গর্ত ধসে আবার শ্রমিকের মৃত্যু

প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত ২৩ জানুয়ারি শাহ আরেফিন টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর তুলতে গিয়ে গর্ত ধসে পাঁচজন শ্রমিক নিহত হন। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি একই জায়গায় ফের গর্ত ধসে নিহত হন আরেক শ্রমিক। ২ মার্চ তৃতীয় দুর্ঘটনায় একজন পাথর ব্যবসায়ী নিহত হন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার গর্ত ধসে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

২৩ জানুয়ারি একসঙ্গে পাঁচ শ্রমিক মারা যাওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হয়। তদন্তে শাহ আরেফিন টিলা ধ্বংসের জন্য দায়ী ৪৭ ব্যক্তির একটি তালিকা তৈরি করা হয়, যাঁরা ‘পাথরখেকো’ বলে অভিহিত। তদন্তে অবৈধ পাথর উত্তোলনের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা থাকার প্রমাণ পাওয়ায় কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও ও থানার ওসিকে বদলি করা হয়। এরপর টিলায় খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।

কিন্তু দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কা করছেন না কোনো কোনো পাথর ব্যবসায়ী। ৪৭ জন পাথরখেকোর একজন আবদুল হান্নানের গর্ত থেকে পাথর উত্তোলন করতে গিয়েই পাথরচাপা পড়ে গত বৃহস্পতিবার ওই শ্রমিক নিহত হন।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, আবদুল হান্নানসহ ৪৭ জনকে কেবল ‘পাথরখেকো’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ যদি তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনও হতো না এবং গর্ত ধসে আবার শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটত না।

উপজেলা প্রশাসন টিলা কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরও কীভাবে আবদুল হান্নান আবার পাহাড় কাটতে সাহস পান? প্রশাসনের কারও সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। চিহ্নিত পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি যাঁরা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে মদদ দিচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে।