বিএডিসির কেন্দ্রে বীজ ধানের সংকট কেন?

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কৃষকদের দিনের পর দিন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজকেন্দ্রে গিয়ে বীজ ধান না পাওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সোমবারের প্রথমআলোর খবর অনুযায়ী, বিএডিসির বীজ বিক্রয়কেন্দ্রে বীজ ধান পাওয়া না গেলেও ওই কেন্দ্রের পাশের দুটি দোকানেই চড়া মূল্যে মিলছে বিএডিসির বীজ ধান। অথচ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলছে, বীজ ধানের সংকট দেখা দিয়েছে। তা-ই যদি হবে, তাহলে পাশের দুটি দোকানে কীভাবে মিলছে বীজ ধান? উপজেলার বিভিন্ন ডিলারের কাছেও এসব বীজ পাওয়া যাচ্ছে।

কৃষকদের সন্দেহ, বীজ বিক্রয়কেন্দ্রের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি করছেন। কেননা অনুমোদিত ডিলার ছাড়াও অন্য ব্যবসায়ীদের কাছেও বিএডিসির বীজ ধান পাওয়া যাচ্ছে। তবে বীজ বিক্রয়কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের বক্তব্য হচ্ছে, চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ কম পাওয়ায় তাঁরা কৃষকদের বীজ ধান দিতে পারছেন না।

সময়মতো বীজ ধান না পেলে কী হবে, তা সহজেই অনুমেয়। ধানের ফলনে চরম বিপর্যয় দেখা দেবে। বীজ ধান না পেলে কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করতে পারবেন না। জমি অনাবাদি পড়ে থাকবে। এমনিতেই এ বছর ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির ফলে দেশের হাওরাঞ্চলে ধান চাষ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রচুর ধান নষ্ট হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চালের দামের ওপর। কৃষকেরা যদি সময়মতো বীজ ধান না পান, তাহলে ধান চাষে আবার বিপর্যয় দেখা দেবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এ রকম বীজ ধানের সংকট এবারই যে প্রথম হলো, তা নয়। আগেও হয়েছে। বিএডিসির কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথাও নতুন কিছু নয়। তাদের কারও যোগসাজশে এভাবে বীজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে কি না, তা দেখতে হবে।

এখন উপজেলা কৃষি বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। কেননা এসব বিষয় পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব তাদের। বীজ ধান সংকটের পেছনে কী কারণ রয়েছে এবং সত্যিই কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি না, উপজেলা কৃষি বিভাগকে তা খতিয়ে দেখতে হবে। দুর্নীতি হয়ে থাকলে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।