খালেদা জেলে থাকলেও বিএনপি ভোটে যাবে : রাশেদ খান মেনন

>
রাশেদ খান মেনন
রাশেদ খান মেনন

রাশেদ খান মেনন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। প্রথম আলোর সঙ্গে তাঁর কথা হয় বর্তমান মন্ত্রণালয়ের কাজ, সাবেক মন্ত্রণালয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনের হালহকিকত, সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা ও আগামী জাতীয় নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন  সোহরাব হাসান

প্রথম আলো: আকাশ থেকে (বিমানমন্ত্রী ছিলেন) মাটিতে নেমে কেমন লাগছে?

রাশেদ খান মেনন: আমার কাছে ভালোই লাগছে। আগের কাজের ধরন ছিল ভিন্ন। বিমান ও পর্যটন—দুটোতেই প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হতো। কারণ, এর সেবাপ্রার্থীরা ছিলেন ভিআইপি। নানা ধরনের চাপ থাকত। বাংলাদেশ বিমানকে টেনে তোলা কঠিন ছিল। ট্রেড ইউনিয়নের দিক থেকে তেমন বাধা আসেনি। সমস্যা ছিল মধ্যম পর্যায়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায়। নানা বাধা সত্ত্বেও বিমান পরপর তিন বছর লাভের মুখ দেখেছে। আইকাও (ICAO) এর নিরীক্ষায় শাহজালাল বিমানবন্দর এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাতে পেরেছি। আর পর্যটনকে আমি শূন্য থেকে শুরু করে একটা অবস্থায় নিয়ে এসেছিলাম। আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছিলাম। তখনই তাবেলা সিজার হত্যা ও হোলি আর্টিজান বেকারি ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটে। বিদেশিরা সব বুকিং বাতিল করে দেন। তবে অভ্যন্তরীণ পর্যটন অনেক বেড়েছে।

প্রথম আলো: আর সমাজকল্যাণে এসে কী দেখলেন। একই অনিয়ম–দুর্নীতি?

রাশেদ খান মেনন: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে। যেমন বয়স্ক ভাতা, দুস্থ ভাতাসহ সব সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ে যাঁরা আছেন, তাঁদের নিয়ে। এদিক থেকে আমি তৃপ্ত। এখানে বড় দুর্নীতি হওয়ারও সুযোগ নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তালিকা করেন, সেই তালিকা অনুযায়ী ভাতা দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। ডেটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে সেবাপ্রার্থীরা সরাসরি ভাতা পেয়ে যান। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি পুরো বিষয়টি ডিজিটাল করতে। সে ক্ষেত্রে দুর্নীতির সুযোগ একেবারেই থাকবে না। সমাজকল্যাণে বাজেট বেড়েছে। বিদেশি সংস্থার রিপোর্টেও আমাদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সফল বলে অভিহিত করা হয়েছে। তবে দুর্নীতি যে একেবারে নেই, সে দাবিও আমি করব না।

প্রথম আলো: আগামী জাতীয় নির্বাচনের সানাই বাজছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে অক্টোবরেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

রাশেদ খান মেনন: আমি তো সংশয় দেখি না। সংশয় রয়েছে পত্রপত্রিকায় এবং রাতে যাঁরা টক শো করেন, তাঁদের মধ্যে। সংশয় থাকতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল—যারা সব সময় নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থায় দেখতে চায়।

প্রথম আলো: আপনি কি বিরোধী দলকে বোঝাচ্ছেন?

রাশেদ খান মেনন: আমি সব দলের কথাই বলছি। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ আছে। কিন্তু জনগণের মধ্যে কোনো সংশয় নেই। আমি কোনো সংশয় দেখছি না। বিএনপি নির্বাচনে আসবে।

প্রথম আলো: আপনি যে উদ্দেশ্য নিয়ে ১৪ দলে যোগ দিয়েছেন এবং মন্ত্রী হয়েছেন, তা কতটা পূরণ হয়েছে?

রাশেদ খান মেনন: ২০০৪ সালে আমরা ১৪ দল করেছিলাম। প্রথম কথাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক ধারায় বাংলাদেশ পরিচালনা। আমরা তো সংবিধানের মৌলনীতিগুলো প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি, যদিও রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে বহাল রয়েছে। এ নিয়ে আমরা আপত্তিও জানিয়েছি। আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার, সেটিও আমরা করেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। ২১ আগস্ট হামলার বিচার হচ্ছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচার হচ্ছে। আমরা বিচারহীনতা থেকে বেরিয়ে এসেছি। নবম সংসদে বিরোধী দলের সদস্য কম থাকা সত্ত্বেও বেশ প্রাণবন্ত ছিল। বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে বিতর্ক হয়েছে। বর্তমান সংসদেও বিতর্ক হয়। এমনকি বাজেট প্রশ্নে মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আপত্তি তুলেছেন। ভ্যাটের বিরুদ্ধে আমিও বলেছি। অর্পিত সম্পত্তি আইনের সংশোধন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।

প্রথম আলো: তাহলে আপনি কি সন্তুষ্ট?

রাশেদ খান মেনন: আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট বলব না। আমরা তো বৈষম্যের অবসান চাই। সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা চাই। কিন্তু সেটি তো হচ্ছে না। এখন ন্যায্যতাভিত্তিক মানবিক মর্যাদাপূর্ণ একটি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কিন্তু গত দুই বছরে উন্নয়নের ধারায় আয়বৈষম্য প্রচণ্ডভাবে বেড়েছে। এটুকুই বলব, সামনের দিকেই যাচ্ছি। পেছনে হাঁটছি না। 

প্রথম আলো: উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসনের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সুশাসন কতটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?

রাশেদ খান মেনন: সুশাসন একটি ধারণা। তুলনামূলকভাবে এর বিচার করতে হবে। আমরা যদি বিএনপির আমলের সঙ্গে কিংবা এরশাদের সামরিক শাসনের আমলের সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে বলব, আমরা এগিয়েই আছি।

প্রথম আলো: কিন্তু জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সাহেব বলেছেন, তাঁর আমলেই নাকি বেশি সুশাসন ছিল। মানুষ শান্তিতে ছিল।

রাশেদ খান মেনন: বলুক। ভোটের সময় দেখা যাবে মানুষ তাঁর কথা শোনেন কি না। এরশাদের আমলে তো প্রতিদিন আমাদের পালিয়ে থাকতে হতো, সেটি তো এখন হচ্ছে না।

প্রথম আলো: আপনি বৈষম্য কমানোর কথা বলছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার বিভিন্ন নীতি পরিচালনায় সুবিধাভোগী বা ওপরতলার মানুষদেরই পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে।

রাশেদ খান মেনন: এ ধরনের প্রবণতা আছে। এ নিয়ে বিতর্কও হয়। কোনো গোষ্ঠীর হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হলে সমাজে তার প্রভাব পড়ে। এ জন্য আমাদের প্রয়োজন ছিল বামদের ঐক্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও সত্য, সেটি হয়নি।

প্রথম আলো: ব্যাংকিং খাতে যে লুটপাট চলছে, সে বিষয়ে কী বলবেন?

রাশেদ খান মেনন:  জাতীয় সংসদে বলেছি, একই পরিবারের চারজনকে ব্যাংকের মালিক করা হয়েছে, এটি ঠিক হয়নি। প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু আমরা চাইলেই তো সব হয় না। ব্যাংকিং খাত আমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই খাতের সংস্কার প্রয়োজন।

প্রথম আলো: সারা দেশে সড়কের যে বেহাল অবস্থা, ভোটারদের কাছে কী বলবেন?

রাশেদ খান মেনন: গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যা হওয়ায় সারা দেশের সড়কগুলো বিধ্বস্ত হয়ে যায়। সেগুলো সংস্কারের কাজও চলছে। তবে সব সড়কের অবস্থা খারাপ নয়। যশোর-ঢাকা সড়কের অবস্থা ভালো। কোনো কোনো সড়কে সংস্কারকাজ করার কারণে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। যেমন ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক। সড়কের উন্নয়নে বড় ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর ঢাকা শহরে দুর্ঘটনার কারণ পরিবহনের অব্যবস্থাপনা। অনেক সময় পথচারীরা রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

প্রথম আলো: বামদের একাংশ আপনারা সরকারে, আরেক অংশ সরকারের বাইরে। কারা সঠিক পথে?

রাশেদ খান মেনন: এটা মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। বামেরা ঐক্যের কথা বললেও এক থাকতে পারি না। ১৪ দলের সব বাম একসঙ্গে থাকতে পারলে অনেক লাভ হতো।

প্রথম আলো: ২০১৪ সালের নির্বাচন শুধু বিএনপি-জামায়াত বর্জন করেনি। সিপিবি-বাসদসহ নিবন্ধিত বেশির ভাগ দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

রাশেদ খান মেনন: ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটটি দেখতে হবে। ২০১৩ সালজুড়ে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধের জন্য তাণ্ডব চালিয়েছে। এরপর বিএনপি-জামায়াত মিলে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। সেদিন তো স্বাভাবিক পরিবেশ ছিল না। আমাদের কাছে সাংবিধানিক ধারা বজায় রাখার বিকল্প ছিল না। কে নির্বাচনে অংশ নিল, কে নিল না, তার জন্য সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত অংশ না নিলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে—এই যুক্তি কোনোভাবেই মানা যায় না। আর কমিউনিস্ট পার্টি কেন বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে মিলে নির্বাচনে এল না, সেটি এখনো প্রশ্ন হয়ে আছে। এবারে নির্বাচন হবে। কমিউনিস্ট পার্টিও আসবে, এমনকি বাম মোর্চা, যারা সব সময় নির্বাচনের
বাইরে ছিল, তারাও আসবে। এমনকি খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। তারা বলবে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্যই তারা নির্বাচনে যাচ্ছে।

প্রথম আলো: আপনি এমন একটি উদাহরণ দিতে পারবেন, সরকারে গিয়ে দলের কোনো দাবি বা অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন?

রাশেদ খান মেনন: একটি বিষয়ে বলতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি কমিশন আইন সংশোধন নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছিল। আমি সরকারকে বোঝাতে পেরেছি। সংশোধনীটি সবাই গ্রহণ করেছেন।

প্রথম আলো: এ ক্ষেত্রে বাধা ছিল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব না আমলাতন্ত্র?

রাশেদ খান মেনন: আমলাতন্ত্র।

প্রথম আলো: গণমাধ্যমকে আপনারা (সরকার) ভয় পাচ্ছেন কেন?

রাশেদ খান মেনন: আমরা ভয় পাব কেন? সবই তো লেখেন আপনারা। প্রথম আলোর ক্ষেত্রে হয়তো বিজ্ঞাপনের চাপ আছে। আমি যদি অন্যান্য পত্রিকা দেখি, কোনো বাধা আছে বলে মনে করি না। টেলিভিশনে তো দেখি অনেকেই আমাদের উপদেশ দিচ্ছেন।

প্রথম আলো: কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। আপনি কি তাঁদের দাবি ন্যায্য মনে করেন?

রাশেদ খান মেনন: কোটার ব্যাপারে তো প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে কোটার বিষয়টি জটিল। পাকিস্তান আমল থেকে কোটা ছিল। সেটি না থাকলে হয়তো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এত বেশি সিএসপি হতে পারতেন না। বাংলাদেশ হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কোটা চালু করেছিলেন বলেই পিছিয়ে পড়া জেলাগুলো থেকে বিসিএস কর্মকর্তা হতে পেরেছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটাকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার বিষয়ে কেউ আপত্তি করেনি। এ ব্যাপারে গঠিত তিনটি কমিশনও সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে। ন্যায়সংগতভাবেই সংস্কার হওয়া উচিত।

প্রথম আলো: হেফাজতের সঙ্গে সরকার আপস করছে। আপনারা প্রতিবাদ করছেন না কেন?

রাশেদ খান মেনন: আমরা প্রতিবাদ করিনি—এ কথা ঠিক নয়। সংসদের ভেতরে ও বাইরে এ নিয়ে কথা বলেছি। তবে এ ব্যাপারে আমরা সম্মিলিতভাবে সবাইকে সোচ্চার করতে পারিনি। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে পাঁচ দফা চুক্তি করেছিল। ১৪ দলের বৈঠকে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। পরে বাতিল করা  হয়েছে। এখনো এ ধরনের প্রস্তাব যে আসে না, তা নয়। আমরা প্রতিবাদ করছি।

প্রথম আলো: বিএনপিকে সরকার রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা ও সরকারি দলের নেতা বক্তৃতা শুরু করেন বিএনপি দিয়ে, শেষও করেন বিএনপি দিয়ে।

রাশেদ খান মেনন: এ কথা তো ঠিক, বিএনপির একটা বড় ভোটব্যাংক আছে। নির্বাচনে তারাই প্রধান প্রতিপক্ষ হবে। সে ক্ষেত্রে তাদের অপপ্রচারের জবাব দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিশেষ করে লন্ডনে থেকে তারেক রহমান যেসব কথা বলেছেন, তার জবাব না দিলে মানুষ তো ওটাকেই সঠিক বলে ধরে নেবেন। তিনি তো আমাদের সংবিধান ও স্বাধীনতার দলিল—সবকিছু অস্বীকার করছেন। এসবের জবাব না দিলে তো নতুন প্রজন্ম প্রকৃত সত্য জানতে পারবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ৭০ শতাংশ বিএনপি-জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে। অতএব, তাদের অপপ্রচারের জবাব তো সরকারকে দিতেই হবে।

প্রথম আলো: ছাত্ররাজনীতি থেকেই আপনারা জাতীয় রাজনীতিতে এসেছেন। আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন। কিন্তু এখন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না কেন?

রাশেদ খান মেনন: সেই ছাত্ররাজনীতি নেই। কারণ, নব্বই-উত্তরকালে ছাত্রসংগঠনগুলো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে কিন্তু এটা ছিল না। তখন ছাত্রসংগঠনগুলোর আলাদা সত্তা ছিল। ছাত্ররাজনীতির যে আলাদা বৈশিষ্ট্য, তা আর এখন নেই। আর দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে না দেওয়ায় ছাত্র নেতৃত্বে অছাত্ররা চলে এসেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে যে তদন্ত কমিটি হয়েছিল, সেই কমিটির পক্ষে আমরা সুপারিশ করেছিলাম, ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে অনীহা প্রকাশ করে এসেছে।

প্রথম আলো: কিন্তু সরকার চাইলে কি তারা নির্বাচন না দিয়ে পারেন?

রাশেদ খান মেনন: এটি সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই সিদ্ধান্ত নেবে।

প্রথম আলো: আবার নির্বাচনের কথায় ফিরে আসি। আগামী নির্বাচন কেমন হবে? মানুষ ভোট দিতে পারবে?

রাশেদ খান মেনন: নির্বাচন ভালো হবে। মানুষও ভোট দিতে পারবে এবং ফলাফলেও তার প্রতিফলন ঘটবে।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

রাশেদ খান মেনন: আপনাকেও ধন্যবাদ।