স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ

প্রথম আলোর আয়োজনে ও আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেডের সহযোগিতায় ‘স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
প্রথম আলোর আয়োজনে ও আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেডের সহযোগিতায় ‘স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
গত ১৭ এপ্রিল ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে ও আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেডের সহযোগিতায় ‘স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত হলো।

আব্দুল কাইয়ুম
আব্দুল কাইয়ুম

আব্দুল কাইয়ুম
পুষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস হলো দুধ। কিন্তু আমাদের মাথাপিছু গড়ে যে পরিমাণ দুধের প্রয়োজন, সেটা আমরা পাই না। ফলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আমাদের দেশে অনেকের দৈহিক বৃদ্ধি কম। অনেকে বেশ খাটো। এর মূল কারণ পর্যাপ্ত দুধ ও পুষ্টির অভাব। এ ছাড়া শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্যও দুধের প্রয়োজন।

দুধের সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে কীভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আজকের আলোচনা। এখন আলোচনা করবেন উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন।

উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন
উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন

উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন
বাংলাদেশ-ডেনমার্কের অংশীদারত্ব অনেক আগে থেকে। কৃষি খাতে ডেনমার্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। আর ডেইরি খাত সেই সম্পর্কটা আরেকটু ঘনিষ্ঠ করেছে। ডেইরি নিয়ে কাজ করার জন্য দুই দেশ গত বছর একটি চুক্তি করেছে। এই খাতে অনেক সম্ভাবনার জায়গা ও কাজ করার সুযোগ আছে।

আরলা ডেনমার্কের অনেক পুরোনো ডেনিশ কোম্পানি। এটি আমাদের কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা খামারিদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে। আর অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

শুধু ডেনমার্কে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দুধ সরবরাহ করে আরলা দুধের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

আরলা বাংলাদেশের সঙ্গে ডেনমার্কের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আরেকটু মজবুত করতে পারে। কেননা বাংলাদেশে দুধের প্রয়োজন রয়েছে। আর আরলার যথেষ্ট দুধ রয়েছে।

আমার ভালো লাগছে এ কারণে যে বাংলাদেশে দুধের মূল্যহার পরিবর্তন হচ্ছে। এটা একই সঙ্গে উৎপাদক ও ভোক্তার অনুকূলে রয়েছে। দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। আর ডেনমার্ক সব সময় পাশে থাকবে।

পিটার হলবার্গ
পিটার হলবার্গ

পিটার হলবার্গ
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর মাথাপিছু দুধ ব্যবহারের পরিমাণ ২২ কেজি। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে সেটা ৫৫ কেজি। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পরামর্শ অনুযায়ী মাথাপিছু দুধ গ্রহণের হার হওয়া উচিত ৯০ কেজি।

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্থানীয় দুধ উৎপাদনের মাধ্যমে মোট চাহিদার মাত্র ৪০ শতাংশ পূরণ হয়। চাহিদা মেটাতে গুঁড়া দুধ ও স্থানীয় দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন প্রয়োজন।

অপুষ্টির হার অনুযায়ী শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য আরও পুষ্টি প্রয়োজন। দুধ শিশুদের বেড়ে ওঠায় ও স্বাস্থ্যের বিকাশে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সাশ্রয়ী মূল্যে দুধ পাওয়া এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের ডেইরি খাতের চ্যালেঞ্জগুলো হলো— মানসম্মত দুধের অভাব, বাজারে দুধের সহজলভ্যতা ও পর্যাপ্ত জায়গার অভাব।

আরলা বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদক। ১৯৬১ সাল থেকে আরলা বাংলাদেশে কাজ করছে। অনেকে হয়তো আরলাকে চেনে না, কিন্তু এর পণ্য ডানো সবার পরিচিতি লাভ করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুধের ব্যবহারে এখনো ৫১ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। কোম্পানিটি ২০২২ সালের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ দুগ্ধ সরবরাহকারী হিসেবে গড়ে উঠতে চায়। এ জন্য আসন্ন বছরে ৯ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার মনোভাব পোষণ করেছে।

দৈনিক ডানো পুষ্টি (ডিডিপি) একটি উদ্ভিজ্জ চর্বিসমৃদ্ধ গুঁড়া দুধ। দুধের চাহিদা পূরণের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আরোপিত বহিঃশুল্কের জন্য এর বিকাশ ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

উম্মে কুলসুম স্মৃতি
উম্মে কুলসুম স্মৃতি

উম্মে কুলসুম স্মৃতি
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে পুষ্টিমানের বিষয়টি আগে আসে। আর পুষ্টিকর দুধ গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। আরলা ফুডের কার্যক্রম খুবই ভালো। তবে আরলা ফুডকে স্থানীয়, সাশ্রয়ী এবং পুষ্টিমানের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে। তারা আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

২০১০ সালে বাংলাদেশের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৩ লাখ লিটার। কিন্তু ২০১৮ সালে সেই পরিমাণ বেড়ে ৯৪ লাখ লিটারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ দুধ উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে। আমাদের প্রতিনিয়ত দুধের প্রয়োজন খুব বেশি না। আমরা চাইলেই এটা অর্জন করতে পারি। আরলা ফুড এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা যেভাবে এগিয়ে আসছে, তাতে খুব কঠিন হবে না।

সম্প্রতি নারী ও যুব সম্প্রদায় খামার তৈরি কিংবা দুধ উৎপাদনে এগিয়ে আসছে। তাদের সব সময় উৎসাহ দিতে হবে। তাই দুধ আমদানি করা যাবে না। এটা করলে তারা দুধ উৎপাদন থেকে বিরত থাকবে।
আমাদের দেশের অধিকাংশ খামারির দক্ষতার অভাব রয়েছে। খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সাধারণ খামারিদের কীভাবে দক্ষ করা যায় আরলা ফুড সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সরকার নিজের অবস্থান থেকে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য সহায়তা করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও সরকার আমাদের সঙ্গে থাকবে বলে
আশা করা যায়।

মো. আশিকুল ইসলাম
মো. আশিকুল ইসলাম

মো. আশিকুল ইসলাম
গাভির দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা আগের মতোই রয়ে গেছে। তাই আমদানি করা গুঁড়া দুধ সরবরাহের মাধ্যমে আরলা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু দুধ উৎপাদনে যে ইনপুটগুলো প্রয়োজন, আরলা সেগুলো দিয়ে সহায়তা করলে আমরা বেশি উপকৃত হতাম। অর্থাৎ গুঁড়া দুধ নয়, আমাদের প্রয়োজন প্রযুক্তি।

দেখা গেছে, নিম্ন মাথাপিছু আয়ের মানুষেরা অধিকাংশ সময় প্রয়োজন অনুযায়ী দুধ পায় না। এটা কিন্তু অর্থের অভাবে না। এর মূল কারণ হচ্ছে সচেতনতার অভাব। কেননা দুধ কিনে খাওয়ার জন্য খুব বেশি অর্থ লাগে না।

একজন স্বল্প আয়ের ব্যক্তিকেও দোকান থেকে প্রায়ই কোমল পানীয় কিনে খেতে দেখা যায়। অথচ ইচ্ছা করলেই সে ওই টাকা দিয়ে দুধ খেতে পারেন।

আমরা এখনো গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য নিশ্চিত করতে পারছি না। পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্যের বিকল্প নেই। এ জন্য একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকারের খুব বেশি খরচ হবে না।

দুধ উৎপাদনে আনুষঙ্গিক উপকরণ সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে বেশি পরিমাণে দুধ উৎপাদন হবে। আর ভোক্তা পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে।

শাহ এমরান
শাহ এমরান

শাহ এমরান
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারে কৃষি খাতের অবদান ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৭ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। আর মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। দেশের প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য বসে থাকে। আর মাত্র চার ভাগের এক ভাগ শিক্ষার্থী চাকরি পায় ।

দেশের কৃষকেরা গরু পালন করে সেখান থেকে দুধ উৎপাদন করবে। শেষে বাজারজাত করবে। এভাবে আমাদের অর্থনীতি গড়ে উঠবে। আর চাকরি না পেলেও যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।

গ্রামীণ অর্থনীতির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠে। তাই গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের িদকে নজর দিতে হবে। বিগত পাঁচ বছরে ডেইরি খাতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। দুধ উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। তবে আরও ভালো প্রযুক্তি ও উন্নত মানের গরু দরকার।

আমরা আমাদের খামার পরিচালনার ধরনটা পরিবর্তন করছি। এতে আমরা কাউকে অনুসরণ করছি না। তবে শিক্ষামূলক বিভিন্ন বিষয়ে বেশ জ্ঞানার্জন করছি। অল্প জায়গায় কীভাবে গাভি পালন করে দুধ পাওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের জমি অনেক উর্বর। এখানে আমরা বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন করতে থাকি। কিন্তু অন্যান্য দেশে বছরে দুবারের বেশি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বি এম খালেদুজ্জামান
এ বি এম খালেদুজ্জামান

এ বি এম খালেদুজ্জামান
গত কয়েক বছরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দুধ উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। পারিবারিক এবং বাণিজ্যিক খামার নির্মাণে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। আর খামারগুলো যেন মানসম্মত হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৫৮ হাজার। মানসম্মত দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে নিবন্ধনের পর এই খামারগুলোকে তদারক করা হয়। যেন ভোক্তা ভোগান্তিতে না পড়ে।

পশুখাদ্য জোগাড় করতে গিয়ে এসব খামারের ৭০ শতাংশ খরচ হয়। খাদ্যের খরচের পরিমাণ যেন কমে আসে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। পশুখাদ্যের অভাব পূরণের জন্য খাদ্য আমদানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

দানাদার খাবারের সঙ্গে গাভির জন্য আঁশজাতীয় খাদ্যের প্রয়োজন। বর্তমানে আঁশজাতীয় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ চলছে। খামারিরা কম খরচের দুধ উৎপাদন করবে, এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।

খামারিদের জন্য তরল দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারমূল্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাচ্ছে, মধ্যস্বত্বভোগী খামারিদের কাছ থেকে কম দামে দুধ ক্রয় করে নিয়ে আসে। সেই দুধ ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রয় করে।

উৎপাদনকারী ও ভোক্তা পর্যয়ে দামের পার্থক্যটা কমিয়ে আনতে হবে। সেই সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগীদের দিকে কড়া নজর দিতে হবে।

গোলাম রহমান
গোলাম রহমান

গোলাম রহমান
উৎপাদন বা আমদানির মাধ্যমে দুধের ঘাটতি পূরণ করা যায়। তবে দুধ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হলে সেটা দীর্ঘমেয়াদি দেশীয় খামারিদের জন্য সুফল দেবে না। উৎপাদন বাড়াতে হলে বেশি দুধ দেয় এমন গাভির সংখ্যা বাড়াতে হবে। আরলা আমাদের বিদেশি গরু আমদানিতে সাহায্য করতে পারে।

ভারতে দুধ উৎপাদনে একটা আমূল পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মিল্ক ভিটা তেমন কোনো সাফল্য আনতে পারেনি। এ জন্য সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

আরলা গুঁড়া দুধে বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। কিন্তু আমরা দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে আরলা স্থানীয় খামারিদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করতে পারে। এরপর তা প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে পারে।

মূলকথা হচ্ছে, আমাদের দেশীয় দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ জন্য সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। সরকার এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আর আরলা যদি এতে আমাদের সহায়তা করে তাহলে আমরা স্বাগতম জানাব।

তানজিব-উল-আলম
তানজিব-উল-আলম

তানজিব-উল-আলম
সবল জাতি গঠনে দুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সামর্থ্যের কারণে অনেকে দুধ খেতে পারে না। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা, ক্রয়ক্ষমতা কম। তাই প্রত্যেকের কাছে দুধ পৌঁছে দিতে হলে এটা সহজলভ্য করা উচিত।

বাংলাদেশে নারী ও শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং কর্মক্ষমতার জন্য দুধ প্রয়োজন। বেড়ে ওঠার সময় পর্যাপ্ত দুধ না খাওয়ালে পরবর্তী সময়ে তা প্রভাব ফেলে। শিশুকে দুধ না খাওয়ালে সে দুর্বল হয়ে পড়ে, কর্মক্ষমতা কমে যায়। এটা শুধু নিজের ক্ষতি না, দেশের উন্নতিতে প্রভাব ফেলবে।

আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার তুলে দিলে আমদানি বাড়বে। কিন্তু এতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়ে যাবে। খামারিরা দুধ উৎপাদন থেকে সরে আসবে। তবে যত দিন পর্যন্ত আমরা চাহিদা অনুযায়ী দুধ উৎপাদন করতে না পারব, তত দিন আমদানি করা দুধের ওপর শুল্প সমন্বয় করা প্রয়োজন।

আমাদের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ খুবই কম। এ জন্য বিদেশি বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে দুধ উৎপাদনের আনুষঙ্গিক সরঞ্জামসমূহ আমদানি করতে হবে।

১৯৯৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যক্তি খাতের সুযোগ করে দেওয়া হয়। বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে কয়েক বছরে ব্যক্তি খাত বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। তাই দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ব্যক্তি খাতকে সুযোগ করে দিতে হবে।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান
মো. মোস্তাফিজুর রহমান

মো. মোস্তাফিজুর রহমান
ঢাকার জনগোষ্ঠী যদি দিনে এক কাপ দুধ খায়, তাহলে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার দুধ লাগে। কিন্তু ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট মিলেও ৫ লাখ লিটার দুধ বিক্রি হয় না। মৌলভীবাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কম দামে দুধ সরবরাহ করে। এসব দুধ তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে থাকে। ফলে দেশীয় খামারিদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

জামালপুরে একবার একটি মিটিংয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়। সেখানে একজন কৃষক অভিমান করে বলে সে তার সব গরু বিক্রি করে ফেলবে। তার উৎপাদিত দুধ বিক্রি না হওয়াই এর মূল কারণ।

২০০১ সালে ডিম খাওয়ার জন্য ভারতীয় সরকার ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালায়। এতে ভালো সফলতা আসে। তাই দুধ খাওয়ার অভ্যাস করার ক্ষেত্রে সরকারকে কাজ করতে হবে। জনগণ তা সাদরে গ্রহণ করবে।

প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে অন্তত এক কাপ দুধ থাকা প্রয়োজন। প্রাণিজ আমিষ হিসেবে দুধের কোনো বিকল্প নেই। দক্ষিণ কোরিয়ায় হাসপাতালগুলোয় দুধ খাওয়ানো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। হাসপাতালে বেডের সঙ্গে সুইচের ব্যবস্থা করা হয়। সুইচ চাপলেই এক গ্লাস দুধ পাঠানো হয়।

মো. সাইফুল ইসলাম
মো. সাইফুল ইসলাম

মো. সাইফুল ইসলাম
প্রাচীনকাল থেকে দেশীয় গরুগুলো মাত্র ১-২ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। অতীতে খড় ছাড়া গরুকে অন্য খাবার তেমন খাওয়ানো হতো না। কিন্তু গাভিকে এখন ভালো খাবার দেওয়া হয়। ফলে দুধ উৎপাদনের পরিমাণও বেড়েছে।

দেশে আরলাসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান অবদান রাখছে। এগুলোর ইতিবাচক দিকগুলো চিন্তা করতে হবে। তাদের কাছ থেকে আমদানি করা দ্রব্যগুলো দিয়ে আমাদের খাদ্যাভ্যাস তৈরি হচ্ছে। তাই এগুলো বর্জন করা যাবে না।

দেশের ৯৮ শতাংশ খামারি জানে না, তারা কেন গরু পালন করছে। দেশীয় খামারিদের প্রতিযোগিতা বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নয়। তাদের প্রতিযোগিতা দেশীয় খামারিদের সঙ্গে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খামারিদের নিয়ে কাজ করা শুরু করেছে। আর এ জন্য তাদের অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে। আসলে এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। নয়তো তারা প্রতিযোগিতার ভিড়ে ঠিকে থাকতে পারবে না।

দুধ আমদানির বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করব না। কিন্তু আমদানি করা দুধ অবশ্যই গুণমানসম্পন্ন হতে হবে।নিজস্ব স্বার্থের লক্ষ্যে দুধ আমদানি থেকে বিরত থাকতে হবে। নয়তো সে দুধ আমাদের কোনো উপকারে আসবে না।

মঞ্জুর মোরশেদ আহমেদ
মঞ্জুর মোরশেদ আহমেদ

মঞ্জুর মোরশেদ আহমেদ
আমাদের দেশে দুধ উৎপাদন বেড়েছে। এ নিয়ে আরও কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যায়, খুব শিগগির ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হব। কিন্তু উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমাদের নিরাপদ দুধ নিশ্চিত করতে হবে।

দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি নিয়ে কয়েক মাসে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। নিরাপদ দুধ উৎপাদন নিশ্চিত করতে উৎপাদন পর্যায় থেকেই নজর দিতে হবে।

কিছু বিষয়ে আমাদের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে। গাভিকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে কি না সেটা লক্ষ করতে হবে। আর ভ্যাকসিন দেওয়ার পর উৎপন্ন দুধ বাজারজাত করা হচ্ছে নাকি সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (ডিএসএফএ) নিরাপদ দুধের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণা চালানো হচ্ছে। আর সেগুলো পরখ করে দেখা হচ্ছে।

আরলা ফুডের সঙ্গে ডিএসএফএর আলোচনা হয়েছে। কাজ করার জন্য তাদের স্বাগতম জানানো হয়েছে। আরলা আমাদের দুধের ঘাটতি পূরণের জন্য কাজ করার সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। এ জন্য তাদের আগে নিরাপদ দুধ নিশ্চিত করতে হবে। মূলত নিরাপদ দুধ নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব।

মার্ক বুট
মার্ক বুট

মার্ক বুট
বাংলাদেশে এখনো দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঘাটতি রয়ে গেছে। এখানকার শিশুরা পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পায় না। খামারিদের দুধ উৎপাদনের পরিমাণও তুলনামূলকভাবে কম। তাই এই ঘাটতি পূরণের জন্য আমরা কাজ করতে ইচ্ছুক।

আমরা ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়াতে কাজ করছি। সেখানে যথেষ্ট সফলতা অর্জন করেছি। ভিয়েতনামে স্থানীয় খামারিরা তাদের গরুগুলো থেকে মাত্র ৫-৬ লিটার দুধ উৎপাদন করত। কিন্তু আমাদের সহায়তায় এখন তারা নিজেরাই ১৫ লিটার দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশের মানুষের খর্বাকৃতি ও অপুষ্টি একটি বড় ইস্যু। পশুখামার নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে, তা এ দেশের খামারিদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারি।

দুধ উৎপাদন বাড়ানো জন্য খামারিদের খামার সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। এ জন্য আমাদের খামারে গিয়ে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে। আরলা অনেক পুরোনো প্রতিষ্ঠান। তাই দুধ উৎপাদন সম্পর্কে আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা এগুলো বাংলাদেশে শেয়ার করতে চাই। এতে খামারিদের উপকারে আসবে।

নাথুরাম সরকার
নাথুরাম সরকার

নাথুরাম সরকার
আমাদের দেশের গরুগুলো কম উৎপাদনসম্পন্ন। অতীতে এগুলো গড়ে মাত্র ১ কেজির মতো দুধ দিত। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় গরুগুলোই ২-৩ কেজি দুধ দিয়ে থাকে। উৎপাদনক্ষমতা কিছুটা বেড়েছে। ব্যবস্থাপনাপদ্ধতি পরিবর্তনের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি যুবসমাজ দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলোতে এগিয়ে আসছে। অনেকে পড়ালেখা শেষ করে গাভির খামার গড়ে তুলছে। ফলে আমাদের খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের মোট খামারের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজারের মতো।

খামারিরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। সেগুলো সমাধান করার জন্য অনেকে সহায়তা করছে। আমরা প্রযুক্তিগতভাবে খামারিদের সহায়তা করার চেষ্টা করছি। আর যাদের গরু নেই, তারা ঘাস উৎপাদন করে ডেইরি খাতে সহায়তা করে।

বহির্বিশ্বের উন্নত জাতের গরু এনে দেশীয় পদ্ধতিতে লালন–পালন করা যেতে পারে। বেশি দুধ দেয় এমন গাভির জাত উদ্ভাবনে প্রাণিসম্পদ ইনস্টিটিউট কাজ করছে। তবে বিপণনের দিকটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক
হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক
আলোচনায় কিছু ভুল তথ্য উঠে এসেছে। আমি সেগুলো সংশোধনের চেষ্টা করছি। প্রতিবছর মাথাপিছু ২২ কেজি দুধ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা এখন বেড়ে ৫৮-৫৯ কেজি দাঁড়িয়েছে।

দুধের মধ্যে সিসার কথা বলা হয়েছে। সেটা কোন অঞ্চলের দুধের কথা বলা হয়েছে, তা বলা হয়নি। কেননা, ঢাকার দুধে সিসার উপস্থিতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঢাকাই তো আর পুরো বাংলাদেশ নয়।

আমাদের দেশের দুধের মান ইউরোপের দেশগুলোর মতো না। কিন্তু আমরা গুণমানসম্পন্ন দুধ উৎপাদনের চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের উৎপাদনপদ্ধতিগুলোও উন্নত দেশগুলোর মতো না। সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

আমাদের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু দুধ খাওয়ার অভ্যাস নেই। তাহলে উৎপাদন করে কোনো সার্থকতা থাকে না। তাই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যেখানে অভ্যাসই নেই, সেখানে আমদানি করলে কোনো কাজে আসবে না। এতে আরলা আমাদের সহায়তা করতে পারে।

ডেইরি খাতে নারী ও যুব উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছে। এটা ইতিবাচক দিক। এখন অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ডেইরি খাতে নিজেকে নিযুক্ত করছে। সম্প্রতি রংপুরের একজন যুবক ইঞ্জিনিয়ারিং পেশা ছেড়ে খামার দিয়েছে।

ডেইরি খাত উন্নয়নের জন্য সরকার এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন কর্মসূচিও গ্রহণ করেছে। সরকার ন্যায্যমূল্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এতে উৎপাদক এবং ভোক্তা উভয়ই লাভবান হবে বলে আশা করছি। এ ছাড়া নিরাপদ দুধ নিশ্চিতকরণে কাজ করা হচ্ছে।

হঠাৎ করে গরু মারা গেলে খামারিরা অনেক দুর্ভোগে পড়ে। তাই তাদের জন্য বিমার ব্যবস্থার কথা ভাবছি। আর স্কুলপর্যায়ে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কাজী ওয়াছি উদ্দিন
কাজী ওয়াছি উদ্দিন

কাজী ওয়াছি উদ্দিন
প্রত্যেকের খাদ্যাভ্যাসে নিয়মিত দুধ যুক্ত করতে হবে। তাতে পুষ্টি নিশ্চিত হবে আবার খামারিরাও বাঁচবে। আমদানি করা পশুখাদ্যের শুল্ক কমলে এর দামও কমে আসবে। স্বাস্থ্যবান মেধাবী জাতি গঠনে দুধ খাওয়ার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে। আজকাল অনেক ভেজিটেরিয়ানকে দুধ খেতে দেখা যায়। দুধের মধ্যে যে প্রোটিন, মিনারেল এবং ভিটামিন রয়েছে, সেটা সে গ্রহণ করছে।

দুধের অভাবে শিশু ঠিকমতো বেড়ে ওঠে না। আবার অনেক সময় শিশুরা অনেক লম্বা হয়, কিন্তু উচ্চতা অনুযায়ী ওজন হয় না। পরিমাণমতো দুধ না খাওয়ার ফলেই এমনটা হচ্ছে। তাই নিয়মিত দুধ খেতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কোন জাতের গরু উপযোগী সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবস্থাপনার দিকটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কোথায় সমস্যাগুলো রয়েছে, তা নিয়ে গত তিন বছরে কাজ করা হচ্ছে। আশা করি খুব শিগগির সফলতা অর্জন করব।

উন্নত জাতের গাভির সঙ্গে দেশীয় গাভির সংকরায়ন করে নতুন জাতের গাভি উৎপাদন করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে উৎপন্ন নতুন জাতের গাভি অধিক পরিমাণ দুধ দেবে বলে আশা করা যায়।

আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা নেই। আরলা আমাদের টিকা দিয়ে সহায়তা করতে পারে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল দুধের ব্যবসা করছে। এদের চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে

আব্দুল কাইয়ুম

আজকের আলোচনায় অনেক সুপারিশ এসেছে। এগুলো অনুসরণ করলে স্থানীয় ডেইরি খাত উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টিমান িনশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করি। আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

যাঁরা অংশ নিলেন

উইনি এস্ট্রাপ পিটারসন: রাষ্ট্রদূত, ডেনমার্ক, বাংলাদেশ

কাজী ওয়াছি উদ্দিন: অতিরিক্ত সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক: মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

নাথুরাম সরকার: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট

গোলাম রহমান: সভাপতি, কনজু্যমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

মঞ্জুর মোরশেদ আহমেদ: সদস্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)

মো. সাইফুল ইসলাম: সদস্য, শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

উম্মে কুলসুম স্মৃতি: সাবেক সাংসদ, সভাপতি, জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন ফোরাম

মো. আশিকুল ইসলাম: সহযোগী অধ্যাপক, ডেইরি সায়েন্স বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

তানজিব–উল–আলম: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

এ বি এম খালেদুজ্জামান: পরিচালক, ডিরেক্টর প্রাণিসম্পদ বিভাগ

মো. মোস্তাফিজুর রহমান: অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক, মিল্ক প্রডিউসারস কো–অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেড

মার্ক বুট: ভাইস প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া, আরলা ফুডস

পিটার হলবার্গ: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, আরলা বাংলাদেশ

শাহ এমরান: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো