পুষ্টি উন্নয়নে বহু খাতভিত্তিক কর্মসূচি: সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগীর ভূমিকা

>

গত ২৪ এপ্রিল ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে ও সেভ দ্য চিলড্রেনের সূচনা প্রকল্পের সহযোগিতায় ‘পুষ্টি উন্নয়নে বহু খাতভিত্তিক কর্মসূচি: সরকার ও উন্নয়ন–সহযোগীর ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ হলো। 

আলোচনা

আব্দুলকাইয়ুম

একজন সুস্থ মানুষ দেশ ও জাতির গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। অপুষ্টিতে ভোগে এমন মানুষ দেশের জন্য বেশি কিছু করতে পারেন না। তাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া একান্ত জরুরি। এ জন্য সবার আগে পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।

একা কারও পক্ষে পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য বহু খাতভিত্তিক কর্মসূচি প্রয়োজন। তাহলে জনগণের পুষ্টিমান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ ব্যবস্থা আছে। তবে পুষ্টিবিষয়ক খাতগুলোর কার্যক্রমে সমন্বয় দরকার।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বহু খাতভিত্তিক কী কী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীরা এতে কি ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আজকের আলোচনা। এখন আলোচনা করবেন শেখ শাহেদ রহমান।

শেখ শাহেদ রহমান
শেখ শাহেদ রহমান


শেখ শাহেদ রহমান

সূচনা প্রকল্পটি ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়। এটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পটির লক্ষ্য হচ্ছে—দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের খর্বাকৃতির হার অতিরিক্ত ৬ শতাংশ কমিয়ে আনা।

সূচনার প্রোগ্রামে আটটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৪ জন দরিদ্র এবং হতদরিদ্ররা এ প্রকল্পের আওতায় সুবিধা ভোগ করছে।

আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। এই কার্যক্রমটি সিলেট ও মৌলভীবাজারের ২০টি উপজেলা তথা ১৫৭টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বীজ, মাছের পোনা ও বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

গর্ভকালীন থেকে শিশুর বয়স দুই বছর হওয়া পর্যন্ত পুষ্টি নিশ্চিতকরণের বিষয়টি সূচনা প্রকল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রয়েছে। এ ছাড়া নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিও আমাদের সূচনা প্রকল্পে গুরুত্বসহকারে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

 ইতিমধ্যেই স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় সিলেট মৌলভীবাজারের ২৩ হাজার ১৪৫ জন দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি।

দেশের সামাজিক ও অথ৴নৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিশু অপুষ্টি প্রতিরোধে, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।

তাহমিদ আহমেদ
তাহমিদ আহমেদ


তাহমিদ আহমেদ
২০০৭ সালে খর্বতার হার ছিল ৪২ শতাংশ। আর বর্তমান তা ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি শিশুর ওজন কমার হারও কমেছে। ওজন কমার হার কৃশকায় শিশুদের ক্ষেত্রে ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

মাতৃ পুষ্টির দিকটাতেও অনেক সাফল্য এসেছে। এর আগে মাতৃ অপুষ্টির হার অনেক বেশি ছিল। ২০১৪ সালে সেটা ১৯ শতাংশে নেমেছে। তবে অতি ওজন ও স্থূলতার হার বাড়ছে।

খর্বতা ও মাতৃ পুষ্টিসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য জিডিপির হার বাড়াতে হবে। কেননা ১০ শতাংশ জিডিপি বাড়লে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের খর্বতার হার ৬ শতাংশ কমে যায়। তবে নারীদের মধ্যে স্থূলতার হার ৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

দেশের কিছু অঞ্চলে খর্বতার হার অনেক বেশি। সিলেট অঞ্চলে এই হার বেশি দেখা যায়।

আমাদের বার্ষিক গড় খর্বতা কমানোর হার হচ্ছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতিবছর গড়ে এভাবে কমতে থাকলে খুব শিগগিরই খর্বতার হার কমে যাবে। আর ২০২৫ সালে এসডিজি অর্জন ও ২৫ শতাংশ খর্বতা কমানোর যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, সেটা অর্জন করা সম্ভব।

শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য প্রাণিজ আমিষ খুবই প্রয়োজন। পর্যাপ্ত প্রাণিজ আমিষ না পেলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। মাছ, মাংস, ডিম ও দুধে প্রাণিজ আমিষ পাওয়া যায়।

ডায়রিয়ায় ভোগা শিশুদের অন্ত্রে জীবাণু থাকে। কিন্তু ডায়রিয়ায় ভোগে না অথচ বাইরে ঘোরাফেরা করলেও শিশুদের অন্ত্রে জীবাণু লক্ষ করা যায়।

২০৫০ সালে বাংলাদেশের জনগণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। এই জনসংখ্যার খাদ্য নিশ্চিত করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই এখন থেকেই উৎপাদন বাড়াতে হবে।

নাজমা শাহীন
নাজমা শাহীন


নাজমা শাহীন
টেইসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে খর্বতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া এসডিজি অর্জন করা সম্ভব না। আর ইতিমধ্যে

খর্বতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য সরকার কর্তৃক নির্দেশ এসেছে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

শিশুর লম্বা হওয়ার জন্য ক্যালসিয়াম-ফসফরাস প্রয়োজন। কিন্তু তারা প্রয়োজনের অর্ধেকও ক্যালসিয়াম পাচ্ছে না। কারণ, ক্যালসিয়াম-

ফসফরাস পাওয়া যাবে এমন খাবার আমাদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় প্রায় থাকেই না। এ জন্য শিশুরা লম্বা হয় না।

গর্ভবতী মায়েরা অনেক সময় অপুষ্টিতে ভোগেন। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সবাই সময়মতো খাবার খাচ্ছেন। কেউই ক্ষুধার্থ থাকেন না। এরপরও পর্যাপ্ত পুষ্টি পান না।

অর্থাৎ তঁারা যে খাবারগুলো খাচ্ছেন, সে খাবারে যথাথ৴ পুষ্টি থাকে না। তাই তঁাদের খাবারে পুষ্টি আছে কি না সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

শিশুর দৈহিক গঠনের জন্য অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রয়োজন। এটা প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে পাওয়া যায়। তাই শিশুদের প্রাণিজ প্রোটিন নিশ্চিত করতে হবে।

সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে আমাদের পুরো খাদ্য পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আর শুধু খাবার খেলেই হবে না, কী পরিমাণ খেতে হবে, সেটাও নিশ্চিত করে দিতে হবে।

শুধু কোমল পানীয়ের বোতল দোকান থেকে সরিয়ে দিলেই হবে না। এনার্জি ড্রিংকস সরানোও নিশ্চিত করতে হবে। তবে পুঁজিবাদী অর্থনীতির যুগে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব না।

তাই সাধারণ জনগণ যেন এগুলো না খায়, সে জন্য অন্যান্য দেশে এসব পণ্যে কর বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভোক্তা খেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। আমাদের দেশেও এমনটা করতে পারে।

তবে আমাদের নীতি ও পরিকল্পনা সঠিক পথেই রয়েছে। আর কার্যক্রম যদি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। তাহলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হব।

মো. শফিকুল ইসলাম
মো. শফিকুল ইসলাম


মো. শফিকুল ইসলাম
অর্থ ও কারিগরি সহযোগিতার বাইরে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে উন্নয়ন–সহযোগীরা আমাদের সহায়তা করতে পারে। বিশ্বের অন্য প্রান্তের সফল উদাহরণ তারা আমাদের দেখাতে পারে।

সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা অনেক সফলতা অর্জন করেছি। কিন্তু সব সময় সফলতার কথা বললে সামনে এগোনো যাবে না।

আমাদের ব্যর্থতার কথাও বলতে হবে। এতে আমাদের ঘাটতিগুলো ধরা পড়বে। আর সেগুলো সমাধানের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাব।

আমাদের সব সময় চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে। অনেক অগ্রগতি ঘটলেও এখনো খর্বতার হার ৩১ শতাংশে রয়ে গেছে। সেখানে শিশুদের সংখ্যা অনেক বেশি।

শহর ও গ্রামাঞ্চলের জনসংখ্যার অনুপাত প্রায় অর্ধেক। এর কিছু কম–বেশিও হতে পারে। কিন্তু দুই জায়গার জীবন ধারণের পদ্ধতি ভিন্ন। গ্রামাঞ্চলে মানুষের পুষ্টি সম্পর্কে ধারণা অনেক কম। তাই তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।

উন্নয়ন–সহযোগীরা যেভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে, সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আশা করি সেটা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।

নওকী মিনামিগচি
নওকী মিনামিগচি


নওকী মিনামিগচি
বাংলাদেশে তরুণ–তরুণীর সংখ্যা অনেক বেশি। আজকের তরুণেরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই পুষ্টির কাজে তাদের যুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের এই অবস্থার পরিবর্তনের দূত বানাতে হবে।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য ক্ষুধামুক্তি জরুরি। সরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতা সংস্থা ও সব পক্ষের সমন্বয়, সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব না হলে এটা অর্জন করা সম্ভব হবে না।

এই বছর আমরা শহুরে খাদ্যপদ্ধতি সম্পর্কে একটা সভার আয়োজন করতে যাচ্ছি। কেননা শহরে জনগণ দিন দিন বাড়ছে।

ফলে এখানকার জনগণ পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য পাচ্ছে না। তাদের পুষ্টিকর পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যের সরবরাহ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টিকর খাবার নেই।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কাজ করতে হবে।

মো. মামুনুর রশিদ
মো. মামুনুর রশিদ


মো. মামুনুর রশিদ
একজন গর্ভবতী মা অপুষ্টিতে ভুগলে তঁার শিশুও অপুষ্টিতে ভুগবে। আর সেই শিশু যদি মা হয়, তাহলে তার সন্তানও অপুষ্টিতে ভুগবে। তাই গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে ২০১৮-২০১৯ সালে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মাকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এতে তিন বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে দেওয়া হবে।

মূলত খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে খুব শিগগির ৭৫ লাখ মাকে সহায়তা করার চিন্তাভাবনা চলছে।

তবে ওই কর্মসূচিতে চ্যালেঞ্জেও রয়েছে। কারণ, যে ৮০০ টাকা দেওয়া, সেটা তারা আদৌ পুষ্টি নিশ্চিতকরণে ব্যবহার করছে কি না তা জানা যায় না। আর এই টাকাটা পর্যাপ্ত কি না সেখানেও প্রশ্ন থেকে যায়।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারছি না। এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন–সহযোগীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আমরা খর্বতার হার কমাতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু হারটা কত, সেটা আগে জানতে হবে। কমানোর হারটা কিন্তু সন্তোষজনক না।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সরকার অনুমোদিত প্রাক্‌–প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলগুলোতে দুপুরের খাবার দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। খুব শিগগির তা দেওয়া হবে। আর খাবারে অবশ্যই পুষ্টি নিশ্চিত করা হবে। এতে একজন শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির ৩০ শতাংশ পূরণের চেষ্টা করা হবে। বাকি ৭০ শতাংশ পরিবার পূরণ করবে।

জাতীয় পর্যায়ে যত বড় কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক না কেন, গ্রামীণ পর্যায়ে সফল না হতে পারলে মূল সফলতা আসবে না। তাই সরকার এবং উন্নয়ন–সহযোগীর উচিত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া।

দিপক ধজ খদকা
দিপক ধজ খদকা


দিপক ধজ খদকা
৩৫ বছর ধরে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজ (আইডিই) বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সহায়তা করার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশে খর্বতার হার কমেছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এই হারটা দেশের অনুকূলে না। এই শিশুরা ভবিষ্যতে কোনো কাজে আসবে না।

পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। প্রতিনিয়ত পর্যাপ্ত খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য অর্থ খরচের অভ্যাসও তৈরি করতে হবে। কেননা পুষ্টিকর খাবারের দাম একটু বেশি। তাই অনেকে এগুলো ক্রয় করতে চায় না। এই অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে।

সরকার ও উন্নয়ন–সহযোগীদের লক্ষ্যমাত্রা একই হতে হবে। ভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করলে কাঙ্ক্ষিত সফলতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে না। এ জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমন্বয় ঘটাতে হবে।

ব্যক্তি খাতকে তাদের অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। তারা সক্রিয় রয়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য ভিন্ন থাকে।

তবে এরপরেও তাদের অবদান অনেক। পোশাকশিল্প অনেক হতদরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

ফলে তারা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। তাই নতুন কেউ এমন উদ্যোগ গ্রহণ করলে তাকে স্বাগত জানাতে হবে।

অপুষ্টি প্রতিরোধে ব্যক্তি খাতকে আরও বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তি খাতের গুরুত্ব রয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে, সংরক্ষণে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। সবাই সচেতন হলে দ্রুত আমরা অপুষ্টি দূর করতে পারব।

বিনয় কুমার বর্ম্মন
বিনয় কুমার বর্ম্মন


বিনয় কুমার বর্ম্মন
দরিদ্র এবং হতদরিদ্রদের নিয়ে আমরা ওয়ার্ল্ড ফিশের মাধ্যমে কাজ করছি। এ ছাড়া অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ও কিশোরীদের নিয়ে কাজ করি। আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে হতদরিদ্ররা মাছ উৎপাদনকারীর ভূমিকায় আসতে পারে। এ ছাড়া পুষ্টি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়।

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাছ প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। শুধু তা–ই নয়, এটি ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার।

মলা মাছ অনেক ছোট। কিন্তু এটি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাদ্য। এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। ছোট ছোট ডোবাগুলোতে প্রান্তিক অঞ্চলের জনগণ এই মলা মাছ চাষ করা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের চাহিদা পূরণ করছে।

শিশুরা ছোটবেলা থেকেই মাছ পছন্দ করে। শুধু শিশুরা নয়, সবার মধ্যে মাছের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। অর্থাৎ মাছ পছন্দশীল একটা খাবার। এ নিয়ে দ্বিমত নেই।

মেধা ও মনন শিশুপুষ্টির ওপর নির্ভর করছে। পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়।

গত ৩০ বছরে উৎপাদনে আমাদের উৎপাদনের পরিমাণ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।

প্রযুক্তিগত দিক দিয়েও আমাদের অনেক ঘাটতি এখনো থেকে গেছে। এই ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এরপর সেগুলো সমাধান করতে হবে। তাহলে সফলতা মিলবে।

আমাদের একক মাছ চাষ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখন একই সঙ্গে বিভিন্ন মাছ চাষ করা যায়। মাছ উৎপাদনকারীদের সে বিষয়ে অবগত করতে হবে।

এম ইসলাম বুলবুল
এম ইসলাম বুলবুল


এম ইসলাম বুলবুল
সাফল্য ও উন্নয়নের চাবিকাঠি হচ্ছে পুষ্টি। সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য পুষ্টির কোনো বিকল্প নেই। অর্থাৎ পুষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম। এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই।

বর্তমান সরকার পুষ্টি নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছে। নির্বাচনের ইশতেহারে পুষ্টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ছাড়া সরকার পুষ্টি নীতি ও পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

সময় বলে দেয় পুষ্টি বিষয়ে আমরা কতটা সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। এ জন্য প্রয়োজন অতীত ও বর্তমান সময়ের তুলনা করলে উন্নতির বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে আসবে।

পুষ্টির উন্নতিতে ব্যক্তি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ব্যক্তি খাত যদি কম দামে সেবা বা পণ্য দেয়, তাহলে জনগণ উপকৃত হবে। পুষ্টির নিশ্চিতকরণের বিষয়টিও সহজ হয়ে যাবে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। পরের বছর থেকে এটি তার কার্যক্রম শুরু করে। তখন থেকেই পুষ্টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখনো এর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি করতে সরকার পুষ্টি কার্যক্রমে ২২টি মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুষ্টিবিষয়ক কমিটি করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান গর্ভবতী মা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, কিশোর-কিশোরী ও বয়স্কদের নিয়ে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে এর আওতাভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সবাইকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

আমরা ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। এতে প্রাইভেট সেক্টর স্কেল আপ নিউট্রিশন (SUN), ব্যবসায়ী নেটওয়ার্ক ও জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়গুলোকে এসব কর্মসূচিতে সমন্বয় করা হয়। এ ধরনের সমন্বয়ের ফলে আগের থেকে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে।

সারা দেশে অনেক বেসরকারি সংস্থা পুষ্টি নিয়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু তাদের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। এসব বেসরকারি সংস্থা কাজের পরিধি পরখ করার জন্য অনলাইন ম্যাপিং করা হচ্ছে।

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের দুগ্ধজাতীয় খাদ্য দিতে হবে। এতে পুষ্টির চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব।

ইশতিয়াক মান্নান
ইশতিয়াক মান্নান


ইশতিয়াক মান্নান
পুষ্টিতে দেশের সফলতা দৃশ্যমান। সাফল্যের কথা তুলে ধরার সময় গড় তথ্য বা পরিসংখ্যান উপস্থাপন করতে হয়। এ জন্য অসাম্যের বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়।

আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করছি। কিন্তু সফলতার হার সব জায়গায় সমান না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর হার খুবই কম। তাই এই অঞ্চলগুলোতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

আমার সেভ দ্য চিলড্রেনের অনেক কর্মসূচিতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেখানে দেখেছি, তারা হতদরিদ্রদের প্রথমে খুঁজে বের করে। এরপর তাদের সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা করে থাকে।

একটি পরিবারে গিয়ে দেখলাম, একজন কিশোরী এসএসসি পাস করেছে। ফলাফলের পর কলেজে ভর্তি হতে চায়। কিন্তু তার পরিবার সেটা চায় না। তার মা মেয়েকে বিয়ে দিতে চান।

অথচ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ না। মাছ চাষের মাধ্যমে তাদের পরিবার প্রায় ২৫ হাজার টাকা প্রতিমাসে আয় করে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করেছে। অপুষ্টি প্রতিরোধে আন্তমন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অজ৴ন করা সম্ভব হবে। সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।

তবে কাজ যে একবারে হচ্ছে না, সেটা কিন্তু না। আমরা অনেকে এটা নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু এটা টেকসই করতে হলে সবার সমন্বয় প্রয়োজন।

এখন ব্যক্তি খাত এগিয়ে আসছে, এটা নিঃসন্দেহে ভালো দিক। কিন্তু ব্যক্তি খাত মুনাফা অর্জনে বিশ্বাসী। তারা পুষ্টি নিশ্চিত করতে চায় না, বরং মুনাফা অর্জন করতে চায়। ব্যক্তি খাতকে তদারক করতে হবে।

পুষ্টি নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তবে সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে কি না সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না।

মো. শাহ নেওয়াজ
মো. শাহ নেওয়াজ


মো. শাহ নেওয়াজ
বর্তমানে খাদ্য নিয়ে যতটা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, অতীতে কিন্তু ততটা ভাবা হতো না। তাই বোঝাই যাচ্ছে, এই খাতে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। এর পরেও কাজ করে যাচ্ছি।

পুষ্টি খাতের সফলতা কতটুকু তা জানার জন্য খুব বেশি পর্যালোচনার দরকার হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেটের গ্রাফের দিকে সফলতার চিত্র দেখতে পাব। এই খাতে বাজেটের পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

১৯৯৩ সালে এই খাতে বাজেটের পরিমাণ ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। কিন্তু এখন বেড়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ শতভাগ বাড়ানো হয়েছে।

সম্প্রতি জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদ্‌‌যাপন করা হচ্ছে। প্রতিবছর ২৩-২৯ এপ্রিল জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথা ভাব।

বাংলাদেশ চাল এবং মাছ উৎপাদনে পৃথিবীতে চতুর্থ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং একধরনের বিশেষ ছাগল উৎপাদনে প্রথম। তারপরেও কেন দেশে অপুষ্টি আছে, তা গভীরভাবে চিন্তার দাবি রাখে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে গবেষকেরা গবেষণা করা শুরু করেছেন

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ২৫ ও ১৮ সদস্যের সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দেশে পুষ্টি কার্যক্রম নজরদারি ও মূল্যায়নের জন্য পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

অনেক সময় কাজ করা হলেও সেগুলো ঠিকমতো তদারক করা হয় না। ফলে কাজের পরিধি এবং উন্নতির হার সম্পর্কে জানা যায় না। তাই আমরা তদারকের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশালের মানুষের মধ্যে অপুষ্টির হার সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল (বিএনএনসি) তার নিজস্ব অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করছে। আর সবাই পাশে থাকলে পুষ্টির অভাব দূর করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি।

মো. মুরাদ হাসান
মো. মুরাদ হাসান


মো. মুরাদ হাসান
আমাদের সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দিয়েছে। ইতিমধ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশে সব বিভাগ তাদের নিজস্ব স্বাস্থ্য সপ্তাহ পালন করে থাকে। কিন্তু এত দিন জাতীয় পুষ্টি সেবা সপ্তাহ ছিল না। তাই আমরা এ সপ্তাহ পালন করা শুরু করেছি। জাতীয় পুষ্টি সেবা সপ্তাহ প্রতিবছর ২৩-২৯ এপ্রিলে পালন করা হবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম জড়িত। তিনি ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য দেশকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে যান। আমরা আজকে যে বিষয়ে আলোচনা করছি, তিনি সেটা সত্তরের দশকেই চিন্তা করেছেন। সেই সঙ্গে সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে এটা উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি সচেতন। গ্রামের প্রায় সবার কাছেই মোবাইল ফোন রয়েছে। আর অধিকাংশের ফোনেই ইন্টারনেট আছে। তারা সবাই খাদ্য এবং পুষ্টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে।

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের খর্বতার হার ৩১ শতাংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে এই শিশুদের খর্বতা কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পুষ্টি নিশ্চিতকরণেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রায় শেষ। এ ছাড়া অন্যান্য বিভাগেও সেটা করা হবে। আর মেডিকেল কলেজগুলো তো রয়েছেই।

অতিরিক্ত জনগণ কখনোই উন্নতির অন্তরায় হতে পারে না। বরং একটি দেশের জন্য জনগণকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমরা বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যার ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম। আমাদের উৎপাদনের পরিমাণও বেড়েছে। তাই খাদ্যেও সমস্যা হওয়ার কথা না। আর প্রয়োজনে খাদ্যের ব্যবস্থা করতেও আমরা সক্ষম।

আব্দুলকাইয়ুম

পুষ্টি খাতে বাংলাদেশে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো অনেক ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। আজকের আলোচনায় অনেক সুপারিশ এসেছে। সরকার এবং উন্নয়ন–সহযোগীরা এই সুপারিশগুলো অনুসরণ করলে পুষ্টি নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথমআলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

যাঁরা অংশ নিলেন

মোমুরাদ হাসান: মাননীয় সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় (তৎকালীন)

মোশাহ নেওয়াজ: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল (বিএনএনসি)

এম ইসলাম বুলবুল: ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জাতীয় পুষ্টিসেবা প্রতিষ্ঠান, (আইপিএইচএন)

নাজমা শাহীন: অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মোশফিকুল ইসলাম: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)

নওকী মিনামিগচি: চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অরগানাইজেশন (এফএও)

মোমামুনুর রশিদ: প্রোগ্রাম পলিসি অফিসার, জাতিসংঘ বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি

তাহমিদ আহমেদ: সিনিয়র ডিরেক্টর, আইসিডিডিআরবি

দিপক ধজ খদকা: কান্ট্রি ডিরেক্টর, আইডিই

বিনয় কুমার বর্ম্মন: সিনিয়র সায়েনটিস্ট, ওয়ার্ল্ড ফিশ

ইশতিয়াক মান্নান: ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর, সেভ দ্য চিলড্রেন

শেখ শাহেদ রহমানচিফ অব পার্টি, সূচনা প্রোগ্রাম, সেভ দ্য চিলড্রেন

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথমআলো

আলোচনায় সুপারিশ

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে শিশুদের প্রাণিজ প্রোটিন নিশ্চিত করতে হবে

সবার মধ্যে পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি

শিশুদের জন্য স্কুলে পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করুন

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে অর্থ ও কারিগরি সহযোগিতার বাইরে উন্নয়ন–সহযোগীরা বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সহায়তা করতে পারে

পুষ্টি খাতে বাজেটের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে

পুষ্টি নিশ্চিতকরণে পুষ্টিজাতীয় খাবারের উৎপাদন বাড়ানো দরকার

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের দুগ্ধজাতীয় খাবার দিতে হবে

পুষ্টিকর খাবার অারও বেশি করে উৎপাদন করা জরুরি।

সাশ্রয়ী মূল্যে যেন পুষ্টিকর খাবার কেনা যায়, সেটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন