পাবলো নেরুদার কবিতা

ভালোবাসার এক শ সনেট: ২৭
নগ্ন, তুমি সহজ যেমন কোনো হাত,
সূক্ষ্ম, নমনীয়, স্বচ্ছ, মৃণ্ময়, সুগোল।
চাঁদের গায়ের দাগ, আপেলের ভেতরের পথরেখা,
এসবই তোমার; নগ্ন, তুমি খুব কৃশতনু গোধুমের মতো।
তোমার একান্ত রং কিউবার নিশীথের নীল,
নগ্ন, আমি দেখতে পাই প্রতান তোমার ত্বকে, আকাশের তারা;
নগ্ন, তুমি দাঁড়িয়ে থাকো তামাটে ও অসামান্য, যেন
গির্জার সোনার রঙে গ্রীষ্মের পূর্ণতা।

নগ্ন, ছোট তুমি যে রকম তোমার হাতের নখ;
ঊষার গোলাপি সীমানায় কৃশ ও কুঞ্চিত তুমি
নিজেকেই ঠেলে দাও ভূগর্ভের দুনিয়ায়
আমাদের সংযম ও পোশাকের মাঝে যে সুড়ঙ্গের বিস্তার:
তোমার স্বচ্ছতা তার শিখাকে সাজায়, মেলে ধরে, কিংবা ঢেকে দেয়,
আর তুমি আবারও জন্মাও, নগ্ন যেমন তোমার হাত।

সারাংশ
আমি খুশি নিজের ওপর চাপানো আমার
মহৎ কর্তব্যগুলো নিয়ে। আমার জীবনে
অদ্ভুত আর পার্থিব নানা কিছু একসঙ্গে ভিড় করে আছে—
নশ্বর প্রেতাত্মারা যারা আমাকে বিপর্যস্ত করে,
নিঃশর্ত আকরিক হাতগুলো,
এক ঊনপঞ্চাশ বায়ু আমাকে যা আতঙ্কিত করে,
জ্বালা-ধরানো চুম্বন যা সৃষ্টি করে ক্ষতচিহ্ন, নিদারুণ বাস্তবতা
আমার ভাইদের,
আমার অকরুণ ব্রত জাগরূক থাকার,
একাকিত্বের প্রতি আমার টান—নিজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা
নিজস্ব বাতিকের ভঙ্গুরতার ভেতর।
এই কারণে—পাষাণের ’পরে জল—আমার সমস্ত জীবন
সংযম ও ভাগ্যের মাঝখানে চিৎকার করে বলেছে নিজের কথা।