জরুরি সেবা হেল্প ডেস্ক ৯৯৯

দেশের সরকারি ব্যবস্থার ওপর যখন অনেক ক্ষেত্রেই জনগণ আস্থা রাখতে পারছে না, তখন জাতীয় জরুরি সেবা হেল্প ডেস্ক ৯৯৯ একের পর এক চমক দেখাচ্ছে। অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষের কল পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তারা সাড়া দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই সেবায় বলার মতো অনেক গল্প তৈরি হয়েছে। এই সেবার প্রতি মানুষ আস্থাশীল হয়ে উঠেছে। দুর্ঘটনায় সহায়তা, বাল্যবিবাহ রোধ, ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, গৃহকর্মী নির্যাতন রোধ, পারিবারিক নির্যাতন বন্ধ ইত্যাদিতে ৯৯৯ প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। ৯৯৯-এ ফোন করে ঝামেলা এড়িয়ে সহজে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা পাচ্ছে মানুষ। 

চলতি সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমে আসা অন্তত দুটি ঘটনা এই সেবার বিষয়ে মানুষের আস্থা আরও উঁচুতে নিয়ে যাবে বলে মনে করা যেতে পারে। এর একটি ঘটেছে ২৩ নভেম্বর শনিবার। ওই দিন ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ছিনতাই হওয়া ট্রাক ও ট্রাকভর্তি ২২ হাজার ৫৩০টি মুরগির ডিম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করেছে এবং ট্রাকসহ ডিমের মালিককে হস্তান্তর করেছে। 

সর্বশেষ ঘটনাটি গত সোমবারের। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোববার রাতে রাজধানীর কমলাপুর থেকে উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেসে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী উঠেছিলেন। ট্রেন যখন মাঝরাস্তায় তখন তাঁর প্রসবব্যথা ওঠে। গভীর রাতে আশপাশে ট্রেন থামার মতো রেলস্টেশন না থাকায় চলন্ত ট্রেনেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। প্রসূতির রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সোমবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে ট্রেনটি বগুড়া স্টেশনে থামার পর যাত্রীরা নবজাতকসহ প্রসূতিকে স্টেশনে নামিয়ে দেন। স্টেশনে অপেক্ষমাণ এক ব্যক্তি ৯৯৯-এ ফোন করার পর ৯৯৯ থেকে বিষয়টি বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে জানানো হয়। এরপরই ফায়ার সার্ভিসের একটি দল রেলস্টেশন থেকে প্রসূতি ও নবজাতককে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। মা ও নবজাতক এখন সুস্থ। তবে সময়মতো তাঁদের হাসপাতালে নিতে না পারলে অঘটন ঘটতে পারত। 

এই সরকারি সেবা অকুণ্ঠ প্রশংসার দাবিদার। দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর চালু হওয়া ৯৯৯ জরুরি সেবার জন্য দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ ফোন করতে পারছেন। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা ৯৯৯-এ ফোন করতে কোনো খরচও নেই। এই সেবার ওপর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে যে আস্থা তৈরি হয়েছে, তাকে ধরে রাখাকেই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া দরকার। একই সঙ্গে ৯৯৯-এর প্রযুক্তিগত যাবতীয় সীমাবদ্ধতা দূর করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।