সংস্কার ছাড়া অগ্রগতি ধরে রাখা যাবে না

আহসান এইচ মনসুর
আহসান এইচ মনসুর
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তারপর দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সম্প্রতি প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে তিনি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি ও বাংলাদেশে অর্থনীতিতে তার সম্ভাব্য প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম


প্রথম আলো: এ মুহূর্তে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন?

আহসান এইচ মনসুর: অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে সরকারের যেসব তথ্য-উপাত্ত আমরা পাই, সেগুলোর সঙ্গে বাস্তবতা এবং আর্থিক নানা সূচকের পার্থক্য দেখতে পাই। সরকারের তথ্যে অর্থনীতিকে বেশ উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত, গতিশীল দেখায়; কিন্তু বাস্তবে তা নয়।

প্রথম আলো: দু-একটা দৃষ্টান্ত?

আহসান এইচ মনসুর: অবশ্যই। যেমন সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি এখন সবচেয়ে বেশি, কিন্তু আমরা দেখছি বিনিয়োগ আগের মতো নেই এবং শুধু বিনিয়োগ নয়, ব্যক্তি খাতে ঋণের প্রবাহও কমে গেছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ঋণের প্রবাহ এখন সবচেয়ে কম। তো এত কম ঋণের প্রবাহ, অথচ বলা হচ্ছে আমাদের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি হচ্ছে—এখানে অবশ্যই একটা অসামঞ্জস্য আছে।

প্রথম আলো: আর?

আহসান এইচ মনসুর: অন্য সূচকগুলোর দিকে যদি তাকাই, যেমন রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়, সেখানেও দেখি প্রবৃদ্ধির তথ্যের সঙ্গে প্রকৃত বাস্তবতা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশি হলে রাজস্ব আয় বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমাদের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে নাকি ১৮-১৯ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে; কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ বা ৯ শতাংশ। এ রকম কেন হবে? এ রকম তো হওয়ার কথা নয়। সাধারণত কী ঘটে? অর্থনীতি যখন চাঙা থাকে, তখন রাজস্বের প্রবৃদ্ধিটা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চেয়ে একটু বেশি হয়। সেটা কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। রাজস্ব আয় সরকার-কথিত প্রবৃদ্ধির অনুপাতে বাড়েনি।

প্রথম আলো: প্রবৃদ্ধি বেশি হলে তো কর্মসংস্থানও বাড়ার কথা?

আহসান এইচ মনসুর: হ্যাঁ, কর্মসংস্থানের চিত্রও ভালো নয়। ইনফরমাল কর্মসংস্থান কিছু হচ্ছে বটে, কিন্তু ফরমাল সেক্টরের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক ঘাটতি দেখছি। শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি। অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ করতে গেলে আমরা এসবের বাইরেও যদি দীর্ঘমেয়াদিভাবে দেখি, তাহলেও কিছু সমস্যা দেখতে পাই। যেমন জিডিপির অনুপাতে রপ্তানি বাড়ছে না, পাঁচ বছর ধরেই বাড়ছে না। এটা একটা খারাপ লক্ষণ। কারণ, আমরা তো মনে করি আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রপ্তানির প্রাধান্য থাকবে। রপ্তানি বৃদ্ধির দ্বারা প্রবৃদ্ধি বাড়বে। কিন্তু
সেটা যদি না হয়, তাহলে লক্ষণটা ভালো নয়। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা—ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। আগে বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল জিডিপির ১০ থেকে ১২ শতাংশ; কমতে কমতে এখন ৫-৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এই সব দীর্ঘমেয়াদি যে প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে, তা আমাদের অর্থনীতির জন্য শুভ নয়।

প্রথম আলো: আপনি বলছেন, সরকারি তথ্য-উপাত্তে অর্থনীতির যে উন্নতি দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে সে উন্নতি হয়নি। তাহলে কি অবনতি হচ্ছে? নাকি অর্থনীতি একই রকম আছে?

আহসান এইচ মনসুর: সামগ্রিকভাবে অবনতি হয়েছে, এটা আমি বলব না, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে অবনতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির মাত্রাটা যতটা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমাদের দ্বিধা আছে। তারপরও আমরা বলব, বিশ্বের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো সজীব আছে। কিন্তু ঘোড়ার মতো ছুটছে, এ রকম নয়। প্রবৃদ্ধি ৮ বা ৯ শতাংশ নয়।

প্রথম আলো: আপনি বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো সজীব আছে। এটা কীভাবে হচ্ছে?

আহসান এইচ মনসুর: বাংলাদেশের অর্থনীতি সজীব হওয়ার অনেক কারণ আছে। একটা হলো বাংলাদেশের শ্রমশক্তি ৩ শতাংশ হারে বাড়ছে; তারা কোনো না কোনোভাবে কিছু না কিছু করে খাচ্ছে। এভাবে আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

প্রথম আলো: এ রকম প্রবৃদ্ধি কি আসলেই অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষণ, না আকার বৃদ্ধি?

আহসান এইচ মনসুর: এটা আকার বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। প্রবৃদ্ধি যদি অন্ততপক্ষে ৬ শতাংশ বা তার বেশি না হয়, তাহলে অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসে না।

প্রথম আলো: আমরা প্রকৃতপক্ষে ৬ শতাংশের ওপরে আছি না?

আহসান এইচ মনসুর: আমাদের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হয়তো ৬-৭ শতাংশ। এর বেশি নয়।

প্রথম আলো: আমরা শুনতে পাচ্ছি, ভারতের অর্থনীতির অবস্থা এখন খারাপ, ঝুঁকির মুখে। আসলেই কি তাই?

আহসান এইচ মনসুর: দেখুন, ভারতের অর্থনীতির যে চিত্রটা আমরা পাচ্ছি, সেটা প্রকৃত চিত্র। তাদের অর্থনীতির বার্ষিক চিত্রের প্রান্তিকভিত্তিক তথ্যও পাওয়া যায়; সেভাবে তারা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে পারছে। আমাদের দেশে প্রান্তিকভিত্তিক তথ্য পাওয়া যায় না। যাহোক, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে; ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে তারা এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে; সেই সক্ষমতাও তাদের আছে। তাদের ফিসক্যাল পলিসি ভালো।

প্রথম আলো: কেন বলা হচ্ছে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন খারাপ?

আহসান এইচ মনসুর: ভারতের অর্থনীতি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভারতকে দেখতে হবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে। এখন বৈশ্বিক অর্থনীতির অবস্থা খারাপ, কাজেই ভারত এর প্রভাবের বাইরে থাকবে না।

প্রথম আলো: ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা পড়বে?

আহসান এইচ মনসুর: খুব বেশি প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। একটা বিষয়ের প্রভাব পড়তে পারে; ভারতের মুদ্রার পতন হচ্ছে, তারা হয়তো কিছুটা ইচ্ছাকৃতভাবেই সেটা করছে। কারণ, চীনের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ভারতের মুদ্রা এখন ডলারের চেয়ে বেশি সম্পর্কিত চীনের মুদ্রার সঙ্গে। চীন যেহেতু তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করছে, সেহেতু ভারতও তা করছে। অন্যদিকে কোরিয়া, জাপানও মুদ্রার অবমূল্যায়ন করছে। সবাই এটা করছে নিজেদের রপ্তানি খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাংলাদেশে মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এর ফলে ভারতীয় ও চীনা পণ্যের দাম কমে যাবে; তাদের পণ্য আমাদের বাজারে আরও ব্যাপকভাবে ঢুকবে। ফলে তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যবৈষম্য আরও বেড়ে যাবে।

প্রথম আলো: আমাদের আর্থিক খাতের বর্তমান অবস্থা কী? শোনা যাচ্ছে ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।

আহসান এইচ মনসুর: বাংলাদেশের আর্থিক খাতের অবস্থা বেশ শোচনীয়। আর্থিক খাতের চারটা স্তম্ভ থাকে: মুদ্রাবাজার, যেটা ব্যাংক ও নন-ব্যাংক খাত মিলিয়ে হয়, শেয়ারবাজার, বিমা খাত এবং বন্ড মার্কেট। এই চারটা স্তম্ভের মধ্যে তিনটারই অবস্থা বেশ শোচনীয়। বন্ড মার্কেট নেই বললেই চলে; শেয়ারবাজারের অবস্থা এতই শোচনীয় যে নতুন করে কিছু বলার নেই; বিমা খাত যেটা আছে, সেটা আসলে কাগজে-কলমে। বাংলাদেশের বিমা কোম্পানিগুলো প্রকৃতপক্ষে প্রিমিয়াম সংগ্রহের এজেন্সি; এরা বিমাকারীদের কোনো সুরক্ষা আসলে দেয় না। সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যে অ্যাকচুয়ারিয়াল অ্যালাউন্স থাকা দরকার, তা দেশি কোনো বিমা কোম্পানিরই নেই। তাহলে আর্থিক খাতের তিনটা স্তম্ভেরই এই দুর্দশা; ভরসার জায়গা শুধু থাকল মুদ্রাবাজার। এর নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক তারল্যসংকট চলছে।

প্রথম আলো: তাহলে আমাদের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কী?

আহসান এইচ মনসুর: যেসব প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেগুলো অব্যাহত থাকলে আমাদের অর্থনীতি এখন যেটুকু ভালো অবস্থায় আছে, ভবিষ্যতে তা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ, বিনিয়োগ না বাড়লে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হলে উন্নয়ন হবে না।

প্রথম আলো: কী করতে হবে?

আহসান এইচ মনসুর: সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। বিশেষত ভারত ও চীনে মুদ্রার অবমূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদেরও তা করতে হবে। নইলে আমরা রপ্তানি খাতে আরও পিছিয়ে যাব, বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা কমে যাবে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার আনতে হবে; রাজস্ব বিভাগের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যে কায়েমি স্বার্থ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার উচ্ছেদ ঘটাতে হবে।

প্রথম আলো: আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কী?

আহসান এইচ মনসুর: প্রথম কথা হচ্ছে, ব্রিটিশ আমলের পর থেকে আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থাপনার প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কোনো সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে আমাদের অর্থনীতির আকার, তাতে রাজস্ব আদায়ের জন্য যে ধরনের প্রযুক্তিভিত্তিক রাজস্ব প্রশাসন করতে হবে, সেটা আজ পর্যন্ত করা হয়নি।

প্রথম আলো: কেন? বেশি রাজস্ব আদায় হলে তো সরকারেরই সুবিধা।

আহসান এইচ মনসুর: সেটা তো সরকারের বোঝা উচিত। রাজস্ব বিভাগে যারা দুর্নীতিবাজ, তাদের তো বিদ্যমান অবস্থাই ভালো, তাতে আমার পকেট ভারী হবে। করদাতাদের অসৎ অংশের বিদ্যমান অবস্থাই কাম্য। তাঁরা রাজস্ব কর্মকর্তাকে ১০ শতাংশ দেবেন, নিজের পকেটে ৯০ শতাংশ রাখবেন, রাষ্ট্রের কোষাগারে যাবে শূন্য শতাংশ। এই অশুভ যোগসাজশ একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। এটার অবসান ঘটাতে হবে। সে জন্য ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পলিসিগত পরিবর্তন আনতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে আমাদের জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আদায় আগামী দিনে আরও কমে যাবে। এখন ট্যাক্স-টু-জিডিপি রেশিও সাড়ে ৮ শতাংশ; পৃথিবীর কোনো দেশে এখন আর এত কম ট্যাক্স-টু-জিডিপি রেশিও নেই। এই কম ট্যাক্স-টু-জিডিপি রেশিও দিয়ে এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না, আমাদের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া সম্ভব হবে না।

প্রথম আলো: আর কী করতে হবে?

আহসান এইচ মনসুর: আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন। আমরা যদি বিনিয়োগের পরিবেশের দিকে তাকাই, এটা তো উৎসাহব্যঞ্জক নয়। সহজে ব্যবসা করার সূচকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, কিন্তু এনফোর্সমেন্ট অব কনট্রাক্টের সংস্কৃতি ভালো নয়। আমরা চুক্তি করছি কিন্তু চুক্তি মানছি না। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যেমন আচরণ করছি, তারও কিছু কিছু দৃষ্টান্ত অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেমন গ্রামীণফোনের সঙ্গে রাজস্ব বিভাগের একতরফা আচরণের নেতিবাচক বার্তা চলে যাচ্ছে বহির্বিশ্বে। রাজস্ব বিভাগ বলছে, গ্রামীণফোন ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছে, গ্রামীণফোন বলছে, তারা ফাঁকি দেয়নি। সে জন্য তারা এ বিষয়ে নিরপেক্ষ আরবিট্রেশনের দাবি জানাচ্ছে, কিন্তু রাজস্ব বিভাগ তাতে রাজি নয়; তারা গ্রামীণফোনকে বলছে, আমরা বলছি, তোমরা দিয়ে দাও। গ্রামীণফোন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুই বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের একটি। তাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করবে। শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারী নয়, দেশি বিনিয়োগকারীদের জন্যও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তারপর আমরা কোরিয়ান ইপিজেডগুলো নিয়ে কত রকমের হয়রানি করলাম! এই ধরনের আচরণ যদি আমরা করতে থাকি, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। এসব আমাদের বুঝতে হবে। এ
ধরনের আচরণ বন্ধ করতে হবে। আর আমাদের দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে হবে। আরও অনেক কিছু করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ পরিশ্রমী, উদ্যমী। আমাদের অর্থনীতির আরও অনেক অগ্রগতি সম্ভব। সে জন্য অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতে ব্যাপক সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন।

প্রথম আলো: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আহসান এইচ মনসুর: আপনাকেও ধন্যবাদ।