বন বিভাগ ও পুলিশের জবাবদিহি কোথায়?

বিস্ময়ের কথা হলো বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে না। দিনের পর দিন সংঘবদ্ধ চক্র এই অপরাধ করে চলেছে, অথচ বন বিভাগের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা স্থানীয় প্রশাসন তাদের শনাক্ত করতে পারছে না। কিছুদিন আগে একটা হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু কারা সেটি শিকার করেছে, তা বন বিভাগ বা পুলিশ জানতে পারেনি। চামড়াটি মাটির নিচে পুঁতে ফেলা হয়েছে এবং বন বিভাগ কোনো মামলা করেনি। কিন্তু এলাকার কিছু লোক বলছেন, কিছু লোক হরিণটার মাংস ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন। যাঁরা ভাগ পেয়েছেন তাঁদের ধরা হলেই জানা যাবে হরিণটি কারা মেরেছেন।

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় এ-সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমলগঞ্জের ইউএনও মোহাম্মদ মাহমুদুল হক হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিকারিদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেলে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা করা যেত। কিন্তু সংরক্ষিত বনে হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুখে এ ধরনের দায়সারা বক্তব্য হতাশাজনক। যাঁরা হরিণ শিকার করছেন, তাঁরা অশরীরী জীব নয় কিংবা ভিন্ন গ্রহ থেকে আসা প্রাণী নয়। তাঁদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য কেন পাওয়া যাচ্ছে না? তথ্য পাওয়ার চেষ্টা কি আদৌ করা হয়েছে? বন বিভাগের লোকজন কী করে? পুলিশ কী দায়িত্ব পালন করে?

স্থানীয় লোকজন যেসব লোকের বিরুদ্ধে হরিণ শিকারের অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। বন বিভাগের লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে তাঁদের যোগসাজশ আছে কি না, উপজেলা প্রশাসনের তা খতিয়ে দেখা উচিত। তাঁদের যোগসাজশ ছাড়া হরিণ শিকারিদের পক্ষে দিনের পর দিন এসব চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কমলগঞ্জের সংরক্ষিত বনের বিট কর্মকর্তাদের জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হোক। হরিণ শিকার বন্ধ করতে হবে।