নিরাপদ ও টেকসই নগর অগ্রগতি এবং বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

>গত ২৯ জুন ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে ও সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘নিরাপদ ও টেকসই নগর অগ্রগতি এবং বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

যাঁরা অংশ নিলেন

  • আতিকুল ইসলাম: মেয়র, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
  • এম খালিদ মাহমুদ: যুগ্ম সচিব, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
  • মো. শহীদ আলম: সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক ও সাবেক সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
  • মো. মোস্তাফিজুর রহমান: জয়েন্ট চিফ, জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশন, প্রজেক্ট ডিরেক্টর, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
  • কাজী মারুফুল ইসলাম: অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আকতার মাহমুদ: ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারস
  • খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক: পরিচালক, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর
  • ইকবাল হাবিব: সদস্যসচিব, নগরায়ণ ও সুশাসন কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন
  • আশরাফুল ইসলাম: প্রকল্প পরিচালক, ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান, রাজউক
  • আশেকুর রহমান: হেড অব পভার্টি অ্যান্ড অারবান, ইউএনডিপি
  • শামীমা সিদ্দিকী: প্রকল্প বিশেষজ্ঞ (শহর), ইউনিসেফ, বাংলাদেশ
  • খালিদ হোসেন: ব্যবস্থাপক, ইকোনমিক জাস্টিস অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ
  • তারিক বিন ইউসুফ: প্রকল্প পরিচালক, আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প, উত্তর সিটি করপোরেশন
  • মোহাম্মদ নূরুল আলম: ডিরেক্টর, প্রোগ্রাম, পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
  • মো. মোস্তাক হোসেন: হিউম্যানিটারিয়ান ডিরেক্টর, সেভ দ্য চিলড্রেন
  • সৈয়দ মতিউল আহসান: উপপরিচালক, ডিআরআর ও সিসিএ, সেভ দ্য চিলড্রেন

 

সঞ্চালক

  • আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনায় সুপারিশ

  • নারী, শিশু ও প্রবীণের কথা চিন্তা করে নগর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন
  • পর্যাপ্ত গণপরিবহন ও প্রশস্ত ফুটপাত নিশ্চিত করা দরকার
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এলাকাভিত্তিক বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে
  • সবুজ ও উন্মুক্ত স্থানে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি
  • ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে
  • ভবনে পর্যাপ্ত জরুরি বহির্গমনব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন
  • ভবন নির্মাণে দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করে নির্মাণব্যয় কমিয়ে আনা দরকার
  • শহরে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে
  • আবাসিক এলাকায় অবস্থিত রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভালোভাবে বসবাসের জন্য নিরাপদ ও টেকসই নগরের গুরুত্ব অপরিসীম।

নিরাপদ নগর বলতে সাধারণ মানুষের একরকম ধারণা আছে। কিন্তু এর গভীরে আরও কতগুলো দিক আছে, যেটা সাধারণত আলোচনায় আসে না। সম্প্রতি বরগুনায় একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা নিয়ে এখন মানুষ উদ্বিগ্ন।

এখানে আরও অনেক বিষয় আলোচনার আছে। সুপেয় পানি, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন বিষয় আজকের আলোচনায় আসবে। এখন এ বিষয়ে আলোচনা করবেন আতিকুল ইসলাম।

আতিকুল ইসলাম
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে নগরকে টেকসই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনেক প্রতিকূলতা রয়েছে।

এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৯ হাজার মানুষ বাস করে। নদীভাঙনে মানুষ ঢাকায় আসছে। কর্মসংস্থানের জন্যও মানুষ ঢাকায় আসছে। আজ ফুটপাত খালি করলে কাল আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো সমাধান করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে তা সম্ভব।

সে জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। তাই আমি সবাইকে খোলামেলা আলোচনার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।

সৈয়দ মতিউল আহসান
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট পূরণের জন্য ১১ বছর সময় আছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টে পাঁচটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো জনগণ, অংশীদারত্ব, শান্তি, অগ্রগতি ও সবুজ পৃথিবী। আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে। এই অগ্রগতি যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৫ শতাংশ শিশু। তাই যখন টেকসই উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে, তখন শিশুদের ব্যাপারে আমরা ভাবছি কি না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। সেভ দ্য চিলড্রেন থেকে আমরা অংশগ্রহণমূলক উপায়ে শিশুদের কাছ থেকে শোনার চেষ্টা করছি।

আমরা শহরের উন্নয়ন চাই। কিন্তু উন্নয়নটা যেন শিশুবান্ধব হয়। বলা হতো, বাংলাদেশ পুরোটাই একটা গ্রাম। সেই গ্রাম আবার শহরে রূপান্তর করার কথা বলা হচ্ছে। আসলে শহর বলতে কী বোঝায়, আমরা তা বুঝতে পারছি কি না? নাকি আমাদের কাছে শহরটা একটা ধাঁধার মতো। এ বিষয়টি সবার ভাবা প্রয়োজন।

আমরা আশাবাদী যে আপনারা সবাই আমাদের সঙ্গে আছেন। যে পৃথিবী আমরা রেখে যাচ্ছি, তা যেন ভবিষ্যতের শিশুদের জন্য বাসযোগ্য হয়।

আকতার মাহমুদ
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টে ১৭টি অভীষ্ট ও ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এটাকে মূল্যায়ন করার সূচক আছে ২৩২টি। অভীষ্ট ১১–এ নগর ও জনবসতি গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। এখন নগর ও জনবসতি গড়ে তোলা হবে কীভাবে? এখানে চারটি বিষয়কে সামনে আনা হয়েছে। সেগুলো হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, অভিঘাত-সহনশীল ও টেকসই। যেকোনো প্রকল্পে যেন এই চারটি বিষয় থাকে।

উন্নয়নের ধরন বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। কখনো উন্নয়নকে শুধু অর্থনৈতিক বিষয় বলে ভাবা হতো। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত সব বিষয়কে এখন বিবেচনায় আনা হচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমাজের সব মানুষকে নিয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন করা। উন্নয়নের ফল যেন আমরা সবাই ভোগ করতে পারি।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১-এর ২-এ সবার জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও টেকসই পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এখানে অনেকেই আমরা পথচারীবান্ধব শহরের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় একটা সময় ফুটপাত হচ্ছিল। কিন্তু এখন মেগা প্রজেক্টের নামে অনেক রাস্তার ফুটপাত সংকুচিত করা হচ্ছে। ফুটপাত সংকুচিত করে গণপরিবহন অথবা পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি করা সম্ভব নয়।

আশরাফুল ইসলাম
আমরা ঢাকার মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। ঢাকার সফলতা ও ব্যর্থতা রয়েছে। এটি একটি অতি ঘনবসতিপূর্ণ শহর। কিছু জায়গায় হংকং ও টোকিওর সঙ্গে মিল রয়েছে। যেমন জনসংখ্যার ঘনত্ব ও জীবনযাত্রার ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু টোকিও এবং হংকংয়ের সঙ্গে ঢাকার পার্থক্য হলো জীবনযাত্রার মান। সেখানে জীবনযাত্রার মান অনেক ভালো।

আমাদের অতীতের অনেক পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনা প্রণয়নের দিক থেকে হয়তো ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে বেশি নজর দিইনি। তবে ঢাকা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ভবিষ্যতের ঢাকা কীভাবে গড়া যায়, তার একটা নির্দেশনা আমাদের কাছে আছে। ঢাকার বেশির ভাগ স্কুল ধানমন্ডি, গুলশান ও উত্তরাকেন্দ্রিক। এটা যানজটের একটা কারণ। এই স্কুলগুলোকে এলাকাভিত্তিক করা প্রয়োজন। এটা হবে শিশুবান্ধব নগর-পরিকল্পনা। সে জন্য আমরা এলাকাভিত্তিক ৬২৭টি স্কুল নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।

খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক
জলবায়ুসংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক সোচ্চার। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশে তিন কোটি মানুষ পরিবেশ অভিবাসী (মাইগ্রেট) হবে।

বাংলাদেশ পুরো অঞ্চলটাই টেকসই। আমাদের দক্ষিণবঙ্গ যতই ডুবে যাচ্ছে বলি না কেন, সেখানে এখনো কয়েক কোটি মানুষ বাস করছে।

নগরের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সমস্যা রয়েছে। নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন নগর নিয়ে কাজ করে। ঢাকা মহানগরের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়  ঢাকা ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ পায়। চট্টগ্রাম পায় ৬০ নম্বর। নগরের সংজ্ঞা অনুযায়ী আমাদের নগর একটাই। সেটি হলো ঢাকা মহানগর। ঢাকা শহর পুরো বাংলাদেশের শহর।

ঢাকা উত্তর পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ঢাকার অন্য এলাকার পরিকল্পনা ষাটের দশকের। সেটাকে একটু পরিবর্তন করলেই পরিবহন সমস্যা থাকবে না। শুধু ঢাকার কথা চিন্তা করলে হবে না।ঢাকার চারপাশে ১৮টি শহর আছে। এগুলোর সঙ্গে শহরের যুক্ততা তৈরি করতে হবে।

আশেকুর রহমান
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের সব অভীষ্টই সমান গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের ভবিষ্যৎ, সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ভর করবে শহরের ওপর। সারা বিশ্বের উন্নয়নের প্রায় ৮০ শতাংশ জোগান দেয় শহর। এটা বাংলাদেশেও সত্য।

বাংলাদেশে জিডিপির প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আসে শহর থেকে। এর পরিমাণ খুব দ্রুত বাড়ছে। অল্প সময়ের মধ্যে এটা ৮০ শতাংশের বেশি হবে, যা শহরের একটা ইতিবাচক দিক। কিন্তু এর পাশাপাশি অনেক নেতিবাচক দিকও রয়েছে।

বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ কার্বন নিঃসরণ। প্রায় ৭০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ হয় শহরে। তাই শহর একদিকে সম্ভাবনা, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জ। এই জায়গা থেকে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের অগ্রগতি নির্ধারণে ৩৯টি  নির্দেশক তৈরি করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের লক্ষ্যমাত্রা ১১ নিয়ে একটি নির্দেশক রয়েছে। সেটি হলো যে গণপরিবহনের ২০টি আসন শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।

ইকবাল হাবিব
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১–এ অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, অভিঘাত-সহনশীল, টেকসই নগর ও জনবসতি গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১-এর ৭–এ বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য, বিশেষ করে নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অবারিত সবুজ ও উন্মুক্ত স্থানে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার প্রদান করার কথা।

ঢাকা সবার জন্য নয়। বরং সবলের জন্য। এই নগরে দুর্বলের টিকে থাকা কষ্টকর। বিভিন্ন জরিপে তথ্যবিভ্রাটের মাধ্যমে দুর্বলদের (বস্তিবাসী) প্রায় বাদ দেওয়া হয়। এই মহানগর সমতার ভিত্তিতে পুনর্গঠন প্রয়োজন। ভেঙে আবার বানাতে হবে। আমরা আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের অধীনে ঢাকা উত্তর ও জল-সবুজ ঢাকার অধীনে ঢাকা দক্ষিণে খেলার মাঠের পরিকল্পনা করছি।

এটা করতে গিয়ে আমরা দেখলাম আমাদের খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার। শহরে নতুন উন্মুক্ত স্থান তৈরি করতে হবে। ঢাকা শহরে এখনো অনেক উন্মুক্ত স্থান রয়েছে। এগুলো সংরক্ষণ করা দরকার। আমাদের নগর যেন সবার জন্য হয়।

মো. মোস্তাক হোসেন
সমন্বিত দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, দেশগুলো তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্কের (দুর্যোগ ঝঁকি হ্রাস) আলোকে সমন্বিতভাবে করবে।

অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল। কিন্তু টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১.খ.১–এ উল্লেখিত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়টি ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। এর গুরুত্ব বুঝেই বাস্তবায়নের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সরকারি মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় করা দরকার। সমন্বয় করা গেলে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।

শহরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

এনজিওর ক্ষেত্রে এনজিও ব্যুরো রয়েছে। এনজিও ব্যুরো তার গাইডলাইন পলিসিতে এনজিও কর্তৃক গ্রহণ করা উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বাজেট নির্ধারণ করে দিতে পারে। একইভাবে সরকারি প্রকল্পেও একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বাজেট থাকতে হবে।

মোহাম্মদ নূরুল আলম
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১.খ-এ স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে টেকসই ও অভিঘাত-সহনশীল ভবন নির্মাণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার কথা বলা হয়েছে। এখানে আমি দুটো শব্দের ওপর জোর দিতে চাই। সেগুলো হচ্ছে টেকসই ও অভিঘাত-সহনশীলতা। যেসব ভবন ও উড়ালসড়ক নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো অনেক বেশি সহিষ্ণু হতে হবে। ভূমিকম্প ও দুর্যোগে যেন সেগুলো টিকে থাকে।

স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থানীয় তৈরি উপকরণ ব্যবহার করা হলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব। এই সরকারের শুরুর দিকে বিকল্প ইট ব্যবহারের একটা নীতিমালা পাস হয়েছিল। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট পরিবেশবান্ধব ইট ব্যবহারের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিল। যাঁরা ইটভাটা পরিচালনা করেন, তাঁদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম। তাঁরা এসব বিষয়ে সচেতন।

যেকোনো ঘটনা-পরবর্তী আলোচনা শুনলে মনে হয় যে এবার পরিবর্তন আসবে। কিন্তু ঘটনার কিছুদিন পর আমরা সেগুলো ভুলে যাই। বনানী অগ্নিদুর্ঘটনার পর আমরা আসলে কী উদ্যোগ নিয়েছি?

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা শহরে ২৫ হাজার রাসায়নিক গুদাম রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার রাসায়নিক গুদাম আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। এসবের মাত্র ২ শতাংশ সিটি করপোরেশন থেকে অনুমতি নিয়েছে।

মো. শহীদ আলম
ঢাকা শহরের উন্মুক্ত স্থানগুলোকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় ইত্যাদি দখলের জন্য কখনো কোনো অজুহাতের অভাব হয়নি। টেকসই নগর করার জন্য অনেক বিষয় আলোচনায় এসেছে। তার মধ্যে প্রধান একটা বিষয় হচ্ছে টেকসই ভবন।

৭ বা ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। ভবন যদি ভূমিকম্প-সহনীয় হয়, তাহলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। জাপানে বহু ভূমিকম্প হয়। কিন্তু মানুষ মারা যায় না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাপানে আগে অনেক লোক মারা যেত। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই।

 ৬০ শতাংশ ভবনে অগ্নিদুর্ঘটনার সময় জরুরি বহির্গমনব্যবস্থা খুবই অপর্যাপ্ত। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে আমরা অনেক এগিয়ে যাব।

তারিক বিন ইউসুফ
টেকসই সমাজ গড়ে তোলাই হচ্ছে আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সে ক্ষেত্রে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক ও প্যারিস চুক্তির আলোকে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা করেছে, যেটা বাস্তবায়নযোগ্য।

খুব সহজেই খেলার মাঠের উন্নয়ন করা যায়। এই প্রথমবারের মতো আমরা গণমানুষের পরামর্শ ও বিভিন্ন সম্প্রদায়কে যুক্ত করে নকশা তৈরি করেছি। সেগুলো এখন ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এগুলো সাধারণত সিটি করপোরেশন বা রাজউক রক্ষণাবেক্ষণ করে। কিন্তু এগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। আমাদের পার্ক ও খেলার মাঠগুলো প্রতিবেশীকেন্দ্রিক। ফলে তাদের সংযুক্ত করতে না পারলে সেগুলো টেকসই হবে না। পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যেমন সবাইকে নিয়ে করা হয়, তেমনি সবাইকে নিয়েই তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

শামীমা সিদ্দিকী
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১-এর ১-এ সবার জন্য পর্যাপ্ত, নিরাপদ ও মূল্যসাশ্রয়ী আবাসন এবং মৌলিক সুবিধায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করাসহ বস্তির উন্নয়ন সাধনের কথা বলা হয়েছে। এখানে সবার জন্য মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

পরিবারগুলো গ্রাম থেকে শহরে আসছে জীবিকার সন্ধানে। শহরে এসে তারা মূলত বস্তিতে থাকে। অনেকেই পোশাকশিল্পের কারখানায় কাজ করছেন। নগরায়ণ ও অভিবাসনের প্রভাব পরিবারগুলোতে পড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও মায়ের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রথমবারের মতো শহর এলাকায় বস্তির সঙ্গে অন্যান্য এলাকার তুলনা করে শহরে শিশুদের পরিস্থিতি তুলে ধরে। সেখানে দেখা যায়, বস্তিতে যেসব শিশু ও মা বাস করছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষাগত অবস্থা অন্যান্য এলাকায় বসবাসকারীদের মতো ভালো নয়। এ জন্য সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। অনেক পরিকল্পনায় শহর এলাকার শিশুদের অধিকারের কথা এসেছে। কিন্তু মূল চ্যালেঞ্জ হলো বাস্তবায়ন।

খালিদ হোসেন
আমরা গ্রেটা থানবার্গের কথা জানি। ১৬ বছরের এই সুইডিশ কন্যাশিশু জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে। কারণ, শিশুরা এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। তারা দেখছে যে তাদের ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন। সে জন্য তারা নিজেরা একটা আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশদূষণের সমাধান শহরেই আছে। আশা করি শিশুরা এখানে বড় ভূমিকা রাখবে। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী এক-তৃতীয়াংশ জ্বালানির ব্যবহার হয় দালানকোঠায়। বৈশ্বিক উষ্ণতাকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি রাখতে হলে ২০৫০ সালের মধ্যে দালানকোঠায় জ্বালানির ব্যবহার  কমিয়ে আনতে হবে। সেখানে আমাদের প্রকৌশলী ও স্থপতিরা অনেক কাজ করছেন।

পরিবহন খাতে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গণপরিবহনের পাশাপাশি আমরা ফুটপাত ভালো করা ও এর নিরাপত্তার কথা বলছি। এটা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ভূমিকা রাখে।

কাজী মারুফুল ইসলাম
এই আলোচনার একটা রাজনৈতিক দিক আছে। কিছুদিন আগে এফ আর টাওয়ারে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটল। এমন নয় যে এ ক্ষেত্রে আমাদের নীতিমালা বা সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না। তারপরও দুর্ঘটনা ঘটেছে। কেননা, আমরা আইন বাস্তবায়ন করতে পারিনি। টাকা ছাড়া সরকারি অফিস থেকে  প্রায় কোনো কিছু পাস হয় না। যারা কাজের চুক্তি নেয়, তারা সেগুলো ভালোভাবে করে না।

আমি ঢাকার একটি আবাসিক এলাকায় চার বছর  আছি। সেখানে প্রথম দুই বছরে ফুটপাতে ইটের ব্লক বসানো হলো। কিছুদিন পর দেখি সেগুলো উঠিয়ে টাইলস বসানো হচ্ছে। নালা করা হচ্ছে। ঢাকনা দেওয়ার মুহূর্তে দেখি সেগুলো অর্ধেক মাটি দিয়ে পূর্ণ। এই নালার তদারকি কে করছে?

রাষ্ট্রের টাকা নিয়ে আমরা জনগণের দাবির প্রতি দায়িত্ববান হচ্ছি না। জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করছি না। নাগরিক হিসেবে আমাকেও সেখানে সম্পৃক্ত করা যেত। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করা দরকার। নইলে আমি খুব বেশি আশার আলো দেখছি না। আশা করি আমাদের নেতৃত্ব সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান
বর্তমানে বিশ্বে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ শহরে বাস করে। ২০৫০ সালের মধ্যে এ পরিমাণ ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৭ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করে। ২০২৫ সালে তা ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ২০৫০ সালে এ পরিমাণ হবে ৫০ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ঘনত্বের শহরে আমরা বাস করছি, যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস করে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১–এ টেকসই নগরের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেননা, ২০৩০ সালের মধ্যে শহরের জনসংখ্যা এত বেড়ে যাবে যে এটাকে ব্যবস্থাপনা করা একটা চ্যালেঞ্জ। আমাদের মেয়ে ও শিশুরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আমার মেয়ে শরীরে ব্যথার অভিযোগ করায় চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হলো।

সেখানে জানলাম তার শরীরে ভিটামিন ডির অভাব। ভিটামিন ডির অভাবে হাড়ের গঠন প্রচণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়।

এই বিষয়গুলো আমাদের ভাবতে হবে। নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য টেকসই নগর নির্মাণ করা গেলে তা সবার জন্য টেকসই হবে।

আতিকুল ইসলাম

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে দুর্নীতির একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়েছে। এটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এখান থেকে আমরা একটি বড় বার্তা পেয়েছি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী ধরনের দেশ পরিচালনা
করতে চান।

আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। সবাই চিন্তা করছে ‘আমার’। ‘আমার’ চিন্তা থেকে বেরিয়ে ‘আমরা’ চিন্তা করলে কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যায়।

আমরা সবাই নাগরিক। কিন্তু আমরা সুনাগরিক কয়জন হতে পেরেছি? আমরা যাঁরা অপ্রয়োজনে হর্ন বাজাচ্ছি, উল্টো পথে গাড়ি চালাচ্ছি কিংবা জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখছি, তাঁরা কি সুনাগরিক?

আমি চিন্তা না করে আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করলে কাজটা অনেক সোজা হয়ে যায়।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১-এর ৭–এ সবার জন্য, বিশেষ করে নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ উদ্যান ও উন্মুক্ত স্থানে সর্বজনীন প্রবেশাধিকারের কথা বলা হয়েছে। যত বাধাই আসুক না কেন, এটা করতে হবে।

শিশুদের রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। শিশুদের মানসিক বিকাশ, তাদের জন্য খেলার মাঠ, শিশুবান্ধব শহর ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারলেই আজকের আলোচনা আমাদের শহর ও দেশের জন্য ভালো একটি বার্তা নিয়ে আসবে।

এম. খালিদ মাহমুদ
নিরাপদ ও টেকসই নগর গড়ে তুলতে হলে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিন্তা করতে হবে। একটা নিরাপদ ও টেকসই নগরের জন্য কোনো বিশেষ দিক আলোচনা করলে সেটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ থেকে ঢাকা শহরে মূলত তিনটি সমস্যা রয়েছে। সেগুলো হলো ভূমিকম্প, জলাবদ্ধতা ও অগ্নিকাণ্ড।

সে জন্য সরকারের দিক থেকে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দ্য স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি) করেছি। সারা বিশ্বে যা সমাদৃত। অনেকেই এটা অনুসরণ করে এ ধরনের স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার করছে। গত ১০ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনেছি।

এই নগরীতে কয়টা গণশৌচাগার, ভবন বা গণপরিবহন পাবেন, যেটা শিশু, নারী ও প্রতিবন্ধীবান্ধব? আমরা অনেক দিক থেকে পিছিয়ে আছি।

কমপ্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের (সিডিএমপি) মাধ্যমে ৭২ হাজার ভবনকে ভঙ্গুর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে সে তালিকাও দেওয়া হয়েছিল। সবচেয়ে ভঙ্গুর ভবনগুলোকেও সিটি করপোরেশন ভাঙতে পারেনি।

কেননা, কিছু ক্ষেত্রে ভবনমালিক মামলা করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে সেগুলোকে হেরিটেজ ও কালচার হিসেবে রাখার জন্য প্রতিবাদ এসেছে।

আব্দুল কাইয়ুম

আলোচনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসেছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, টেকসই নগর সবার জন্য প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।