অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায় ও করণীয়

৭ এপ্রিল ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে ও শেল্‌টেকের সহযোগিতায় ‘অগ্নিদুর্ঘটনা রোধের উপায় ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশ করা হলো।
আলোচনায় সুপারিশ
■ অঞ্চলভিত্তিক রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে পানির ব্যবস্থা (ফায়ার হাইড্রান্ট) নিশ্চিত করা দরকার
■ জরুরি বহির্গমন পথ বাইরের দিকে খোলা জায়গায় করা প্রয়োজন
■ বস্তিবাসীর জন্য ফায়ার সার্ভিসে বিশেষায়িত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
■ পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব তৃতীয় পক্ষকে দিতে হবে
■ জরুরি বহির্গমন পথ পুরোটাই আগুন ও ধোঁয়া প্রতিরোধক হতে হবে
■ নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে
■ পাঠ্যসূচিতে অগ্নিনির্বাপণসংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি
■ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন নিয়মিত বিরতিতে যাচাই করতে হবে

আমরা এত দিন সুউচ্চ ভবন নিরাপদ মনে করতাম। জানতাম, এগুলো বিধিমালা অনুযায়ী করা হয়েছে, যেন সব ধরনের দুর্ঘটনা রোধের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু বনানীতে যখন আগুন লাগল, তখন আমরা দেখছি যে অনেক জায়গায় আমাদের ঘাটতি আছে। বিশ্বের সব দেশে উঁচু ভবন আছে। সেখানে আগুন লাগলে মানুষের বের হওয়ার সুব্যবস্থা থাকে। ক্ষয়ক্ষতি হয় কেবল সম্পদের, মানুষকে খুব কমই জীবন দিতে হয়।

আমরা অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করেছি। আমাদের এখানে স্থপতি, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদ আছেন। সুতরাং আমাদের এখানেও ভবনের আধুনিকায়ন সম্ভব। এসব বিষয় আলোচনায় আসবে। এখন এ বিষয়ে আলোচনা করবেন আতিকুল ইসলাম।

 

আতিকুল ইসলাম

আতিকুল ইসলাম
আতিকুল ইসলাম

রানা প্লাজা ধসের পর বিশ্বের বড় ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয়। এরপর আমরা বিভিন্ন দেশে গিয়ে আলোচনা করেছি। ব্র্যান্ডগুলোকে নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় নিশ্চিত করেছি। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। এই প্রতিকার নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে।

নিরাপদ সড়ক গড়ার আন্দোলন আমরা করছি। আজকের আন্দোলন হবে নিরাপদ শহর গড়ার আন্দোলন।

 

তৌফিক এম সেরাজ

তৌফিক এম সেরাজ
তৌফিক এম সেরাজ

দুর্ঘটনা হলে কিছুদিন বেশ আলাপ-আলোচনা হয়। এরপর আবার স্তিমিত হয়ে যায়। কিন্তু এবার আর এই আলোচনা থামবে না। রানা প্লাজা ধসের পর পোশাকশিল্পে একটা পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা যাবে আশা করি।

সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় নিহত ও আহত সবার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই দুর্ঘটনার দায়ভার কারও একার নয়। এই দায়িত্ব নির্মাণশিল্পের সঙ্গে জড়িত সব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও পেশাজীবী সবার।

ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা, দূরদৃষ্টি আরও বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে ভবন ব্যবহারকারীদেরও সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। ভীতি প্রদর্শন করে নীতিমালা প্রণয়ন সম্ভব নয়, চাই সবার সহযোগিতা, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও সচেতনতা।

গত কয়েক দিনের দৈনিক পত্রিকা লক্ষ করলে ভবন নির্মাণে অনিয়মের নানা তথ্য দেখা যায়। এসব ভবনের সাড়ে ১১ হাজার ভবন ঝুঁকিতে। মাত্র ১৬২টি ভবনের বাসযোগ্য সনদ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৬ জন, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি মানুষ।

ভবন নির্মাণের অনেক বিধিমালা রয়েছে। কিন্তু এসব বিধিমালার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। উঁচু ভবনের সংজ্ঞায়ন, বহির্গমন সিঁড়ির সংখ্যা ও পানির পাম্পের সংখ্যা নিয়ে বিধিমালাগুলোতে ভিন্নতা রয়েছে।

অনেক ডেভেলপার নিরাপত্তার শর্ত মেনে চলে। বিধিমালাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। তৃতীয় পক্ষের পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা দরকার। ভবনে বসবাসের সনদের নবায়ন করতে হবে। বিধিমালাগুলো নিয়মিত পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

 

মো. মাকসুদ হেলালী

মো. মাকসুদ হেলালী
মো. মাকসুদ হেলালী

এফ আর টাওয়ারটি ভুল নকশার ফসল। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) বিল পাস করার জন্য যে কমিটি করা হয়েছিল, সেখানে কোনো ফায়ার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন না। একটি ভবন অগ্নিনিরাপদ করতে হলে অবশ্যই ফায়ার ইঞ্জিনিয়ার থাকতে হবে।

উঁচু ভবনের সংজ্ঞা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এনএফপিএ (দ্য ন্যাশনাল ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন) অনুসারে ছয়তলার ওপরে সব ভবনই উঁচু ভবন।

সাধারণত ভবনে আগুন লাগে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট অথবা গ্যাসলাইন থেকে। আগুন যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফায়ার অ্যালার্ম ও ফার্স্টএইড ফায়ার ফাইটিং থাকতে হবে। ধোঁয়া যেন ছড়িয়ে না যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

অগ্নিদুর্ঘটনায় ৮০ শতাংশ মানুষ ধোঁয়ার কারণে মারা যায়। ধোঁয়া মানে শুধু কালো ধোঁয়া নয়। বাতাসে যদি কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তবে মানুষ মারা যাবে। বর্তমানে আমরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাচের ব্যবহার করছি। এফ আর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ড আমাদের জন্য বড় ধরনের সতর্কসংকেত।

 

ইশরাত ইসলাম

ইশরাত ইসলাম
ইশরাত ইসলাম

আমরা যখন একটা এলাকার পরিকল্পনা করি, তখন দুর্যোগের সময় সে এলাকার দুর্যোগ প্রতিরোধব্যবস্থার কথা মাথায় রাখি না। ভবন নির্মাণ ও এলাকার পরিকল্পনা করার সময় দুর্যোগ প্রতিরোধব্যবস্থার কথা সবার প্রথমে চিন্তা করা দরকার।

আমরা যারা এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছি, তাদের নৈতিক ও বিধিমালা অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে হবে। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান যেসব বাড়ি বানায়, সেগুলোতে কোনো সমস্যা হলে সে দায় তাদের নিতে হবে। যদি নীতিমালা অনুযায়ী তারা কাজ না করে, তবে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষকে দায়ী না করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

মাত্র ১৬২টি ভবনের বাসযোগ্য সনদ আছে। এ সংখ্যা এত কম হওয়ার কথা নয়। এ দায় রাজউককে নিতে হবে। আসলে বিধিমালা কোনো আইন হতে পারে না। বিধিমালা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হবে। একজন প্রকৌশলী নিজ দায়িত্বে সে অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করবেন।

এই মুহূর্তে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপনা গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। পোশাকশিল্প কারখানায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। সুতরাং এখানেও চাইলে বিধিমালা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অগ্নিবিমার মাধ্যমে আমরা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারি। কেননা, সে ক্ষেত্রে বিমা প্রতিষ্ঠানই এসব বিষয় নিশ্চিত করবে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

 

মো. শহীদুল আমিন

মো. শহীদুল আমিন
মো. শহীদুল আমিন

পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নেই যে রাস্তার একপাশে ২০ তলা ভবন করা যাবে, অন্যপাশে ৬ তলার বেশি করা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশে সেটাই হচ্ছে।

২০০০ সালে আমরা বুয়েট থেকে একটি গবেষণা করি। সেখানে ঢাকার কোতোয়ালি ও সূত্রাপুর পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ অঞ্চলে এক বর্গকিলোমিটারে তিন লাখ লোক বাস করছিল। তবু রাজউক তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

জরুরি বহির্গমন পথ বেশির ভাগই ভেতরের দিকে। কিন্তু এটা করার পূর্বশর্ত ছিল বাইরের দিকে খোলা জায়গায়। যেন মানুষ ভবনের বাইরে যেতে পারে। উঁচু ভবনে জরুরি বহির্গমন পথ এমনভাবে করা হয় যে অগ্নিদুর্ঘটনার সময় ধোঁয়ার জন্য মানুষ সেখান দিয়ে বেরোতে পারছেন না।

অগ্নিদুর্ঘটনা সব জায়গাতেই ঘটতে পারে। বস্তিগুলোতে আগুন লাগলে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হবে। বস্তিগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার মতো প্রশস্ত রাস্তা করতে হবে।

যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করলে পুলিশ ছবি তোলে ও জরিমানা করে। একইভাবে উঁচু ভবনে বিধিমালা লঙ্ঘন হলে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অবহিত করতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

আদিল মুহাম্মাদ খান

আদিল মুহাম্মাদ খান
আদিল মুহাম্মাদ খান

আমরা যখন জননিরাপত্তার কথা বলি, তখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করেই বলি। এ শহরে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বস্তিবাসী। চুড়িহাট্টা ও এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের মধ্যবর্তী সময়ে বস্তিতে আগুন লেগেছিল।

সে আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বস্তিগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার মতো প্রশস্ত রাস্তা করার সুপারিশ বাতিল করার কোনো অর্থ হয় না। প্রয়োজনে বস্তির জন্য বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসে বিশেষায়িত গাড়ি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

জাহাঙ্গীরনগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী নিয়ে আমরা চুড়িহাট্টায় গিয়েছিলাম। ওখানকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এই শহরের যে কোনো কর্তৃপক্ষ আছে, তা বোঝা যায় না। সেখানে উঁচু ভবনের মধ্যবর্তী দূরত্ব খুবই কম।

বিশ্বের কোথাও এত কম দূরত্বে উঁচু ভবন করা হয় না। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে জন্য লোকবল বাড়াতে হবে। ইদানীং রাজউক তৃতীয় পক্ষকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিতে চাচ্ছে। এর পরিসর আরও বাড়াতে হবে। পরিকল্পনা যেন ব্যক্তিস্বার্থে না হয়। জনকল্যাণের দিকে লক্ষ রেখে পরিকল্পনা করতে হবে।

 

নাসরীন হোসেন

নাসরীন হোসেন
নাসরীন হোসেন

এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পর গুলশান ১-এ মার্কেটে আগুন লাগল। সেখানে কোনো গ্লাস ছিল না। এমনকি কোনো উপযুক্ত নকশাও ছিল না যে নকশার ভুল ধরব। আমরা যদি একে অন্যের ওপর দোষ দিই, তাহলে কোনো সমাধান হবে না। নিজের দোষ নিজে নেওয়াই আমাদের প্রধান কর্তব্য। যিনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাঁকে দিয়ে সে কাজ করালে কাজটি উপযুক্ত হবে।

প্রতিটি দেশ তার জনগণের স্বভাব ও আচরণবিধি বুঝে সে অনুযায়ী শহরের নকশা করে। আমাদের দেশে তা করা হচ্ছে না। বনানীতে যে সরকারি মার্কেট হচ্ছে, তার গভীরতা খুব বেশি। সেখানে আগুন লাগলে কিছু রক্ষা করা যাবে না। যদি সামান্য ভূমিকম্পও হয়, তবু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। তার ওপর আমরা এ ধরনের আঁটসাঁট ভবনে অনেক এসি লাগিয়ে একটা অগ্নিকুণ্ড তৈরি করছি। একই অবস্থা গাউছিয়া মার্কেটে। বিদেশিদের অনুকরণ করা বন্ধ করতে হবে। দেশীয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ভবনের মাঝের দূরত্ব নির্ধারণ করতে হবে।

 

মোবাশ্বের হোসেন

মোবাশ্বের হোসেন
মোবাশ্বের হোসেন

ভবন ব্যবহার সনদ না পেলে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন-সংযোগ দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন—প্রতিটি ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ফলে রাজউক ব্যবহার সনদ না দেওয়া সত্ত্বেও ভবনমালিক বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন-সংযোগ পেয়ে যাচ্ছেন।

ঢাকা শহরের বাসিন্দারা আগ্নেয়গিরির ওপর বাস করছে। মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে আছে গ্যাসের লাইন। যেকোনো সময় এগুলো বিস্ফোরিত হতে পারে। বিস্ফোরিত হলেই ১৫ থেকে ২০ দিন আগুন জ্বলবে। বৈশাখী টিভির পাশে অগ্নিকাণ্ডের পর সিদ্ধান্ত হলো ঢাকা শহরের সব গ্যাসলাইনে স্বয়ংক্রিয় সেন্সর লাগানো হবে। যেন একটা নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। দ্রুত ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।

আগুন লাগার পর যেসব প্রতিষ্ঠান তদন্ত করে, সেগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সময়ের সঙ্গে বিধিমালায় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু অনেকে এসব বিধিমালা মানেনি। তবু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নগর সরকারের ক্ষমতায়ন ছাড়া এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

 

আনিসুল হক

আনিসুল হক
আনিসুল হক

আমরা আমাদের প্রতিটি বাড়িকে খাঁচা বানিয়েছি। মানুষের স্বভাব হওয়া উচিত ছিল মুক্তি। কিন্তু আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দিত্বটা মেনে নিয়ে নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছি।

রাজউক গত ৮ বছরে ৪০ হাজার ভবনের অনুমোদন দিয়েছে। এই নকশাগুলো কি কোনো একক কর্তৃপক্ষের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব? স্ট্রাকচারাল ডিজাইন তো অসম্ভব। আর্কিটেকচারাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে এফএআর (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) দেখা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আমাদের পেশাদার সংগঠন আছে। পাস করা চিকিৎসকেরা নিজ দায়িত্বে চিকিৎসা দেন। তেমনিভাবে প্রকৌশলী ও স্থাপতিরা যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিবন্ধিত হন, তবে তিনি নিজের দায়িত্বে প্ল্যান পাস করে দেবেন। এরপরের কাজ হলো পর্যবেক্ষণ করা।

এ ক্ষেত্রে শাস্তির ব্যবস্থা না থাকলে কেউ আইন মানতে চায় না। একটা ভবনে কী কী থাকতে হবে, কর্তৃপক্ষ তার একটা চেকলিস্ট করে দিতে পারে। পরবর্তী মাস থেকে সে অনুযায়ী যাচাই করে জেল-জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়ম করে দেওয়া হলে ও শাস্তির ব্যবস্থা থাকলে প্রত্যেকেই ভবনসংক্রান্ত বিধামালা মেনে চলবে।

জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি দিয়ে নামার জন্য ভবনের একটা দিক খোলা রাখতে হবে। চেকলিস্টে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের পক্ষে ঢাকা শহরের সব ভবন যাচাই করা সম্ভব নয়। কিছু ভবন যাচাই করে যদি সেখানে নিয়মের লঙ্ঘন ঘটে, তবে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবে কিছুদিন পরপর যাচাই করা হলে বিষয়গুলোর সমাধান হবে বলে আশা করছি। বিদেশ থেকে আমাকে দুজন প্রকৌশলী চিঠি দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, নকশা ছাড়া ছাদকৃষিকে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

 

সামিয়া সেরাজ

সামিয়া সেরাজ
সামিয়া সেরাজ

বারান্দায় একটা খোলা জায়গা রাখতে হবে। যেন দুর্ঘটনার সময় দ্রুত বের হওয়া যায়। শেল্‌টেকের সব ভবনের সামনের বারান্দায় একটা খোলা জায়গা রাখা হয়। আমাদের আইনগুলো বাস্তবসম্মত নয়। বিএনবিসি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড) ও ফায়ার কোড অনুযায়ী ভবনের নিচতলায় ৫০ হাজার গ্যালন পানি সংরক্ষণ করতে হবে। পাঁচ কাঠার একখণ্ড জমির মধ্যে ৫০ হাজার গ্যালন পানি রাখা সম্ভব না। সে জন্য কমিউনাল পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ভবনগুলোকে সাশ্রয়ী হতে হবে। সেগুলো অগ্নিনিরাপদ করার জন্য যে ধরনের দরজা ও গ্লাস লাগে, তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, যা খুবই ব্যয়বহুল। ফলে সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা কঠিন। যদি স্থানীয় উৎপাদনকারীদের ভর্তুকির ব্যবস্থা করা যেত, তবে এসবের খরচ কমত। সমস্যাটি ধীরে ধীরে সমাধান হতো। আমরা যদি প্রতিটি নিয়ম মানতে চাই, তাহলে সেগুলো বাস্তবসম্মত হতে হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ—সবকিছু বিবেচনায় রেখে বিধিমালা করতে হবে।

নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ-সংক্রান্ত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অনুমোদন ও পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কখনো একই কর্তৃপক্ষের কাছে থাকা উচিত না। এ দুটো আলাদা কর্তৃপক্ষের কাছে থাকলে ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 

আলী আহম্মদ খান

আলী আহম্মদ খান
আলী আহম্মদ খান

আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে। দুর্ঘটনা এই উন্নয়ন ব্যাহত করে। এ জন্য এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন যেন ভবনগুলোতে বার্ষিক অগ্নিনির্বাপণ মহড়া হয়। অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আমরা সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপক পর্ষদের সঙ্গে কাজ করছি। এই ব্যবস্থাপক পর্ষদকে শক্তিশালী করতে হবে। মেয়রের অধীনে এসব ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সমন্বয় করা গেলে খুব ভালো হয়।

পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব তৃতীয় কোনো পক্ষকে দিতে হবে। তৃতীয় পক্ষ পর্যবেক্ষণের পর বিশেষজ্ঞ পর্ষদ সেটা যাচাই করবে। অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা আছে। এই উদাসীনতা দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে ফায়ার সার্ভিস থেকে ভবন ব্যবহার সনদ দেওয়া হচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করতে হবে। এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের সচল করতে হবে।

আমাদের ফায়ার হাইড্রান্ট ব্যবস্থা নেই। দ্রুত অঞ্চলভিত্তিক ফায়ার হাইড্রান্টের ব্যবস্থা করতে হবে। এখন আগুন ও ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট হতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। ফায়ার সার্ভিস ও ইলেকট্রিক বিভাগ থেকে নিয়মিত তদারকের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্যাসলাইনগুলো পুরোনো হয়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এগুলো পরিবর্তন করা দরকার। এ ছাড়া ভবন নির্মাণ বিধিমালা দ্রুত পুনঃসংস্কার করতে হবে। পুরান ঢাকার জন্য বড় ধরনের প্রকল্প নিতে হবে।

 

এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস

এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস
এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস

পুরান ঢাকাকে আমরা পুনর্বিন্যাস করতে চেয়েছিলাম। এ ব্যাপারে কিছুটা অগ্রসরও হয়েছিলাম। কিন্তু ভবনমালিকদের অনিচ্ছাসহ নানা কারণে তা আজও সম্ভব হয়নি। অনেক পশ্চিমা দেশেও এ ধরনের সমস্যা ছিল। তারা পুনর্বিন্যাস করে তার সমাধান করেছে। ভবন ব্যবহার সনদের বিষয়টি রাজউক পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যার কারণে অনেক ডেভেলপার হয়তো ভবন ব্যবহার সনদ নিচ্ছে, আবার অনেকেই সনদ ছাড়াই ফ্ল্যাট বিক্রি করছে।

রাজউক দাঁড়িয়ে আছে তিনটি ভিত্তির ওপর। সেগুলো হলো পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ। পরিকল্পনার দিক থেকে রাজউক কিছুটা এগিয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণটা সেভাবে করা যায়নি। জনবলস্বল্পতার জন্য পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। ভবন নির্মাণ বিধিমালা না মানলে মামলা করার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু দেখা গেল, রাজউক থেকে নোটিশ দেওয়া হলে নির্মাণকারীই নোটিশের বিরুদ্ধে মামলা করে স্থগিতাদেশ নিচ্ছে।

স্থগিতাদেশ নিয়ে ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সরাসরি যদি রাজউক মামলায় যেত, তবে এ সমস্যাগুলো আরও তাড়াতাড়ি সমাধান হতো। এখানে অনেকগুলো বিষয়ে অবগত হলাম। আমাদের অভ্যান্তরীণ কমিটির বৈঠকে বিষয়গুলো উত্থাপন করব।

 

এফ আর খান

এফ আর খান
এফ আর খান

সব বিধিমালা মানার পরও আগুন লাগতে পারে। বহির্গমনব্যবস্থা ভালো থাকলে ৩৫০ জন লোককে ৪৫ মিনিটের মধ্যে অক্ষত অবস্থায় ১৭ তলা ভবন থেকে বের করে আনা সম্ভব।

ধরি, অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক আছে, তবু এটাকে ব্যবস্থাপনা করার জন্য একটা পর্ষদ প্রয়োজন। সরকারি ও বেসরকারি সমন্বয়ে এ পর্ষদ গঠন করা যেতে পারে। ধাতব সিঁড়ি ব্যবহার করে জরুরি অগ্নিবহির্গমন পথ করা যেতে পারে। নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এটাকে বাধ্যতামূলক করা উচিত।

জরুরি বহির্গমন পথ পুরোটাই আগুন ও ধোঁয়া প্রতিরোধক হতে হবে। সব সময় ডেভেলপার কোম্পানির দোষ দেওয়া উচিত নয়। ডেভেলপার কোম্পানি ব্যক্তিমালিকের চেয়ে বেশি বিধিমালা মেনে চলে। বিমা করে যদি কোনো একটা শর্ত পালিত না হয়, তবে বিমা কোম্পানি বিমার টাকা দেবে না। আবার অনেক সময় বিমা কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজশে টাকা তুলে নেওয়া যায়।

ভবন ব্যবহার সনদ নেওয়ার জন্য খুবই ভোগান্তি পোহাতে হয়। রাজউকের জনবল না থাকায় এ সমস্যাগুলো হচ্ছে।

 

তানভীরুল হক প্রবাল

তানভীরুল হক প্রবাল
তানভীরুল হক প্রবাল

অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে করণীয় ঠিক করতে হবে। ১৫ তলা কেন ১৮ তলা হলো তা দেখার সময় এখন নয়। এসব অবশ্যই অন্যায়। তবে এসব আমরা দ্বিতীয় ধাপে দেখব।

প্রথমেই দেখতে হবে ভবনের সিঁড়ি ঠিকভাবে করা হয়েছে কি না। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিঁড়ি করে দেয়। কিন্তু ভবনমালিকেরা সেটা রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। দেখা যায় যে সিঁড়িতে কাপড়ের টুকরা, গুদাম ও স্যুটকেস রাখা হচ্ছে। স্বল্প মেয়াদে দেখতে হবে অগ্নিনির্বাপক আছে কি না। অগ্নিনির্বাপক নিয়ে এখন প্রতারণা করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।

এসব বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ফায়ার ইঞ্জিনিয়ারে গ্র্যাজুয়েশন দেওয়া যায়। অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণসংক্রান্ত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যেতে পারে। বিষয়টির প্রতি মাননীয় মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

নজরুল ইসলাম

নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম

এক পৃষ্ঠায় বুলেট আকারে কী কী করণীয়, তা প্রকাশ করা দরকার। ভবনাদি ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা তদারক করা রাজউকের দায়িত্ব। ভবন ব্যবহার সনদ পাওয়ার পর মালিকদের মধ্যে মূল নকশা পরিবর্তনের প্রবণতা রয়েছে। ভবন ব্যবহার সনদ পাওয়া খুবই কঠিন কাজ। এটাকে আরও সহজ করতে হবে। রাজউক অনেক কষ্ট করে স্ট্রাকচারাল প্ল্যান তৈরি করেছে। পরে শুনি এটা তো পাসই হবে না। কেননা, এ নামে বাংলাদেশের কোনো আইন নেই।

আইনে আছে মাস্টারপ্ল্যান। রাজধানী শহরের স্ট্রাকচারাল প্ল্যান হয়ে গেছে অথচ অনুমোদন হয়নি। স্ট্রাকচারাল প্ল্যান না হতেই আমরা ডিটেইল প্ল্যানে চলে যাচ্ছি। হঠাৎ করে বলা হলো, প্রতিটি এলাকায় একটা করে পুকুর করতে হবে। কিন্তু পুকুর করার জায়গা কোথায়? এসব সমস্যা সমাধানে রাজউকের দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে। স্ট্রাকচারাল প্ল্যানসহ সবই ইংরেজি ভাষায় লেখা। এগুলোর বাংলা সহজপাঠ্য বের করতে হবে। রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় ঘটাতে হবে। রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে সমন্বিতভাবে ভবন পরিদর্শন করতে হবে। আলাদাভাবে করলে অর্থ ও সময় নষ্ট হবে এবং মানুষ ভুল বুঝবে।

 

আতিকুল ইসলাম

একসময় আমাদের পোশাক কারখানাগুলো অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছিল। এখন সে অবস্থা নেই। এখন আমরা গ্রিন সার্টিফায়েড ও প্লাটিনাম সার্টিফায়েড কারখানা করছি। পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পুরোনো ধ্যানধারণা পরিবর্তন করতে পারলেই অনেক কাজ আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। নিজের বিবেককে প্রশ্ন করতে হবে, যে কাজটি করছি, সেটি ঠিক আছে কি না। এরপর যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা থাকতে পারে।

পোশাক কারখানায় এখন অগ্নিনিরাপত্তা, শব্দদূষণ রোধ, ভবনের নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয় নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে অনেক দেশ বাংলাদেশকে মডেল হিসেবে অনুসরণ করছে। প্রতিটি কারখানাই এখন একটা ফায়ার ব্রিগেড সিস্টেম হয়ে গেছে। যেসব কারখানা এসব নিয়মের মধ্যে চলে, সেসব কারখানা ৭৫ মিনিট পর্যন্ত আগুন প্রতিরোধ করতে সক্ষম। আর যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ভবনমালিকেরা নিজ দায়িত্বে ফায়ার অ্যালার্ম, ফায়ার ড্রিল, জরুরি বহির্গমন চিহ্ন ও সচেতনতা সৃষ্টি করবেন।

যে দেশপ্রেমের কারণে ৯ মাসে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি, আসুন সেই দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলে আমাদের ভবন, স্কুল, কলেজ ও হাসপাতালগুলোকে নিরাপদ করে তুলি। ভবন নির্মাণের সময় সব নিয়ম মানা হলে সিটি করপোরেশন থেকে বিশেষ রেয়াতের ব্যবস্থা করা হবে। আর না মানলে আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। বস্তিবাসীর জন্যও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব, এই মুহূর্তে সিটি করপোরেশনের মূল ফোকাস হচ্ছে অগ্নিনিরাপত্তা। এখন অগ্নিদুর্ঘটনা রোধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

 

আব্দুল কাইয়ুম

আজকের আলোচনায় অগ্নিদুর্ঘটনার সমস্যা ও এর সমাধানের কিছু পরামর্শ এসেছে। এখন প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও জনসচেতনতা। আজকের আলোচনা অনুষ্ঠান এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

 

যাঁরা অংশ নিলেন

আতিকুল ইসলাম: মেয়র, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন

নজরুল ইসলাম: নগর পরিকল্পনাবিদ

তৌফিক এম সেরাজ: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেল্‌টেক্

আলী আহম্মদ খান: সাবেক মহাপরিচালক, ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্স

মোবাশ্বের হোসেন: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট

এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস: প্রধান প্রকৌশলী, রাজউক

এফ আর খান: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই)

তানভীরুল হক প্রবাল: সাবেক সভাপতি, রিহ্যাব

মো. মাকসুদ হেলালী: অধ্যাপক, যন্ত্রকৌশল বিভাগ, বুয়েট

মো. শহীদুল আমিন: অধ্যাপক, স্থাপত্য বিভাগ, বুয়েট

নাসরীন হোসেন: বিভাগীয় প্রধান, স্থাপত্য বিভাগ, বুয়েট

ইশরাত ইসলাম: অধ্যাপক, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, বুয়েট

আদিল মুহাম্মাদ খান: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স

আনিসুল হক: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

সামিয়া সেরাজ: পরিচালক, শেল্‌টেক্

 

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো