মিল্ক ভিটা সমাচার

বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড (মিল্ক ভিটা) সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এর চেয়ারম্যান হাসিব খান ও কৃষক লীগের নেতা সরকারি আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ থেকে মুনীর চৌধুরীকে সরিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানেন না, কৃষক লীগের নাম ভাঙিয়ে মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান পদে বসা গেলেও গায়ের জোরে কাউকে সরিয়ে দেওয়া যায় না। এমডির নিয়োগকর্তা সরকার, তাঁর পদায়ন বা পদোন্নতির ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নেওয়ার এখতিয়ারও সরকারের।

প্রকৃত ঘটনা হলো, মুনীর চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পর মিল্ক ভিটার বার্ষিক আয় ৩৬৮ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৪০২ কোটি ১২ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। তিনি দুর্নীতি-অনিয়মের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির ২৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, দেড় কোটি টাকায় ১২টি অস্ট্রেলীয় ষাঁড় আমদানির দরপত্রে যে ঘাপলা এবং ২২১ জন কৃত্রিম প্রজনন সহকারী নিয়োগ নিয়ে বাণিজ্যের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন মুনীর চৌধুরী। এসব কারণেই নাকি তাঁর স্বার্থান্বেষী মহল তাঁকে অপসারণের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। সমবায় অধিদপ্তর তাদের অন্যায় আবদারে সাড়া না দেওয়ায় চেয়ারম্যান নিজেই এমডির বাড়িতে অপসারণের চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার আর কাকে বলে!

এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় যে অবস্থান নিয়েছে, আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। তারা বলেছে, মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যানের এখতিয়ার নেই এমডিকে সরিয়ে দেওয়ার। আশা করি, মিল্ক ভিটা চেয়ারম্যানের আক্রোশ থেকে একজন সৎ সরকারি কর্মকর্তাকে রক্ষায় যা যা করণীয়, তা তারা করবে। 

  যে প্রতিষ্ঠানটি দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষের দুধের চাহিদা মেটায়, যে প্রতিষ্ঠানটির ওপর লাখ লাখ খামারি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভাগ্য জড়িত, সেই প্রতিষ্ঠানকে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির খামখেয়ালির হাতে ধ্বংস হতে দেওয়া যায় না। মিল্ক ভিটার সব দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু মনগড়া অভিযোগে কাউকে অপসারণ করা যাবে না।