উন্নয়নের নামে গণতন্ত্র খর্ব করা ঠিক নয়

>মনি শংকর আয়ার, ভারতের সাবেক পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা। কূটনীতিক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও পরে তা ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্থানীয় সরকার–বিষয়ক একাধিক সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য গত সপ্তাহে ঢাকায় এলে তিনি এই বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

* সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কামাল আহমেদ

মনি শংকর আয়ার
মনি শংকর আয়ার

প্রথম আলো : আপনি যে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, সেই স্থানীয় সরকার প্রসঙ্গ দিয়েই শুরু করি। ভারতে শক্তিশালী স্থানীয় সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলায় সাফল্য এসেছে কীভাবে?
মনি শংকর আয়ার : আপনি যাকে সাফল্য বলছেন, আমি তার সঙ্গে পুরো একমত নই। আমাদের সাফল্য আছে কিন্তু আরও অনেক কিছু করতে হবে। সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে পঞ্চায়েত রাজ। এটি অপরিহার্য ও অপসারণযোগ্য নয়। এবং এই ব্যবস্থা থেকে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। কারণ, এটি সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে। ফলে পঞ্চায়েতে আমাদের ৩২ লাখ নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন। আছেন ১৬ লাখ নারী প্রতিনিধি। নমশূদ্র এবং তফসিলি উপজাতির পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব আছে। অধিকাংশ রাজ্যেই পশ্চাৎপদ শ্রেণিগুলোর অংশগ্রহণ আছে। সুতরাং, গণতন্ত্রের এই যে সমাহার, ইতিবাচক উদ্যোগ তা আমাদের তৃণমূলে গণতন্ত্র এনেছে। সংবিধানে এটি বাধ্যতামূলক বিধান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় পঞ্চায়েত রাজের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে স্থানীয় সরকারের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি রাজ্য বিধানসভাগুলোর হাতে রয়ে গেছে। সুতরাং রাজ্যভেদে স্থানীয় সরকারব্যবস্থার কার্যকারিতায় তারতম্য রয়েছে। অবশ্য আনন্দের সঙ্গে এটুকু বলতে পারি যে রাজ্যভেদে স্থানীয় সরকারব্যবস্থার কার্যক্রমে তারতম্য থাকলেও গত ২৫ বছরে সব রাজ্যেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। বিষয়টি উৎসাহজনক।
প্রথম আলো : এটি কীভাবে সম্ভব হলো? রাজনীতিবিদ, বিশেষ করে এমপিরা তো অন্য কারও কাছে ক্ষমতায় ছাড় বা ভাগ দিতে রাজি হন না?
মনি শংকর আয়ার : দেখুন, এমপিরাই তো এটিকে সংবিধানের অংশ করেছেন। আমি মনে করি না যে এমপিরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে রাজ্য পর্যায়ের রাজনীতিকদের কথা আলাদা। রাজ্য পর্যায়ের বিধায়ক এমএলএরা বিষয়টিকে কিছুটা হুমকি মনে করেন। তাঁদের নিজ নিজ জেলা বা এলাকায় ক্ষমতার পাল্টা কেন্দ্র গড়ে উঠছে বলে তাঁদের মনে হতে পারে। যেসব রাজ্যে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে, সেসব রাজ্যে উন্নতি হয়েছে। আর যেখানে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা দুর্বল সেসব রাজ্য প্রগতির পথে পিছিয়ে পড়েছে।
প্রথম আলো : ভালো করছে এমন দু-একটি রাজ্যের নাম বলবেন? এবং খারাপ করছে যারা?
মনি শংকর আয়ার : দেখুন, কেরালা ও কর্ণাটকের কথা সবাই জানে। কিন্তু আমি এর সঙ্গে কয়েকটি রাজ্য যুক্ত করতে চাই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা চমৎকার কাজ করছে। সিকিমের অবস্থাও অনেক দিন ধরে ভালো।
প্রথম আলো : পশ্চিমবঙ্গের অবস্থানটি কী?
মনি শংকর আয়ার : সেখানে আসছি একটু পরে। মধ্যপ্রদেশও খুব ভালো করছে। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় হচ্ছে উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওডিশা। এগুলোর অবস্থা খুবই বাজে। পশ্চিমবঙ্গ ছিল অগ্রপথিক এবং কমিউনিস্টদের এত দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার মূল ভিত্তি। কিন্তু তিন দশকেরও বেশি সময় তারা ক্ষমতাসীন থাকাকালে গুন্ডারা এগুলোর দখল নেয়। আর ওই গুন্ডারা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। সুতরাং একসময়ে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত রাজ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যতটা ভালো ছিল, সমাজবিরোধীরা তা দখলে নেওয়ায় তা এখন আবার অনেক পিছিয়ে গেছে।
প্রথম আলো : কেন এমন হলো?
মনি শংকর আয়ার : কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় এসেছিল শহরের ভোটে। জ্যোতি বসু গ্রামের মানুষের ভোট নিশ্চিত করতে গ্রামাঞ্চলে কার্যকর পঞ্চায়েত রাজ প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দিয়েছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় বামপন্থীদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমাজবিরোধীরা ঢুকে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর তারাও ওই সব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে গুন্ডাদের সহায়ক মনে করে দলে নিয়েছে। ফলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমাজবিরোধীদের একটা অশুভ আঁতাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ কেরালা ও ত্রিপুরায় দেখুন, যেখানে কমিউনিস্টরা পশ্চিমবঙ্গের চেয়েও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায়, সেখানে কিন্তু চমৎকার পঞ্চায়েতব্যবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে। আমি এই সাফল্যের জন্য মানিক সরকারকে অভিনন্দন জানাই।
প্রথম আলো : সুতরাং রাজ্য পর্যায়ে হলেও এই ব্যবস্থাটির সাফল্য বা ব্যর্থতা রাজনীতিকদের ওপর নির্ভরশীল?
মনি শংকর আয়ার : অবশ্যই। তবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা শক্তিশালী, তার ওপরও এটা কিছুটা নির্ভরশীল। কেরালা ও কর্ণাটকে স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলোর সদস্যরা ইউনিয়ন গড়ে তুলেছেন। সুতরাং তাঁদের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর অনেক জোরালো। একটি পঞ্চায়েতের কথা হয়তো কেউ না–ও শুনতে পারে। কিন্তু ৫০০ এমপি কিংবা সাড়ে ৪ হাজার এমএলএ ৩২ লাখ পঞ্চায়েত সদস্যের কথা কীভাবে উপেক্ষা করবেন? সুতরাং গণতন্ত্রে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা জয়ী হবে। পূর্ণাঙ্গ পঞ্চায়েত রাজ আমি হয়তো আমার জীবদ্দশায় দেখতে পাব না, কিন্তু আমার নাতি-পুতিরা হয়তো সেটা দেখতে পাবে।
প্রথম আলো : সেই পঞ্চায়েত রাজের চেহারা কেমন হওয়ার কথা?
মনি শংকর আয়ার : আমি যে পঞ্চায়েত রাজের স্বপ্ন দেখি তাতে চার-পাঁচটি মৌলিক শর্ত পূরণের বিষয় আছে। এক নম্বরটি প্রতিনিধিত্ব।
প্রথম আলো : সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব?
মনি শংকর আয়ার : প্রত্যক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাদের অবশ্যই ৫০ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। তাঁরা জনগোষ্ঠীর অর্ধেক। ভারতে আমাদের মানতে হবে যে নমশূদ্র ও তফসিলি জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা নিপীড়িত। তাঁরা ৫ হাজার বছর ধরে নিপীড়নের শিকার। সুতরাং তাঁদের অবশ্যই একধরনের বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে। বিহার, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড় ও ওডিশার মতো রাজ্যে এ ধরনের উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর বিপুলসংখ্যায় আধিক্য আছে। পঞ্চায়েতব্যবস্থার সম্প্রসারণে ১৯৯৬ সালে তফসিলি অঞ্চল আইন করা হয়েছে। সেটির পূর্ণ বাস্তবায়ন হতে হবে। প্রথম এবং সবচেয়ে জরুরি কাজ হবে প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, যাতে সমাজের অভিজাত ব্যক্তিরা এই প্রতিষ্ঠানগুলো দখলে নিতে না পারে। দ্বিতীয়ত, গ্রামসভা ও ওয়ার্ডসভার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী পার্লামেন্টের মতো ভূমিকা নিতে হবে। তাঁরাই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করেন।
প্রথম আলো : আপনি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তব্যে ভারত ও চীনের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার উপসংহার টেনেছেন এই বলে যে চীনের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা হচ্ছে অধিকতর দক্ষ, আর ভারতেরটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক। তার মানে কি এই দাঁড়ায় যে গণতন্ত্রে ঘাটতি থাকলেও ব্যবস্থাটি দক্ষ হতে পারে?
মনি শংকর আয়ার : দেখুন, আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব, চীনে একদলীয় ব্যবস্থা চালু আছে। কোনো ধরনের প্রতিবাদ উঠলেই তা সঙ্গে সঙ্গে দমন করা হয়। সুতরাং বেইজিং থেকে যখনই কোনো আদেশ যায় তা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে যায় এবং বাস্তবায়নের গতিও দেখা যায়। সুতরাং হ্যাঁ, এটি একটি দক্ষ ব্যবস্থা, তবে সম্পূর্ণভাবে অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। আমার মনে হয়, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে কনফুসিয়াস সভ্যতার নীতি অনুসৃত হয়, যেটি হলো কর্তৃত্ববাদী এবং ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক ঐতিহ্য হচ্ছে গণতন্ত্র। কর্তৃত্ববাদিতা আমাদের সঙ্গে মেলে না, গণতন্ত্রই আমাদের জন্য উপযোগী।
প্রথম আলো : আমি আপনাকে বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতির বিতর্কে টেনে আনতে চাই না। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এখানে একটা আলোচনা হচ্ছে যে গণতন্ত্র নয়, অগ্রাধিকার হওয়া উচিত উন্নয়ন। আপনি কী বলবেন?
মনি শংকর আয়ার : আমি মনে করি, এটি একেবারে বাজে একটা যুক্তি। আমি বাংলাদেশের কথা বলছি না, সাধারণভাবে বলছি, এটা একেবারে বাজে কথা।
প্রথম আলো : বাজে যুক্তিই যদি হবে, তাহলে সিঙ্গাপুরের এত সাফল্য কেন?
মনি শংকর আয়ার : আমরা একটু আলাদা করে যদি দেখি, সিঙ্গাপুর হচ্ছে কনফুসিয়ান ব্যবস্থার (সভ্যতা) অংশ। অথচ এই বাংলাদেশে যখনই সামরিক শাসন এসেছে আপনারা কতটা অশান্ত হয়ে উঠেছেন? আপনারা গণতন্ত্রকে কীভাবে স্বাগত জানিয়েছেন, মনে করে দেখুন। বাংলাদেশ, কিংবা পাকিস্তান, নেপাল কিংবা শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান কিংবা ভুটান কেউই দীর্ঘদিন কর্তৃত্ববাদ মেনে নেবে না। ভারতও মৌলিকভাবে গণতান্ত্রিক। তারা স্বাধীনতা চায়, উন্নয়নও চায়। স্বাধীনতা চাইলে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে, নিচের দিকে থাকা মানুষ কখনো লাভবান হবে না। আপনাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থায় যেতে হবে, সেটাই গণতন্ত্র। সবার জন্য উন্নয়ন বা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন চাইলে সেটাই পথ।
প্রথম আলো : আপনি একসময় কূটনীতিক ছিলেন বলে আপনার কাছে জানতে চাইব ভারত ও বাংলাদেশের বর্তমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মনি শংকর আয়ার : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে। ছিটমহলগুলোর বিনিময়কাজটি কংগ্রেস সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাধার কারণে আটকে যায়। এখন মোদি সরকার তা করেছে এবং এটি একটি বড় পদক্ষেপ। তবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা গভীরতর করার কাজটি কাঙ্ক্ষিত গতিতে এগোয়নি। ১৯৭২ সালে আমরা সম্মত হয়েছিলাম যে বিশ্ববাজারে আমরা যৌথভাবে পাটের প্রসার ঘটাব। ৪৪ বছর পরে আমি শুনলাম যে এখনো আমাদের অ্যাজেন্ডা হচ্ছে বিশ্বে যৌথভাবে পাটের প্রসার বাড়ানো। কিছু কিছু ক্ষেত্র আছে, যেখানে আমাদের সহযোগিতা বাড়াতে হবে। সম্প্রতি কিছু বিশেষজ্ঞ চীন থেকে বাংলাদেশ দুটি ডুবোজাহাজ কেনায় প্রশ্ন তুলেছেন। আমি মনে করি, বাংলাদেশের প্রয়োজনমতো যেখান থেকে খুশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার অধিকার রয়েছে। কিন্তু ভারতবেষ্টিত বাংলাদেশের কেন ডুবোজাহাজ প্রয়োজন, সেই প্রশ্নটা আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। কেন আমরা তাদের আস্থা অর্জনে সফল হইনি, সেটাই আমাদের বুঝতে হবে।
প্রথম আলো : ২০১৩-১৪ সালে আপনি এবং আপনার দল কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। তখন বাংলাদেশের নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক না হলেও আপনারা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার কথা বলে তা সমর্থন করেছিলেন। অনেকের মতে এতে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপনি কী জবাব দেবেন?
মনি শংকর আয়ার : এসব অভিযোগ সত্য নয়। বাংলাদেশের নির্বাচন পুরোটাই তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। গণতন্ত্র সেখানে কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ওপরই নির্ভরশীল। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, বিএনপি নির্বাচনে হারলে দোষ হয় ভারতের। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কে নির্বাচনে সাফল্য পেল সেটা তো বাংলাদেশিদের বিষয়। ভারত খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা উভয় সরকারের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গেও ভারতের এই সমস্যায় পড়তে হয়, তা সেটি নেপাল হোক কিংবা মালদ্বীপ বা শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা হয়ে থাকলে তা নিন্দনীয়।
প্রথম আলো : সুন্দরবনের কাছে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে বিতর্কের বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে। আপনার কি মনে হয় না এই বিতর্কে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে?
মনি শংকর আয়ার : দেখুন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজটি ভারত করছে না। বিষয়টি তো বাংলাদেশ সরকারের কাছে তোলা উচিত। যেসব পরিবেশবাদী সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এর বিরোধিতা করছেন, তাঁদের উচিত হবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ দেওয়া।
প্রথম আলো : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মনি শংকর আয়ার : আপনাদেরও ধন্যবাদ।