সিলেটের অতুলনীয় সম্প্রীতিতে ফাটল ধরবে?

সিলেটে আজকের নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থী ভালো বা মন্দ, যেমন নির্বাচনেই জিতুন, তিনি বিরোধী দল সমর্থক, বিশেষ করে সিলেটের বাইরের মানুষের কাছে কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হতেই পারেন। যদি এমন আদৌ ঘটে, তাহলে তার দোষ প্রার্থীকে দেব না, দেব পুলিশকেই।

নির্বাচনী প্রচারকালে সিলেট পুলিশ প্রশাসন এমন কয়েকটি গ্রেপ্তার কিংবা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যা আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ভাবমূর্তির জন্য সহায়ক হয়নি।

অবাধ নির্বাচন হলে দুই প্রধান দলের মনোনীত প্রার্থীদের যে-কারও জেতার সম্ভাবনা মোটা দাগে বলতে পারি প্রায় সমান সমান। প্রতীয়মান হয়েছে যে অবস্থাটা কারওরই এমন নয়, ‘জোয়ার এসে গেছে। মাঝি, তরি ভাসাও।’ আমি মনে করি, সারা দেশে শাসনগত অসামর্থ্যের ভূরি ভূরি নজির স্থাপনের মধ্যেও সরকারি দলের জন্য এটা স্বস্তির।

এতে সন্দেহ সামান্য যে সিলেটের আজকের নির্বাচন নৌকা ও ধানের শীষের সনাতনী লড়াই নয়। দলীয় প্রতীক সিলেটের শান্তিপ্রিয় নির্দলীয় ভোটারদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। সিলেটের বিভিন্ন স্তরের ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে মনে হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই আজ ভোট দেবেন, মূলত স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একজন স্থানীয় নেতা নির্বাচনের জন্য। তারা দুই বড় দলের কাজিয়ার পক্ষে-বিপক্ষে কোনো ম্যান্ডেট দেবেন না।

সিলেট হতে পারে উত্তেজনামুক্ত স্থানীয় শাসনের রোল মডেল। সহকর্মী টিপু সুলতান ও সুমনকুমার দাশের রোববারের প্রতিবেদনটি তারই সাক্ষ্য দেবে। তাঁরা দেখিয়েছেন, সংখ্যালঘু, ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও আন্তর্দেশীয় অভিবাসী—এই তিন ভোটব্যাংক বিজয়ীর গলায় মালা পরাবে। আর এই তিন ভোটব্যাংকের ওপর কোনো ব্যক্তির একক কর্তৃত্ব নেই।

তবে আমার মনে হয়েছে, সংখ্যালঘুরা নৌকার ভোটব্যাংক বলে যে ধারণা প্রায় স্বতঃসিদ্ধ, সেটা দেশের অবশিষ্ট অংশে যেভাবে কাজ করে, সেভাবে সিলেটে কাজ নাও করতে পারে। দাঁড়িয়াপাড়া ওয়ার্ড, যেখানে প্রায় ৫০ শতাংশ হিন্দু ভোটার, সেখানে এক জামায়াত নেতা দুবার সংখ্যালঘু প্রার্থী হারিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এসবই জোরালো ইঙ্গিত রাখছে যে সিলেটে কলাগাছ তত্ত্ব (মার্কার জোরে জেতা) সেভাবে কাজ করবে না।

আমি এটা বিশ্বাস করতে চাই, সরকারি দলের প্রার্থী ‘যেকোনো মূল্যে’ নির্বাচনে জয়ী হতে চান না। তবে সরকারি দলের প্রার্থীর ওপর এমনটাই চাপিয়ে দেওয়া হলে অবাক হব না।

প্রার্থীরা চান বা না চান, দুই বড় দলই তাদের সার্বিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ভোটের ফলাফলকে একধরনের ম্যান্ডেট হিসেবে দেখার চেষ্টা করবে। কিন্তু সেটা প্রকৃত বাস্তবতা থেকে অনেক দূরের বিষয় হয়েই থাকবে। অন্য দুটি সিটির চেয়ে অনুমান করি, সেটা সিলেটের জন্য অনেক বড় সত্যি বিষয়।

দুই বড় দলের কুশলীবেরা এই নির্বাচনের হারজিতের প্রশ্ন ‘দলীয়করণ’ করা ছাড়া আর কোনো দিক থেকেই ভাবতে প্রস্তুত নয়। সেটা তাঁরা তাঁদের প্রতিদিনের বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে পরিষ্কার করে দিচ্ছেন এবং আজকের দিনটির ঘটনাবলিকেও সেভাবেই চিত্রিত করা হবে।

সিলেটে সরেজমিনে পরিদর্শন (২৫-২৯ জুলাই) করে আমার একটা লাভ হয়েছে, কিছু সত্য আমি নতুন করে অনুভব করেছি। সিলেটের মানুষ আধ্যাত্মিকতা, তাঁরা ঠিক সমতলের জনগোষ্ঠী নন বলে, ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে বলে কিংবা আরও বিবিধ কারণে (তাঁদের বর্ণমালার স্বকীয়তা আছে, বাংলার চেয়ে ঘরে তাঁরা সিলেটি বলতে গর্বিত, সিলেটি ভাষায় বাইবেল মেলাও লক্ষণীয়) তাঁরা এখন পর্যন্ত রাজনীতিকে সহিংসতা থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে রাখতে পেরেছেন।

২৯ জুলাই বেলা আড়াইটায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে সিলেট ত্যাগের আগে আমি সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া এবং জেলা প্রশাসক নুমেরী জামানের সঙ্গে পৃথকভাবে তাঁদের দপ্তরে দুই ঘণ্টার মতো কথা বলেছি। তাঁরা উভয়ে একমত হন যে রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও সভ্যতা-ভব্যতার দিক থেকে সিলেট দেশের অন্যান্য স্থানের থেকে এখনো স্বর্গ। প্রাক্‌-নির্বাচনী সহিংসতা বলতে সত্যি তেমন কিছুই ঘটেনি।

প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি ও দলের মধ্যে ‘হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশের’ কথা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন পুলিশ কমিশনার। জনাব কিবরিয়ার চাকরিজীবন প্রায় তিন দশকের। প্রশ্নের উত্তরে তিনি ইঙ্গিত দেন, সিলেটি রাজনীতিতে সহিংসতা যেটুকু আছে, সেটা অভ্যন্তরীণ, আন্তদলীয় নয়। বিএনপির বসে যাওয়া বিদ্রোহী প্রার্থী নাকি ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন, জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘এমন অভিযোগ আমরা পাইনি। তাঁর পরিবার কিছু বলেছে বলেও তো জানি না।’

জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান অল্পকাল এসেছেন। কিন্তু সিলেটবাসীর অহিংস জীবনাচারে তিনিও মুগ্ধ। ফেঞ্চুগঞ্জে কোনোরূপ শান্তিভঙ্গ ছাড়াই সম্প্রতি পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেন। বললেন, ভোটপর্বের (আজকের) সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই চমৎকার। বললাম, ‘অনেকের (আরিফুল হকসহ) মতে, দেশভাগ-পরবর্তী সিলেটের ইতিহাসে স্থানীয় নির্বাচনে কখনো কারচুপি হয়নি। এটা সত্যি?’ বললেন, তিনিও এমনটাই শুনেছেন।

আমি স্পষ্টত আরও গভীরভাবে অনুভব করলাম, মেয়র পদের নির্বাচনকে দলীয় প্রতীক দিয়ে ছিনতাই করা একদম অনুচিত হয়েছে। এর মাধ্যমে কার্যত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-প্রবর্তিত স্থানীয় শাসনের বিকাশমান ধারণায় কুঠারাঘাত করা হয়েছে। আমরা যদি ঠুলি সরিয়ে একটু দূরে তাকাই, তাহলে দেখব, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ঠিক একইভাবে পাঁচটি সিটি নির্বাচন একটি সাধারণ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন দলের জন্য একটি প্রেস্টিজ ইস্যুতে পরিণত হবে। আর প্রতিবারই স্থানীয় জনতার অনুভূতি ক্ষতবিক্ষত হবে।

এটা মনে হতে পারে, যেকোনো মূল্যে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের যূপকাষ্ঠে এখন স্থানীয় নির্বাচনও বলি হতে হচ্ছে।

তবে সিলেটবাসীকে ভোটাধিকার থেকে সত্যিই বঞ্চিত করা হলে তাঁরা কী করেন, সেটাও দেখার বিষয় হবে। দুই মেয়র প্রার্থীই দলের সক্রিয় ও পরীক্ষিত নেতা। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাঁরা দল করেন বলেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মৌলিক চরিত্র পাল্টে দিতে পেরেছেন। সেটা যে অনেক স্থানে একেবারেই পারা যায়নি, তার নন্দিত উদাহরণ নারায়ণগঞ্জের একজন সেলিনা হায়াৎ আইভী। বাইরে দল, মেয়র হিসেবে নির্দল।

সিলেটের আরেকটি বিষয় পীড়াদায়ক, সেটা হলো মেয়র পদের দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর দুর্নীতির প্রতি কারওরই জিরো টলারেন্স আছে, তা প্রতীয়মান হয়নি। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় এ ধরনের প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক হতে পারেনি। নৌকা নাকি ধানের শীষ, অবাধ নির্বাচন নাকি কারচুপিপূর্ণ নির্বাচন, এসব কূটতর্ক সব নীতিনৈতিকতাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

আশা করব, সরকারের উচ্চপর্যায়, যাঁরা সিলেটের পুণ্যভূমি থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন, তাঁরা সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতির যেটুকু বাকি আছে, তাকে সুরক্ষা দেবেন কি দেবেন না, তা তাঁরা বিবেচনায় নেবেন আজ।

সিলেটের পুলিশি ভূমিকা নিয়ে মানুষ সন্দিহান থাকাটাই স্বাভাবিক, তাই আজকে তারা কখন কী করে বসে, সেটা দেখার জন্য অনেকেরই কৌতূহল থাকবে।

নির্বাচন প্রচারণার শেষ দিনের আগের দিনে অর্থাৎ ২৮ জুলাইয়ে পুলিশ বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হকের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সচিব আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বিএনপির পুরোনো নেতা, সিলেট রাজনীতির চেনা মুখ। অনধিক যে ডজনখানেক বিএনপি নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকই ডাকসাইটে। এর আগে পুলিশ আরিফুলের মনোনয়নপত্র উত্তোলনকারী অ্যাসিড-সন্ত্রাসবিরোধী মঞ্চের জুরেজ আবদুল্লা গোলজারকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা প্রতীয়মান হতে পারে যে এই দুজনের গ্রেপ্তার প্রতীকী। আরিফুল হকের পুনরায় মেয়র হওয়ার চেষ্টার সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে এ যেন একটি হুঁশিয়ারি সংকেত। যদিও সিলেটের ধাঁচটাই হলো বিরোধী দল থেকে মেয়র করা। সাইফুর রহমানের উন্নয়নযজ্ঞ পর্বে কামরানকেই মানুষ মেয়র (১৮ বছর ছিলেন) করেছে। পুলিশ এর মাধ্যমে আরিফুল হকের শিবিরে স্পষ্টতই একটি বার্তা প্রেরণ করেছে।

সেই বার্তা বেআইনি, নির্দয়, পক্ষপাতদুষ্ট এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি হুমকি।

পুলিশ কী উদ্দেশ্যে অনেকটা গায়ে পড়ে ভয়ভীতি কিংবা যথেষ্ট সন্দেহ-সংশয় তৈরি করতে পারে, এমন কিছু ‘তৎপরতা’ দেখাল বলে প্রতীয়মান হলো, সেটা আজকে সিলেটে কী ধরনের নির্বাচন হয়, কত ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয়, এজেন্টরা সব কেন্দ্রে সব সময় থাকেন, নাকি গাজীপুর মডেলে ‘স্থানান্তরিত’ হন বলে অভিযোগ ওঠে, সেটা দেখার বিষয় বটে। আরিফুল হক আমাকে বলেছিলেন, একটি থানা থেকে ফোনে তাঁর কাছে এজেন্ট তালিকা জমা দিতে বলেছিল, অবশ্য পুলিশ এমন দাবি অস্বীকার করেছে।

নির্বাচন বাস্তবে যেমনই হোক, আশা করি, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাঁকে খুশি তাঁকে দেব’ নীতির ভিত্তিতে হবে। তারপরও পুলিশের নিরপেক্ষতা হারানোর মতো একটি পরিবেশে আজ সিলেটের মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সিলেট এতটাই শান্ত যে আমি যখন বললাম, অনেক সময় বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা নেওয়া (বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে) হয়, সেটা এখানে হলো না কেন, তখন প্রশাসনিক উত্তর পেলাম, ওহ্‌, এটা তো আমরা খেয়াল করিনি!

পুলিশ কমিশনার ও ডিসির কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ২০১৩ সালের একটি মামলায় জারি করা (‘সম্ভবত’ ২০১৩ সালেই আদালত জারি করেছিল) একটি তামাদি ওয়ারেন্ট তামিলের অবাক পদক্ষেপটি ভোটগ্রহণের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে না নিয়ে পরে করলে কি চলতই না? এটা বিশ্বাসযোগ্য?

তাঁরা উভয়ে প্রকারান্তরে ‘আইনের আপন গতির’ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। (জনৈক কর্মকর্তা এর আগে তাঁর স্মার্টফোনে আমাকে ডিজিটাল ওয়ারেন্ট দেখালেন, উদ্দেশ্য নিরপেক্ষতা প্রমাণ করা যে এটা পুলিশি ওয়ারেন্ট নয়)।

সার্বিক বিচারে আশা করব, সরকার এটা বিবেচনায় নেবে যে সিলেটকে তারা দলীয়করণের ভয়াল দূষণ থেকে বাঁচতে দেবে কি দেবে না। ওই সমাজে ভোট কারচুপি ঢোকালে তার বিষবাষ্পে সম্প্রীতির চিরায়ত মেলবন্ধনে চিড় ধরাবেই।

বিএনপির যে নির্বাচনী কর্মীকে সিলেট পুলিশ প্রথম আটক করেছিল, তাঁর মুক্তির তদবির করতে আরিফুল ফোন করেছিলেন কামরানকেই। আর কামরানের বদান্যতায় সেই ছেলেটি তাৎক্ষণিক ছাড়াও পেয়েছিলেন। উভয় মেয়র প্রার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাকে এই কাহিনি বলেছেন। এই সমঝোতা-সম্প্রীতির সত্যি কোনো তুলনা নেই।

প্রশ্ন হলো, এটা বজায় থাকবে কি থাকবে না? শনিবার রাতে সিলেট বারের একজন প্রবীণ সাবেক সভাপতি আমাকে বলেছিলেন, কী আশ্চর্য, এক মেয়র প্রার্থীর পোস্টার কে বা কারা সরিয়ে দিয়ে নিপুণ হাতে নৌকা ও ঘড়ির (জামায়াতের) পোস্টারে প্রধান সড়কগুলো ছেয়ে দিয়েছে। তখন বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে।

রোববার সকালে পূর্ব জিন্দাবাজার থেকে দৈনিক শুভ প্রতিদিনের সামনে দিয়ে পুলিশ কমিশনারের অফিসে যাই। সর্বত্র চোখে পড়ে, ঘড়ির পোস্টার যেন গত রাতেই পুনরায় লাগানো হয়েছে। আর তা ব্যাপক। কোথাও কোথাও নৌকা ও ধানের শীষ বিবর্ণ, বৃষ্টিতে ভিজে প্রায় দলা পাকানো। ঝকঝক করছে জুবায়েরের ছবি, পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের প্রধান তোরণেও হাস্যোজ্জ্বল জুবায়ের সতত উড়ন্ত, ৩৪টি ফৌজদারি অপরাধ মামলার ‘দুর্ধর্ষ’ আসামি হিসেবে এই সেদিনও তিনি ফেরার ছিলেন।

পুলিশ কমিশনারের অফিস থেকে বেরিয়ে বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানকে ডানে রেখে বন্দরে অবস্থিত সিটি করপোরেশন (সম্মুখভাগে কেবলই নৌকার পোস্টার) সংলগ্ন ডিসি অফিসে যাই। সেখান থেকে কোর্ট পয়েন্ট হয়ে বিমানবন্দর।

দেখি একই দৃশ্য, সড়কদ্বীপগুলোর ল্যাম্পপোস্টে নৌকা ও ঘড়ির পোস্টারগুলো ফ্রেমে বাঁধানো। পাশাপাশি। ওপরে নৌকা, নিচে ঘড়ি। কোথাও এই শৃঙ্খলার কোনো ব্যত্যয় নেই।

আহা, নৌকা ও ধানের শীষের এমন নিখুঁত ফ্রেমের সহাবস্থান একটিবারের জন্যও চোখে পড়ল না কোথাও!

সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে আজ একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সিলেটবাসীকে আগাম অভিবাদন।

মিজানুর রহমান খান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক