বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির রহস্য উদ্ঘাটন করুন

বাচ্চুর প্রতি শুরু থেকেই দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সহানুভূতি প্রকাশ পায়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারকে বেশি বিব্রত না করে যথাসম্ভব বাচ্চুর বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন। এমনকি দুদক যে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে গড়িমসি করে চলছিল, সে বিষয়ে তিনি তাঁর অসন্তোষ গোপন রাখেননি। নির্দিষ্টভাবে বলেছিলেন, ‘দেখি, দুদক কী করে।’ কিন্তু দুদক আশ্চর্যজনকভাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করছিল না। এমনকি ইকবাল মাহমুদের নেতৃত্বে দুদক পুনর্গঠিত হওয়ার দিন থেকে বিভিন্ন মহল বাচ্চুর বিষয়ে সোচ্চার হলেও নয়।

গত এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বাচ্চুর বিষয়ে নির্লিপ্ততার জন্য প্রকারান্তরে দুদককে তিরস্কার করেন। এরপর গত সোমবার বাচ্চুকে তাঁর বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ে উৎসুক আলোকচিত্রীদের ক্যামেরার ভিড়ের মধ্যে বিশেষ ভঙ্গিমার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দেখা গেল। ‘তদন্ত চলছে, অভিযোগ এখনো এস্টাবলিশড হয়নি,’ এতটা আয়েশি ভঙ্গিমাই যেন বলে দিচ্ছে তিনি জনগণের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লুটের ঘটনায় অনুতপ্ত নন। যত দোষ ব্যাংকটির এমডির, এটাই ছিল তাঁর বর্ম। অপেক্ষমাণ সাংবাদিক তথা জনগণের উদ্দেশে কার্যত কোনো গ্রহণযোগ্য কৈফিয়ত দেওয়ার ছিল না। সংসদের কোনো স্থায়ী কমিটি তাঁকে টিভি ক্যামেরার সামনে তলব করেনি। তাঁকে দায়সারাভাবে যারা ডেকেছে, তারা স্বীকৃতমতে নখদন্তহীন। দুদক যে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তলব করে তাঁকে বিব্রত করতে চায়নি, তা-ও তাঁর কাছে পরিষ্কার ছিল।

চার বছর পর দুদকে বাচ্চুর আবির্ভাব কার্যত প্রতিকারপ্রার্থী আমজনতাকে আশ্বস্ত করেনি, বরং তাঁর দৃশ্যমান স্পর্ধা গণ-অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বললে অত্যুক্তি হবে না। কিন্তু আমরা আশা ছাড়ব না। আমরা বিশ্বাস করি, উচ্চ আদালত এবং উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক নির্দেশনা বেসিক ব্যাংক লুটের রহস্য উদ্‌ঘাটনে সহায়ক হবে।