সাপ, গুইসাপ, বক ও অনলাইন ক্লাস

>করোনাকালের বাস্তবতা নতুন সব উপলব্ধির সামনে হাজির করেছে আমাদের। এই লেখায় তেমনই কিছু উপলব্ধির কথা জানাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এক তরুণ লেখক।

কুয়ার পানির মধ্যে একটা গুইসাপ গাছের গুঁড়ি থেকে বের হলো। আস্তে-ধীরে সাঁতার কেটে অন্য পারে গেল। কিছুক্ষণের জন্য তাকে দেখা গেল না। আবার যখন দেখা গেল তখন সে গাছের গুঁড়িটার কাছাকাছি ফিরেছে। মাছ ধরেছে। সেই মাছ মুখে নিয়ে সে একটা ভাসন্ত কলাগাছের টুকরার ওপরে উঠে গেল। বিরাট দিগ্বিজয়ী বীরের মতো মনে হলো তাকে। তারপর হঠাৎ নেমে বাসার ভেতরে ঢুকে গেল। তখনই আমি ঢোঁড়া সাপটাকে দেখলাম।

আমাদের বাড়ির সামনের কুয়াটায় ইদানীং সাপ, গুইসাপ, ব্যাঙ অনেক বেড়েছে। হাঁসগুলো প্রতিদিন কুয়ার ধারে গিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে, মোটেই নামে না। কুয়ার অধিবাসীদের ভয় পায় মনে হয়। এদের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আমি এত দিনে গবেষণা করে ফেলতে পারতাম, কিন্তু পারলাম না কারণ বাড়ির সামনে কুয়ার পাশে আমি বসে থাকি ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজনে। বাড়ির ভেতরে ইন্টারনেটের 'ই' মানে টু–জিও পাওয়া যায় না। গুইসাপের মাছ শিকারের ঘটনা যখন দেখছিলাম, তখন আমাদের অনলাইন ক্লাস চলছিল। হেলথ অ্যান্ড সোসাইটি কোর্স। শুরুতে এ কোর্সের ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না। তারপর বাংলাদেশে কোভিড–১৯ এল। চিকিৎসাব্যবস্থার করুণ হাল আর রোগীদের অসহায়ত্ব দেখতে দেখতে আমি কোর্সটা নিয়ে আগ্রহী হয়ে গেলাম। কাজেই যখন অনলাইন ক্লাস শুরু হলো, আমি তখন খুব আগ্রহ নিয়ে ক্লাসে ঢোকা শুরু করলাম।