অবন ঠাকুরের আঁকায় অবাক সাহেব-শিল্পী

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অলংকরণ: তুলি
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অলংকরণ: তুলি

একদিন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে খবর এল, শান্তিনিকেতন ঘুরে একজন পশ্চিমা শিল্পী আসছেন তাঁর বাড়িতে। তিনি নাকি দ্রুত প্রতিকৃতি অঙ্কনে খুবই দক্ষ। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের ছবি তিনি এঁকেছেন, এ যাত্রায় জোড়াসাঁকো এসে অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ ও সমরেন্দ্রনাথ—এই তিন ভাইয়ের প্রতিকৃতি আঁকবেন। তো সেই সাহেব শিল্পী যথারীতি একদিন এলেন। এসে অল্প আলাপ করেই আঁকতে বসে গেলেন। অবনীন্দ্রনাথের ছবি যখন আঁকার পালা এল, তখন তিনি আনমনে একটা কাগজে কীসব আঁকিবুঁকি করছিলেন। সাহেবের ছবি আঁকা শেষ হলে তিনি অবনীন্দ্রনাথকে যেই না তাতে সই করে দিতে বলেছেন, অমনি অবন ঠাকুর তাঁর সামনে বাড়িয়ে দিলেন একখানি কাগজ। তাতে ওই শিল্পীর একটি চমৎকার প্রতিকৃতি। সাহেব তো হতভম্ব। তিনি ভাবতেন, তাঁর মতো দ্রুত স্কেচ আর কেউ করতে পারে না, কিন্তু সে তো আর ধোপে টিকল না। অবাক হয়ে তিনি অবনীন্দ্রনাথকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার মুখের দিকে না তাকিয়েই কীভাবে আঁকলেন?’ অবন ঠাকুর হেসে জবাব দিলেন, ‘তুমি যতক্ষণ স্কেচ করছিলে সায়েব, তারই মধ্যে এটা এঁকে ফেলেছি। একে আমি বলি মুখোশ। তবে এটা বাইরের মুখোশ নয়, ভেতরের। কেমন হয়েছে সায়েব?’ সাহেব–শিল্পী এবার তাজ্জব বনে গিয়ে শুধু বলতে পারলেন, ‘অমূল্য’।

সূত্র: মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের দক্ষিণের বারান্দা