একাত্তরের ১ মার্চ থেকেই বঙ্গবন্ধু সরকারপ্রধান

বিশিষ্ট আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম।
বিশিষ্ট আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম।
>

বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা বিশিষ্ট আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম ১৯৭১ সালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের এইড অ্যান্ড অ্যাডভাইজার ছিলেন। একই সঙ্গে সত্তরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত গণপরিষদের হুইপ হিসেবেও তখন তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে গেছেন। বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরার পর ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুজিব বর্ষ সামনে বঙ্গবন্ধুর দেশে ফেরা, রাষ্ট্রপতি পদের বদলে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ, এ জন্য অস্থায়ী সংবিধান প্রণয়ন—এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রথম আলো: ৪৯ বছর আগের ১০ জানুয়ারির কোন বিষয়টি সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ?

আমীর-উল ইসলাম: আমি বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ অসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ ছাড়া বঙ্গবন্ধু অসম্পূর্ণ থাকবেন।

প্রথম আলো: ঠিক কবে কোথায় কাকে বলেছিলেন?

আমীর-উল ইসলাম: একাত্তরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিক হবে। তখন পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুর বিচার নিয়ে কথা চলছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আসছে। আমি ছিলাম প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর এইড অ্যান্ড অ্যাডভাইজার। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা বিষয়ে আমি ইংল্যান্ডে চিঠি লিখেছিলাম। বার্নাড অ্যান্ড শেরেড নামের সলিসিটরের একটি অফিস ছিল। প্রবাসী জীবনে তঁাদের সঙ্গে আমি কিছু কাজ করেছিলাম। জানতে চাইলাম, কোনো বেসামরিক নেতা, যিনি প্রত্যক্ষভাবে সশস্ত্র যুদ্ধে শামিল নেই, তাঁর বিচার করা যায় কি না? এই সংস্থার মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শন ম্যাকব্রাইডের লিখিত আইনি মতামত পেয়েছিলাম। তখন তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যু্ক্ত ছিলেন। আমাদের প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্র ও আইন দুটিরই দায়িত্বে ছিলেন মোশতাক সাহেব। তাঁকে দেখাতে গেলাম। তিনি বললেন, বাংলাদেশ অথবা শেখ মুজিব, আপনাদের একটিকে বেছে নিতে হবে। তাঁর উত্তরেই আমি ওই মন্তব্য করেছিলাম। প্রসঙ্গক্রমে, আরেকটি ঘটনা বলব। ৮ নম্বর থিয়েটার রোড, কলকাতা। বিজয়ের পরপরই সাংবাদিকেরা এলেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের মতামত চান। তখন তিনি একটি তাৎপর্যপূর্ণ উক্তি করেছিলেন। বলেছিলেন, আমি তো শুধুই একজন ধাইয়ের কাজ করেছি। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবর যে ধাই নবজাতকের পিতাকে জানাতে পারল না, তখন সেই ধাইয়ের যে অনুভূতি, আমারও সেই অনুভূতি। ১০ জানুয়ারিতে তিনি এলেন। তাই সম্পূর্ণ হলো বাংলাদেশ।

প্রথম আলো: বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি খোলা জিপে বঙ্গবন্ধু ও আপনাকে পাশাপাশি দেখা যায়। আপনাকে বলা বঙ্গবন্ধুর কোনো উক্তি মনে পড়ে?

আমীর-উল ইসলাম: সেদিন আবেগ-অনুভূতি এতটাই প্রবল ছিল যে অন্য কথার বিশেষ দরকার বা সুযোগ ছিল না। তবে জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ভুট্টো তাঁকে এক পতাকার কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁকে বলেছিলেন, দেশে ফিরে তিনি এ বিষয়ে বলবেন। তিনি ভুট্টোর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘তুমি সুখে থাকো। আমরা সুখে থাকি। কারণ যে গণহত্যা ও অত্যাচার-নির্যাতন চলেছে, এরপর আর একত্রে থাকা সম্ভব না।’

প্রথম আলো: ১১ জানুয়ারিতেই রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি কীভাবে বদলে গেল?

আমীর-উল ইসলাম: আইনজীবী টি এ ভূঁইয়ার বাসায় ১১ জানুয়ারির সকালে ছিলাম। সেখানে ড. কামাল হোসেনও প্রাতরাশের জন্য আমন্ত্রিত ছিলেন। সেই সকালে একটি ফোন পাই। জানতে পারি, বঙ্গবন্ধু চান আমরা যেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বাসায় আসি। আমি ও কামাল হোসেন বেইলি রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাসায় যাই। গিয়ে দেখি, বঙ্গবন্ধু, বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ আগেই এসেছেন। আমাদের দেখেই বঙ্গবন্ধু বললেন, আমি সব সময় সংসদীয় পদ্ধতির কথা বলে এসেছি। তাই আমরা এতেই ফিরব। বললাম, আমরা তো ৯ মাসের সবকিছুই গণপরিষদের সিদ্ধান্তে করেছি। সুতরাং এটা বদলাতে হলে গণপরিষদে যেতে হবে।

প্রথম আলো: ছয় দফার প্রথমেই ছিল সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা। তাহলে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে কেন যুদ্ধকালে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি করেছিলেন?

আমীর-উল ইসলাম: ১ মার্চ ১৯৭১ থেকে একটি ডি-ফ্যাক্টো ও ডি-জুরে (আইনানুগভাবে) বাংলাদেশ সরকার কিন্তু হয়েছিল। এবং তারাই সরকার চালাচ্ছিল। আর সেই শাসনকাঠামোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং সে অনুযায়ী সরকার চলছিল। ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চের ‘বাংলাদেশ সরকার’–এ তাজউদ্দীন আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আর এভাবেই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে বৈধভাবেই প্রতিস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু, এর ফলে ইয়াহিয়া বাংলাদেশি আইনের চোখে জবরদখলকারী প্রেসিডেন্টে পরিণত হন।

প্রথম আলো: আপনি কি বলতে চাইছেন যে ইয়াহিয়া রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন বলেই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির বিষয়টি ছিল?

আমীর-উল ইসলাম: না। ধরনটা মুখ্য নয়। বাস্তব, স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যা এসেছে, সেটাই ঘটেছে। সুতরাং এটা রাষ্ট্রপতি নাকি সংসদীয়, সে কথাটা আসছে না। আমরা ১ মার্চে ইয়াহিয়ার বক্তৃতায় যখন শুনতে পেলাম, অনির্দিষ্টকালের জন্য সংসদ অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে, তখন আমরা পুরানা পল্টনে আওয়ামী লীগের অফিস থেকে রওনা দিলাম পূর্বাণী হোটেলে। ইয়াহিয়া স্থগিত করলেও আমরা কিন্তু তা গ্রাহ্য করিনি। গণপরিষদ পূর্বাণীতে বসেছে। সব নির্বাচিত আইনপ্রণেতা উপস্থিত ছিলেন, যাঁরা পরে বাংলাদেশ সংবিধানের প্রণেতা হয়েছেন। হুইপ হিসেবে আমার ওপরই দায়িত্ব ছিল উভয় সংসদ ডাকা। একটি হলো পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ, অন্যটি গণপরিষদ। সেদিন পূর্বাণী পরিণত হয়েছিল ফরাসি টেনিস কোর্টে। ফরাসি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মুসাবিদা একটি টেনিস কোর্টে সমাবেশে তৈরি হয়েছিল। আর পূর্বাণীতে আমরা সর্বময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বঙ্গবন্ধুর কাছে অর্পণ করেছিলাম। তাঁর সিদ্ধান্তই উভয় সংসদের যৌথ সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সেই ডি–জুরে সরকারের নির্দিষ্ট সাংবিধানিক ধরন বা নামকরণ করা হয়নি। কিন্তু তার অবশ্যই একটি গণপরিষদকেন্দ্রিক সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল। আইন ও সংসদ দ্বারা তা সমর্থিত ছিল।

প্রথম আলো: বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ১ মার্চ থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের বৈধতা দিয়েছেন।

আমীর-উল ইসলাম: আদালতে আমিই এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছিলাম। বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী লিখেছিলেন, এটাই বাংলাদেশ সংবিধানের ‘জেনেসিস’। পূর্বাণী হোটেল থেকে শুরু করে কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোড পর্যন্ত একটা অব্যাহত বিষয়।

প্রথম আলো: তার মানে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে একজন রাষ্ট্রপতিকে যে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতাটা দেওয়া হয়েছিল, এমনকি আপনারা ১১ জানুয়ারিতে অস্থায়ী সংবিধান লিখলেন যে প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আইন প্রণয়নের ক্ষমতাটা থাকবে, সেই ক্ষমতা প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু ১ মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে অনুশীলন করতে শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণ তা পালন করেছিল।

আমীর-উল ইসলাম: হ্যাঁ। অবশ্যই।

প্রথম আলো: আপনি যখন ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি করছিলেন, তখন কি এ নিয়ে আপনার গণপরিষদে কোনো বিতর্ক করেছিলেন। কথা উঠেছিল কি না যে সংসদীয় পদ্ধতি নয় কেন?

আমীর-উল ইসলাম: না। কথা যেটুকু হয়েছিল, সেটা তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে হয়েছিল। ২৬ মার্চের পরে আমি যখন বললাম এখন সরকার গঠন করতে হবে, তখন তিনি বললেন, কাদের নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে? বললাম, আপনারা তো সরকার গঠন করেই রেখেছেন। নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন কামারুজ্জামান। আর আপনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধু তখন কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সবাই তো এর অংশ।

প্রথম আলো: আপনি ছিলেন হুইপ। হুইপ হিসেবেই যুদ্ধকালে দায়িত্ব পালন করছিলেন?

আমীর-উল ইসলাম: পূর্বাণী হোটেলের অধিবেশন থেকেই আমি এই পরিচয়ে সক্রিয় ছিলাম। তাই ১১ জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু যখন সংসদীয় গণতন্ত্রে ফেরার কথা বললেন, তখন আমি স্মরণ করিয়ে দিই যে আমরা যৌথ অধিবেশনে রেজল্যুশন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। তাই সিদ্ধান্ত বদলাতে আবার সেই যৌথ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত সমীচীন। যুদ্ধকালে ভূরুঙ্গামারীর কাছে তিস্তার তীরে এই যৌথ অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে একবার বসেছিল। বঙ্গবন্ধু অবশ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের বাস্তবতা দ্রুত অধিবেশন বসানোর জন্য যে অনুকূল নয়, সেটা উল্লেখ করেন।

প্রথম আলো: তারপর কী হলো? কোথায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংশোধনের খসড়া হলো?

আমীর-উল ইসলাম: তখন ‘ল কনসালট্যান্টস’ নামে আমার একটি চেম্বার ছিল। সেটা ছিল মতিঝিলের টেক্সট বুক ভবনে। আমি আমার সেক্রেটারি ওয়াদুদকে ডাকলাম। ভালো সাঁটলিপিকার ছিলেন।

বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন ও আমি সেখানে বসলাম। তিনজন মিলে স্বাধীন বাংলাদেশের এক নম্বর কনস্টিটিউশনাল অর্ডারের মুসাবিদা তৈরি হলো। সরকারি গেজেটে তা ছাপানোর দরকার পড়ল। আমি বঙ্গভবনে ফোন করি। সেখানে ফারুক চৌধুরী ছিলেন। তিনি শুনেই তা পাঠিয়ে দিতে বললেন এবং দ্রুত তা ছাপা হয়ে এল।

প্রথম আলো: অস্থায়ী সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিধান করেছিলেন, কারণ প্রধানমন্ত্রীকে তিনি শপথ পাঠ করাবেন। প্রশ্ন হলো, সুপ্রিম কোর্টের পরিবর্তে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য হাইকোর্ট করেছিলেন কেন?

আমীর-উল ইসলাম: কারণ, রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য ফেডারেল হবে না, হবে একক বা ইউনিটারি, তাই হাইকোর্ট করা হলো।

প্রথম আলো: আর তখন ইউনিটারি রাষ্ট্র ব্রিটেনের বর্তমানের মতো সুপ্রিম কোর্ট ছিল না, আপনারা তার দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।

আমীর-উল ইসলাম: হয়তো।

প্রথম আলো: ১০ জানুয়ারিতে যিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তিনি কি বঙ্গবন্ধুকে শপথ পাঠ করাতে পারতেন?

আমীর-উল ইসলাম: যিনি ছিলেন, তিনি বিতর্কিত ছিলেন। জেনারেল টিক্কা খানকে শপথ পাঠ না করাতে চেয়ে তিনি প্রশংসিত হলেও পরে তিনি তাঁকে শপথ পাঠ করান। সুতরাং এ রকম একজন প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর শপথ নেওয়াটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাই নতুন প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন বিচারপতি এম এ সায়েম।

প্রথম আলো: আপনি ওপরে যে স্মৃতিচারণা করলেন, সেটা এই মুজিব বর্ষে, আজকের বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে কোন দিকটিকে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক মনে করেন?

আমীর-উল ইসলাম: প্রথমেই বলব, বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনে আমাদের স্বাধীনতা সম্পূর্ণতা লাভ করেছিল। কারণ, ৯ মাসের রণাঙ্গনে আমাদের অন্যতম রণ–স্লোগান ছিল—এই যুদ্ধে জিততে হবে, বঙ্গবন্ধুকে আনতে হবে।

প্রথম আলো: আজকের প্রেক্ষাপটে?

আমীর-উল ইসলাম: ইতিহাসের এই যে অমোঘ সময়পুঞ্জি রয়েছে, সেসব জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অতীতকে নির্মাণ না করে ভবিষ্যৎকে বিনির্মাণ করছি, তাই আমাদের সামনে যে মুজিব বর্ষ আসছে, সেখানে দেখতে হবে আমরা যাতে লক্ষ্যভ্রষ্ট না হই, যে লক্ষ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম, সেই লক্ষ্যসমূহে স্থির থেকে, আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের লক্ষ্যসমূহ বিনির্মাণ করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।

প্রথম আলো: চলমান ধারা কি সন্তোষজনক, নাকি কোথাও আপনার উদ্বেগ আছে?

আমীর-উল ইসলাম: আমি যেটা বলছিলাম, সেটা বেশি প্রয়োজন এই কারণে যে আমরা তা ক্ষুণ্ন করেছি, যেদিন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে হত্যা করা হয়েছিল। যে শক্তি সেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল, সেই কালো ছায়া কিন্তু আমাদের ইতিহাসে ও সমাজজীবনকে প্রভাবিত করেছিল। এটা দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অত্যন্ত যথার্থ ও উপযোগী। এ উপলক্ষকে যদি মানুষের কাছে সঠিকভাবে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে সেটা হবে একটা রি-এনফোর্সমেন্ট, যা সেসব কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যসমূহ অর্জনের দিকে আমাদের আরও এগিয়ে নিতে পারে।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

আমীর-উল ইসলাম: ধন্যবাদ।