মুঠোফোনে টাকা লেনদেনের খরচ

সম্প্রতি রাজধানীতে বিআইডিএসের এক আলোচনায় মুঠোফোনে টাকা পাঠানোর খরচ কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত হার হলো, প্রতি ১০০ টাকায় ১ দশমিক ৮৫ টাকা। কিন্তু খুচরার প্রচলন কমে যাওয়ায় এজেন্টরা শতকে ২ টাকাই রাখেন। এই খরচও আবার তিন ভাগ হয়—৭৭ শতাংশ এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটর, ৭ শতাংশ মুঠোফোন অপারেটর এবং বাকি ১৬ শতাংশ পায় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। দেশে পাঁচ লাখ খুদে পুঁজি বিনিয়োগকারী এজেন্ট রয়েছেন। তাঁরাই অর্থ বিনিয়োগ করেন এবং ব্যবসাটা শ্রম ও অবকাঠামো দিয়ে চালান। তাঁদের লভ্যাংশে হাত দিলে এই সেবার প্রসার আটকে যেতে পারে। বাকি রইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও মুঠোফোন অপারেটরদের খরচ ও মুনাফার মধ্যে সংগতি স্থাপনের বিষয়। বাস্তব অবস্থার বিচারে ফোন অপারেটরের ফি কমলে টাকা লেনদেনের মোট খরচও কমে আসবে।

মুঠোফোন অপারেটরদের যে ইউএসএসডি চ্যানেল ব্যবহার করে এই লেনদেন হয়, তার ব্যয় খুবই কম। প্রতি লেনদেনের খরচ একটি এসএমএস পাঠানোর চাইতেও কম। তা ছাড়া এ প্রযুক্তির ধারাবাহিক উন্নতির কারণে খরচও কমতির দিকে। সুতরাং, মুঠোফোনের আর্থিক সেবার মাধ্যমে টাকা পাঠানোর খরচ কমাতে হলে অপারেটরের ইউএসএসডি খরচের কস্ট মডেলিং করে দেখতে হবে, প্রকৃত ব্যয় আসলে কত?

ভারতের একটি কোম্পানি মাত্র এক রুপিতে সারা দিন ইউএসএসডি ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। পাকিস্তানে প্রতি ইউএসএসডি সেশন ফি মাত্র পাঁচ পয়সা। বাংলাদেশেও অনুরূপ ফি ধরলে কারোরই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এমনকি গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক মাত্র পাঁচ টাকায় সপ্তাহজুড়ে ইউএসএসডির মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। এক যাত্রায় বিপরীত ফল বাংলাদেশে হবে কেন? আমরা আশা করব, সরকার বিষয়টি নিয়ে যৌক্তিক ও ন্যায্য সিদ্ধান্ত প্রণয়নে সক্রিয় হবে।