বহু খাতভিত্তিক জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা-২ বাস্তবায়ন, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

গত ২৮ আগস্ট ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও সিএসএ ফর সানের সহযোগিতায় ‘বহু খাতভিত্তিক জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা–২ বাস্তবায়ন, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত হলো।

আলোচনা 

আব্দুল কাইয়ুম

পুষ্টির অভাবে শিশু খর্বাকায় হয়, মেধার বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে সৃজনশীলতা কমে যায়। ২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য সবার পুষ্টি, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

পুষ্টির সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। যেমন খাদ্য, স্বাস্থ্য, কৃষি ও মৎস্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি।

সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত, যেমন স্কুলে দুপুরের খাবার দেওয়া ইত্যাদি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এতে শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়। এ বিষয়ে এখন বলবেন মো. শাহ্ নেওয়াজ।

মো. শাহ্ নেওয়াজ

১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠন করেন। জাতীয় উন্নয়নে পুষ্টির গুরুত্ব তিনি তখন অনুধাবন করেছিলেন। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। ১৯৯৭ সালে পুষ্টি উন্নয়নে প্রথম জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা লক্ষ্য অজ৴ন করতে পারেনি।

২০১৫ সালে জাতীয় পুষ্টি পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়। ২০১৭ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা-২ অনুমোদন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সব মন্ত্রণালয় যেন পুষ্টি সমস্যা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করে। তবে এখানে জনবল কম। অনেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। সবার সঙ্গে একত্রে কাজ করা সহজ বিষয় নয়। তাই প্রতিকূলতা অনেক বেশি।

দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনায় ১৭টি মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন ২২টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ২৫ সদস্যের কমিটি ও উপজেলা পর্যায়ে ১৮ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে জেলা, উপজেলায় অনেক উন্নয়ন–সহযোগী সংগঠন কাজ করছে। জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। আমরা গত ২৭ আগস্ট বান্দরবানে জেলা পর্যায়ে পুষ্টি বিষয়ে একটি সফল সভা করে এসেছি।

প্রতিবছর ২৩ থেকে ২৯ এপ্রিল জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করা হবে। এ বছর জাতীয় পুষ্টি পরিষদে ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর বরাদ্দের পরিমাণ এর অর্ধেকের কম ছিল।

এ বছর পুষ্টির জন্য সব মন্ত্রণালয় মিলিয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। এখানে ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ করতে পারব। ১২ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলিত বাজেট শুধু পুষ্টির জন্য আলাদাভাবে দেওয়া হয়েছে। সব মন্ত্রণালয়কে ডেকে এই বাজেটগুলো একসঙ্গে করার জন্য একটি বড় সভা করা হবে।

আমাদের দেশে পুষ্টি নিয়ে কাজ করার ভিত্তি রচিত হয়েছে। এখান থেকে আমরা পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে পারব। সরকার পুষ্টির উন্নয়নে একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

এস এম মোস্তাফিজুর রহমান

প্রথম আন্তর্জাতিক পুষ্টি অধিবেশন হয়েছিল ১৯৯২ সালে। বাংলাদেশ ওই অধিবেশনে অংশগ্রহণ করে। দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক পুষ্টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালে ইতালির রোম শহরে। সেখানেও বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল। জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা–১ করা হয়েছিল ১৯৯৭ সালে।

পুষ্টি নিয়ে আমাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শুধু অপুষ্টি নয়, অনেক সময় স্থূলতাও সমস্যার সৃষ্টি করে। যারা ভুক্তভোগী, তাদের কাছে যেতে হবে। তাদের সমস্যা কী, সেটা তাদের মুখ থেকে শুনতে হবে। শুধু রাষ্ট্র কিংবা উন্নয়ন–সহযোগীদের সাহায্য নিয়ে এই কাজ করা যাবে না। সরকার, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, উন্নয়ন–সহযোগী ছাড়াও সামাজিকভাবে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।

বহু খাতভিত্তিক যে সমন্বয় আছে, তা আরও সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। ১০ বছরের পরিকল্পনায় প্রথম তিন বছর আমরা কী কাজ করেছি, এর তালিকা করতে হবে। তিন বছর পর আমরা নিজেদের কোথায় দেখতে চাই, সেটি ঠিক করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সভা করে শিগগির আমরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।

মো. নাজমুস সালেহীন

পৃথিবীর সর্বাধিক অপুষ্টির হারের দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পুষ্টির বিভিন্ন সূচকে বিগত ৪৫ বছরে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। কিন্তু শিশুদের স্বল্প ওজন, খর্বাকৃতি, শীর্ণকায়, রক্তস্বল্পতা, প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো, ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর হার এখনো প্রত্যাশিত মানে পৌঁছায়নি।

জাতীয় পুষ্টিনীতি (২০১৫) অনুযায়ী দেশের পুষ্টি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে অপুষ্টির বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। পুষ্টিনীতির প্রস্তাবিত রূপকল্প, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা (২০১৬-২৫) প্রণয়ন করা হয়েছে। এর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমন্বিত ও বহু খাতভিত্তিক পুষ্টিকৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কৌশলে ব্যয়সাশ্রয়ী ও প্রমাণনির্ভর কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এটির বাস্তবায়ন কৌশল ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ নেতৃত্ব দিচ্ছে। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, উন্নয়ন অংশীদার ও স্থানীয় সরকারের সম্মিলিত প্রয়াস রয়েছে। ফলে অপুষ্টি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সরকারের আকাঙ্ক্ষা ও প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে।

পুষ্টিমান উন্নয়নে স্কেলিং আপ নিউট্রিশন (SUN) বাংলাদেশে অনেক কাজ করছে। বহু খাতভিত্তিক পুষ্টি কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও সুশীল সমাজের সমন্বিত ও যৌথ প্রচেষ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২৫–এর স্বল্পকালীন মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। মধ্যমেয়াদ চলছে। সময় দ্রুত ধাবমান। লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আমাদের পরিকল্পনামতো এগোতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় পুরো প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছে।

এখন জানা প্রয়োজন জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের সমন্বয় কার্যক্রম কীভাবে চলছে। তা ছাড়া জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু বিষয় দেখতে হবে। যেমন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ কীভাবে কাজ করছে, তা দেখা। এদের মধ্যে সমন্বয় কীভাবে হচ্ছে, সেটা তদারক করা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত বহু খাতভিত্তিক পুষ্টি সমন্বয় কমিটির কার্যক্রম গতিশীলতার অবস্থা বোঝা। মধ্যমেয়াদে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা ইত্যাদি।

মো. আকতার ইমাম

পুষ্টি কার্যক্রমে প্রাথমিকভাবে ১৭টি মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণ ছিল। বত৴মানে এখানে ২২টি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনায় ২০০টির বেশি কার্যক্রম রয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি সূচক চিহ্নিত করে কাজ শুরু করা হয়েছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে সারা দেশ থেকে পুষ্টির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনায় একটি তথ্যভান্ডারের কথা বলা আছে। এই তথ্যভান্ডার এমন হবে, যার মাধ্যমে সব মন্ত্রণালয় কাজ করতে পারবে।

স্থূলতা একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। ২০১৪ সালে শিশু স্থূলতার হার ছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশ। পরিকল্পনা ছিল এই হার স্থিতিশীল রাখা কিন্তু বর্তমানে শিশু স্থূলতার হার বেড়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। এটি খুবই মারাত্মক বিষয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিশুরা ১০টি অস্বাস্থ্যকর খাবারের নাম বলতে পেরেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ ৬টি সবজির নাম বলতে পেরেছে। এটি আসলে শিক্ষার্থীদের পুষ্টিশিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এস কে রয়

দেশের জনসংখ্যার অনুপাত হিসেবে আমরা খুবই অল্প মানুষ পুষ্টি খাতে কাজ করছি। তা ছাড়া এ খাতে বরাদ্দকৃত অথ৴ও পর্যাপ্ত নয়। সবাই মিলে আন্তরিকভাবে কাজ করছি বলেই পুষ্টি খাতে উন্নতি হচ্ছে।

পুষ্টি খাত নিয়ে কাজ করতে হলে খাদ্য, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নিয়ে কাজ করতে হবে। সব মন্ত্রণালয় মনে করছে, তারা কাজ করছে। কিন্তু এ কাজ একা করলে হবে না। এতে কাজের সুফল পাওয়া যাবে না। এ কাজের সুফল পেতে বহু খাতের সমন্বয় লাগবে।

যে দেশ যত বেশি উন্নত, সে দেশে স্থূলতাও তত বেশি। বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে স্থূলতার সমস্যা আরও বাড়বে। এ জন্য সবাইকে এখনই ভাবতে হবে।

শহরের বস্তি এলাকা ও গ্রামের দরিদ্র মানুষদের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। আয়বৈষম্য থাকায় এই সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে। তা ছাড়া শিশুদের খাদ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।

পুষ্টির ব্যাপারে মানুষের জ্ঞানের অভাব আছে। এমনকি শিক্ষিত মানুষেরাও পুষ্টি সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। ধনী মানুষদের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ অপুষ্টিতে ভুগছে। কারণ, পুষ্টির ব্যাপারে তাদেরও রয়েছে সচেতনতার অভাব। তাই পুষ্টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। পুষ্টিশিক্ষার বিষয়ে কাজ করতে হবে।

শিশুদের খব৴কায় ও পুষ্টিহীন হওয়ার হার কমাতে হবে। তা না হলে সৃজনশীলতায় আমরা পিছিয়ে থাকব। একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এশিয়াতে উদ্ভাবনী দক্ষতায় বাংলাদেশে নিচের দিকে অবস্থান করছে।

জাতীয় পুষ্টিসেবা দেশের তৃণমূল থেকে কাজ করছে। শিশুদের পুষ্টির বিষয়ে ২০১৪ সাল থেকে উঠান বৈঠক করছি। আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। পুষ্টি নিয়ে আমাদের কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে।

আসফিয়া আজিম

২২টি মন্ত্রণালয় পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য বিশেষ করণীয় নির্ধারণ করা প্রয়োজন। আমরা মাছ উৎপাদনে ভালো করছি। খাদ্য উৎপাদনে ভালো করছি। এই উৎপাদন সবার জন্য পরিমাণমতো মাছ ও খাদ্য নিশ্চিত করছে কি না, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

আমরা জানি যে আমাদের পর্যাপ্ত উৎপাদন অনেক ক্ষেত্রে সবার পুষ্টি ও খাদ্য নিশ্চিত করতে পারছে না। দরিদ্র মানুষসহ সবাই যেন প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি পায়, সে জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কিছু করণীয় নির্দিষ্ট করে দেওয়া জরুরি। এভাবে মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করলে মানুষের পুষ্টির অভাব কমে আসবে।

এ জন্য উন্নয়ন–সহযোগী, সিভিল সোসাইটি অ্যালায়েন্স ফর স্কেলিং আপ নিউট্রিশন, গণমাধ্যমসহ সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে বহু খাতভিত্তিক পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা সফল হবে বলে আশা করি।

ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার

পুষ্টি বিষয়ে কাজ করতে হলে বহু খাতভিত্তিক সমন্বয়মূলক কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধান দায়িত্ব সরকারের। সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ইত্যাদি সরকারের কাজে সহায়তা করবে।

সিএসএ ফর সান পুষ্টি বিষয়ে গবেষণা করে সরকারের কাছে তুলে ধরবে। আমাদের জাতীয়, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। কিন্তু ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো কমিটি নেই। অথচ এখানেই বেশি মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে। ইউনিয়ন থেকে কাজ শুরু করতে হবে। তারপর সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।

জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা-২–এ কিশোরদের অপুষ্টি রোধের বিষয়ে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। এখানে বিনিয়োগ নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। পুষ্টি নিয়ে চলমান সব কটি কাজ একই ভিত্তিতে আনতে হবে। একই কাজের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি কাজ আরেকটি কাজের পরিপূরক হওয়া প্রয়োজন।

মোস্তফা ফারুক আল-বান্না

পুষ্টি প্রত্যক্ষ ও পুষ্টি পরোক্ষ কর্মসূচির সমন্বয় করতে হবে। মৎস্য খাত, প্রাণী খাতসহ পুষ্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব খাতের সমন্বয় করা প্রয়োজন।

খাদ্যনিরাপত্তার জন্য তিনটি দিক রয়েছে। প্রথমত, খাদ্যলভ্যতার ক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দ্বিতীয়ত, খাদ্যপ্রাপ্যতার ক্ষেত্রেও আমাদের উন্নতি হয়েছে। আমাদের দারিদ্র্যের হার কমেছে। কিন্তু আমরা পুষ্টির ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে আছি। মাছের উৎপাদন বেড়েছে। মাছ খাওয়ার পরিমাণও বেড়েছে, কিন্তু মাছ থেকে প্রাপ্ত অনুপুষ্টির পরিমাণ কমেছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অজ৴নে পুষ্টির নিশ্চয়তা অপরিহার্য। তা নাহলে পুষ্টির নিশ্চয়তা না দিতে পারলে আমরা টেকসই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারব না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অর্থায়ন রাজস্ব বাজেট থেকে করা হয়। এগুলো যেন পুষ্টির জন্য আরও বেশি কাজ করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কম৴সূচি হাতে নিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় ২৪টি উপজেলায় পুষ্টি চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে আরও খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। তা ছাড়া সরকার ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্র নারীদের সহায়তা দিচ্ছে।

পুষ্টির জন্য সরকার বিভিন্নভাবে কাজ করছে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। পুষ্টির বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

এম এ মান্নান

একসময় আমি পুষ্টি পরিষদের সচিব ছিলাম। তখন অবস্থা আরও খারাপ ছিল। এ খাতে অর্থের বরাদ্দ আরও কম ছিল। পুষ্টিসূচক ভালো ছিল না। সে তুলনায় বর্তমানে পুষ্টি সমস্যা কম।

আমাদের দেশে খাদ্যের উৎপাদন বেড়েছে। তবে সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাও বেড়েছে। প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। তাঁদের পুষ্টির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে আরও বেশি চাপ পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ফসলের পুষ্টিগুণ কমে আসছে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

আমাদের আরও দ্রুত এগোতে হবে। জাতীয় পুষ্টিনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি কার্যকর করার জন্য কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে।

যারা পুষ্টি খাতে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের নেওয়া হোক। এখানে কাজ করতে হলে পুষ্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। অনেকেই আছেন, যাঁরা আগে থেকে নিদি৴ষ্ট ভাবনা নিয়ে কাজ করতে আসেন। পরে তাঁদের মতের সঙ্গে না মিললে তাঁরা আর কাজ করেন না।

পুষ্টিসংক্রান্ত কমিটিগুলোর সভায় অন্যান্য আলোচ্য বিষয় থাকে। তারা যেন পুষ্টি নিয়ে কাজ করে, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। বহু খাতভিত্তিক কাজ করতে হলে সমন্বয় সাধন করতে হবে। এ কাজ অনেক জটিল। তবে এই সমস্যা সব দেশেই আছে। গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূণ৴। তাদের সহায়তায় মানুষের কাছে পুষ্টিবিষয়ক বার্তা দিতে হবে।

এ বছর জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নীতি প্রণয়ন হতে পারে। এ নীতি যেন আলংকারিক না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিতে হবে। পুষ্টি উন্নয়নে বরাদ্দ করা অর্থের পরিমাণ কম। আরও বেশি অর্থ প্রয়োজন।

পুষ্টির উন্নয়নে ব্যক্তি খাতে কাজ করার সুযোগ নেই বললেই চলে। তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হবে। বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে কাজ করার পরিবেশ দিতে হবে।

মহসীন আলী

জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম। গত পাঁচ দশকে পুষ্টি পরিকল্পনার কোনো ধারাবাহিকতা ছিল না। চলতি দশক পুষ্টির স্বণ৴যুগ। এই সময়ে বাংলাদেশে পুষ্টি নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। নীতিগত পরিকল্পনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

পুষ্টি খাতে ২৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই বিনিয়োগ যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা তদারক করা উচিত। তা ছাড়া সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাও অনেক টাকা ব্যয় করছে। জাতীয় পুষ্টি পরিষদের উচিত এগুলোর তদারক করা।

শহরে পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আগামীর পৃথিবী শহরের পৃথিবী। তাই নগরায়ণ প্রক্রিয়ার নেতিবাচক প্রভাব দূরীকরণের জন্য এখানে পুষ্টি বিষয়ে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।

সারা বিশ্বে ২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পুষ্টি দশক চলছে। ঠিক একই সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বিরাট অগ্রগতি।

সায়কা সিরাজ

পুষ্টি নিয়ে সরকার কাজ করছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারের কাজে আমরা কতটুকু সাহায্য করতে পারব, সে চেষ্টা করছি। সরকার পুষ্টি নিয়ে গৃহীত কর্মসূচির তদারক করছে। আমরা সেগুলোতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছি। বত৴মানে একই কাজ পুনরাবৃত্তির প্রবণতা কমেছে।

ব্র্যাক মনে করে, পুষ্টি কর্মসূচি নিয়ে দেশের প্রতিটি ঘরে যাওয়া উচিত। প্রতিটি পরিবারের সমস্যা আলাদা। তা ছাড়া পুষ্টির বিষয়কে মানুষ খুব সাধারণভাবে নেয়। তাই পুষ্টি নিয়ে কাজ করতে হলে তৃণমূল পর্যায়ে যেতে হবে।

সিএসএ ফর সান বহু খাত নিয়ে কাজ করছে। বহু খাত নিয়ে কাজ করলে বহু মত আসবে। তাতে মতের দ্বৈধতাও আসবে। আমাদের মূল কাজ হচ্ছে বহু মতের সমন্বয় করে একটি সম্মিলিত বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। তাহলে সবাই পুষ্টি নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারবে। ফলে পুষ্টির জন্য কে কতটুকু সহায়তা দিতে পারবে, সেটা বলতে পারবে।

সমন্বয় সাধন করা অনেক জটিল বিষয়। এ ক্ষেত্রে সিএসএ ফর সান সরকারকে সাহায্য করবে। এ জন্য অর্থায়নের প্রয়োজন। উন্নয়ন–সহযোগীরা যেন আমাদের আর্থিক সহায়তা করে, সেই অনুরোধ করছি।

মো. মনিরুজ্জামান বিপুল

সিএসসি ফর সানের উদ্দেশ্য হচ্ছে পুষ্টি কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। কৃষি, মৎস্যসহ উৎপাদনের বিভিন্ন খাতে জোরালো দৃষ্টি দিতে হবে।

আমাদের এখানে উৎপাদনের পরিকল্পনা বাণিজ্যিক নাকি পুষ্টিকেন্দ্রিক, তা দেখতে হবে। একটা সময় ছিল, যখন দেশে খাদ্যের ঘাটতি ছিল। তখন খাদ্যের পুষ্টিমানের দিকে না তাকিয়ে বেশি বেশি উৎপাদন করা হতো। কিন্তু এখন পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদন করতে হবে।

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রক্রিয়ায় কারিগরি জ্ঞান বাড়ানো দরকার। অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রক্রিয়াজাত না করে পুষ্টিকর খাবার প্রক্রিয়াজাত করা প্রয়োজন।

দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নিয়েও কাজ করতে হবে। বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি রাখা উচিত। শ্রমজীবী শ্রেণিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদনক্ষমতা কম। তাদের পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে।

নাজনীন রহমান

বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি তাদের কর্মতৎপরতার মাধ্যমে পুষ্টি শব্দটির ব্যাপক প্রচলন করতে পেরেছে। স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধিদের এই কার্যক্রমে রাখা প্রয়োজন। আমরা স্থানীয় গণমাধ্যমের সহায়তা পাচ্ছি। তারা প্রতিনিয়তই আমাদের কাজগুলো নিয়ে সংবাদ করছে।

পুষ্টিবিষয়ক কাজে জাতীয় পর্যায়ে সফল হয়েছি। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ের অনেক কাজের কথাই জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ে জানে না। এখানে তথ্যের ঘাটতি থেকে যায়। জাতীয় পর্যায়ে থেকে সিদ্ধান্তসমূহ জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত কীভাবে যাবে, তা বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।

বিভিন্ন কমিটিসহ পুষ্টিবিষয়ক কাজের সব অংশীদারকে জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন। তা ছাড়া কমিটি ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা কোনো বাজেট নেই। ফলে অনেক সময় দুর্গম এলাকা থেকে সভায় কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

মো. রাইসুল হক

দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনাকে আমরা স্বল্প, মধ্য, ও দীঘ৴মেয়াদি—এই তিন ভাগে ভাগ করি। এ জন্য উন্নয়ন বাজেট থেকে কাজ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের পুনর্গঠনসহ আরও বিভিন্ন কাজে উন্নয়ন–সহযোগীরা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন সেই সহযোগিতার সময় হয়েছে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুষ্টি কমিটিগুলোর দুই মাস পরপর সভা করার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আর্থিক সমস্যার কারণে তারা তিন মাস পরপর সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা সেখানে দেখতে পাই বহু খাতের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। তাদের বোঝানো হয়েছে, পুষ্টির উন্নয়নে আমরা কীভাবে কাজ করতে চাই।

একটি কর্মসূচিতে দেখেছি, তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে পুষ্টির জন্যও কাজ করছে। এভাবে কাজ করলে অর্থায়নও সম্ভব হয়। তা ছাড়া এই কাজ সরকারের একার পক্ষে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

মো. আমির হোসেন

পুষ্টি নিয়ে কাজ করতে হলে বহু খাতের সমন্বয়ের জায়গাটা দেখতে হবে। জাতীয় পুষ্টি পরিষদের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কাজ করছি। জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সিএসএ ফর সান কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। আগামী কয়েক বছর আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

জবাবদিহির জায়গায় আরও কীভাবে সমন্বয় করা যায়, সেটি দেখতে হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা স্থানীয় পর্যয়ে গণশুনানি ও মিডিয়া ক্যাম্পেইন করছি। জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার বিকেন্দ্রীকরণের সঙ্গে সিএসএ ফর সানের সদস্যরা জড়িত। আমরা জেলা পর্যায়ে অনেক বেশি কাজ করছি। বরাদ্দকৃত বাজেট পর্যালোচনা করা দরকার। জেলা পর্যায়ে নাগরিক সমাজের ফোরাম থাকা দরকার, এটা স্থানীয় পর্যায়ে বহু খাতের সমন্বয় ও জবাবদিহির জন্য অপরিহার্য।

 কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড তার কর্ম এলাকায় পুষ্টির ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

বর্তমানে সিএসএ ফর সান মাত্র পাঁচটি বিভাগে কাজ করছে। পয৴াপ্ত বাজেট ও সদস্যদের সহায়তা পেলে জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনা অনুসারে সব জায়গায় কাজ করতে পারব।

আব্দুল কাইয়ুম

আমরা আশা করি, এই বহু খাতভিত্তিক সমন্বয়মূলক কাজের জন্য সরকার, উন্নয়ন–সহযোগী, বেসরকারি সংস্থাসহ সব সামাজিক ও ব্যক্তিগত খাত এগিয়ে আসবে। পুষ্টি নিয়ে সবার মধ্যে সত্যিকার অথে৴ সচেতনতার সৃষ্টি হবে। 

আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

আলোচনায় সুপারিশ

■ পুষ্টিসংশ্লিষ্ট খাতে সমন্বিত ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে কাজ করতে হবে

■ পুষ্টি খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জবাবদিহির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন 

■ স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধিদের পুষ্টি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা উচিত

■ পুষ্টি খাতে বিনিয়োগ করা সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার তদারক করা দরকার

■ শহরে বস্তিবাসীর পুষ্টির উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন

■ পুষ্টিবাত৴া সবার কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূণ৴ 

■ পুষ্টির বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা দরকার

■ পুষ্টির উন্নয়নে ব্যক্তি খাত ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে কাজ করার পরিবেশ দিতে হবে

■ পুষ্টিসম্পৃক্ত কম৴কত৴াদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মদক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন

■ জাতীয় পুষ্টি কম৴পরিকল্পনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এই পরিকল্পনাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে বহু খাতের সমন্বয় এবং জবাবদিহির জন্য নাগরিক সমাজের ফোরাম থাকা দরকার

যাঁরা অংশ নিলেন 

মো. শাহ্ নেওয়াজ: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ (বিএনএনসি)

এস এম মোস্তাফিজুর রহমান: লাইন ডিরেক্টর, জাতীয় পুষ্টিসেবা (এনএনএস), জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান

মো. আকতার ইমাম: সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ (বিএনএনসি)

মো. নাজমুস সালেহীন: সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ (বিএনএনসি)

এস কে রয়: সভাপতি, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন

মোস্তফা ফারুক আল-বান্না: সহযোগী গবেষণা পরিচালক, ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট, এফপিএমইউ

এম এ মান্নান: পুষ্টি উপদেষ্টা, ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও)

আসফিয়া আজিম: পুষ্টি কর্মকর্তা, ইউনিসেফ

মো. মনিরুজ্জামান বিপুল: পোর্টফোলিও লিডার, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন

ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার: স্বাস্থ্য কম৴সূচি প্রধান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

মহসীন আলী: আরবান হেলথ স্পেশালিস্ট, এলাইভ অ্যান্ড থ্রাইভ

নাজনীন রহমান: ইসি সদস্য, সিএসএ ফর সান

সায়কা সিরাজ: কো-চেয়ার, সিএসএ ফর সান

মো. রাইসুল হক: সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ

মো. আমির হোসেন: পুষ্টি উপদেষ্টা, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো