আজব!

গতকাল ছিল জয়দের শেষ ক্লাস। আজ ওরা ক্লাস পার্টি করল। অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত। ওদের স্কুলটা চারতলা। ক্লাসরুমও চারতলায়। জয় সিঁড়ি দিয়ে নামছিল। নামছে তো নামছে, সিঁড়ি যেন আর শেষ হয় না। একটা সময় সে নিচে নেমে এল। ভেবে দেখল, সে কি একই সিঁড়িতে বারবার নামছিল! জয়ের ভাবনায় জট লেগে যায়।
গেটের কাছে স্কুলবাসটা দাঁড়িয়ে আছে। জয় কোনো কথা না বলে বাসে উঠল। বাসে উঠতেই তার নাকে একটা গন্ধ এল। খুব বিশ্রী গন্ধ। চোখ বন্ধ করে রাখল সে। ব্রেকের শব্দ আর ঝাঁকুনিতে যখন চোখ খুলল, দেখল বাসায় পৌঁছে গেছে। বাস থেকে নামার সময় জয় হাত নেড়ে বন্ধুদের বিদায় জানাল।
বাড়িতে ঢোকার সময় মনে পড়ল, সে বাসে একটা ডায়েরি ফেলে এসেছে। ঘুরে বাসের দিকে যেতেই... অবাক কাণ্ড! পুরো বাসটা খালি, ভেতরে কেউ নেই! জয় খুব ঘাবড়ে গেল। ডায়েরিটা নিয়েই জলদি বাড়িতে ঢুকে গেল।
এদিকে বাসায়ও কেউ নেই। মা, বাবা, বোন কোথায় গেল সবাই? জয় নিজের ঘরে গিয়ে দেখে, দেয়াল ভেঙে কে যেন একটা সরু পথ বানিয়ে রেখেছে। লাইট জ্বালালেই পথটা মিলিয়ে যায়, আবার লাইট বন্ধ করতেই হাজির! দুরু দুরু বুকে সেই সুড়ঙ্গের দিকে পা বাড়াল জয়।
বেশ খানিকটা হেঁটে শেষ মাথায় পৌঁছাল। জায়গাটা একেবারে নিশ্চুপ। কেউ নেই। হঠাৎ তার চোখে পড়ল একটা চকচকে আলো। কাছে গিয়ে দেখে, একটা ছোট্ট খালের মধ্যে অনেকগুলো মাছ, অনেকটা কই মাছের মতো। মাছগুলো নড়ছে। চকচক করছে। সে একটা মাছ হাতে তুলে নিল। ওয়াও! মাছের চোখ দুটো বড় বড়, কী সুন্দর! লাল রঙের। মনে হচ্ছিল মাছটা তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। হঠাৎ মাছটা উধাও হয়ে গেল। জয় অবাক হয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে, একটা আঠালো তরল পদার্থ লেগে আছে। ইয়াক! গা গুলিয়ে আসে ওর। হাত মোছার জন্য যেই নিচে ঘাসের দিকে হাত বাড়াল, দেখে হাতের সামনে বিশাল বড় একটা পা। পা থেকে ধীরে ধীরে চোখ ওপরে তুলল জয়। বিশাল বড় একটা মানুষ! চিৎকার করে সে জ্ঞান হারাল।
যখন চোখ মেলল, তখন সে নিজের ঘরে বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে মা। জয় বলল, ‘মা, আমি কাল স্কুল থেকে কখন ফিরেছি?’
‘কেন? সন্ধ্যায়।’
‘ও...!’
‘কী ভাবছিস? এ কী, তোর জামা ছিড়ল কীভাবে?’ মা বললেন।
চিন্তিত ভঙ্গিতে জয় বলে, ‘জানি না।’
ষষ্ঠ শ্রেণি, অরণি বিদ্যালয়