মুর্তাজা এখন মেসির অপেক্ষায়!

নতুন জার্সি পেলেও পুরোনো পলিথিনের জার্সিটা ফেলে দেয়নি মুর্তাজা। দুটো পরেই চলছে খেলা। ছবি: রয়টার্স
নতুন জার্সি পেলেও পুরোনো পলিথিনের জার্সিটা ফেলে দেয়নি মুর্তাজা। দুটো পরেই চলছে খেলা। ছবি: রয়টার্স

‘বাবা, আমাকে একটা মেসির জার্সি কিনে দাও না!’ আবদার করেছিল পাঁচ বছরের মুর্তাজা আহমাদি। সে থাকে আফগানিস্তানের পূর্ব গজনি এলাকার একটা গ্রামে। মেসির ভীষণ ভক্ত সে।
কিন্তু হলে কী হবে? বাবা আরিফ আহমাদির ছেলেকে জার্সি কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না। তাই বলে মুর্তাজা তো হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। ছেলেটা করল কী? নীল-সাদা পলিথিন কায়দা করে কেটে নিজেই একটা জার্সি বানিয়ে ফেলল। পলিথিনের ওপর মার্কার দিয়ে মেসির নাম আর জার্সি নম্বর ‘১০’ও লেখা হলো সুন্দর করে। ব্যস, নিজের ফুটবলটা নিয়ে পলিথিন-জার্সি গায়েই মহানন্দে বাড়ির পাশে খেলতে লাগল মুর্তাজা।
ঘটনা কিন্তু এখানেই শেষ না। পলিথিন-জার্সি গায়ে মুর্তাজা আহমাদির ছবিটা কেমন করে যেন ছড়িয়ে পড়েছিল ইন্টারনেটে। তারপর তো এক এলাহি কাণ্ড! এমন মজার জার্সি দেখে সবাই অবাক, এমনকি খোদ লিওনেল মেসিও! খোঁজ খোঁজ রব পড়ে গেল ফেসবুক আর টুইটারে। তারপর মেসিভক্তরা সবাই মিলে খুঁজে বের করল মুর্তাজাকে।
রূপকথার গল্পের মতো মনে হচ্ছে? গল্পের ‘সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল’ অংশটা কিন্তু এখনো আসেনি। মুর্তাজাকে নিয়ে বিশ্বেজুড়ে তোলপাড় পড়ে যাওয়ার পর ব্যাপারটা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে আফগান ফুটবল ফেডারেশন। এরই মধ্যে ছেলেটার হাতে একটা নতুন জার্সি তুলে দেওয়া হয়েছে। মুর্তাজার সঙ্গে মেসির কীভাবে দেখা করানো যায়, তা নিয়েও তোড়জোড় চলছে। হয় মেসি আসবেন আফগানিস্তানে, নয়তো মুর্তাজাকেই উড়িয়ে নেওয়া হবে বার্সেলোনায়।
মুর্তাজার সঙ্গে দেখা করতে মেসি এতটা পথ পাড়ি দেবেন, সেটা বুঝি তোমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না? এমন কাজ কিন্তু এই জাদুকরি ফুটবলার আগেও করেছেন। তোমাদের মতো খুদে ভক্তদের তিনি ভীষণ ভালোবাসেন।
ওদিকে মুর্তাজাও অপেক্ষা করছে প্রিয় তারকাকে দেখার জন্য। মেসির সঙ্গে ফুটবল খেলতে ওর নিশ্চয়ই আর তর সইছে না। বলা যায় না, কবে না জানি সে পলিথিন দিয়ে একটা আস্ত উড়োজাহাজ বানিয়েই উড়ে চলে যায় প্রিয় তারকার কাছে!
সূত্র: গার্ডিয়ান