ঘুম

শর্মিলী অনন্তর মুখের পানে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল, কী চাই?

অনন্ত শর্মিলীর চোখে চোখ রেখে বলল,

ঘুম চাই, ঘুম, নির্ভেজাল ঘুম, চোখ বুজে ঘুমাতে চাই,

চোখের পাতা খুলে অন্ধকারে তাকিয়ে থাকা ঘুম নয়।

ঘুম? আমি কি ঘুমের দোকান খুলে বসে আছি নাকি, যত্ত সব।

হ্যাঁ, আমিও তা-ই বলি, কেউ ঘুমের দোকান খুলে বসে নেই,

তাহলে দুদণ্ড ঘুম কিনতাম পৃথিবীর বিনিময়ে হলেও।

তা যে হওয়ার নয়, তাহলে কি আর তোমার দরজায় আসি।

ওই যে আমার পাশের বাসার রৌদ্র, দিনরাত ঘুমায়।

খায় আর ঘুমায়, কোনো কাজ করে না,

আমি বলিনি এ কথা, এটা রৌদ্রের মা বলেন।

আমি তো বলি ঘুম খুব দুর্লভ।

যে পায় তার চেয়ে ভালো আর কে আছে।

আর আমি, রাতের প্রতিটি প্রহর কাটাই একটু ঘুমের আশায়।

প্রথম দিকে একটা-দুইটা এখন তিনটা-চারটাতেও ঘুম আসে না।

ঘুম কী, এখন তো প্রায় ভুলতে বসেছি।

দাও না আমায় একদণ্ড ঘুম।

তুমিই পারো একমাত্র। এ ছাড়া যে আর উপায় নেই।

সেদিন শর্মিলী শুধু এটুকুই বলেছিল,

ঘুম না এলে আমি কী করতে পারি,

দোকানে ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায়, সেখানে চেষ্টা করো।

এত প্যাঁচাল সামলানোর সময় আমার নেই, আমি যাই।

সেই তো চলে গেল, কিন্তু অনন্ত! অনন্ত কি এখনো না ঘুমিয়ে থাকে?

না, অনন্ত ঘুমাতে চেষ্টা করেছিল।

অনন্ত এখন ঘুমায়, অনন্ত ঘুমায়। কার সাধ্য তাকে ডেকে তোলে।

এখন শুধু একজনেরই ঘুম আসে না, সে শর্মিলী।

জেগে থাকে সবকিছু ভুলে।

-সহসভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা