কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক

কোনো এলাকার কোনো সড়ক সংস্কারের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সে এলাকার জনগণ যাতে সহজে ও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারে। সে কারণে সংস্কারকালীন কিছু সমস্যা ও দুর্ভোগ জনগণ মেনে নেয়। কিন্তু কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক যেভাবে সংস্কার করা হচ্ছে, তাতে এলাকাবাসী কত দিন ধৈর্য ধরে থাকবে, তা এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। সংস্কারকাজের ধীরগতির কারণে জেলার সাধারণ যাত্রীরা যানজটের কবলে পড়ে যেভাবে নাকাল হচ্ছে, তা অসহনীয়।

টেকনাফ থেকে ৯০ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার পৌঁছাতে সাধারণত এক ঘণ্টা লাগে। এখন এই দূরত্ব অতিক্রম করতে লাগছে প্রায় চার ঘণ্টা। সড়কজুড়ে শত শত খানাখন্দের কারণে তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। যেকোনো সড়ক সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সড়কের গুরুত্ব ও যান–চলাচলের সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে এমনভাবে কাজের পরিকল্পনা করা, যাতে চলাচলের খুব বেশি সমস্যা না হয়। এই সড়ক সংস্কারের ক্ষেত্রে যেএসব বিচার-বিবেচনা কাজ করেনি, তা স্পষ্ট।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। ২০২০ সালের জুন মাসে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থাৎ, এ প্রকল্পে সময় ধরা হয়েছে দেড় বছর। আর গত পাঁচ মাসে কাজ এগিয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। কাজের এই ধীরগতির পেছনের কারণ হিসেবে সড়ক ও জনপদ (সওজ) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানিয়েছেন, সড়কের দুই পাশে নালা খনন, বৈদ্যুতিক খুঁটি, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নানা কাজে সময় লেগেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি টানা ১২ দিনের ভারী বর্ষণে সড়কের কাজ ব্যাহত হয়েছে। তবে তিনি ২০২০ সালের জুনের মধ্যে অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, যে সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে, সে সড়কটি আরও দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ কি নেওয়া যেত না? অথবা যান চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট লেন রেখে পরিকল্পিতভাবে কাজের উদ্যোগ নেওয়া যেত না? সংস্কারকাজ যদি নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়, তাহলেও আরও ১১ মাস কক্সবাজার জেলার বাসিন্দাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হবে। আর যদি নির্ধারিত সময়ে শেষ না হয়, এবং সেই আশঙ্কাই যেহেতু বেশি, তাই জনগণের দুর্ভোগের সময়সীমা আরও বাড়তে চলেছে বলেই মনে হয়।

সওজ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ, জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিন। একই সঙ্গে সংস্কারকাজের সময় যান চলাচলে দুর্ভোগ কমাতে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিন।