তিন তরুণের বই

আমি ইয়াসিন আমি বোরো ধান
প্রকাশক: কবিতাভবন
প্রচ্ছদ: আরফান আহমেদ
মুদ্রিত মূল্য: ১৩৪ টাকা।

তরুণ কবি বিজয় আহমেদের নতুন কবিতার বই ‘আমি ইয়াসিন আমি বোরো ধান। এই বইয়ে কবির কবিতাগুলো ভীষণ প্রকৃতি–সংলগ্ন। বাংলাদেশের জনমানুষ ও প্রকৃতি এখানে যেমন মূর্ত হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের মিথ, আখ্যানও প্রাণ পেয়েছে নতুন এই কাব্যগ্রন্থে। এই কবিতার বইয়ে আছে এমন এক আহ্বান, যে শুধু বলে:
‘সোনা পাতো কান বুকে দেখো কারবালা
পূর্ব কি পশ্চিমে আমি বাথানের গান;
বোরো ধান রুয়ে দাও বুকে, স্নেহ মেখে
নদীতে মারছে ঘাই গজারের ফানা।
আমার সিনার লাল গোশত কেটে নিয়ে
দেখো দমে দমে জপে আধফোটা চাঁদ;
ডানা ভাঙা প্রেম বুঝি এই জমিনের
জিন-পরিদের বুকে রাখেনি তো খাদ।
আমার মস্তক কেটে সিমারের পায়ে
দাও, ফসলের গানে বয়ে যাক ঢেউ;
অনাত্মীয় নই ভেবো দরদি গো তুমি
বোরো ধান ডেকে বুকে জড়ায়েছে কেউ।
মহাশোল ছুটে যেন বোরাকের ঘোড়া
ধান বুকে ক্ষীর দাও রোজ স্বাতী তারা।’
বিজয় আহমেদের এ কাব্যগ্রন্থে আছে ভিন্ন এক জগৎ, যা কবিতাপ্রেমীদের মুগ্ধ করবে।

বাস্তি
ইনতেজার হুসেইন
অনুবাদ: সালহে ফুয়াদ
প্রকাশক: ঐতিহ্য
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মুদ্রিত মূল্য: ৪০০
খ্যাতিমান উর্দু কথাশিল্পী ইনতেজার হুসাইনের বিখ্যাত উপন্যাস ‘বাস্তি’। এখানে মূর্ত হয়েছে দেশভাগ–উত্তর মানুষের সংকটগুলো। উপন্যাসটির বিশেষত্ব হলো, এটি আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় আমাদেরই গল্পের সঙ্গে, তবে ভিন্ন আঙ্গিকে। দেশভাগের প্রেক্ষাপটে রচিত এ উপন্যাসটি একটি বিচ্ছেদের আখ্যান যেখানে মূর্ত হয়ে উঠেছে উর্দুভাষী অভিবাসীদের স্থায়ীভাবে শিকড়চ্যুত হওয়ার বেদনা। শুধু তা–ই নয়, এই আখ্যানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের জন্মগাথাও। আবার এটি একটি পরিবারের একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার গল্পও বটে। এই উপন্যাসের বয়ানে উন্মোচিত হয় বাস্তবতার নানা তল; আকারে-ইংগীতে এটি আমাদের নিয়ে যায় এক অদৃশ্যলোকে, তাই এই বয়ানকে চেতন-অবচেতনের দোদুল্যমানতায় জাদুবাস্তবতাধর্মী বর্ণনাভঙ্গির একটা নতুন ঢং হিসেবেও দেখা যায়। উর্দু ভাষার আমেজ ও মেজাজকে অবিকৃত রেখে সেটিকে ঝরঝরে বাংলায় অনুবাদ করা ভীষণ কঠিন একটি কাজ। আর এই কঠিন কাজটাকেই শৈল্পিক কুশলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন সালেহ ফুয়াদ, যিনি বাঙালি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন একজন মহান উপমহাদেশীয় লেখকের সঙ্গে।

চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রবন্ধ
শাহাদৎ রুমন
প্রকাশক: ভাষাচিত্র
প্রচ্ছদ: খন্দকার সোহেল
মুদ্রিত মূল্য: ২৭০ টাকা।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস দীর্ঘই বলা যায়। এই দীর্ঘ চলার পথে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নিজস্বরূপ সৃষ্টি পেরেছে, এমনটা বলা যায় না। তবে বাংলাদেশর চলচ্চিত্রের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য কিছু তো আছেই। এ বইটি সেই বৈশিষ্ট্য অন্বেষণ করেছে। বইয়ে প্রবন্ধ রয়েছে চারটি। এর মধ্যে বাংলা চলচ্চিত্রর গান ও খল চরিত্র—এই দুটি বিষয় নিয়ে দুটি প্রবন্ধ এবং সমসাময়িককালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঢাকা অ্যার্টাক’ ও ‘ছিটকিনি’—এই দুই ছবি নিয়ে রয়েছে দুটি প্রবন্ধ। এই বইয়ে গবেষকের দৃষ্টিকোণ থেকে এ দেশীয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিষয়–আশয় বিশ্লেষণ করেছেন লেখক।