ফল সংরক্ষণ

সারা দেশেই এখন ফলের মৌসুম। বর্তমানে আম, জাম, লিচু, কাঁঠালসহ অন্যান্য ফল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে ফলের আমদানি অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। কৃষিপণ্য—ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা চাষে যখন কম লাভ হচ্ছে তখন তারা কৃষিভিত্তিক ফসলি জমিগুলোতে শুরু করেছেন ফলের বাগান। এ ছাড়া অনাবাদি জায়গাসহ বাড়ির আশপাশ এমনকি উঠানেও ফলগাছ লাগিয়ে সংসারে বাড়তি টাকা আয় করছেন। এ বছরেও ফলের উৎপাদন প্রচুর হয়েছে। এতে করে ফল চাষে কৃষক যেমন ঝুঁকে পড়েছেন, তেমনি তাঁরা একমাত্র ফসল হিসেবে ফল চাষ করছেন এবং বছরে একবার ফল পেলেও অধিক উৎপাদন হওয়ায় তাঁরা ভীষণ খুশি।

দেশি ফলের এই উৎপাদন ভালো হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দেশে বিদেশি ফলের চাহিদা অনেক। ফলে দেশি ফলের বদলে বিদেশি ফলের দিকে আগ্রহটা অনেকাংশে বেড়ে চলেছে। অথচ আমাদের দেশেও সব ধরনের ফল পাওয়া যায়, যার পুষ্টিমানও বিদেশি ফলের চেয়ে অনেক বেশি।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, ফলচাষিরা অধিক ফল পেলেও এই জ্যৈষ্ঠের ফল আমাদের দেশে বেশি দিন স্থায়ী হয় না। কারণ, ফল সংরক্ষণের কোনো সুব্যবস্থা নেই। এতে প্রচুর ফল উৎপাদিত হলেও এর সঠিক সংরক্ষণ না করায় দেশি ফলগুলো অল্প দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে একদিকে যেমন ফলচাষিরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে ফল ক্রেতারা বাধ্য হয়েই বিদেশি ফল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

তাই ফলের জন্য বিখ্যাত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সরকারিভাবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ফল স্টোররুম অথবা আধুনিক প্রযুক্তিতে ফল সংরক্ষণের সুব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর এসব ফল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে ফলচাষিরা তাঁদের ন্যায্য মূল্য পাবেন। সেই সঙ্গে বিদেশি ফলের আমদানিও অনেকাংশে কমে যাবে।

এই অবস্থায় দেশের সব ধরনের ফল সংরক্ষণ করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

দিলরুবা রিজওয়ান

আয়েশ, সিংড়া, নাটোর।