জলাবদ্ধ ঢাকা

মহানগরের অনেক এলাকার অলিগলি থেকে বড় সড়ক পর্যন্ত জলমগ্ন হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় বৃষ্টির পানির সঙ্গে নর্দমার পচা-নোংরা পানি মিশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার ফলে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট, অফিসগামী মানুষ যানবাহন-সংকটে ভুগেছেন। অনেক এলাকায় রাস্তাঘাটের খোঁড়াখুঁড়ি চলছে; কোথাও চলছে গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কাজ; কোনো কোনো এলাকায় ভাঙাচোরা রাস্তার খানাখন্দ পানিতে ডুবে গিয়ে তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক ফাঁদ; সিটি করপোরেশনের ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন কিংবা ভাগাড় উপচে দুর্গন্ধময় আবর্জনা ছড়িয়ে পড়েছে পানিতে, কোনো জলমগ্ন রাস্তায় পানির নিচে বিপজ্জনকভাবে ওত পেতে আছে ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল।

সব মিলিয়ে রাজধানীবাসীর জীবনযাপন হয়ে উঠেছে সীমাহীন দুর্ভোগময়। কিন্তু চারপাশে নদী পরিবেষ্টিত ঢাকা মহানগর পানিনিষ্কাশন–ব্যবস্থার অকার্যকরতায় এভাবে জলমগ্ন হচ্ছে, কিন্তু এ রকম হওয়া অনিবার্য ছিল না, এখনো নয়। ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, ডেসা, তিতাস গ্যাস ইত্যাদি যেসব সংস্থা বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছে, তাদের কাজে কোনো সমন্বয় নেই।

পয়োনিষ্কাশন ও পানিনিষ্কাশনের যে অবকাঠামো আছে, তা পর্যাপ্ত নয় বটে, কিন্তু যেটুকু আছে, তা-ই সুব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রথম কর্তব্য বিদ্যমান নালা-নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে পানি নেমে যাওয়ার উপযোগী করা। দ্বিতীয়ত, পানিনিষ্কাশনের অবকাঠামো অবশ্যই আরও বাড়াতে হবে, নতুন নতুন নালা-নর্দমা তৈরি করতে হবে এবং তা করতে হবে সুপরিকল্পিতভাবে, সমন্বিতভাবে। সব নালা-নর্দমা সারা বছর নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করতে হবে, যেন সেগুলোতে ময়লা-আবর্জনা জমতে না পারে। তৃতীয়ত, মহানগরের ভেতরে এখনো যেসব পুকুর-খাল-ঝিল ইত্যাদি রয়েছে, সেগুলো পরিষ্কার রাখা এবং মহানগরের চারপাশের নদী ও জলাভূমিগুলো পুনরুদ্ধার করা।