প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর প্রতিবন্ধকতা

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর আয়োজনে ও সেভেন রিংস্‌ সিমেন্টের সহযোগিতায় ‘প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* প্রকৌশলী নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী–পুরুষ বৈষম্য পরিহার করতে হবে
* প্রকৌশল পেশায় যেসব নারী ভালো করছেন, তাঁদের তরুণ প্রজন্মের কাছে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা প্রয়েজান
* পরিবার ও সামাজিক অবস্থান থেকে নারীদের এ পেশায় আসার জন্য উৎসাহ দিতে হবে
* প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা দরকার
* প্রকৌশল িবশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন
* প্রকৌশল পেশায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীর আরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে
* প্রতিষ্ঠানগুলোকে নারী কর্মীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে হবে
* বেসরকারি পর্যায়েও নারী কর্মীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম
দেশের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীদের কমবেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আজকের আলোচনা প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর প্রতিবন্ধকতা।
প্রকৌশল শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীরা ঠিক কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সেটা আমাদের জানা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো আলোচনায় আসা জরুরি। তাহলে ভবিষ্যতে প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও তা দূর করতে পারলে নারী–পুরুষের প্রায় সমান অংশগ্রহণ সম্ভব হতে পারে।
আমাদের আলোচনার ভেতর দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়েও এই পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগগুলো তুলে ধরতে পারি।
এখন আলোচনা করবেন আতিক আকবর।

আতিক আকবর
আতিক আকবর

আতিক আকবর
নির্মাণক্ষেত্রে প্রকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মক্ষেত্রে অগণিত প্রকৌশলীর প্রয়োজন হয়। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। তাঁদের বাদ দিয়ে এ পেশায় প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া বেশ কঠিন। ফলে নারীরা যদি এ পেশার জন্য তৈরি হন, তাঁদের জন্য বড় সুযোগ অপেক্ষা করছে।
আমাদের দেশের অগ্রগতির জন্য নারীদের সর্বাত্মক সাহায্য করতে হবে। তাহলে তাঁরা এ পেশায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারবেন। দেশের চলমান উন্নয়ন টেকসই করতে হলে এই বিপুল নারী জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। এ জন্য দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চলমান ধারা বজায় রাখার ক্ষেত্রে নারীদেরও প্রকৌশল পেশায় সমানতালে এগিয়ে আসতে হবে।
২০১৭ সাল থেকেই আমরা সেভেন রিংস্‌ সিমেন্টের পক্ষ থেকে প্রতিবছর নারী দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন পেশায় নারীর অংশগ্রহণের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করি। পাশাপাশি সেগুলো সমাধানের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টাও আমাদের অব্যাহত আছে।
আশা করি, ভবিষ্যতে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব। ফলে দেশের এই সম্ভাবনাময় খাতে নারীরাও পুরুষদের সমান অংশ নিতে পারবেন।

ফাতিমা মাহনাজ
ফাতিমা মাহনাজ

ফাতিমা মাহনাজ
প্রকৌশল পেশায় নারীদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো সামাজিক চিন্তাধারা। সবার ধারণা, নারীরা সেবামূলক পেশা—চিকিৎসক, শিক্ষকতা এগুলোতে ভালো করতে পারবেন। তাই প্রকৌশল পেশায় পুরুষের অংশগ্রহণ নারীদের তুলনায় বেশি।
এ ছাড়া অনেকেই মনে করেন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত নারীদের জন্য না। ফলে সামাজিকভাবে তাঁদের কখনো এ ধরনের পেশাগুলোতে উৎসাহ দেওয়া হয় না।
এ ধারণা সম্পূর্ণভাবে ভুল। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ৪৫ শতাংশ নারী।
যদি নারীদের এসব বিষয়ে দক্ষতা কম থাকত, তাহলে তো সেখানে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব হতো না।
অনেকে মনে করেন, প্রকৌশল পেশার কাজগুলো কায়িক শ্রমের। তাই পরিবার নারীদের এ ধরনের পেশায় আসতে দিতে চায় না। অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রকৌশলী নিয়োগের ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় কম মেয়ে নিয়োগ করে। কেননা নারী প্রকৌশলীর ক্ষেত্রে বেশি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।
এ ছাড়া স্যানিটারি–সুবিধা, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ আরও নানা রকম বিষয় জড়িয়ে থাকে নারী কর্মীর ক্ষেত্রে। নেতৃত্ব পর্যায়ে লিঙ্গবৈষম্য থাকার ফলে মেয়েদের সুযোগ আরও কমে আসে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের কাজের সুযোগ বেশি। প্রকৌশল ক্ষেত্রে গবেষণা, ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে প্রচুর নারী কর্মীর কাজ করার সুযোগ থাকে।
তবুও সেখানে নারীদের অংশগ্রহণ দেখা যায় না। কারণ, এ পেশায় চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারী সদস্য আসছেন না। তাই নারীদের অনুপ্রেরণা দিতে হবে প্রকৌশল পেশায় আসার জন্য।
এ জন্য আমাদের প্রয়োজন রোল মডেল বা আইকন। প্রকৌশল পেশায় যেসব নারী কাজ করছেন, তাঁদের সামনে আনতে হবে।
যেন আগামী দিনের নারীরাও এ পেশায় আসতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

নেলী মিস্ত্রি
নেলী মিস্ত্রি

নেলী মিস্ত্রি
প্রকৌশল পেশায় মেয়েদের নিতে না চাওয়ার কারণ হলো সময়। প্রকল্পে রাতভর নির্মাণকাজ চলে। যেখানে একজন নারী কর্মীর নিরাপত্তার পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা থাকে।
এ ছাড়া ঢাকার বাইরের সাইটে মেয়েদের থাকা, আসা–যাওয়া, ব্যবস্থাপনা—সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক সামলে উঠতে পারে না।
প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে আমাদের আবাসিক হল ছিল না। অনেক পরে ছাত্রীদের জন্য আবাসিক হল চালু হয়। তাও সীমিত আসনে চালু হয়।
এ ছাড়া আমাদের পড়াশোনা বেশ চ্যালেঞ্জিং। সেখানে প্রতিনিয়ত গ্রুপ স্টাডি করতে হয়। কিন্তু আমাদের মেয়েদের সংখ্যা কম হওয়ার ফলে সেটা করতে পারতাম না।
মানসিকভাবে সব সময়ই আমাদের দুর্বল ভাবা হতো এই পেশার জন্য।

সুমায়া ইসলাম
সুমায়া ইসলাম

সুমায়া ইসলাম
প্রকৌশল পেশায় নারীদের অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে তাদের পরিবার। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই।
অনেক সময় নারীদের জিজ্ঞাসা করি, তারা প্রকৌশলী হতে চায় কি না। তাদের অনেকে সেটাতে ‘না’ জবাব দেয়। তারা বলে, তাদের বাবা কিংবা পরিবারের বড় কেউ বলেছেন তাকে প্রকৌশলী হতে। আর এ জন্য সে এ পেশায় পড়ছে। আবার ভিন্নচিত্রও আছে। কেউ পুরো বিষয়টিকেই নিজের মধ্যে লালন করে এ পেশায় আসে। নিজে থেকে যারা আসে, শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের প্রতিবন্ধকতা কিছুটা কমে বলে মনে হয়।
পরিবারের বড়রা যখন এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের প্রথম চিন্তা থাকে যে এই পেশায় আসলে তাঁদের মূল কাজ কী হবে।
এ ছাড়া উপার্জন, সময়, ভবিষ্যৎ—সবকিছু নিয়েই পরিবার শুরু থেকে চিন্তা করে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারীদের প্রকৌশল পেশায় আনার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে শিক্ষাপদ্ধতি।
সেটাতে নারীরা কতটা মানিয়ে নিতে পারছে, নারীদের অংশগ্রহণ কতটা সুবিধাজনক হচ্ছে, সেটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
শিক্ষাকালীন নারী সদস্য কোথায় থাকবে, কার সঙ্গে থাকবে, তার নিরাপত্তা নিয়ে মূলত পরিবার চিন্তিত থাকে।
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের এই পেশায় অংশগ্রহণ নিয়ে এখন কাজ করা প্রয়োজন।
বিদেশে আমরা নারী–পুরুষ একসঙ্গে সাইটে কাজ করেছি। পড়াশোনা করেছি। বড় বড় প্রকল্প সামলেছি। সেখানে শুধু মানুষের জ্ঞান ও দক্ষতার যাচাই করা হয়।

নেসফুন নাহার
নেসফুন নাহার

নেসফুন নাহার
আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ভিন্ন। এখানে নারীর কাজের সময় ও স্থান নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকেই মনে করেন, একজন নারী স্থপতি যদি অফিসে বসে কাজ করতে পারেন, তাহলে তিনি বেশি ভালো করবেন। বেশি সফল হবেন।
তবে একজন স্থপতি যেসব সময় অফিসে বসে নকশা করবেন, সেটা নাও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে কর্মস্থলে তাঁর কাজের সুযোগ বেশি থাকতে পারে।
কিন্তু আমরা শ্রেণিকক্ষে যত বেশি পরিমাণ নারীকে প্রকৌশল শিখতে দেখি না কেন, কর্মক্ষেত্রে নারী প্রকৌশলীর সংখ্যা তেমন বাড়েনি। তাই স্থাপত্যশিক্ষায় মেয়েরা এগোলেও কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়।
এটা সারা বিশ্বেই আছে। এ ক্ষেত্রে নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে কাজ করতে না পারার কারণে এসব পেশায় আসছেন না।
কেননা নারীর প্রতি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির এখনো পরিবর্তন ঘটেনি। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবারের সদস্যরা যদি বিশ্বাস না করেন যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাও সমানভাবে সব পেশায় কাজ করতে পারেন, তাহলে আসলে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন।
তাই তাঁদের সামাজিক ও পরিবার পর্যায় থেকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক নারী প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। তাঁদের তুলে ধরতে হবে ভবিষ্যতের তরুণ নারীদের কাছে।
যেন তাঁরা নিজেরাই এ পেশায় আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ফলে তাঁরা তখন শুধু অফিসের টেবিলে বসে থাকা প্রকৌশলী হতে চাইবেন না। বরং তাঁরা তাঁদের পুরুষ প্রকৌশলীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব কাজে অংশ নিতে চাইবেন।
অন্যথায়, নারীরা প্রকৌশল শিক্ষায় এগোলেও কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়ানো সম্ভব হবে না।
এ ছাড়া মাতৃত্বকালীন অবকাশ ও নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টিও নারীদের এ পেশায় আসতে আগ্রহী করা প্রয়োজন।

ফাহমিদা হক খান
ফাহমিদা হক খান

ফাহমিদা হক খান
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম লক্ষ্য হলো লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারীর ক্ষমতায়ন।
নারীর ক্ষমতায়ন তখনই হবে, যখন তঁারা কর্মক্ষেত্রের সর্বত্র অবাধ বিচরণ করবেন এবং সার্বিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবেন ।
অথচ বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের হার মাত্র ১৭ শতাংশ। সমান যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিজ সক্ষমতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসের অভাবে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় এ পেশায় কম আসেন।
পরিবার, সমাজসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে মেয়েরা এ শিক্ষায় আসতে উৎসাহ বোধ করেন না। আবাসন সমস্যা, যানবাহনের অভাব, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব—এসব কারণে নারীরা অনেক সময় প্রকৌশল শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন না।
গতানুগতিক পেশার বাইরে চ্যালেঞ্জিং এই কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়ে নারী প্রকৌশলীরা বৈষম্যের শিকার হন।
নারী প্রকৌশলীরা মাঠ পর্যায়ে কাজে গেলে অনেক সময় অধীনস্থ পুরুষ সহকর্মীরা দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী প্রকৌশলীদের প্রাধান্য না দেওয়া এবং পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব তঁাদের কাজের প্রতি উৎসাহ কমিয়ে দেয়।
এ ক্ষেত্রে নারী প্রকৌশলীদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রতিষ্ঠানের করণীয় রয়েছে।
সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের বাধা দূর করা সম্ভব। তাহলে প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে।

ফরিদা নিলুফার
ফরিদা নিলুফার

ফরিদা নিলুফার
আমরা যদি পেছনের দিকে ফিরে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, ১৯৮২–৮৩ সালের দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৮৪–৮৫ সালের দিকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ১৯৮৯–৯০ সালে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী
শিক্ষার্থী ছিলেন।
এরপর ১৯৯২–৯৩ সালে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী আসেন এই প্রতিষ্ঠানে। এ বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির তথ্যমতে, ২২ শতাংশ নারী।
তাহলে দেখা যায়, ২৬ বছরের ব্যবধানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো গেছে মাত্র ১০ শতাংশ। এই পরিবর্তন অনেকের কাছে সামান্য মনে হলেও এটা বিশাল কাজ।
পরিবার থেকে এই পেশায় আসার জন্য মেয়েদের উৎসাহ দেওয়া হয় না। তবে সরকার কিন্তু তার কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে এখন সাতটি পাবলিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার সুযোগ হচ্ছে।
এ ছাড়া অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ সুযোগ থাকছে।
ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টের এক জরিপে বলা হয়, যাঁরা প্রকৌশল পেশায় পড়াশোনা শুরু করছেন, তাঁদের মধ্যে ৪০ শতাংশ নারী।
আবার যাঁরা সব যোগ্যতা প্রমাণ করে এ বিষয়ে নিবন্ধিত প্রকৌশলী হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে নারীর হার ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
যাঁরা ২০ বছরের বেশি এ পেশায় থাকছেন, তাঁদের মধ্যে নারী আছেন ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
সময়ের সঙ্গে প্রকৌশল পেশায় নারীরা পিছিয়ে পড়ছেন। ঢাকার বাইরে থেকেও নারীরা প্রকৌশল পেশায় আগ্রহী হচ্ছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের যথেষ্ট অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের জন্য পরিমিত আবাসন–সুবিধা নেই। ফলে অনেক মেয়ে আর এই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন না।
এ ছাড়া চাকরির বাজারের নারী–পুরুষ বৈষম্য তো আছেই। আবার কর্মবাজারে একজন নারীকে তাঁর পুরুষ সহকর্মীর তুলনায় বেশি দক্ষতা
দেখাতে হয়। কারণ, তাঁকে বারবার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়।
এর ফলে সেখানেও নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমেই হ্রাস পায়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে নারীদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুরুষের থেকে কোনো দক্ষতায় তিনি যেন পিছিয়ে না পড়েন, সেটাও প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে মাথায় রাখতে হবে।

তাহ্‌মিনা আহমেদ
তাহ্‌মিনা আহমেদ

তাহ্‌মিনা আহমেদ
আমাদের দেশে পরিবার–সমাজ সব ক্ষেত্রেই আসলে নারীর অগ্রণী ভূমিকায় এগিয়ে আসা দরকার। নারীর পেশা কী হবে, স্বপ্ন কী হবে, সেটা নির্বাচন করার একটা বড় ভূমিকা পালন করে তাঁর পরিবার, তাঁর পারিপার্শ্বিক সমাজব্যবস্থা।
এরপরের ধাপেই কিন্তু শিশুদের মধ্যে তাঁদের স্বপ্নের বীজ গড়ে তোলেন শিক্ষকেরা। নারীদের এ পেশায় আরও বেশি আগ্রহী করে তোলার জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন তাঁর শিক্ষকেরা।
আমি মনে করি, যদি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক পড়াশোনায় নারীদের এগিয়ে আনতে হয়, তাহলে অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও নারীর প্রতি শিক্ষকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।
এ ছাড়া পরিবার থেকেও নারীদের সমর্থন দিতে হবে তঁাদের স্বপ্নের জন্য। সমাজে নারীদের এ রকম চ্যালেঞ্জিং পেশায় আনা বেশ কষ্টকর।
আমার কর্মজীবনে নানা পর্যায়ে প্রকৌশলগত জ্ঞানের চেয়েও বেশি প্রয়োজন হয়েছে বাস্তবজীবনের জ্ঞান।
আমি আমার জ্ঞানকে যদি আমার বাস্তবজীবনে না প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে সেই শিক্ষা আমার কোনো কাজে আসবে না।
আমাদের দেশে প্রকৌশল শিক্ষায় প্রচুর নারী এলেও, কর্মক্ষেত্রে কিন্তু নারীর অংশগ্রহণ একেবারেই নগণ্য। এর পেছনে আছে আমাদের লিঙ্গবৈষম্যভিত্তিক সমাজ আর পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি। এগুলোর পরিবর্তন আনতে পারলে এ পেশায় নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব।
দক্ষতার কাতারে দাঁড়ালে অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নারী পিছিয়ে থাকেন তাঁর সাহসের অভাবে।
আমাদের নারীর ক্ষমতায় আস্থা রাখতে হবে। মানতে হবে যে একজন দক্ষ নারী কর্মীও তাঁর পুরুষ সহকর্মীর চেয়ে বেশি দক্ষ। তাই কর্মক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ নয়, বরং কাজের দক্ষতার বিবেচনায় কর্মীর মান নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
আমাদের দেশের নারীকে তাঁর কর্মক্ষেত্রে যদি যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হয়, যদি তাঁর কাজের প্রকৃত মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়, তাহলেই কেবল তাঁদের এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তখন নারীরাও সমানভাবে এগিয়ে আসতে পারবেন। এভাবে তঁারা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারবেন।

ইকবাল হাবিব
ইকবাল হাবিব

ইকবাল হাবিব
আমার প্রতিষ্ঠানে পুরুষের তুলনায় নারী প্রকৌশলীর সংখ্যা বেশি। নারী কর্মীদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখেছি নারী কর্মীকে তাঁর পুরুষ সহকর্মীর চেয়ে বেশি যোগ্য, এটা আগে প্রমাণ করতে হয়। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা আছে।
দেশের প্রায় প্রতিটি ধাপেই নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। তা সত্ত্বেও তাদের এখনো সেভাবে ক্ষমতায়ন হয়নি।
নারীরা তাঁদের মেধার প্রমাণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো করছেন। আমরা তাঁদের পড়াশোনা করার কিংবা কর্মক্ষেত্রে সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারছি না।
স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীবান্ধব পরিবেশ না থাকার ফলে এ বিষয়ে পড়াশোনা করেও তাঁরা কর্মক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না।
আমার প্রতিষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েট পর্যায়ের কাজে পুরুষদের থেকে নারী কর্মীদের ভালো দক্ষতা দেখেছি। কিন্তু পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা তাঁদের পিছিয়ে রেখেছে।
তাঁরা তাঁদের কর্মক্ষেত্রে বেশি সময় দিতে পারেন না। কেননা পুরুষের তুলনায় তাঁরা পরিবারের কাছে বেশি দায়বদ্ধ।
আমি বিশ্বাস করি, নারীর ব্যক্তিত্ব, কর্মদক্ষতা ঠিক থাকলে তাঁকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। ফলে নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা দিতে হবে।
এটা কিন্তু মোটেই নারীর দুর্বলতা না। বরং নারীকে যে আমরা তাঁর নিরাপত্তা দিতে পারিনি, সেটা আমার মতো পুরুষের ব্যর্থতা।
শুধু দেশের গুটিকয়েক অবস্থানে নারী আছেন বলে ভাবা যাবে না যে আমরা তাঁদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পেরেছি।
দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নারী সদস্যদের কাজের জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে। এটা নারীর অধিকার। আমাদের উচিত নারীকে তাঁর কর্মস্থলে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া।
প্রকৌশল পেশায় নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বাড়ছে। আমাদের উচিত নারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে নারীর মেধা কাজে লাগাতে হবে।

খালেদা শাহারিয়ার কবির
খালেদা শাহারিয়ার কবির

খালেদা শাহারিয়ার কবির
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের প্রথম তিন নারী শিক্ষার্থীদের আমি একজন। আমাদের প্রথম দিকে ভর্তি হতে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
মাঠপর্যায়ের জরিপে কাজ করতে হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের এ বিভাগে ভর্তি নিচ্ছিল না। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা এ বিভাগে ভর্তি হই।
এরপর আমরা ছেলেদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে জরিপের কাজ করেছি। ক্যাম্পে আমরা ঠিকই আনন্দ করেছি। সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমানভাবে কাজ করেছি।
আমাদের শিক্ষকেরাও সব বিষয়ে সাহায্য করেছেন।
এরপর কর্মক্ষেত্রে আমরা বেশ ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। বিভিন্ন রকম প্রকল্পের কাজে আমাকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে। সেখানে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি সহকর্মীরা সব ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন।
আমাদের সমাজে মেয়েদের প্রকৌশল পেশায় আনার জন্য তাঁদের অনুপ্রেরণা দেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীরা এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এসব নারীকে সবার সামনে আনতে হবে। তাঁদের দেখে দেশের ভবিষ্যতের নারীরা এ পেশায় আসার উৎসাহ পাবেন ।
পুরুষ সহকর্মীদেরও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তাঁদের পাশে থাকা নারী সহকর্মীকে তাঁরা যেন প্রয়োজনমতো সাহায্য করেন, সেটা লক্ষ রাখতে হবে।
পরিবার থেকেও এই সাহায্য আসা বেশ জরুরি। পরিবার থেকে যদি সমর্থন না থাকে, তাহলে নারীর এগিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টকর।
পরিবারকে অবশ্যই নারীর পাশে থাকতে হবে।

শামিম জেড্ বসুনিয়া
শামিম জেড্ বসুনিয়া

শামিম জেড্ বসুনিয়া
নারীর প্রকৌশল পেশায় আসার প্রতিবন্ধকতাকে দুভাগে দেখতে চাই। প্রথমেই আলোচনায় আসছে আবাসনব্যবস্থা। অন্যদিকে প্রকৌশল পেশায় থাকা নারী রোল মডেল।
আমাদের সময় ৭০ জন ছেলে স্থাপত্য বিভাগে পরীক্ষা দেন। আমি সেই পরীক্ষায় নির্বাচিত হওয়ার পর বাবাকে জানাই। তিনি আমাকে জানালেন, ‘যেটা পড়লে তাড়াতাড়ি পড়াশোনা শেষ হবে, সেটা পড়ো।’ পড়াশোনা শুরু করলাম। কয়েক বছর পর বিভাগে নারী শিক্ষার্থী ভর্তি হলো।
আমার বাবা ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি প্রকৌশল বিষয়টিকে বেশ পছন্দ করতেন। তাঁর থেকেই আমি উৎসাহ পেয়েছি প্রকৌশলী হয়ে ওঠার। বর্তমানে কিন্তু দেশে বিপুলসংখ্যক কিশোর–কিশোরী এই পেশায় আসছেন।
সমাজের নানা পর্যায়ের নারী–পুরুষ অনেকেই প্রকৌশলী পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তঁারা বুঝতে পারছেন, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে এই খাতেই।
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সময় দেখেছি যে মেয়েরা বেশি এগিয়ে থাকেন। তবুও তাঁদের জন্য এক বড় সমস্যা হলো আবাসন। এ ছাড়া অনেক পরিবারও চায় তার সন্তান যেন প্রকৌশল পেশায় পড়েন।
কেউ যদি তাঁর ভালো লাগার জায়গা থেকে কাজ না করেন, তাহলে তাঁকে ধরে রাখা মুশকিল। আবার আরেক দল আছে, যারা পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে চলে যায়। কারণ, দেশে এই পেশার খুব বেশি অগ্রগতি তারা দেখতে পায় না।
দেশে প্রতিবছর অনেক নারী শিক্ষার্থী প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনা করেও তাঁরা কর্মবাজারে আসছেন না।
কারণ, তাঁদের চারপাশের পারিবারিক ও আর্থসামাজিক অবস্থান থেকে সেই সমর্থন পান না। আবার আরেক শ্রেণি দেখা যায় প্রকৌশল বিষয়ে পড়েও এ পেশায় থাকেন না। তাঁরা অন্য কোনো পেশায় যোগদান করেন।
পড়াশোনার ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাঁদের যেন পড়াশোনা শেষে কর্মবাজারে আসতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।
তাঁরা যদি আমাদের কর্মবাজারে আসেন, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থায় পরিবর্তন আসবে।
বেসরকারি পর্যায়েও নারী কর্মীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ–সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা আমাদের সরকারি পর্যায়ে খুব বেশি কর্মক্ষেত্র থাকে না।
কিন্তু বেসরকারি পর্যায়েও যদি আমরা নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।

আব্দুল কাইয়ুম
আজকের আলোচনায় প্রকৌশল শিক্ষায় নারীদের প্রতিবন্ধকতার বিষয়গুলো এসেছে। এর মধ্যে একটা বড় সমস্যা হলো আবাসন। এ ছাড়া রয়েছে পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা।
নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে এসব সমস্যা মোকাবিলার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তাহলে ভবিষ্যতে প্রকৌশল শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ অারও বাড়বে।
আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

যাঁরা অংশ নিলেন
শামিম জেড্ বসুনিয়া: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, সাবেক অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
খালেদা শাহারিয়ার কবির: সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ফরিদা নিলুফার: ডিন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ, প্ল্যানিং, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
তাহ্‌মিনা আহমেদ: পরিচালক, সেভেন রিংস্‌ সিমেন্ট।
ইকবাল হাবিব: স্থপতি, পরিচালক, ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড।
ফাহমিদা হক খান: প্রকৌশলী, উপসচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
সুমায়া ইসলাম: ফাউন্ডার অ্যান্ড প্রিন্সিপাল আর্কিটেক্ট, ক্রিয়েটো।
নেসফুন নাহার: সহকারী অধ্যাপক, স্থাপত্য বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
নেলী মিস্ত্রি: স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্টস লিমিটেড (ডিডিসি)।
ফাতিমা মাহনাজ: শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
আতিক আকবর: উপমহাব্যবস্থাপক, ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশনস্‌, সেভেন রিংস্‌ সিমেন্ট।

সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো