টাঙ্গাইল বাস টার্মিনাল

১৯৮১ সালে যখন টাঙ্গাইলের বাস টার্মিনালটি তিন একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয়, তখন দৈনিক আড়াই শ যানবাহন চলাচল করত। আর বর্তমানে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে ৯ শতাধিক হলেও টার্মিনালের পরিসর বাড়েনি। ফলে যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকদেরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মূল টার্মিনালের বাইরে থেকে প্রতিদিন অন্তত পাঁচটি রুটের বাস-মিনিবাস আসা-যাওয়া করে।

২১ এপ্রিল প্রথম আলোর ৭-এর পাতায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সংস্করণে টাঙ্গাইল প্রতিনিধির পাঠানো যে সচিত্র খবরটি ছাপা হয়েছে, তাতে দেখা যায় টার্মিনালের ভেতরে সারিবদ্ধ বাসগুলো দাঁড়িয়ে আছে। কোনো ফাঁকা জায়গা নেই। এ অবস্থায় টার্মিনাল থেকে সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচল সম্ভব নয়। ফলে অনেক রুটের বাস-মিনিবাস টার্মিনালের বাইরে এসে থামে আবার সেখান থেকেই যাত্রা শুরু করে। এতে পুরো এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের ১০ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে এক ঘণ্টা সময় লাগে।

১৯৮১ সালে যখন এই বাস টার্মিনাল নির্মিত হয়, তখন এটি অনেকটা শহরের বাইরে ছিল। গত ২৮-২৯ বছরে শহর সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন টার্মিনালটিও শহরের ভেতরে চলে এসেছে। শহরের ভেতরে কোনো বাস টার্মিনাল থাকলে বাসিন্দাদের নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। এ অবস্থায় শহর থেকে দূরে বাইপাস এলাকায় টার্মিনালটি স্থানান্তর হওয়া প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করে। পরিবহন মালিক সমিতিও টার্মিনালটি স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছে। জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব বলেছেন, যানবাহনের তুলনায় টার্মিনাল ছোট হওয়ায় প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়।

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান টার্মিনালের জায়গাস্বল্পতার কথা স্বীকার করেন এবং নতুন টার্মিনালের বাইপাস এলাকায় জমি দেখা হয়েছে বলে জানান। নতুন টার্মিনালের দাবি অনেক দিনের। জমি দেখার কথাও শোনা গেছে বহুদিন ধরে। কিন্তু এর বাস্তবায়ন কবে কীভাবে হবে, তার সুনির্দিষ্ট সময়সূচি থাকা দরকার। আর এ ক্ষেত্রে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

পরিবহনমালিকেরাও আশা করেন, যত দ্রুত সম্ভব টার্মিনালটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি এর পরিসর বাড়ানো হোক। যে টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার যানবাহন চলাচল করে, সেই টার্মিনাল তিন একর জমিতে থাকতে পারে না। তবে টার্মিনালটি স্থানান্তরের সময় আগামী ৫০ বছর বা আরও বেশি সময় পর কী পরিমাণ চাহিদা হতে পারে, তা-ও মাথায় রাখতে হবে। টার্মিনাল মানে গাদাগাদি করে কতগুলো যানবাহন রাখা নয়, সেখানে বহিরাগত ও বহির্গমন যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকদের বিশ্রাম ও অন্যান্য সুবিধাও থাকতে হবে।

শহরের যানজট ও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে হলে অবিলম্বে আরও বড় পরিসরে টাঙ্গাইল বাস টার্মিনালটি স্থানান্তর করা হবে, এটাই প্রত্যাশিত।