পনেরোই আগস্ট ভোরে
আজ নেতা আসবেন আমাদের চত্বরে
কাল মধ্যরাত অবধি রাস্তায় হাঁটাহাঁটি
গোয়েন্দা পুলিশের সতর্ক চোখ,
আমরা কখনো ভিসি ভবনের সড়কদ্বীপে,
কখনো চা-দোকানের খোঁজে এদিক-ওদিক
সুনসান চারপাশ, তক্ষক ডাকে তারস্বরে
আমরা কজনা ফুটছিলাম চাপা উত্তেজনায়
জানি না কী কারণে, পাগলিটা ছুটে গেল,
‘মুজিবর আইব কাইল, ভাইয়েরা আমার’
পুলিশ ছুটে গেল পিছু পিছু, হুইসিল
পাগলি চিৎকার করে, ‘জয় বাংলা,
ও আমার মজিবররে, তোরে আমার জয় বাংলা’
আমরা ফিরি যে-যার হলে,
কোরাসে গাই ‘নোঙ্গর তোলো তোলো সময় যে ...’
ঘুম আসে না। সূর্য সেনের পাঁচ শ চারে
শুধু এ পাশ-ও পাশ, ঘুমের পরিরা উড়ছে
পুরো ক্যাম্পাস চত্বরে, খোলা মাঠে।
আমার জানালায় কানাকানি, রুমে আসে না ওরা
আজানের কালে আসে কালঘুম,
আমি কখনো চাইনি এই অপনিদ্রা
কেন ঘুম এল আমার?
অথচ কে আমি, এলেবেলে তরুণ কবি,
জয় বাংলা স্লোগানে জীবনের তোরণে
করেছিলাম উদ্দাম করাঘাত।
রেডিওতে তখন প্রলাপ বাজছে
এলিফ্যান্ট রোড ধরে ট্যাংকের বহর যাচ্ছে,
সূর্য সেনের পাঁচ শ চার থেকে ছুটে গেল
আমার স্লোগান ‘জয় বাংলা, জয় মুজিবর’
বাতাসে সাঁতার কেটে আমি উড়ে
চললাম বত্রিশ নম্বরে। আমি এর চেয়ে
বেশি কী করতে পারতাম
ওই অমাবস্যার ভোরে।