পেছন যাত্রার মধ্যে গণতন্ত্র নিয়ে আশাবাদ

আজ ১৫ সেপ্টেম্বরযখন আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপিত হচ্ছে, সেই সময়ে সারা পৃথিবীর কত শতাংশ মানুষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে জীবন যাপন করছে, সে প্রশ্নই এখন বেশি আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অনেক দেশে গণতন্ত্রের নামে যা চর্চা হচ্ছে, দৃশ্যত গণতান্ত্রিক মনে হলেও মর্মবস্তুর দিক থেকে তা আদৌ গণতান্ত্রিক কি না, সে প্রশ্নই এখন প্রধান হয়ে উঠছে। কেননা, আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি, যখন বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্ববাদী নেতাদের শাসনের লক্ষণ সুস্পষ্ট, এমনকি স্বৈরাচারী শাসকেরাও নিজেদের গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তা হিসেবেই দাবি করেন।

২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যখন আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তাব পাস হয়, তত দিনে এ বিষয়ে গবেষক ও বিশ্লেষকেরা প্রায় একমত হয়েছেন যে গণতন্ত্রে ভাটার টান শুরু হয়েছে, কেবল তা কয়েকটি দেশে নয়, বৈশ্বিকভাবেই। সে প্রেক্ষাপটেই গণতন্ত্র দিবসের বিষয়টি সামনে এসেছিল। এ ধরনের একটি দিবসের ধারণার উৎস হিসেবে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট কোরাজন একুইনোর ১৯৮৮ সালে সূচিত প্রতিষ্ঠান ‘আইসিএনআরডি’কে (দ্য ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সেস অন নিউ অ্যান্ড রেস্টোরড ডেমোক্রেসি, নতুন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রবিষয়ক সম্মেলন) বিবেচনায় নেওয়া যায়। কিন্তু আইসিএনআরডির সূত্রপাতের সময় বৈশ্বিকভাবে গণতন্ত্রের যে ইতিবাচক অবস্থা ছিল এবং ১৯৯১ সালের পর যে ধরনের আশাবাদ তৈরি হয়েছিল, ২০০৭ সালে এসে তার অনেকটাই অবসান ঘটে।

গণতন্ত্র বিষয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তাদের অন্যতম হচ্ছে ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউস, লন্ডনভিত্তিক সাময়িকী ইকোনমিস্ট-এর গবেষণা শাখা ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) এবং সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউট (ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট)। ইআইইউয়ের ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে গত বছরের ওপর আলোকপাত করা হলেও গত ১০ বছরের তুলনামূলক চিত্র দেওয়া হয়েছে, ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গত ১৩ বছরে অবস্থার কতটা বদল ঘটেছে, সেটা তুলে ধরা, ভি-ডেমের প্রতিবেদনের বিষয় হচ্ছে, গত ৯ বছরে তারা কী প্রবণতা দেখতে পাচ্ছে।

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন বলছে, ২০১৮ সালে গণতন্ত্রের পশ্চাৎ-যাত্রার ১৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। ফ্রিডম হাউস বলছে, সারা পৃথিবীর ৫৬ শতাংশ মানুষ এমন ধরনের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে বাস করে, যাকে ‘একেবারে উন্মুক্ত নয়’ বা ‘আংশিক উন্মুক্ত’ (পার্টলি ফ্রি) বলে বর্ণনা করা হয়, যার অর্থ তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে বাস করে না। ইআইইউ বলেছে, পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ বাস করে এমন শাসনব্যবস্থার অধীনে, যা কর্তৃত্ববাদী বা অথরিটারিন। ইআইইউয়ের প্রতিবেদনের একটি প্রধান বক্তব্য হচ্ছে, এমন দেশ, যেগুলো না গণতান্ত্রিক, না কর্তৃত্ববাদী, যাকে বলা হয় ‘হাইব্রিড রেজিম’ বা দোআঁশলা শাসনব্যবস্থা—তার পরিমাণ বেড়েছে। দেখতে গণতান্ত্রিক, কিন্তু আচার-আচরণে স্বৈরাচারী, এমন দেশের সংখ্যা গত ১২ বছরে (২০০৬-১৮) ৩০ থেকে ৩৯টিতে গিয়ে ঠেকেছে; বিশ্বের ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ এখন এই ধরনের শাসনের অধীন। পূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশের সংখ্যা যে এক দশকে (২০০৮-১৮) ত্রিশ থেকে কুড়িতে এসে দাঁড়িয়েছে, সেটাই পরিস্থিতির উদ্বেগজনক মাত্রা তুলে ধরে।

একসময়ের প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কিছু দেশ হয়ে উঠেছে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশ, ১৯৮৮ সালের পর যেসব দেশ গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করেছিল, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ক্ষেত্রে (৬১ শতাংশ) গত ১৩ বছরে বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে, কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের সংখ্যা বাড়ছে এবং কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতেও অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে—এই অবস্থাকে কেউ বলছেন গণতন্ত্রের পতন, কেউ বলছেন বিপরীত স্রোত। ভি-ডেমের গবেষকেরা এই প্রক্রিয়াকে বলছেন স্বৈরাচারীকরণ—অটোক্রেটাইজেশন। তাঁদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, আমরা স্বৈরাচারীকরণের তৃতীয় ঢেউ প্রত্যক্ষ করছি। এর আগের দুটি ঢেউ ছিল ১৯২২ থেকে ১৯৪২ এবং ১৯৫৮ থেকে ১৯৭৫।

এই ঢেউয়ের বিভিন্ন স্তর রয়েছে এবং কোন দেশ কোন অবস্থায় আছে, তার ওপর নির্ভর করে এই ঢেউয়ের ধাক্কা লাগলে সে কোথায় যাবে, এর পরের অবস্থাটি কী হবে। ভি-ডেমের প্রতিবেদনে চার ধরনের শাসনের কথা বলা হয়েছে—উদার গণতন্ত্র (লিবারেল ডেমোক্রেসি), নির্বাচনী গণতন্ত্র (ইলেক্টোরাল ডেমোক্রেসি), নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র (ইলেক্টোরাল অটোক্রেসি) এবং রুদ্ধদ্বার স্বৈরতন্ত্র (ক্লোজড অটোক্রেসি)। উদার গণতন্ত্রে স্বৈরাচারীকরণের প্রক্রিয়া হচ্ছে গণতন্ত্রের ক্ষয়ের মধ্য দিয়ে, নির্বাচনী গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে এটি ঘটে গণতন্ত্রের ভাঙনের মধ্য দিয়ে। আর নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্রে ঘটে স্বৈরতান্ত্রিক অধঃপতন, যা শেষ হয় দেশটির রুদ্ধদ্বার স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হওয়া দিয়ে। ফলে যখন কোনো উদার গণতন্ত্রে আমরা ক্ষয়ের লক্ষণগুলো দেখতে পাব, তখনই বুঝতে হবে যে স্বৈরাচারীকরণ প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে। একবার এই যাত্রা শুরু হলেই যে তা অবধারিতভাবে রুদ্ধদ্বার স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হবে, তা নয়।

কিন্তু এখন পর্যন্ত যেসব গণতান্ত্রিক বা গণতন্ত্রাভিমুখী দেশে গণতন্ত্রের ক্ষয় ও ভাঙন দেখা গেছে, সেখানে গণতন্ত্রের কোন উপাদানগুলো সবচেয়ে আগে এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেদিকে তাকালেই আমাদের পক্ষে স্বৈরাচারীকরণের পথরেখা এবং করণীয় নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়া-আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যাঁরা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে রীতিমতো ধর্মযুদ্ধের সূচনা করেছেন, তাঁরা হচ্ছেন দক্ষিণপন্থী জনতুষ্টিবাদী (পপুলিস্ট) রাজনীতিবিদ। এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, যে ২২টি দেশে গণতন্ত্রের সূচকে অবনতি ঘটেছে, তার ১৭টিতেই এই ধরনের জনতুষ্টিবাদীরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এই জনতুষ্টিবাদী নেতাদের গাত্রবর্ণ ভিন্ন, তাঁদের জেন্ডার ভিন্ন, তাঁদের ধর্ম ভিন্ন। কিন্তু শত্রু ‘তৈরি’ করতে তাঁরা সিদ্ধহস্ত, সেই শত্রু দেশিই হোক কি বিদেশি। কারও কারও জন্য কথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ তৈরি করেছে যৌক্তিকতা, আর কারও কারও জন্য ‘উন্নয়ন’ হচ্ছে মন্ত্র।

কোনো দেশে গণতন্ত্রের অবসানের কোনো সুনির্দিষ্ট মুহূর্ত নেই। এমন কোনো সময়কে আমরা চিহ্নিত করতে পারব না, যখন গণতন্ত্র শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছে। সারা পৃথিবীর কোথাওই আপনি এমন কোনো দর্শনীয় মুহূর্তকে বের করতে পারবেন না, যখন আনুষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্রের অবসান হয়েছে। গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটছে গণতন্ত্রের এক অনিবার্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে, সেই অনিবার্য প্রক্রিয়ার নাম নির্বাচন।

স্টিভেন লেভিটস্কি ও ড্যানিয়েল জিবলেট এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তাঁদের বহুল আলোচিত হাউ ডেমোক্রেসি ডাইজ? গ্রন্থে। এ বিষয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে তাঁরা লিখেছেন, ‘আজকের দিনে গণতন্ত্রের উল্টো যাত্রা শুরু হয় ব্যালট বাক্সে। গণতন্ত্র ভেঙে পড়ার এই নির্বাচনী যাত্রাপথ খুবই প্রতারণাপূর্ণ (ডিসেপটিভ)। প্রচলিত ধারার যেকোনো সামরিক অভ্যুত্থানে, যেমন পিনোশের চিলিতে, গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটে একেবারে অকস্মাৎ, আর তা সবার কাছে সহজেই দৃশ্যমান হয়। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট হয় নিহত হন অথবা তাঁকে বন্দী করা হয় অথবা তাঁকে পাঠানো হয় নির্বাসনে। সংবিধান হয় স্থগিত করা হয় অথবা একেবারে বাতিল। কিন্তু নির্বাচনের পথে [গণতন্ত্রের উল্টো যাত্রায়] এসবের কিছুই ঘটে না। রাজপথে কোনো ট্যাংক নামে না। সংবিধান এবং নামমাত্র অন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো জায়গামতোই থাকে। জনগণ ভোটও দেয়। নির্বাচিত স্বৈরাচারীরা গণতন্ত্রের একটা আবরণ বজায় রাখে, যখন তারা গণতন্ত্রের সারবস্তুকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলে।’ (দিস ইজ হাউ ডেমোক্রেসিজ ডাই, দ্য গার্ডিয়ান, ২১ জানুয়ারি ২০১৮)।

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ বছর ধরে অব্যাহতভাবে গণতন্ত্রের সংকট চললেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার। গত চার বছরে অব্যাহতভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার এই সূচকে পতন ঘটেছে। ২০১৮ সালে যেসব দেশে নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া হয়েছে, তার কিছু আমাদের জানা আছে—বাংলাদেশ, রাশিয়া, কম্বোডিয়া ও তুরস্ক—যেখানে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা এবং জালিয়াতি সবার জ্ঞাত। ভি-ডেমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, স্বৈরাচারীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ ২২টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমেই হাইব্রিড রেজিমগুলো—যারা দেখতে গণতান্ত্রিক কিন্তু কার্যত স্বৈরতান্ত্রিক—তাদের বৈধতা অর্জন করে বা করতে চায়।

গণতন্ত্রের অন্য যে উপাদানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার অন্যতম মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। ফ্রিডম হাউসের ভাষ্য অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে অব্যাহতভাবে অবস্থার অবনতি ঘটেছে। ভি-ডেমের বিবেচনায় নির্বাচনী গণতন্ত্রের দেশগুলোয় গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ অন্য যেকোনো সূচককে ছাড়িয়ে গেছে। তাদের হিসাবে কমপক্ষে ৩৫টি দেশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মিডিয়া সেন্সরশিপ ঘটেছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গত এক দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে যে বিষয়গুলো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে চিহ্নিত হয়েছে, তার একটি হচ্ছে মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং ডিজিটাল অথরিটারিয়ানিজম। এ ক্ষেত্রে ফ্রিডম হাউসের আরেক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গণতন্ত্রের পথ থেকে যেসব দেশ সরে যাচ্ছে, তারা সাইবার স্পেস নিয়ন্ত্রণের জন্য চীনের পথ নিচ্ছে। সরকার ও তার সমর্থকেরা মিথ্যা তথ্য প্রচার করে। গণতন্ত্রের ভাঙন কেবল প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই হয় না, তার একটি সামাজিক পটভূমি থাকে। ভি-ডেমের প্রতিবেদনে একে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘টক্সিক পোলারাইজেশন’ বা বিষাক্ত মেরুকরণ বলে; এই প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। এই সর্বনাশা মেরুকরণের লক্ষণগুলো কী? সমাজে ক্রমাগতভাবে সহমর্মিতা ও সহনশীলতা কমে আসে, ব্যক্তিরা হয়ে পড়েন বিচ্ছিন্ন, যাকে বলা হয়ে থাকে অটোমাইজেশন; ইতিবাচক সামাজিক পুঁজি—যার অর্থ হচ্ছে একের সঙ্গে অন্যের ইতিবাচক সংহতির বন্ধন—তা হ্রাস পায়; রাজনীতির ব্যাপারে তৈরি হয় অনাগ্রহ এবং ক্রমাগতভাবে সমাজের মানুষের মধ্যেকার পার্থক্যগুলোকে বড় করে তোলা হয়।

সাম্প্রতিক প্রকাশিত এই প্রতিবেদনগুলো যেমন অটোক্রেটাইজেশনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি এমন তথ্য দিচ্ছে, যা আমাদের আশাবাদী হতে সাহায্য করতে পারে। ইআইইউয়ের প্রতিবেদন এবং ভি-ডেমের প্রতিবেদনের কথা হচ্ছে, বৈশ্বিকভাবে গণতন্ত্র এখন আর অবারিত পতনের পথে নেই। ২০১৮ সালের যে একটি সূচকে অগ্রগতি দেখা গেছে, তা হচ্ছে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ; বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। স্বৈরাচারী ও অন্য অগণতান্ত্রিক সরকারগুলোর রাজনৈতিক নিপীড়ন বৃদ্ধি এবং ভয়ভীতি ছড়ানো সত্ত্বেও নাগরিকেরা ন্যায়বিচারের দাবিতে এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্নভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলেছে। এটা কেবল আশার বিষয় নয়, এটা এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এখনো মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা বহাল আছে। আদর্শ হিসেবে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে বিকশিত করার উপায় হচ্ছে সেটাই।

আলী রীয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর