ক বি তা
জাহিদ হায়দার
রৌদ্র দিয়ে ঝাড়ু
দিচ্ছি দিন
রৌদ্র দিয়ে ঝাড়ু দিচ্ছি দিন।
ধুলোয় বিক্ষত সংবেদনের ছায়া।
সকাল, তোমাকে করেছি হীরকের গান;
সমুখ কেমন আছে, খোঁজ নিতে যাই।
ফেলে আসা পেছন দেখতে বলে।
রচিত সুন্দরে কাতরায় পারাবত।
সকাল তোমাকে সকাল করতে যাব।
তুমি জীবনীয়, প্রথমার স্বাদ।
রজনীগন্ধা হোক আমার দুপুর।
মধ্যদিনে গান বন্ধ না করুক পাখি।
বিকালের শীলতা ডাকছে: ‘আমার সমাজে আসো।’
পেছনে ফিসফাস। দেখার তৃষ্ণা বাড়ে।
দুপুরের ডালে ডালে ঝুলন্ত মাংসের উৎসব।
মুখোশ বলছে: ‘মুখোশ খুলে গেছে সবকিছুর।’
সন্ধ্যার অসুখ, থুতুমাখা কথাদের অধিকার
বিকালের আমোদকল্যাণ ডোবাবার আগে
ঝাড়ু দিই সমাজ-পঞ্জিকা।
আমি পারাপারের পক্ষে ঘুমহীন।
আরম্ভ-হারানো-স্বরে ডাকছে সকাল:
‘আসবে কখন? আমাকে বাঁচাও।’
দুপুরের রক্ত পড়া স্বর: ‘তুই এক নপুংসক
ইঁদুরও তোকে অপমান করে।’
ক্ষয়ে যাচ্ছে ঝাড়ুর প্রতিভা।
আতান্তর বাজাচ্ছে বাঁশি।
সময়টা কি অন্তঃসত্ত্বা বিড়ালের বমি?
জুনান নাশিত
সাঁতারের গল্প
বন্ধ ছিল, এখন দরজা দুটো খোলা
ফিরে যাবে? যাও
জেনো, পৌঁছাতে পারবে না
পল্টন থেকে বিজয়নগর।
জীবন মানে মৃত্যু,
মৃত্যু মানে কী?
জানতে চেয়ে চিবুক ছুঁয়ে ছুঁয়ে
যেদিন সাঁতারের গল্প বলেছিলাম
সেদিন থেকে ঝোড়ো বাতাস আর বৃষ্টি
বিড়ালের কান্না প্রতিটি ভোরে
দরজা দুটো বন্ধ
বাইরে সাঁতারের গল্প, অন্ধকার।
জাকির জাফরান
জ্যোৎস্নাসম্প্রদায়
চোখ দুটি পুরোনো নিয়ম মেনে চলে, সব জেনে
আসতেই হয় যদি, তৃতীয় নয়ন নিয়ে এসো।
—পথে দেখি শিউলি কুসুম, কই যাও, মনে মনে
বেসেছি প্রেমিক, অন্তিমে বুকের কাছাকাছি বসো।
কোথাও তো প্রেম নেই, অর্থহীনা, বেঁচে আছি কেন?
বাতাসে চুমুর ঘ্রাণে কারা তবু জেগে আছে শুনি।
—মনে মনে বেসেছি তোমাকে ক্রীতদাস, এই জেনো,
পাথরের ভাষা দেব, শোনো, আমি নিঃসঙ্গ ফাল্গুনী।
বাঁচতে চাই না আর, তৃতীয় হৃদয় যদি থাকে,
তবে এসো, সাবলীল বসে থাকো, যেন সাদা ফুল,
—হলুদ পতাকা হাতে, জনে জনে খুঁজেছি তোমাকে,
অতিরিক্ত মন নেই, আছে শুধু ব্যথিত বকুল।
আমি বিনা, নিশ্বাসে বাদল দিন টেনে নিয়ো বুকে।
হয়তো ফিরব, দিন কেটে যায় সমুদ্র-অসুখে।
অনুপম মণ্ডল
খুর
‘পাইবার কোনো পথ নাই তাহাকে’
হে অনঘ—যেখানে পৌঁছুব আমরা, তিনি, সেই পরমধামটির কথা আমাদের বলে চলেছেন—যেন অনাবৃত খুরের মধ্যে শব্দ গ্রহণ করে কেউ, স্তব্ধ হয়ে বসে আছে—জড়োসড়ো—