তৃতীয় 'উন্নয়ন' দশক

‘উন্নয়নের’ ওপর খুব জোর দিচ্ছে বর্তমান সরকার। ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয় তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো পরিমাণ ব্যয় বরাদ্দ, যেকোনো শর্তে ঋণ গ্রহণ, যেকোনো দমন-পীড়নে কোনো কার্পণ্য বা দ্বিধা নেই। ইতিমধ্যে বহু প্রকল্পে বিশ্বে সর্বোচ্চ ব্যয়ের রেকর্ড হয়ে গেছে বাংলাদেশের। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ভর্তি, নিয়োগ—সবই এখন টাকার খেলা। সরকার নিজে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে বারবার, কর-শুল্ক বাড়াচ্ছে। জিডিপি বাড়ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। সন্ত্রাসে জননিরাপত্তা বিপন্ন। একে একে সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ছে, আদালতও নিরাপদ নয়।

দুই দফায় বর্তমান সরকারের ১০ বছর হতে যাচ্ছে, সে হিসাবে বলা যায় আমরা এক ‘উন্নয়ন দশক’ পূর্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ‘উন্নয়ন’ নামের বিভিন্ন প্রকল্পের যৌক্তিকতা, ব্যয় বরাদ্দ, দুর্নীতি, পরিণতি নিয়ে কথা বলতে গেলেই গণতন্ত্র, মতপ্রকাশ, জবাবদিহি, স্বচ্ছতার প্রশ্ন আসে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আছি, তাই এখন দরকার ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’!

প্রকৃতপক্ষে উন্নয়ন দশক আমাদের এটাই প্রথম নয়। এর আগেও আমাদের আরও দুটি উন্নয়ন দশকের অভিজ্ঞতা আছে। প্রথমটি ছিল জেনারেল আইয়ুব খানের উন্নয়ন দশক (১৯৫৮-১৯৬৮), দ্বিতীয়টি পুরো এক দশক না হলেও একে উন্নয়নের প্রায় এক দশক বলা যায়, সেটি ছিল জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বাধীন (১৯৮২-১৯৯০)। আগের দুটি উন্নয়ন দশকেও গণতন্ত্র নিয়ে এ রকম কথা আমরা শুনেছি। আইয়ুব খান উন্নয়নধারা নিশ্চিত রাখার জন্য চালু করেছিলেন তাঁর স্বৈরশাসনের উপযোগী সংস্করণ মৌলিক গণতন্ত্র। এর বৈশিষ্ট্য ছিল জেনারেল আইয়ুবের পকেটবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তঁাদের দুর্নীতির পথ করে দেওয়া হয়েছিল। জেনারেল এরশাদও এই পথে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন, উপজেলা নির্বাচন দিয়ে তার শুরুও হয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক জাতীয় গণপ্রতিরোধের কারণে তঁার পরিকল্পনা পুরো বাস্তবায়িত হয়নি।

এই তিন দশকেই আমরা রাস্তাঘাট আর ভবন নির্মাণের ব্যাপক উদ্যোগ দেখি। আর সর্বজনের সম্পদ ব্যক্তি/কোম্পানির মুনাফার সামগ্রী বানানোও এক অভিন্ন ধারা। তিন আমলেই সড়ক যোগাযোগই গুরুত্ব পেয়েছে, সর্বজনের প্রয়োজন নয়, রেল বা নৌপথ নয়। বাংলাদেশের যোগাযোগের সবচেয়ে কার্যকর, সুলভ ও সহজ যোগাযোগ মাধ্যম হতে পারত নৌপথ। এরপর রেলপথ। কিন্তু ঋণদাতাদের তাগিদ ছিল গাড়ি বিক্রি, তা হয়েছে। রাস্তা বেড়েছে, গাড়ি বেড়েছে, ব্যয় বেড়েছে, জমি হারিয়েছে, দূষণ বেড়েছে, জটও বেড়েছে। অনেক নদী, খাল এগুলোর জন্য মৃতপ্রায়।

জেনারেল আইয়ুবের সময় পূর্ব পাকিস্তানের এক বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প ছিল কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র। ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই প্রকল্পের জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই বাঁধে ভেসে গিয়েছিল রাঙামাটি শহর। এতে লক্ষাধিক চাকমা, মারমাসহ বিভিন্ন জাতির মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘমেয়াদি অশান্তি, বাঙালি-ভিন্ন অন্যান্য পাহাড়ি জাতির সঙ্গে সহিংস সম্পর্ক বহু মানুষের হত্যাকাণ্ড, সামরিকীকরণ, সামরিক ব্যয়বৃদ্ধি সবকিছুর সূচনা এই পরিণাম বিবেচনাহীন ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর মধ্যে দিয়ে বন, পাহাড় উজাড় হয়েছে, অশান্তি চিরস্থায়ী হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কখনোই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়নি।

জেনারেল এরশাদের সময় দেশের তেল–গ্যাস খাত ২৩টি ব্লকে ভাগ করে বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার সূচনা হয়। সিমিটার নামে অখ্যাত এক কোম্পানির হাতে বাংলাদেশের একমাত্র হরিপুর তেলক্ষেত্র তুলে দেওয়ার আয়োজন করে। রাষ্ট্রীয় কেনাকাটায় অস্বচ্ছতা, কমিশননির্ভর চুক্তি, ঘুষ-দুর্নীতি অভূতপূর্ব হারে বেড়ে যায়। স্বৈরতন্ত্র উপযোগী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থার পক্ষে ধর্মের ব্যবহারও শুরু হয় ব্যাপকভাবে।

বর্তমান উন্নয়ন দশকে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের শুরু জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ‘দায়মুক্তি আইন’ পাস করার মধ্য দিয়ে। এই আইন হলো দেশের নাগরিকদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পথ বন্ধ করার বিধান, মন্ত্রণালয় যত অপকর্ম বা সর্বনাশ করুক না কেন, নাগরিকদের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উপায় নেই। এই আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই সরকার বিদ্যুৎ-সংকট সমাধানের নামে বিভিন্ন ব্যয়বহুল ক্ষতিকর প্রকল্প গ্রহণ করেছে, রামপাল, রূপপুরসহ জবাবদিহিবিহীন ভয়াবহ প্রকল্পের কাজ এরই আশ্রয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম এবং তথ্য বিকৃতি প্রথম থেকেই চলছে। সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে জোর করে। নিজেদের খেয়াল–খুশিমতো তথ্য-উপাত্ত, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অস্বীকার, ভুল আর মিথ্যা ভরা ইআইএ পাস, নিয়ম ভেঙে চুক্তি, কোম্পানির জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা, এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি, ভাড়াটে মাস্তান-কনসালট্যান্ট-মিডিয়া-বিজ্ঞাপনী সংস্থার দাপট তৈরি...।

প্রথম থেকেই যখনই আমরা রামপাল এলাকায় কথা বলতে গেছি, সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, কখনো পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করেছে, কখনো পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে, কখনো মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে, কখনো ধরপাকড় করেছে, হুমকি, ত্রাস সৃষ্টি তো আছেই। তাদের পরিষ্কার কথা:

‘ওপরের নির্দেশ, রামপাল নিয়ে কোনো কথা বলতে পারবেন না।’

: ‘কোন আইনে আপনারা এ রকম কথা বলছেন?’

: ‘ওপরের নির্দেশ!’

ঢাকা থেকে রামপালের পথে এক বাসযাত্রায় পুলিশের বেপরোয়া হামলা শুরু হয়েছে মানিকগঞ্জ থেকে, বাস থেকে নামতে দেওয়া হয়নি, খেতে দেওয়া হয়নি, সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বাগেরহাট, খুলনার বহু সমাবেশ পুলিশি বাধার মুখে পড়েছে। পুলিশ আগেই জায়গা দখল করে বসে থেকেছে। দেশের আরও বহু জায়গায় হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছে দেশ ও সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে সেচ্চার মানুষ। ঢাকার মিছিল সমাবেশে মানুষ কতবার পুলিশি হামলা, টিয়ার গ্যাস, আটক, নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার হিসাব করা কঠিন। এমনকি তরুণদের নিরীহ সাইকেল শোভাযাত্রায়ও আক্রমণ করেছে পুলিশ ও সরকারি গুন্ডারা।

না, কারও কথা শোনা হবে না। দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা সাত বছর ধরে কতবার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। আমরা মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে কথা বলেছি। কয়েকটি লংমার্চসহ অসংখ্য সভা–সমাবেশ হয়েছে। মা-শিশুসহ সব পর্যায়ের মানুষ সুন্দরবনের জন্য দাঁড়িয়েছেন, কবিতা, গান, তথ্যচিত্র হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা করে খোলা চিঠি পাঠিয়েছি। ভারতের বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন সংগঠন এই প্রকল্পের প্রতিবাদ করেছে। ইউনেসকো সুনির্দিষ্টভাবে রামপাল প্রকল্প বাতিল বা সরানোর কথা বলেছে। কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে চলছে সুন্দরবন নিধন কার্যক্রম।

সরকার ইউনেসকোর সভায় গিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু বিশ্বের বহু দরবারে, দেশের মানুষের দরবারে সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে তার কাজের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেসকোর সভা থেকে দেশে ফিরে উল্টো কথা প্রচার করা হয়েছে। এরপর গত ৩০ জুলাইয়ে ইউনেসকোর পুরো বক্তব্য যখন প্রকাশিত হয়েছে, তখন থেকে চলছে ক্ষমতার জোরে তা অস্বীকার করা। ইউনেসকোর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ১১টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ৭ নম্বরে বলা হয়েছে, ‘রামপাল প্রকল্প নিয়ে ২০১৬ সালে ইউনেসকোর রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশনের করা অন্যান্য সুপারিশও পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’ এই সুপারিশে বলা হয়েছিল সুন্দরবনের অসাধারণ বিশ্বজনীন মূল্য (আউটস্ট্যান্ডিং ইউনিভার্সাল ভ্যালু) আছে। তা রক্ষা করার জন্য রামপাল প্রকল্প বাতিল অথবা অন্যত্র স্থানান্তর করা হোক। ইউনেসকোর আগে থেকেই বাংলাদেশের মানুষ এই দাবি করছেন। জনমত ও দেশের স্বার্থ গুরুত্ব দিলে ইউনেসকোর কাছে গিয়ে দেশের ও মানবজাতির জন্য ক্ষতিকর প্রকল্পের পক্ষে লবিং করে সরকারকে কলঙ্কিত হতে হতো না।

এ ছাড়া ৪ নম্বর সিদ্ধান্তে সুন্দরবন ও দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় একটি কৌশলগত-পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (এসইএ) শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই অঞ্চলে কোনো বৃহদাকার শিল্প বা অবকাঠামো নির্মাণ না করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। সরকারের দাবি: না, এই বৃহদাকার শিল্পকাঠামোর মধ্যে রামপাল পড়ে না। ৯ অক্টোবর ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের এশিয়া ও প্যাসিফিক ইউনিটের প্রধান প্রথম আলোকে দেওয়া বক্তব্যে পরিষ্কার করেছেন যে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপক্ষকে এই অনুরোধও জানিয়েছে যে এসইএ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ কোনো বড় ধরনের শিল্প এবং/বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চালাতে না দেওয়ার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করবে।’

সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এই প্রকল্প করছে বলে দাবি করে। কিন্তু তা সত্য নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে এর চেয়ে অনেক কম ব্যয়বহুল, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ পথ আছে, তা আমরা সরকারি মহাপরিকল্পনার বিকল্প রূপরেখায় পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছি। আমরা নিশ্চিত বলতে পারি, জনগণকে তাদের মতপ্রকাশ করতে দিলে, এমনকি সরকারি দলের লোকজনকেও যদি অভয় দেওয়া হয়, তাহলে শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ সুন্দরবন ও দেশ রক্ষায় রামপাল প্রকল্পসহ এ ধরনের সবপ্রকল্প বাতিল করার দাবি জানাবে।

কারা তাহলে এর পক্ষে? কাদের জন্য সরকার এত জোর দেখাচ্ছে? এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী প্রভাবশালী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সংখ্যা কম নয়। এই প্রকল্পের জোরে বেশ কিছু সরকার-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি/গোষ্ঠী সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে জমি/বন দখল করে তাদের নামফলক টাঙিয়েছে। হাইকোর্ট এটাকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনের লঙ্ঘন বলে রায় দিলেও সরকারের এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। এসব দখলদারএলাকার সন্ত্রাসী ভাড়া করে সুন্দরবন আন্দোলনের বিরুদ্ধে পাহারা বসিয়েছে। সরকারি প্রশাসন তো তাদের সঙ্গে আছেই। ভারতে কয়লা বিদ্যুতের খুবই মন্দাবস্থা, কয়লা উদ্বৃত্ত হয়ে পড়ে আছে, এই প্রকল্পে এনটিপিসির বড় ব্যবসার ব্যবস্থা হচ্ছে, ভারতের হেভি ইলেকট্রিক কোম্পানি (ভেল) বড় কাজ পেয়েছে, সরকার তাদের নানা কাজে দেয় কর-শুল্ক মাফ করে দিয়েছে, তাদের শেয়ারবাজার দাম বেড়েছে, এক্সিম ব্যাংকের বিশাল ঋণ ব্যবসা হচ্ছে, উদ্বৃত্ত কয়লার বাজার হচ্ছে। এই মাসেই বিশ্বব্যাংক আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনকালে একটি গবেষণা সংস্থার রিপোর্ট থেকে দেখা যায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান আইএফসি এই প্রকল্পের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত। এ ছাড়া জার্মানির ফিশনার কোম্পানি এখানে কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছে। এর সব কটির সঙ্গে আছে দেশি লেজ, সাব কন্ট্রাক্টর, কমিশনভোগী যারা কিছু টাকার জন্য দেশ রসাতলে পাঠাতে দ্বিধা করে না।

এদের সবারই দরকার ক্ষমতার জোর। সরকার সেটাই তাদের উপহার দিচ্ছে। ভারত, চীন, আমেরিকা, রাশিয়ার বাতিল/উদ্বৃত্ত প্রযুক্তি/কাঁচামাল গছিয়ে দিতে, তাদের আধিপত্য বাড়াতে গেলে স্বচ্ছ পথে হয় না, জোর খাটিয়ে তা করতে হয়।

কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে জোর খাটিয়ে অনেক কিছুই করা যায়। সত্যের সঙ্গে মিথ্যা মিশ্রণ করা যায়, সত্যকে মিথ্যা মিথ্যাকে সত্য বলে দাবি করা যায়, জোরজবরদস্তি করে কিছু মানুষকে তা গেলানোও যায়। কিন্তু তাতে সত্য মিথ্যা হয় না, মিথ্যাও সত্য হয় না। আর জোর করে মানুষের মুখ বন্ধ করলেই সেই মত সমাজ থেকে মুছে যায় না।

আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।