পাঁচটি সড়কে আবার অবৈধ পার্কিং

প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিএনসিসি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর এবং ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, মিরপুর ১২, আবদুল্লাহপুর, মহাখালী, তেজগাঁও ও কারওয়ান বাজার এলাকাকে পার্কিংমুক্ত ঘোষণা করে। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় পাঁচটি সড়কে আবার অবৈধ পার্কিং ফিরে এসেছে। কোনো কোনো সড়কে এক সারিতে বাস রাখা হচ্ছে, কোনো কোনো সড়কে দু-তিন সারিতে বাস রাখা হচ্ছে। ফলে ওই সব সড়কে আবারও সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়ছে লোকজন। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

তবে এ রকম যে প্রথমবারের মতো হলো, বিষয়টা তা নয়। প্রায়ই দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অবৈধভাবে দখলকৃত কোনো এলাকা, ফুটপাত, ট্রাকস্ট্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড দখলমুক্ত হলেও কিছুদিন পর সেগুলো আগের রূপে ফিরে আসে। বিশেষ করে ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করা যায় না কিছুতেই। কেন এমন হয়, এটা আমাদের একটা প্রশ্ন। অভিযোগ আছে, এসবের পেছনে রয়েছে একাধিক সিন্ডিকেট। রাস্তার ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করা গাড়ি, বাস, ট্রাক থেকে তারা টোল তোলে। চাঁদার বিনিময়ে তারা ফুটপাতেও হকারদের ব্যবসা করতে দেয়। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে ওঠা এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত আছেন স্থানীয় ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। অবৈধ পার্কিং করা এসব গাড়ি থেকে পুলিশ নিয়মিত টাকা নেয়, এমন অভিযোগ রয়েছে।

কাজেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবৈধ দখল ও পার্কিংমুক্ত রাখতে হলে সিটি করপোরেশনের ঘোষণাই যথেষ্ট নয়। সড়কগুলো যাতে পার্কিংয়ের স্থান হিসেবে গড়ে উঠতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত নজরদারি বা তদারক করতে হবে। প্রয়োজনে কিছুদিন পরপর অভিযান চালাতে হবে। এ ছাড়া অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ে সহায়তাকারী সিন্ডিকেটগুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়া যানবাহনের মালিক ও চালকদেরও সচেতন হতে হবে। রাজধানীতে যানজটের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা। মালিক ও চালকেরা যদি এ ব্যাপারে সচেতন হন, তাহলে এভাবে সড়কে অবৈধ পার্কিং গড়ে উঠতে পারে না। এ জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি।