>দিন কয়েক আগে মারা গেছেন শিশুসাহিত্যিক ও মুক্তিযোদ্ধা আলম তালুকদার। ২০১১ সালে নেওয়া এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নানা স্মৃতি মেলে ধরেছিলেন আলম তালুকদার।
১৯৭১-এর রণাঙ্গনের যোদ্ধা আলম তালুকদার নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ৮ জুলাই জাতীয় পতাকায় মুড়ে গার্ড অব অনার ও বিউগলের করুণ সুর বাজিয়ে সমাহিত করা হয় মুক্তিযোদ্ধা, ছড়াকার-শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদারকে। বেঁচে থাকতে গুরুগম্ভীর সাহিত্যসভাকে আনন্দসভায় পরিণত করতেন তিনি। শত মানুষের ভিড়ে হুংকার দিয়ে ছড়ায় ছড়ায় চমকে দিতেন। ছড়া অন্তঃপ্রাণ আলম তালুকদার ছিলেন প্রচণ্ড আড্ডাবাজ আর রসিক। পান ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। জীবন ছিল কৌতুকপ্রধান, হাস্যমুখর ও প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ। তাৎক্ষণিক মুখে মুখে ছড়া বলে সর্বত্র হাসি আর আনন্দের জোগান দিতেন যখন-তখন। শুধু রস নয়, সমাজের অসংগতিগুলোকে চিহ্নিত করতেন ছড়ার ছন্দে। সব বিষয় নিয়েই তিনি লিখেছেন। মাঝেমধ্যে তাঁর ছড়া শৈল্পিক কারণে কবিতায় পরিণত হয়েছে। আলম তালুকদারের বিচরণ আর আড্ডার প্রিয় জায়গা ছিল আজিজ সুপার মার্কেট, পাঠক সমাবেশ, কাঁটাবন আর বাংলা একাডেমির বইমেলার প্রাঙ্গণ। বই নিয়ে তাঁর স্লোগান ছিল, ‘পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’।
৬ জুলাই ২০২০, মৃত্যুর মাত্র দুদিন আগে তাঁর লেখা সর্বশেষ ছড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেছিলেন:
সব আশা
... যেসব আশা করে মানুষ
হয় না সবই পূর্ণ
উল্টোভাবে জব্দ মানুষ
দর্প টর্প চূর্ণ! ...
মরবে না সে আশা করে
এই আশাটাই বাদ
আশায় আশায় আমরা বোকা
বানাই মরণ ফাঁদ!