বিচিত্রিতা : গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস

গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস  (১৯২৭—২০১৪)
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস (১৯২৭—২০১৪)

মার্কেসের চোখে য়োসার ঘুষি
গত শতাব্দীর বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের জন্ম কলম্বিয়ায়, সাহিত্যচর্চা করেছেন স্প্যানিশ ভাষায়। তাঁর প্রায় কাছাকাছি সময়ে স্প্যানিশ ভাষায় লিখে খ্যাতি অর্জন করা আরেক লেখক মারিও বার্গাস য়োসার সঙ্গে ১৯৬৭ সালে পরিচয় হয় মার্কেসের। দুজনের বন্ধুত্বও হয় দারুণ। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে একটা সময় মার্কেসের ওপর প্রচণ্ড খেপে যান য়োসা। মার্কেস সেই রাগের কথা হয়তো জানতেন না। একদিন এক চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে দেখা হয় তাঁদের। য়োসাকে দেখে বেশ উল্লসিত হয়ে ‘মারিও’ বলে ডাক দিলেন মার্কেস। সেই ডাকের উত্তরে রাগে, ক্ষোভে অস্পষ্ট স্বরে মার্কেসকে য়োসা কী যে বললেন, ঠিক বোঝা গেল না। তবে উপস্থিত সবাইকে অসম্ভব অবাক করে দিয়ে আচমকা মার্কেসের চোখে বেশ জোরেশোরে একটা ঘুষি মেরে বসলেন তিনি।

লেখা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন
বিশ্বখ্যাত ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড লেখার আগে আরও চারটি বই প্রকাশ করেছিলেন মার্কেস। বইগুলোর অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য তেমন সুখকর ছিল না। তাই একপর্যায়ে লেখালেখি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মোটামুটি পাঁচ বছর বন্ধ ছিল সাহিত্যসৃষ্টি। এরপর এগিয়ে আসেন তাঁর স্ত্রী, সংসার চালানোর সব ভার তুলে নেন নিজের কাঁধে। মার্কেসের হাতে আবার ফিরে আসে কলম। এরপর টানা ১৮ মাস এক দিনও বন্ধ থাকেনি লেখা। এভাবেই সৃষ্টি হয় তাঁর অমর উপন্যাস ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড।

নিজের লেখার চেয়ে বেশি প্রিয় অনুবাদ
মার্কেসের অনেক বই ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন কিউবান-মার্কিন অধ্যাপক গ্রেগরি রাবাসা। তাঁর অনুবাদেই মূলত ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড সারা বিশ্বের পাঠকের হাতে পৌঁছায়। সাতটি ভাষা জানতেন তিনি। এক বন্ধুর মাধ্যমে রাবাসার খোঁজ পান মার্কেস। কিন্তু তখন তিনি মহাব্যস্ত। বছরখানেক অপেক্ষার পর এই অধ্যাপক রাজি হলেন অনুবাদ করতে। শেষমেশ যখন অনুবাদটি মার্কেসের হাতে এসে পৌঁছায়, দারুণ উচ্ছ্বসিত হয়ে তিনি বললেন, তাঁর নিজের লেখার চেয়ে এই অনুবাদ অনেক অনেক বেশি ভালো।

সূত্র: মেন্টাল ফ্লস, বুকস টেল ইউ হোয়াই ও টাইমস অব ইন্ডিয়াডটকম

গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির