আকাশে যখন চাঁদ আধো হেসেছিল

তাহারে সে কেন জানি ভালোবেসেছিল!

জোছনাশরীর তার মায়া-বেলোয়ারি

বাতাসে কে দেয় শিস, ঠোঁটখানা তারই

জারুলে পারুলবালা নাচে ডালে ডাল

কথায় নীরবতায় বিছাইল জাল

সেই জালে বেঁধেছিল রুপালি বাসর

তারই কোন ফাঁকে সাপ ফেলে দেয় সর।

সরখানি চেনা লাগে তবু তো অচেনা

আবারও কি মরণের করে লেনাদেনা

ছুরিতে, কাঁচিতে কাটা অদেখা কাফন

কোথাও কি ফের দোলে হাওয়া উচাটন!

সকলি ইশারা করে জীবনে মরণে

তবুও সে জোড়া চোখ তাহার গড়নে

বাঁকায় ফোলায় খোঁজে যমুনা-সাহারা

কোন সে জমিনে দেয় পা-হারা পাহারা!

জানে সে যদিও ফের পায়ে দংশন

দিয়ে যাবে সাপ কোনো—এমনই লিখন

এই সাপ কালে কালে ফেরে ঘরে ঘর

অভাগা কি অভাগীর বিষাতে বাসর।

একদা নিশীথে কোনো স্বপনে দেখেছে

এমনই বিধির কালি কপালে মেখেছে।

জোছনার প্রহরায় তাই সে যে জাগে

দেহজ ফুলের ঘ্রাণে শোণিতানুরাগে।

তবু যেই হেসে চাঁদ রূপ বিতরিল

তাহারে সে কেন জানি ভালোবেসেছিল।

ভালোবাসা পায়ে পায়ে রাখে শুধু সাপ

ছোবলে জাগাতে চির নীল অভিশাপ।

তাই বুঝি পুরুষকে চোখে চোখে রাখে

অঘুমা রমণী নিশিতটিনীর বাঁকে।

লখাইয়ে বাঁচাবে তবে বেহুলা এবার

দেহে কি দেহাতি বায়ু হয়েছে ফেরার!

একজনে ঘুমে ডোবে, জাগে একজন

সাপ শুধু ফেলে সর গমনাগমন।

সেই থেকে প্রেম এক ঘুমহারা পাখি

আগুনশলাকা যেন এক জোড়া আঁখি।

মিলনের ভোরে তার মেলে না নয়ন

চেতনে অবচেতনে গমনাগমন।

পুরাণ কি ইতিহাস, কথন কি প্রথা

হরফে হরফে জাগে নয়া বিষলতা।

বেহুলা বাঁচলে তার মরবে লখাই

লখাইয়ের লহু খেয়ে বাঁচে বেহুলাই!

যদিও বাসরঘোরে এমনই সে ছিল

তাহারে সে কেন জানি ভালোবেসেছিল!