আবার পোশাকশ্রমিক অসন্তোষ

সাম্প্রতিক সময়ে তাজরীন গার্মেন্টস ও রানা প্লাজার ঘটনা দেশের এই শিল্পকে চাপের মুখে ফেলে দিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে এর যে প্রভাব পড়েছে, তা দেশের তৈরি পোশাকশিল্পকে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গত শুক্রবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা এবং কাজের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা-সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছে। অনেক দেশ বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে পোশাক না কেনার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রত্যাশিত জিএসপি-সুবিধা না পাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

গত সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। রাস্তাঘাট বন্ধ, যানজট—এ সবই হয়েছে এর প্রতিক্রিয়ায়। শ্রমিকেরা এই সহিংসতা করেছেন, কারণ তাঁরা সকালে কাজে গিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ পেয়েছেন। যে শিল্পটি দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে বিকাশ লাভ করে একটি পর্যায়ে গেছে, সেখানে কেন একটি কারখানায় সকালে কাজে গিয়ে শ্রমিককে বন্ধের নোটিশ দেখতে হবে? অনেক ক্ষেত্রেই মালিকেরা কারখানা পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারী আচরণ করেন। ইউটা গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা বেতন-ভাতা বৃদ্ধির যে দাবি করে আসছিলেন, তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেত। মালিকেরা শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন বা এ ধরনের কিছু করার সুযোগ দিতেও নারাজ। কিন্তু শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য তবে পথ কী?

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শিল্প-মালিকদের এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে যে এই খাতে শৃঙ্খলা এবং এর ভবিষ্যৎ বিকাশের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন-ভাতা, নিরাপদ কাজের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা—সবই নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিক ঠকানো বা শোষণের পথ থেকে সরে আসতে না পারলে এই খাত সামনের দিকে এগোবে না।