প্রথম আলোর সম্পাদক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় প্রতিক্রিয়া

>

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় গতকাল প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছেন অপর পাঁচজনকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করতে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সে ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সংস্থা। ঘটনাটিকে বাক্স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচ দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনায় যুক্ত হয়েছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। সেখান থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা নিয়ে প্রথম কিস্তি ছাপা হয়েছে গতকাল। আজ ছাপা হলো দ্বিতীয় কিস্তি। লেখার ক্রম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার সময় অনুযায়ী।

জিয়া হাসান।
জিয়া হাসান।


মামলা ধরে টান
জিয়া হাসান
অরুন্ধতী রায়ের একটা লেখা পড়েছিলাম কিছুদিন আগে। সেখানে তিনি বলছিলেন, কংগ্রেসের অধীনে সেক্যুলারিজম ছিল মূলত একটা খোলস। সেক্যুলারিজমের আড়ালে সমাজ ও রাষ্ট্র সব সময় নিপীড়ক ছিল। কিন্তু বিজেপি আসার পরে তিনি বললেন, তিনি বুঝতে পারছেন, সেটা যা ছিল তা–ও অনেকটুকু ভালো ছিল। ইংরেজিতে কথাটা বোধ হয় এইভাবে লিখেছিলেন,

‘দ্যাট ফাসাড ওয়াজ দ্য বেস্ট থিং দ্যাট ইন্ডিয়া হ্যাড।’

প্রথম আলোকে আমি সেভাবে দেখি।

একটি মাফিয়া রেজিমের সাথে পূর্বের সকল রেজিমের মোরাল ইকুইভ্যালেন্স, আওয়ামী লীগের প্রতি সফটি সফটি অ্যাটিচুড, সম্পূর্ণ একটা করপোরেট বেনিয়া হিসেবে আবির্ভূত হওয়া—এর সবকিছুর অভিযোগ প্রথম আলোকে দেওয়া যাবে।

কারণ, তার প্রত্যেকটা অভিযোগের মেরিট আছে।

কিন্তু প্রথম আলো ধ্বংস হয়ে গেলে অরুন্ধতীর মতোই সবাই আফসোস করবেন,

‘দ্যাট ফাসাড ওয়াজ দ্য বেস্ট থিং দ্যাট উই হ্যাড।’

তাই আমি বলব আমাদের সবার দায়িত্ব প্রথম আলোর বিপদের সময় প্রথম আলোর সাথে থাকা।

এই মুখোশটি অন্তত রক্ষা করতে হবে। এই মুখোশটিও যদি আপনার না থাকে, তবে আপনার কিছুই থাকবে না।

১৭ জানুয়ারি ২০২০, বেলা ১১টা

২. মতিউর রহমানকে মামলা দিয়ে সরকার আরেকটা এরশাদ কেস তৈরি করবে। একটু ডানে-বামে গেলেই মামলা ধরে টান দেবে। ফলে প্রথম আলো সিধা থাকবে।

১৭ জানুয়ারি ২০২০, বিকেল ৫টা ১৬ মিনিট
জিয়া হাসান: ফ্রিল্যান্স গবেষক

ইসমাইল সাদী।
ইসমাইল সাদী।


সত্যের জয় হোক
ইসমাইল সাদী
দেশের বেশির ভাগ গণমাধ্যম যখন সরকারি স্তাবকতা আর সুবিধা নেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন স্বাধীন গণমাধ্যম এমনিতেই হুমকিতে থাকে। সেখানে রাষ্ট্র যখন নিজেই চায় না দেশে স্বাধীন গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটুক, তখন গণমাধ্যমের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা ভালো থাকার কোনো কারণ নেই। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই স্বাধীন গণমাধ্যম চাপের মধ্যে থাকে। তার মধ্যে গণতন্ত্রবিহীন রাষ্ট্রে অবস্থা আরও বেশি নাজুক। তবু বলতে হয়, বাংলাদেশে এমন কয়েকটি স্বাধীন গণমাধ্যম আছে, যাদের কোনো রাজনৈতিক দলই পছন্দ করে না। না সরকারি দল, না বিরোধী দল। কিন্তু সেসব গণমাধ্যমকে সাধারণ মানুষ পছন্দ করে। আর সাধারণ মানুষ যখন কোনো কিছু পছন্দ করে, তখন বুঝতে বাকি থাকে না, সেসব অবশ্যই দলমতের ঊর্ধ্বের প্রতিষ্ঠান। গত দুই দশকে বাংলাদেশে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বিকাশ ঘটেছে—যারা দুর্নীতি করবে, স্বজনপ্রীতি করবে, প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করবে, অর্থ পাচার করবে, ব্যাংক লুট করবে কিন্তু বলা যাবে না। তারা সমাজের প্রভাবশালী গোষ্ঠী এবং নীতি নির্ধারণের ক্ষমতাও আছে তাদের। তাঁদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষ করে উপাচার্যগণ, আছেন চিকিৎসক, আছেন ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, লেখক, সাংস্কৃতিক পাণ্ডা প্রভৃতি পেশাজীবী। এঁরা ইতিমধ্যে সরকারের স্তাবক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। চেতনাগত উগ্রপন্থার দিক থেকে এরা সরকারি দলের রাজনীতিকদের চেয়েও এগিয়ে। এরা চায় না দেশে স্বাধীন গণমাধ্যম থাকুক। থাকলে নিজেদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে যায়।

নব্বইয়ের পর থেকেই বিভিন্ন কারণে নিজেদের দুর্নীতি, অপকর্ম, স্বজনপ্রীতির তথ্য প্রকাশের ‘অপরাধে’ নিজেদের অফিসে স্বাধীন গণমাধ্যমগুলোর প্রকাশনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু নিজেদের অফিসে বা কর্মক্ষেত্র নিষিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, ভেতরে ভেতরে চক্রান্তও করেছে স্বাধীন ও সাধারণ মানুষের পছন্দের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি করার। এখন পর্যন্ত খুব একটা সফল না হলেও বিজ্ঞাপনের ওপর হস্তক্ষেপ তারা করেছে। এর বাইরেও ফাঁদ পেতেছে নানাভাবে। সেই চেষ্টার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ প্রথম আলোর সম্পাদক, সহযোগী সম্পাদকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি। অথচ এই প্রথম আলোতেই উদ্‌ঘাটিত হয়েছিল একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গড়ে তোলা ‘জজ মিয়া’ নাটকের কাহিনি; প্রথম আলোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল ‘এ দেশের মানুষ রাজাকারদের বিচার চায়’ ইত্যাদি হাজারো গল্প, যা দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে এনেছে। স্তাবকের দল চায় না দেশের সমৃদ্ধি, চায় না দেশের অগ্রগতি, চায় শুধু শোষণ, চায় দুঃশাসন, অপকর্ম, স্বজনপ্রীতি।

সত্যের জয় হোক।

১৭ জানুয়ারি ২০২০, বেলা ১১টা ২১ মিনিট
ইসমাইল সাদী: গবেষক

ফারহা তানজিম তিতিল।
ফারহা তানজিম তিতিল।


যত্নশীল সম্পাদক
ফারহা তানজিম তিতিল
মতিউর রহমান প্রতিভাবান এবং সত্যিকারের কাজের মানুষ, সে কথা সবাই জানেন। তাঁকে নিয়ে অনেকের মনে কিছু দ্বিধা আছে। কিন্তু তিনি সম্ভবত এ দেশের সেরা সম্পাদক। প্রথম আলোর এবং মতিউর রহমানের দর্শন নিয়ে যাঁদের আপত্তি আছে, তাঁরাও এর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না। আর ভালো কাজের পরিবেশ যেসব প্রতিষ্ঠানে আছে, তাদের মধ্যেও প্রথম আলো অন্যতম।

আমি দিনের পর দিন মতিউর রহমানকে কাছে থেকে দেখেছি। প্রতিভাবানেরা যেসব ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মকে উপেক্ষা করেন, সেই সব ক্ষেত্রেই মতি ভাই নিয়মগুলো মেনে চলেন। এটা তাঁর প্রজ্ঞার পরিচয় বোধ হয়। কাজের মানের বিষয়ে নিজেকে এবং কর্মীদেরকে চুল চিরে দক্ষ করে তুলতে দ্বিধাহীন তিনি।

আমাদের মতো নন–প্রফেশনাল দেশের পাঠকদের কাছে ওপরের কথাবার্তায় তাঁকে শুধু কাজের মানুষ মনে হবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সহকর্মীদের অতিরিক্ত খাটুনির টাকাভর্তি খামটা তিনি বউকে দিতে বলতেন। কারণ, অতিরিক্ত সময়গুলো ছিল ঘরের মানুষের জন্য। প্রথম আলোতে আমাদের কলিগরা কেউ বাড়িতে ধানাই-পানাই করতেন না। কারণ, বউ অভিযোগ করলে মতি ভাই অল্প কথায় সোজা করে দেওয়ার যোগ্যতা রাখতেন।

নিজের কথা বলি, রাত সাড়ে নয়টা বাজে অফিসে আমাকে দেখতে পেলেন একদিন। বললেন, দৌড় দিয়ে মায়ের কাছে যান। মানে এক্ষুনি বাড়ি যান। আর নিজের রুম থেকে কিছু স্ন্যাকস এনে দিলেন আমাকে। নিজের ড্রাইভার খোকন ভাইকে দিয়ে আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। সাতটার জায়গায় নয়টা পর্যন্ত ডিউটি করা এমন কিছু ব্যাপার না। আমি তেমন বড় পদেও ছিলাম না। অফিসে তখন আরও অন্তত চল্লিশটা গাড়ি ছিল আমাকে পাঠাবার মতো।

বলতে চাচ্ছি সারা অফিস, অথবা যেকোনো মানুষকে যিনি এত যত্ন করেন, তিনি অনুষ্ঠানে আসা এক শিশুকে অযত্ন করতে পারেন না।

এই দেশে এখন নব্বই ভাগ ক্ষমতা রূঢ়দের দখলে। এখানে মেধাবীদের নিগ্রহ করাটাই রীতি। শহিদুল আলমের মতো হয়তো মতিউর রহমানকেও গ্রেপ্তার করা হবে। তাতে মতিউর রহমান বা প্রথম আলোর কিছুই হবে না। তবে উনাকে বোধ হয় রোজ অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। সেগুলো নিয়ে ঝামেলা করলে তো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হবে।

১৭ জানুয়ারি ২০২০, বেলা ১টা ৫২ মিনিট
ফারহা তানজিম তিতিল: সহকারী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

ইকবাল হাসান।
ইকবাল হাসান।


কণ্ঠ রোধের ষড়যন্ত্র
ইকবাল হাসান
প্রতিভাধর সাংবাদিক, সম্পাদক মতিউর রহমানকে চিনি চার যুগ ধরে, সেই একতা এবং সচিত্র সন্ধানীর সময় থেকে। আনিসুল হক দেশের অতি জনপ্রিয় একজন কথাশিল্পী। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত! দেখে বিস্মিত হয়েছি, মনে হচ্ছে, প্রথম আলোর কণ্ঠ রোধ করার মহা ষড়যন্ত্র চলছে।

আমি এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তীব্র নিন্দা জানাই।

নিন্দা জানাই সাহসী সংবাদপত্রের কণ্ঠ রোধ করার এই ষড়যন্ত্রের।

১৭ জানুয়ারি ২০২০, বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট
ইকবাল হাসান: কানাডাপ্রবাসী লেখক

ইসরাত জাহান।
ইসরাত জাহান।


মতপ্রকাশের অধিকারের স্বার্থে
ইসরাত জাহান
দূর দেশে বসে শুনছি প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা। কিন্তু মতিউর রহমান তো আজ আর শুধু একজন ব্যক্তিমানুষ নন, তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও পত্রিকাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের ভবিষ্যৎও। তাই আজ সাংবাদিক না হয়েও লিখছি। আমার জীবনের গুটিকয় অর্জনের মধ্যে ছাত্রজীবন শেষে প্রথম আলোতে সাংবাদিকতার সুযোগ পাওয়াটা অন্যতম। এক দশকের বেশি কাজ করেছি এখানে। দেখেছি, পত্রিকাটির প্রতিটা কর্মীর ব্যক্তিগত বিকাশে সম্পাদক হিসেবে মতিউর রহমানের আন্তরিক চেষ্টা। দেখেছি, প্রতিটা কর্মীর পরিবার থেকে শুরু করে তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতিও কী যত্নশীল নজর মানুষটির! বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে যখন নারী সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নবিদ্ধ পথ পার হতে হয়, তখন প্রথম আলোতে কাজ করে একজন নারী হিসেবে আমি পেয়েছি কেবল নিরাপত্তা, গৌরব আর সম্মানের অনুভূতি। পত্রিকাটির মতাদর্শের সঙ্গে কোথাও দ্বিমত থাকলে সেটা প্রকাশেও কোনো দিন দ্বিধা করতে হয়নি।

মতিউর রহমান দেবদূত নন। তিনি মানুষ। তাই তাঁরও সীমাবদ্ধতা থাকতেই পারে। কিন্তু এটাও সত্য, তিনি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা এবং সফলতম সম্পাদক। আজ যে অজুহাতে তাঁকে গ্রেপ্তারের পাঁয়তারা, তা আসলে একটা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের চক্রান্ত। আজ বাংলাদেশে বিরোধী মতের কোনো জায়গা নেই। এই অবস্থায় গুটিকয় প্রতিবাদী মানুষের সঙ্গে একটি প্রচারমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলোকেও যদি আমরা বাঁচিয়ে রাখতে না পারি, তো বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমাদের আর কোনো আশাই জিইয়ে থাকবে না। তাই প্রথম আলোর সঙ্গে আপনার মতের যত পার্থক্যই থাকুক, প্রথম আলোর ওপর আপনার যত রাগ কিংবা ক্ষোভ থাকুক, দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের মতপ্রকাশের অধিকারের স্বার্থে মতিউর রহমানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরোধিতা করা দরকার। ভালোবাসা প্রথম আলোর জন্য। ভালোবাসা প্রথম আলোতে রেখে আসা আমার সব সহকর্মী, ভাইবোন, বন্ধুর জন্য।

১৮ জানুয়ারি ২০২০, সকাল ১০টা ১৭ মিনিট
ইসরাত জাহান: শিক্ষার্থী, লিনিয়াস ইউনিভার্সিটি, সুইডেন

সুমন্ত আসলাম।
সুমন্ত আসলাম।


প্রথম আলো এবং অন্যান্য
সুমন্ত আসলাম
চাকরি চলে যাওয়ার অনেক বছর পর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে ফোন দিই আমি। রিসিভ করেই বলেন, ‘কে?’

‘মতি ভাই, আমি সুমন্ত আসলাম।’

দুই সেকেন্ডের মতো থেমে রইলেন মতি ভাই, ‘সুমন্ত, ভুইল্যা গ্যালা আমারে!’

‘মতি ভাই, একটা কারণে ফোন দিয়েছি আপনাকে।’

কিছুটা দ্রুতগতিতে মতি ভাই বলেন, ‘বলো বলো...।’

‘মতিয়া চৌধুরীকে নিয়ে আপনি যে আজ লেখাটা লিখেছেন, চমৎকার। এত স্যাটায়ার লেখা অনেক দিন পড়িনি।’

হাসতে থাকেন মতি ভাই, ‘আরে মিয়া, তুমি তো এ লাইনের লোক। এসব স্যাটায়ার-ম্যাটায়ার তুমিই তো ভালো বুঝবা।’

তারপর থেকে মাসে অন্তত একবার কথা হয় মতি ভাইয়ের সঙ্গে। কোনো দিন রিসিভ করতে না পারলে দেরিতে হলেও ব্যাক করেন। কথা শেষে বলেন—আসো না একদিন অফিসে, চা খাই, গল্প করি। ছুটির দিন একদিন বাসায় আসো...।’

দুই জায়গার এক জায়গাতেও যাওয়া হয় না আমার—ইতস্ততা, দ্বিধা...।

চার মাস আগে মতি ভাইয়ের অফিসে গিয়েছিলাম আমি। ঘণ্টাখানেক ছিলাম সেখানে। টেবিলে কাজ সেরে তিনি পাশের একটা রুমে নিয়ে এলেন আমাকে। কত গল্প, কত কথন—আমি কেবল শুনি, ছোট ছোট জবাব দিই মাঝে মাঝে।

মানুষ জীবনে কিছু কিছু সময় শিশু হয়ে যায়—নিজের গল্প বলার সময়। আবেগ, কাতরতা, সমস্ত জমাট বাতাস বের হয়ে আসে অবলীলায়।

প্রথম আলোতে চাকরি করার সময় এক মাস কিংবা দুমাস পরপর একটা ফলের আয়োজন হতো মতি ভাইয়ের রুমে। তখন বেশ ছোট ছিল রুমটা। আমি ‘আলপিন’-এর কাজ শেষ করে তাঁর সামনে যেতাম। তিনি সব শেষে বলতেন, ‘কাল সন্ধ্যায় ফল খাওয়াবা, তোমার স্পনসরে।’

পরের দিন আমি কাছেই কারওয়ান বাজার থেকে যত রকম ফল পেতাম নিয়ে আসতাম। দুজনে খেতাম—কত কথা হতো তখন—অনেক স্বপ্ন, অনেক বেদনা, অনেক অতৃপ্তি, আরও অনেক কিছু করার উদ্দামতা।

চাকরি চলে যাওয়ার পর বিদেশ এবং দেশের অনেক মিডিয়া আমার কাছে এসেছিল, তারা জানতে চেয়েছে অনেক কিছু। আমি শুধু বলেছি—নো কমেন্টস।

মতি ভাইকে যে যা–ই বলুক—নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে একজন মানুষকে অনেক কিছু করতে হয়, তাই বলে মৃত্যুর মতো একটা শিহরণজাগানিয়া ব্যাপারের সঙ্গে প্রহসন! দুনিয়ার সবাই বললেও আমি এটা বিশ্বাস করব না। মতি ভাই এ রকম মানুষ না। একজন মানুষ সবার প্রিয় হতে পারে না, অনেকের পারে।

মতি ভাই শেষের দলে।

ভালো কিছু কথা সামনে এলেই আমি লিখে রাখি। এদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন তিনজন—কনফুসিয়াস, হজরত আলী (রা.) এবং স্বামী বিবেকানন্দ।

ইদানীং একটা মানুষের কিছু কিছু কথা ভেসে ওঠে আমার ফেসবুকে—

‘জীবন সহজ হয় না, সহজ বানিয়ে নিতে হয়—কিছু দোয়া করে, কিছু ধৈর্য ধারণ করে, কিছু মাফ করে এবং কিছু বিষয় এড়িয়ে চলে।’

এই শাসকের প্রতিহিংসার শিকার প্রথম আলো পত্রিকার পক্ষে দাঁড়ানো এখন প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।

মাওলানা তারিক জামিলের এই কথা আমি গেঁথে নিয়েছি মনে।

১৮ জানুয়ারি ২০২০, বেলা ১১টা
সুমন্ত আসলাম: লেখক

রেদওয়ান রনি।
রেদওয়ান রনি।


হয়রানি যেন না হয়
রেদওয়ান রনি
বিএনপি সরকারের দুর্নীতির ধারাবাহিক প্রতিবেদন যখন প্রথম আলো করেছিল, তখন তাদের সমর্থকদের চক্ষুশূল ছিলেন মতিউর রহমান। পরবর্তীকালে যে সরকারই ক্ষমতায় আসে, তাদের দুর্নীতির খবর নির্ভীকভাবে প্রকাশ করেছে প্রথম আলোই। কাজেই যাদের বিরুদ্ধেই খবর প্রকাশিত হয়, তাদেরই চক্ষুশূল হয়ে ওঠে প্রথম আলো, সেটা সবাই বোঝে। প্রথম আলোর অবস্থান কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়, বরং দুর্নীতি তথা দেশের জন্য খারাপের বিরুদ্ধে—এ কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। দেশের কোন ক্রান্তিকালে, নানান গুজবের কনফিউশনে মানুষ প্রথমেই কোন পত্রিকাটির তথ্য যাচাই করে? প্রথম আলো। এই আস্থা তো এক দিনে তৈরি হয় নাই। সততা, সুসাংবাদিকতা, সামাজিক কার্যক্রম, দেশের জন্য যা কিছু ভালো, সেসবের প্রতি কমিটমেন্ট না থাকলে এই আস্থা তৈরি হতো না।

মতিউর রহমানকে আমার অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে, কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তাঁর মতো সৎ চিন্তার, স্মার্ট, আধুনিক এবং দেশের ভালো কিসে হয়—সারাক্ষণ সেই চিন্তার আর কাজের মানুষ আমি দেখি নাই। তিনি ইচ্ছা করে দেশের জন্য, তরুণ কিশোরদের জন্য ক্ষতিকর কিছু করবেন না, সেটা পাগলেও বোঝে। দেশে প্রতিদিন কত শত দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, তার দায়ভার নেওয়া তো দূরের কথা, আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার কি হচ্ছে? কিন্তু মতিউর রহমান ওই দিনের অনুষ্ঠানে না থেকেও কিন্তু দায়ভার এড়িয়ে যাননি। সুষ্ঠু তদন্ত আর নিরপেক্ষ বিচারকে পাশ কাটিয়ে, আকস্মিক এই দুর্ঘটনাকে ইস্যু করে যেন হয়রানি না হন, স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে যেন খর্ব করা না হয়, সেটাই চাওয়া।

আনিসুল হকের মতো মানবিক মানুষ কখনো কারও ক্ষতির কারণ হবে, এটা কল্পনাতীত। আমি তাঁর সান্নিধ্যে বছরের পর বছর কাজ করেছি। মানুষ হিসেবে তিনি ভীষণ ইমোশনাল। দেশের কিশোরদের জন্য ভালো কিছু করার চিন্তা থেকেই কিন্তু কিশোর আলো করেছেন। আমি এটা হলফ করে বলতে পারি, আনিসুল হক তাঁর নিজের সন্তানের মতোই কিশোর আলোর কিশোরদের ভালোবাসেন। ইচ্ছাকৃত কোনো ভুল হওয়ার কথা অবশ্যই না।

পাঁচবারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী গানের মানুষ কবির বকুল। নিতান্তই ভদ্রলোক, ক্রিয়েটিভ মানুষ। কিশোর আলোর এই অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত আরও যাঁরা আছেন, কাজের সুবাদে তাঁদেরকে এখন আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। ইচ্ছাকৃত দায়িত্বে অবহেলা করার মানুষ তাঁরা কেউ নন।

আমি যত দূর জানি, কিশোর আলোর এই অনুষ্ঠানে নিয়ম মেনেই সকল নিরাপত্তা প্রস্তুতি রাখা ছিল, মেডিকেল ক্যাম্প, জরুরি সেবা, পুলিশ, অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী, ডাক্তার—নিয়মমাফিক সব। তারপরেও আকস্মিক দুর্ঘটনার মতো অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়, আবরারের মৃত্যু অনেক কষ্টদায়ক। অনেক সমবেদনা জানাই। অনেক দুঃখজনক সেটা। তবে অবশ্যই আববার আর তার পরিবারের এই অপূরণীয় ক্ষতি কেউই চায়নি, ইচ্ছাকৃতও নয়। যদি ভুল, অবহেলা হয়, তার সু্ষ্ঠু বিচার সবাই চাই, কিন্তু এটাকে ইস্যু করে দেশের মেধাবী মানুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সৎ মানুষ, দেশের ভালোর জন্য অকুতোভয় কাজ করে যাওয়া মানুষগুলোকে যেন অযথা হয়রানি আর অসম্মানিত না করা হয়, এটাই কামনা।

১৮ জানুয়ারি ২০২০, বেলা ২টা ৩০ মিনিট
রেদওয়ান রনি: চিত্রনির্মাতা

রাজীব নূর।
রাজীব নূর।


পত্রিকার ওপর চাপ সৃষ্টি
রাজীব নূর
প্রথম আলোতে আমি দুদফা কাজ করেছি। তবে মতি ভাইয়ের অধীনে কাজ শুরু করেছিলাম ভোরের কাগজ থেকে। ভোরের কাগজ–এ চাকরি চাইতে গিয়ে মতি ভাইয়ের কাছে যে ইন্টারভিউ দিতে হয়েছিল, তা আমি বহুজনের কাছে বহুবার বলেছি। আমি মতি ভাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম সংস্কৃতিবিষয়ক রিপোর্ট করার জন্য কাউকে নেওয়া হবে জেনে। আমাকে বুঝতে চেয়ে তিনি কবিতা, গান, চিত্রকলা নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন। আমি অবাক বিস্ময়ে শুনছিলাম। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সেই বিস্ময় মুগ্ধতায় পরিণত হয়েছে। সম্ভবত ভোরের কাগজ–এ মতি ভাইয়ের নিয়োগ দেওয়া শেষ কর্মীটি আমিই ছিলাম। সেখান থেকে মাত্র কয়েক মাস পরেই চলে এলাম মতি ভাইয়ের সঙ্গে, মতি ভাইয়ের পত্রিকায়। মতি ভাইয়ের পত্রিকা বলার কারণ হচ্ছে, আমরা নিয়োগ পেয়েছিলাম একুশে নামে একটা পত্রিকায় এবং জানতাম নামটা বদলে যাবে, তাই শুরুতে নাম না জানা যে পত্রিকাটিতে কাজ করতে হবে, তাকে আমরা মতি ভাইয়ের পত্রিকা বলতাম। নামকরণের পর আমরা পত্রিকাটির কনিষ্ঠ কর্মীদের কয়েকজন নামটা একেবারে পছন্দ করতে পারছিলাম না, তাই নিজেদের পত্রিকাটাকে প্রথম আলো না বলে আমরা বলতে শুরু করলাম ‘মতি ভাইয়ের কেঁচে গণ্ডূষ’, সংক্ষেপে ‘কেঁচে গণ্ডূষ’।

ভালো কথা, নাম যা–ই হোক, পত্রিকাটা যে দাঁড়াবেই—এ নিয়ে আমাদের মনে কোনো সংশয় ছিল না। তখনো সম্পাদক হিসেবে দেশজুড়ে আজকের মতো প্রতিষ্ঠা পাননি মতি ভাই। তবে আমরা জানতাম, মতি ভাইয়ের মতো সম্পাদক ব্যর্থ হবেন না। তাঁর সাফল্য তো এত দিন পর আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

মতি ভাইকে আমি ভালোবাসি। নিন্দা করার কারণও জানি। তবু নিন্দা করিই না বলা চলে। আমার, আমাদের এই ভালোবাসায় কিংবা নিন্দায় মতি ভাইয়ের কিছু যায়–আসে না। দেশের সবচেয়ে সফল পত্রিকার নাম প্রথম আলো এবং ওই পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমান।

এত কথা বলার উদ্দেশ্য নাইমুল আবরারের অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলায় মতিউর রহমান, আনিসুল হক প্রমুখের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি। আর সবার মতো আমিও মনে করি, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। আবরারের মৃত্যু অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড হলে তার বিচার নিশ্চয়ই হওয়া দরকার। কিন্তু ঘটনাস্থলে অনুষ্ঠানের কোনো পর্যায়েই মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। তবু কিশোর আলোর প্রকাশক হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা যেতেই পারে। অতীতে কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি বলে এখন আনা যাবে না এমন নয়। তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিতে যে বাড়াবাড়ি আছে, তাতেই মনে হচ্ছে এটা প্রথম আলোকে দেখে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে করা হচ্ছে। মূল উদ্দেশ্য পত্রিকাটির ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং পারলে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া। তাই এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোটা মতিউর রহমানকে ভালোবাসা, মন্দবাসার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সংবাদকর্মীদের নিজের অস্তিত্ব রক্ষার।

১৮ জানুয়ারি ২০২০, রাত ১০টা ২৮ মিনিট
রাজীব নূর: সাংবাদিক

আরাফাত শাহরিয়ার।
আরাফাত শাহরিয়ার।


এ যে রাত্রি
আরাফাত শাহরিয়ার
মতিউর রহমান, আমাদের সবার প্রিয় মতি ভাই। তিনি তাঁর সম্পাদিত দেশসেরা পত্রিকা প্রথম আলোকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তিনি লেখনীশক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে ইতিবাচকভাবে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

আরেকজন স্বপ্নবান মানুষ বরেণ্য কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। প্রথম আলোয় কাজ করার সুবাদে দুজন মানুষের সঙ্গেই মেশার সুযোগ হয়েছে। সত্যিকারের আদর্শবান, দূরদর্শী, প্রজ্ঞাবান ও পরিচ্ছন্ন রুচির মানুষ বলতে যা বোঝায়, তার উদাহরণ এই দুটো মানুষ।

সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল না, এমন একটি ঘটনায় মতিউর রহমান, আনিসুল হক, গীতিকার কবির বকুল, প্রিয় মহিতুল আলমসহ দশজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে জেনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। প্রত্যাশা, অচিরেই এর অবসান হবে। মতিউর রহমান, আনিসুল হকের মতো মানুষেরা হারলে হেরে যাবে বাংলাদেশ!

‘ও আলোর পথযাত্রী, এ যে রাত্রি

এখানে থেমো না...’

১৯ জানুয়ারি ২০২০, বিকেল ৪টা
আরাফাত শাহরিয়ার: লেখক

সালেহ ফুয়াদ।
সালেহ ফুয়াদ।


সত্যিই আতঙ্কের
সালেহ ফুয়াদ
আনিসুল হকের সঙ্গে কোনো দিন আলাপ হয়নি৷ মতিউর রহমানের সঙ্গে একদিনই আলাপ হয়েছিল৷ তিনিই ফোন করেছিলেন৷ আমার অনুবাদ দেখেছেন। তাই ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে জানতে চাইছিলেন, এই অনুবাদ কীভাবে শিখলাম, এখন কী করছি, ভবিষ্যতে কী করতে চাই, থাকি কোথায়—এই সব প্রাথমিক আলাপ৷ অফিসে যেতে বলেছেন৷ অফিসে যাওয়া হয়নি, আর আলাপও না৷ তবু এই সামান্য আলাপে ফোনের ওপ্রান্তের কণ্ঠে কেমন আন্তরিকতার স্পর্শ পাচ্ছিলাম৷

মতিউর রহমান ও আনিসুল হকদের ইস্যুটি আমাদের জন্য মারাত্মক উদ্বেগজনক৷ আবরারের ঘটনায় ওঁদের গ্রেপ্তার করাটা বিচারের একমাত্র পথ নয়৷ তার ওপর ঘটনার পূর্বাপরে যেসব বক্তব্য আমাদের নেতাদের মুখ দিয়ে বেরিয়েছে, তা সত্যিই আতঙ্কের৷

আশা করি তাঁরা চলমান ফাঁড়া কাটিয়ে উঠতে পারবেন৷ সব ‘নিন্দা’র পরও মতিউর রহমান ও প্রথম আলো এই সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷

আশার কথা হলো, সবাইকে ‘দশম দিনের বাঘ’ বানানো যায় না৷

১৯ জানুয়ারি ২০২০, বিকেল ৫টা
সালেহ ফুয়াদ: অনুবাদক