিজদের ‘বংশধর’; আমার ধারণা, আমাদের লেখকও ইতিহাসকে একটি চরিত্রের পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবেই কেবল দেখেন না, দেখেন সব মানুষের পরিচয়ের অংশ হিসেবে।

তাঁর বিশ্লেষণে বাংলাদেশের মানুষের ধমনি দিয়ে বহু ধরনের মানুষের রক্ত প্রবহমান, সেই সব মানুষ এই অঞ্চলে এসেছে পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ–পূর্ব থেকে এবং এমনকি দক্ষিণ, যেখান থেকে পর্তুগিজরা এসেছে তাদের জাহাজে চড়ে।তাঁর মতে, এই বর্ণসাঙ্কর্য ছিল উপকারী। একইভাবে রিজিয়া রহমান বলেন, ‘বাংলাভাষা ক্রমাগত অর্থাৎ যুগ যুগান্তর ধরে নানা বিদেশি শব্দ চয়ন করে তার শ্রী এবং গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে।’ (বং থেকে বাংলা)

ভাষার উল্লেখ উত্তর পুরুষ উপন্যাসের রচনাশৈলী বিশ্লেষণের দিকে পথনির্দেশ করে। এখানে দুটো ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে—বাংলা ও ইংরেজি। আমাদের কথক পর্তুগিজ ফিরিঙ্গিদের ভাষা বর্ণনা করেন এভাবে, ‘এ পাড়ার লোকদের মাতৃভাষা যদিও পর্তুগিজ হওয়া উচিত, তবু কয়েক শ বছরের ধোপে তাদের মুখের ভাষার অনেক রূপান্তর ঘটে শেষ পর্যন্ত ককনি ফিরিঙ্গি বুলি নামক এক ইংরেজিতে রূপান্তরিত হয়েছে।’ এতদ্‌সত্ত্বেও, যে ইংরেজি আমাদের লেখক ফিরিঙ্গিদের মুখে বলান, সেটি ইংরেজদের দিয়ে বলানো ভাষার চেয়ে আলাদা ধরনের নয়।

উপন্যাসজুড়ে ব্যবহৃত হয়েছে সাধারণ বাংলা কথ্য ভাষা। চট্টগ্রামের স্থানীয় মানুষের ব্যবহৃত বাংলা প্রমিত বাংলার চেয়ে বেশ আলাদা। সত্যি বলতে, সে ভাষা যারা কেবল প্রমিত ভাষাটাই জানে, তারা বুঝতে পারে না। যদিও লেখকেরা শৈল্পিক আবহ আনার জন্য প্রমিত ভাষা থেকে, যেমন আঞ্চলিক ভাষার দিকে সরে আসতে পারেন এবং আসেনও—বাঙালি চরিত্রদের সবার সংলাপ চট্টগ্রামের ভাষায় পরিবেশন করাটা (প্রকৃতপক্ষে তিনি যদি সেটা করতে সক্ষমও হতেন) রিজিয়া রহমানের জন্য হতো অর্থহীন। কারণ, তাহলে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করা বাঙালিরা ছাড়া আর কেউ তাঁর বইটা পড়তে পারতেন না। অবশ্য এই উপন্যাসের যেকোনো পাঠক অন্ততপক্ষে প্রসিদ্ধির কারণে চট্টগ্রামের বাংলা সম্পর্কে জানেন। এসব চরিত্রের বলা চট্টগ্রামের ভাষা সম্পর্কে পাঠকদের সতর্ক করার জন্য লেখক সেখানকার ভাষায় একজন বাঙালির প্রথম সংলাপ আমাদের জানান। অ্যান্টনির জন্য চা আর এক দিনের বাসি খবরের কাগজটা এনে দেওয়ার সময় আজহার আলীর সহকারী তাকে বলে, ‘গনজালেস সাব অ’নার (আপনার) পর দাদা না?’ ‘অ’নার’ শব্দের অর্থ বুঝতে আমাদের অসুবিধা হতে পারে ভেবে লেখক পরপরই বন্ধনীর মধ্যে ‘আপনার’ শব্দটা ঢুকিয়ে দেন।

যদিও তিনি ধরে নিতে পারেন না যে তাঁর পাঠকেরা চট্টগ্রামের বাংলা জানেন, রিজিয়া রহমান নিশ্চিতভাবে জানেন যে তাঁর পাঠকেরা যথেষ্ট পরিমাণে ইংরেজি বোঝেন। এতদ্‌সত্ত্বেও তিনি একটি বাংলা উপন্যাসে ইংরেজি ব্যবহারের স্বাধীনতার অপব্যবহার করেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টনির ভাষা বাংলাই ব্যবহার করা হয়েছে। একইভাবে কোনো একটি শব্দ কিংবা এখানে-সেখানে দুয়েকটি পুরো বাক্য ছাড়া ডিক্রুজদের মধ্যকার কথাবার্তাও বাংলায়। এমনকি বিদেশি নাবিকদের প্রতি অ্যান্টনির সম্ভাষণ, কিংবা তার সংলাপগুলো আমরা ধরে নিতে পারি সব ইংরেজিতে ছিল, কিন্তু লেখক সেসব উপস্থাপন করেছেন অর্ধেক ইংরেজিতে, অর্ধেক বাংলায়। বিদেশি নাবিকেরা এবং একবারের জন্য আমেরিকানরাও তিনি যা বলেন, পুরোপুরি বুঝতে পারে এবং বাংলা আর ইংরেজির মিশ্রণে জবাবও দেয়। এক দৃশ্যে ইংরেজরা একজন আরেকজনের সঙ্গে ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে কথা বলছে, ইংরেজিতে শুরু করে শেষ করছে বাংলা দিয়ে। এটা কোনোভাবেই ইঙ্গিত করে না যে এই ইংরেজ বা আমেরিকান চরিত্ররা বাংলায় কথা বলে। তাঁর বাঙালি পাঠকদের ইংরেজি বোঝার সক্ষমতা আছে, এটা জেনেও বাস্তবে বলা ইংরেজি সংলাপগুলো উপস্থাপন করা
হয়েছে বাংলায়—এটা হচ্ছে আমাদের লেখকের ব্যবহার করা রচনাশৈলীর একটা কৌশল।

সম্বোধনে এ রকম ইংরেজির ব্যবহার ছাড়াও বাক্যের মধ্যে গেঁথে দেওয়া বিচ্ছিন্ন ইংরেজি শব্দ পাওয়া যায় রিজিয়া রহমানের বাংলা গদ্যে। যে দৃশ্যে বনি তার হোন্ডা মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে নেওয়া মিশ্র গদ্যশৈলীর চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত এ রকম—চূড়ান্ত এই অর্থে যে এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ইংরেজি শব্দ রয়েছে: ‘পথের ভিড় এখানে কিছুটা পাতলা। একটা হেভি লোডেড ট্রাককে হঠাৎ ওভারটেক করে স্পিডমিটারে গতি বাড়াল বনি।’ এই বাক্যে ইংরেজি শব্দ ‘হেভি লোডেড ট্রাক’, ‘ওভারটেক’, ‘স্পিড’, ও ‘মিটার’ লক্ষণীয়। কোনো ইংরেজি শব্দ ব্যবহার না করে একই বক্তব্য বাংলায় রাখা যেত। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা উচিত, এসব ইংরেজি শব্দ এমন স্বাভাবিকভাবে ব্যবহৃত হয়, যেন এগুলো সাধারণ কথ্য বাংলার অংশ। এগুলো এবং এ রকম বহু ইংরেজি শব্দ আধুনিক বাংলা গদ্যশৈলির স্বাভাবিক অঙ্গ।

যদিও ‘হেভি লোডেড ট্রাক’–এর মতো শব্দ সহজেই কোনো যথাযথ অ-ইংরেজি ভাষা দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যেত, কিন্তু বাংলায় নির্দিষ্ট কিছু ইংরেজি শব্দ রয়েছে, যেগুলোর কোনো সঠিক প্রতিশব্দ নেই। যেমন, ‘সিরিয়াস’ শব্দটি। বাংলাদেশি লেখকদের এক পরিচিতিকোষের ব্লার্বে রিজিয়া রহমান সম্পর্কে লেখা বক্তব্যে রয়েছে: ‘লেখার ব্যাপারে অত্যন্ত সিরিয়াস।’ ইংরেজি শব্দ ‘সিরিয়াস’ বাঙালি লেখকদের সম্পর্কে বাংলা প্রকাশনায় বেমানান নয়। আমি মনে করি, ‘সিরিয়াস’–এর পরিবর্তে ‘ঐকান্তিক’ শব্দটি অথবা ‘মন দিয়ে কাজ করেন’ শব্দগুচ্ছ প্রয়োগ করা যেত। তবে যেকোনোভাবেই হোক ‘সিরিয়াস’ শব্দটিকে এখানে সেরা বাছাই বলেই মনে হয়। উত্তর পুরুষ উপন্যাসে আমরা দেখতে পাই, রিজিয়া রহমান তাঁর চরিত্রদের মুখে ঠিক এই শব্দ বসিয়ে দিয়েছেন, তবে অন্য অর্থে।

মানুষের পরিচিতির জন্য ভাষা সন্দেহাতীতভাবে একটা মৌলিক উপাদান। বাংলা ভাষা কখনো কখনো হতে পারে বাঙালিয়ানার প্রতিরূপ। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র সরকারি ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষার সমর্থনে জীবন দিয়েছিল। এখন ২১ ফেব্রুয়ারি বার্ষিকী উদ্‌যাপনের সময় বাংলার পাশাপাশি চালু থাকা ইংরেজির দাপ্তরিক মর্যাদার পরিবর্তে বাংলা যাতে একমাত্র সরকারি ভাষা হয়, তার আহ্বানের পুনরাবৃত্তি ঘটে। একই সঙ্গে এমনও শোনা যায় যে বাংলাকে হতে হবে বিশুদ্ধ বাংলা, সেটা যে রকমই হোক না কেন, তাই বাংলা শব্দকোষ থেকে যেসব ইংরেজি শব্দ খুব সাধারণ কথ্যভাষায় ব্যবহৃত হয়, সেগুলো বাদ দেওয়া উচিত। প্রশ্নাতীতভাবে বাংলাদেশের প্রধান ভাষা বাংলা, তবে একমাত্র নয় (বাংলা আর ইংরেজি মিলিয়ে দুটোও নয়), তেমনি বাঙালিরা সন্দেহাতীতভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশিষ্ট জাতিগোষ্ঠী, তা-ও একমাত্র নয়। বাংলাদেশের নাগরিক নয়, এমন বাঙালি যে আছে কেবল তা-ই নয়, বাংলাদেশের এমন নাগরিকও আছে, যারা বাঙালি নয়।

তাহলে বাংলাদেশি একজন নাগরিকের চরিত্র কেমন? জবাবটা সহজ নয়। কারণ, আমরা যেমন জানি এবং রিজিয়া রহমানও আমাদের যেমন বলেন, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী গঠিত হয়েছে যুগ যুগ ধরে এখানে আসা বিভিন্ন জাতির মধ্য থেকে। একক পরিচয়ের প্রশ্নটির সমাধান বাংলাদেশের সব নাগরিকের হয়ে এখানে দেওয়া হয়নি, যার সত্যাখ্যান করে ডিক্রুজ পরিবার। একজন বাঙালির মূল উপাদান বিশুদ্ধ বাংলা কী, সে প্রশ্নের জবাবও কোনো বাক্‌চাতুর্য না করে সরলভাবে দেওয়া হয়নি। কারণ, এই ভাষাভাষী মানুষের মতো বহু বছর ধরে বিভিন্ন মানুষ আর তাদের ভাষার সহবাসের ফল এটা।

এই প্রবন্ধকে আমি ‘সিরিয়াস সাহিত্য’ বলছি দুটি কারণে। প্রথমত, রিজিয়া রহমানের সাহিত্যকর্মগুলো ঐকান্তিক লেখা, কোনোভাবেই হালকা নয় বা পুরোপুরি আমোদজনক নয়। এগুলোর মধ্যে তিনি জটিল মানবিক বিষয়গুলো উদ্‌ঘাটন করেন—যেমন ফিরিঙ্গি পরিচয়ের বিষয়টি। উত্তর পুরুষ উপন্যাসে এটি তিনি করেছেন সহানুভূতিশীল, অন্তরঙ্গ এবং একই সঙ্গে ঐকান্তিকভাবে। দ্বিতীয়ত, একটি ইংরেজি শব্দকে (সিরিয়াস) একটি তৎসম অথবা সংস্কৃত থেকে নেওয়া বাংলা শব্দের (সাহিত্য) পাশাপাশি স্থাপন করে, আমি বোঝাতে চেয়েছি, উত্তর পুরুষ কী দেখায় এবং রিজিয়া রহমান তাঁর উপন্যাস বং থেকে বাংলার ভূমিকায় কী বলেন। সাদৃশ্যহীন মানুষ এবং ভাষাগুলো কেবল পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তা-ই নয়, অন্তত কিছু কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে এবং এখন যেটি বাংলাদেশ, সেখানে সহাবস্থান করছে এখনো। রক্ত এবং ভাষার অনিবার্য মিলন কখনো কখনো বাংলাদেশে কোনো একক ব্যক্তির পরিচিতির বিষয়টিকে জটিল করে ফেলে, তবে বাংলা ভাষা এবং তার সাহিত্য এ কারণে সমৃদ্ধ—যে সমৃদ্ধি রিজিয়া রহমানের কথা সাহিত্যে যথার্থভাবে উদাহরণসহ উপস্থাপিত হয়েছে।