কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ভবন

আমাদের দেশে সরকারি প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার এক সংস্কৃতি রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৭০ শতাংশ প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে বাস্তবায়িত হয় না। মূলত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের লোভের কারণেই দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। নকশা পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় বৃদ্ধি, নির্মাণসামগ্রীর ব্যয় বৃদ্ধি, কর্মপরিধি বৃদ্ধির নামে কৌশলে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু এর পেছনে থাকে অন্য উদ্দেশ্য। কেননা, প্রকল্প যত দিন চলবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তত দিন সুবিধা নিতে পারেন। প্রকল্পে আকর্ষণের শেষ নেই। প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার, ভাতা নেওয়াসহ নানা সুবিধার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা চান না দ্রুত প্রকল্প শেষ হয়ে যাক।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে যে এ রকম ঘটেনি, তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। কেননা, ২০১৭ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিদর্শন প্রতিবেদনে এই প্রকল্পে বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছিল। ওই প্রতিবেদনে নকশার পরিবর্তন, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য ছিল। এ ছাড়া গত বছরের জানুয়ারি মাসে নির্মাণাধীন মেডিকেল কলেজ ভবনের ছাদ ধসে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে জানা গিয়েছিল।

প্রশ্ন হচ্ছে, এ রকম কি চলতেই থাকবে? সরকারি প্রকল্পগুলোতে যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা জনগণের অর্থ। জনগণের অর্থের এই অপচয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই সরকারের সব মন্ত্রণালয় তাদের অধীন সব প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবে। বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।