চের জন্য নিবেদিত কবিতা

>বিপ্লব আর চে গুয়েভারা এখন সমার্থক। আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া এই বিপ্লবীর মৃত্যুর পর বিভিন্ন দেশে তাঁকে নিয়ে কবিরা লিখেছেন অজস্র কবিতা। তাঁর জন্মদিনে এখানে থাকল চের মাতৃভাষা স্প্যানিশে লেখা তিন দেশের তিনজন কবির কতিার অনুবাদ। কবিতাগুলো ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জাভেদ হুসেন

চে গুয়েভারার শেষযাত্রা 

ভিনসেনতে এলেইহানদ্রে

কে
নাড়ায়
সবুজ না হওয়া
ছায়া?

হাওয়া
জ্বলে ওঠে।
চাঁদ
আরও লাল
আদিম
রাত
এখনো আলোহীন

এই চাওয়া
শেষ ।
কী সুন্দর চোখ
এই মুখ

ঘুমন্ত
সে বয়ে যায়
এই স্বচ্ছতা ধরে
সীমানাহীনের দিকে
অর্গল নেই কোনো !

ভিনসেনতে এলেইহানদ্রে
ভিনসেনতে এলেইহানদ্রে (১৮৯৮-১৯৮৪) স্পেনের কবি। ১৯৭৭ সালে নোবেল পুরষ্কার পান। ওপরের কবিতাটি তাঁর নির্বাসনে থাকার সময় লেখা।


ওরা যা স্বপ্নেও ভাবেনি
এলিসেও দিয়েগো

আজ আমাদের বলা হয়
তুমি নাকি সত্যিই মরে গেছ
তোমাকে নাকি শেষপর্যন্ত
ধরে ফেলেছে ওরা

আমি জানি ওরা ভুল
ওরা কি ভাবছে আমরা বিশ্বাস করব
তুমি নিরেট মর্মর পাথরের মূর্তি
থমকে দাঁড়িয়ে আছ ইতিহাসের দেয়ালে
যেখানে চাইলেই যে কেউ
তোমায় ধরে ফেলতে পারে

আমি জানি, তুমি
আগুন ছাড়া ছিলে না আর কিছু
তুমি আলো তুমি হাওয়া
আমেরিকার দেশগুলোর স্বাধীনতা
উসকে দিয়েছ তুমি যেখানে আজ
ওরা তা স্বপ্নেও ভাবেনি কখনো
চে গুয়েভারা

এলিসেও দিয়েগো
কিউবার কবি এলিসেও দিয়েগো (১৯২০-১৯৯৪) চের মৃত্যুর পর লেখেন এই কবিতা। ১৯৫০-এর দশকে কিউবার ‘অরিজিনেস’ সাহিত্য দলের অংশ ছিলেন এলিসেও দিয়েগো। তিনি মূলত গীতিকবি ও ছোট গল্প লেখক। অনেক রূপকথা অনুবাদ করেছেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কবিতা সরাসরি রূপকথার ওপর ভিত্তি করে লেখা।



চে
হুলিও কোরতাসার

আমার একটা ভাই আছে
আমি তাকে দেখিনি কখনো
তাতে কী এসে যায়
আমার একটা ভাই আছে
সে ভাই পাহাড় পার হয়ে যায়
যখন আমি ঘুমিয়ে থাকি।
আমি তাকে ভালোবাসি আমার মতো করে
আমি তুলে নেই তার কণ্ঠস্বর
সে কণ্ঠস্বর জলের মতো স্বাধীন
হেঁটে হেঁটে সময় পার হয়ে যাই
তার ছায়ার কাছাকাছি

আমাদের দেখা হয়নি কখনো
কিন্তু তাতে কী
আমার ভাই জেগে থাকে
যখন আমি ঘুমিয়ে
আমার ভাই বলে, ওই দেখ আমার প্রিয় তারা
অন্ধকার পেরিয়ে রাতের

হুলিও কোরতাসার
ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, কবি হুলিও কোরতাসার (১৯১৪-১৯৮৪)। আর্জেন্টিনার এই লেখক বহু কবি-লেখককে প্রভাবিত করেছেন। হিস্পানি সাহিত্য জগতে নতুন ধারার প্রবর্তকদের অন্যতম তিনি। চে গুয়েভারার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে একটা চিঠি লিখেছিলেন হুলিও কোরতাসার। সেই চিঠির শেষে ছিল এই কবিতা।