তাঁদের বিচিত্রিতা

জর্জ অরওয়েল   (১৯০৩—১৯৫০)
জর্জ অরওয়েল (১৯০৩—১৯৫০)

বিচিত্র সব চাকরি

অ্যানিমেল ফার্ম, নাইনটিন এইটি ফোর ইত্যাদি উপন্যাসের জন্য খ্যাতি অর্জন করা জর্জ অরওয়েলকে মানুষ মনে রেখেছে কেবল লেখক হিসেবে। কিন্তু পুরোদমে লেখক হওয়ার আগে তিনি আরও অনেক রকম পেশা বেছে নিয়েছিলেন বিভিন্ন শহরে, বিভিন্ন সময়। সেই সব পেশা একটি অন্যটি থেকে একদম আলাদা। ঔপনিবেশিক আমলে ইংরেজ পুলিশ হিসেবে কাজ করেছেন তৎকালীন বার্মাতে। স্কুলশিক্ষক ছিলেন বেশ কিছুদিন। এরপর একটা সময় বইয়ের দোকানে চাকরি নিয়েছিলেন। ছিলেন সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অরওয়েল কাজ করেছেন বিবিসির হয়ে, একজন দক্ষ প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে। প্যারিসে যখন ছিলেন, বেশ দরিদ্র জীবন যাপন করেছেন তিনি। এমনকি বাসন ধোয়ার চাকরিও করেছেন সেখানে। অনেকের ধারণা, লেখক হয়ে ওঠার বাসনাতেই তিনি প্যারিসের জীবন নিয়ে নিরীক্ষা করেছেন; একে একরকম ‘দারিদ্র্যবিলাস’ বলা যেতে পারে! 

অসম্ভব চা-ভক্তি

চায়ের নেশা তো অনেকেরই থাকে, জর্জ অরওয়েল আরও একধাপ এগিয়ে নিজের চা-প্রীতিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর চা-ভক্তির উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘কীভাবে সত্যিকারের সুস্বাদু চা তৈরি করতে হয়’—এই মর্মে একটা গাইড পর্যন্ত লিখেছিলেন, নাম ছিল আ নাইস কাপ অব টি। বিভিন্ন রকম চা নিয়ে মজার মজার মন্তব্য করতেও পছন্দ করতেন অরওয়েল। যেমন তিনি বলতেন ‘আর্মি টি’ আসলে অতি কদর্য ধরনের চা, যা খেতে অনেকটা গ্রিজের মতো। 

স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তার

১৯৩১ সালে একবার গ্রেপ্তার হন জর্জ অরওয়েল। এই গ্রেপ্তার ছিল মূলত ইচ্ছাকৃত। তিনি তখন জীবন নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছেন। একের পর এক বিভিন্ন কঠিন আর তিক্ত অভিজ্ঞতার স্বাদ নিচ্ছেন। একবার তাঁর মনে হলো হাজতবাসের অভিজ্ঞতা অর্জন লেখক হওয়ার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এডওয়ার্ড বার্টন ছদ্মনাম নিলেন আর বেশ নিলেন একজন গরিব মাছ বিক্রেতার। এরপর প্রায় এক বোতল হুইস্কি খেয়ে রাস্তায় মাতলামি শুরু করলেন। যথারীতি গ্রেপ্তার হলেন। অপরাধ তেমন বড় কিছু ছিল না বিধায় আটচল্লিশ ঘণ্টা পর ছাড়া পেলেন। পরে তিনি ‘ক্লিংক’ শিরোনামের একটি লেখায় এ ঘটনাকে বেশ যত্নসহকারে তুলে ধরেছেন। 

সুত্র: বুকস টেল ইউ হোয়াই ও ক্লাসিকাল আর্টস ইউনিভার্স ডট কম


গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির