সময়ের পদাবলি

অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
>বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মুখর হয়েছে দেশবাসী। কবি-সাহিত্যিকেরাও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁদের কলমে। এখানে থাকল সময়ের উত্তাপ ধারণকারী কয়েকটি কবিতা।

টোকন ঠাকুর
সমান্তরাল

তুমি অন্ধ হয়ে গেছ, ফলে

তুমি যাকে বলছ পাখি

ওগুলো তো ভীতসন্ত্রস্ত কবুতর

যাদের ধরে-বেঁধে আনা হয়েছে শান্তির নামে।

তুমি যাকে বলছ ফুল

তুমি তো জানোই না

ওগুলো বন্দুকের গুলি।

তুমি যাকে বলছ উন্নয়ন, সম্পদ

চোখ থাকলে একবার দ্যাখো—

ওগুলো মানুষের খুলি।

তুমি যাকে বলছ সংস্কৃতি, সভ্যতা

ধর্ষিতা মেয়েটি জীবন দিয়ে লিখে রেখে যায়—

                                সব কথার কথা।

তুমি উৎসবে ব্যস্ত, অনুগামীরা দিচ্ছে হাততালি

এদিকে রক্তাক্ত, নিথর দেহটি পড়ে আছে—

                                হু হু করে হাহাকার

আজ কার মা’র বুক হলো খালি?

নওশাদ জামিল
আবরার

এ কেমন ঢেউ? ভালোবাসা ভেসে যায়

ঘৃণার সাগরে ডুবে যায় আবরার

ক্ষোভের তুফানে চুরমার সবকিছু

মানবদরদি কোথাও কি নেই আর?

ঘৃণার সাগরে উঠেছে মরণঢেউ

তুমুল আঘাতে মানবতা বরবাদ

মানুষ মরছে, পৃথিবী কাঁদছে আজ

এ ঢেউ রুখবে আছে কি প্রেমের বাঁধ?

দানব পেতেছে কাঁটার করুণ ফাঁদ

মানব কীভাবে চুপচাপ আছে বসে?

পশুরা হাসছে, শিশুরা কাঁদছে আজ

বন্ধু, দাঁড়াও মানুষকে ভালোবেসে।

মানুষ বাঁচাও, বাঁচাও সবুজ গ্রহ

বন্ধু, প্রেমের পথে নিশিদিন রহো।

তামিম ইয়ামীন
কালসন্ধ্যা

বাকিটা সবুজ গিলে গিলে খেয়ে

পরিধি বাড়ায় বৃত্ত

আঁতুড়ঘরেই জন্মাবে লাশ

সেখানেই শেষকৃত্য।

চামড়ার গায়ে উলকির মতো

টুঁটিফাটা কিছু ছিদ্র

রক্তের দাগ মুছে দেবে নাকি

এই ম্লান মানচিত্র।

উজানের দিকে ছলকাবে কেন

রক্তের নদী বন্ধ্যা

কত দিবসের গ্লানি জমে জমে

নামে রে এমন সন্ধ্যা!